শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি-" পুতুলের বিয়ে নিয়ে ঝগড়া"II written by @maksudakawsar II
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন সবাই? আশা করবো সবাই ভালো আছেন সৃষ্টিকর্তার রহমতে । আমিও আছি আপনাদের দোয়ার বরকতে জীবন নিয়ে ভালোই। দিন যায় কথা থাকে। দিন কিন্তু সত্যি সত্যি চলেই যাচ্ছে। চলে যাচ্ছে সময়। সময় কখন আসে আর কখনই বা যায় সেটা টেরই পাই না। তাই ব্যস্ততার পরিমানও দিনের পর দিন বেড়েই যাচ্ছে। আজকাল যেন জীবনের সাথে যুদ্ধ করেই জীবন পার করতে হচ্ছে। তবুও সময় করে বসে পড়লাম আপনাদের জন্য একটু লেখালেখি করার জন্য। আমি আশা করি আজকের ব্লগ আপনাদের সবার অনেক বেশি ভালো লাগবে। সব সময় চেষ্টা করি ভালো ভালো ব্লগগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

মানুষের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময় হলো শৈশব। এই সময়ের প্রতিটি মুহূর্তে লুকিয়ে থাকে নির্দোষ হাসি, ছোট ছোট দুষ্টুমি, খেলাধুলা আর মায়ের স্নেহভরা যত্ন। সময় যতই কেটে যায়, জীবনের ব্যস্ততার ভিড়ে যতই হারিয়ে যাই না কেন, শৈশবের স্মৃতিগুলো সবসময় বুকের ভেতরে গেঁথে থাকে। বিশেষ করে মায়ের আদর আর ভালোবাসা হলো এমন এক সম্পদ যা কখনো ভুলে যাওয়ার মতো নয়। আমি আজও আমার ছোটবেলার সেই দিনগুলোর কথা মনে করি।
শৈশবের স্মৃতি এমন এক সম্পদ যা কখনোই মুছে যায় না।বেশ দূরন্ত ছিলাম শৈশবে। কত যে খেলা খেলেছি আমরা সেই শৈশবে সেটা হয়তো কখনও ভুলার নয়। ভুলার নয় সেই পুতুল খেলার দিনগুলো। আমরা ছেলেবেলায় পুতুল খেলায় মেতে থাকতাম। মেতে থাকতাম আনন্দ আর উদ্দীপনায়। আমরা তখন পুতুলের বিয়ে দিতাম বেশ ধুমধাম করে। দুই বান্ধবীর পুতুল কে বিয়ে দিয়ে আমরা হতাম বিয়াইন বিয়াই। আজ তেমনি একটি সুন্দর শৈশবের স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
ছেলেবেলায় পুতুলের বিয়ে নিয়ে যে কত খেলা খেলতাম। দুই বান্ধবী মিলে ঠিক করে নিতাম যে কার ছেলে আর কার মেয়ে হবে। তারপর একদিন ঠিক করে বাকী বান্ধবীদের দাওয়াত করতাম। গায়ে হলুদ হতো, গেইট ধরা হতো এবং বেশ ভালো করে খাওয়া দাওয়া করা হতো। এমনকি গান বাজনাও হতো। বেশ মজা হতো সেই পুতুলের বিয়ের অনুষ্ঠান। আর আমরাও বান্ধবীরা বেশ মজা করতাম। আর পুতুলের বিয়ে দেওয়ার জন্য আগে বাগেই স্কুলের টিফিন হতে টাকা গুছিয়ে রাখতাম। সেই টাকা দিয়েই পুতুলের বিয়ের জন্য কেনাকাটা আর খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করতাম। অবশ্য বাকী কিছু টাকা আব্বার কাছ হতে নিতাম।
থাকেনা বান্ধবীদের মধ্যে এমন একজন যে কিনা বেশ হিংসুটে। তো আমাদের ও তেমন একজন বান্ধবী ছিল যে কিনা বেশ হিংসুটে। কারও ভালো দেখতে পারতো না। তো একবার হলো কি আমার ছেলে পুতুল আর মনির মেয়ে পুতুলের বিয়ে হবে। আমরা সব কিছু গুছিয়ে তৈরি করে নিয়েছি পরদিন সকালে পুতুলের গায়ে হলুদ। আব্বাকে দিয়ে মিষ্টি কিনিয়ে এনেছি। বান্ধবীদের দাওয়াত করা শেষ। লাল নীল জড়ির কাগজ দিয়ে ঘর সাজানো শেষ। এখন শুধু বিয়ে করে মেয়ে পুতুল ঘরে তোলা।
কিন্তু কি হলো জানেন? পরদিন মনি আর আসে না। আমি তো বেশ চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমার এক বান্ধবী কে পাঠালাম বিষয়টি জানতে। কেন মনি এখনও আমার ছেলে পুতুলের গায়ে হলুদ দিতে আসলো না? তো আমার সেই মেয়ে বান্ধবী এসে আমাকে জানালো যে মনি তার পুতুলের সাথে আমার পুতুলের বিয়ে দিবে না। কারন আমি নাকি সব সময় ছেলে পুতুল বানিয়ে সব সুন্দর সুন্দর পুতুল নিয়ে এসে আমার ঘরে সাজিয়ে রাখি। হায় হায় এমন সত্য কি করে জানলো। আরে বুঝলেন না। মনির মাথায় এমন বুদ্ধি কখনও আসার কথা না। আমার সেই দুষ্টু একটি বান্ধবি ছিল না সেই এসব কথা লাগিয়েছে। আর আমার তো গেল মেজাজ গরম হয়ে।গেলাম মনির বাসায়।
বেদম ঝগড়া শুরু করে দিলাম। এমন কি ঝগড়া করতে করতে মনির পুতুলের ঘরের সব সাজানো জড়ি গুলো ছিড়ে কুটি কুটি করে দিলাম। মনি তো অনেক রাগ করলো। এক পর্যায়ে মনি এসে আমার মাথার চুল ধরে মাটিতে ফেলে দিলো আর দুপ দুপ করে মারতে লাগলো। ভাগ্যিস সেদিন আমার মা আর মনির মা দৌড়ে এসেছিল। তা না হলে কি আমি বাচঁতে পারতাম। সেই যে পুতুলের বিয়ে নিয়ে মনির সাথে আমার ঝগড়া সেই ঝগড়া প্রায় ৩-৪ বছর কথা বলা হয়নি। অবশ্য পরে আবার মিলে গিয়েছিলাম।
আচছা বন্ধুরা বলেন তো আমার মত এমন কাহিনী আপনাদের কি আছে? ছেলেবেলায় পুতুলের বিয়ে নিয়ে কি কেউ এমন করে ঝগড়া করেছেন? তবে আমার কাছে কিন্তু আজও সেই সব স্মৃতি গুলো সুখের বার্তা হয়ে ফিরে আসে মাঝে মাঝে।
আমার পরিচিতি
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
.gif)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy



