সাপ্তাহিক মেলায় ঘোরাঘুরির প্রথম পর্ব।।

in আমার বাংলা ব্লগ16 days ago

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ তায়ালার নামে শুরু করতেছি-

হ্যালো আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ, আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি। সৃষ্টিকর্তা যে অবস্থাতেই রাখুক না কেন সর্বদাই শুকরিয়া আদায় করি। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি লাইফ স্টাইল ব্লগ শেয়ার করবো।

আমরা বর্তমানে যে জায়গাতে অবস্থান করতেছি, সেই জায়গাটার নাম হলো লামাপাড়া। লামাপাড়ার উত্তর দিকের বাস স্টেশন এর নাম হলো জালকুড়ি। জালকুড়ির পরে হলো ভুইঘর বাস স্টেশন। ভুইঘর বাস স্টেশন থেকে ২ মিনিট পায়ে হেঁটে সামনের দিকে এগিয়ে আসলেই বিশাল বড় একটি খেলার মাঠ দেখা যায়। এই খেলার মাঠটিতে বিভিন্ন সময় এলাকার ছেলেপেলেরা বিভিন্ন ধরনের খেলার আয়োজন করে। আবার দেখা যায় কোরবানির ঈদ সামনে আসলে সেখানে বিশাল বড় গরু ছাগলের হাট বসায়। অর্থাৎ এই খেলার মাঠটি খালি থাকে না। কোন না কোন কার্যক্রম সেখানে চলতেই থাকে।

গত কয়েক মাস ধরে এখানে আর একটি নতুন কার্যক্রম শুরু করেছে। আর সেটা হল এখানে প্রতি রবিবারে বিকালে একটি মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এই মেলাতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসে। মেলাটি বিকাল তিনটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত চলে। সাপ্তাহে একদিনই এখানে মেলাটি বসে। আবার অনেকে সাপ্তাহিক হাট ও বলতে পারেন। তবে সাধারণ হাটের মধ্যে যে জিনিসপত্র পাওয়া যায় সেখানে তেমন কিছু পাওয়া যায় না। এখানে মেলার আইটেমই বেশি দেখা যায়। গত সপ্তাহে আমি আর আমার হাজব্যান্ড সেই মেলাতে গিয়েছিলাম। মেলাতে আমি বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দেখতে পেয়েছিলাম। সেই সাথে আমি সবকিছুর ফটোগ্রাফিও করেছি। এখন আপনাদের সাথে একটি একটি করে ফটোগ্রাফি সহ বর্ণনা শেয়ার করতে যাচ্ছি।

আমরা মেলাতে প্রবেশ করেই দেখি বিশাল বড় খেলার মাঠটির চারপাশে দোকান বসানো হয়েছে। এছাড়াও মাঠের মাঝখানে সিরিয়াল ধরে বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্রের দোকান বসানো হয়েছে। আর বিক্রেতা যেমন রয়েছে তেমনি ক্রেতার সংখ্যাও মোটামুটি ছিল। যেহেতু আমরা রাত আটটার দিকে গিয়েছিলাম তাই তেমন মানুষ ছিলনা। আমরা প্রথমে মেলার চারপাশ ঘুরে ঘুরে কি কি আইটেম আছে সেটা দেখেছি।

মেলার এক কর্নারে দেখলাম এক মামা বিশাল বড় কড়াইয়ের মধ্যে ৫/৬ লিটার পরিমাণ তেল দিয়ে সেটাতে মুচমুচে পিয়াজু ভাজতেছে। আমি দৃশ্যটা দেখে সাথে সাথে একটি ফটোগ্রাফি নিয়ে নিলাম। মুচমুচে পিয়াজু আমার খুবই সুস্বাদু একটি খাবার। যদিও তেলের কারণে খুব অল্প পরিমাণে খেয়ে থাকি। আমি দেখলাম মামার চারপাশে অনেক ক্রেতা রয়েছে। তিনি কড়াই থেকে নামানোর সাথে সাথে পিয়াজু শেষ হয়ে যাচ্ছে। এর দ্বারা বোঝা যায় পেঁয়াজ খাওয়ার অনেক ক্রেতা রয়েছে।

একটু সামনে গিয়ে মাঠের মাঝখানে দেখতে পেলাম এক মামা রাবারের বেলুন বিক্রি করতেছে। এগুলো কিন্তু সাধারণ বেলুন না, বিভিন্ন ধরনের প্রাণীর আকৃতিতে বানানো এসব বেলুন ২০০ থেকে আড়াইশো টাকা করে বিক্রয় করতেছে। বাচ্চারা এগুলো দেখলে একটা নেওয়ার জন্য খুবই কান্নাকাটি করে। যার ফলে গার্জিয়ানরা বাধ্য হয়ে দুই একটি করে বাচ্চাদেরকে কিনে দিতে হয়। তবে জিনিসটা খুবই সুন্দর, ভিতরে হাওয়া থাকার কারণে বাতাসের মধ্যে উড়ে।

তারপর আরেকটু সামনে গেলাম,এখানে এক মামা গৃহস্থালির বিভিন্ন প্লাস্টিকের জিনিসপত্র বিক্রয় করতেছে। এই দোকানটাও মাঠের মাঝখানেই রয়েছে। এখানে ছোট বড় জিনিসপত্রগুলো সাইজ অনুযায়ী দাম কম বেশি রয়েছে। এখানে যা কিছু রয়েছে সবগুলোই পরিবারের কোন না কোন কাজে লাগে। এখান থেকে আমার হাজব্যান্ড ২০ টাকা দিয়ে একটি ওয়াল হ্যাংগার নিলেন। বাসার মধ্যে প্রচুর কাপড় চোপড়, দুইটি ওয়াল হ্যাংগার থাকার পরেও আরেকটি নিলেন।

মাঠের এক পাশ থেকে আরেকটি ফটোগ্রাফি নিলাম। এখানে দেখা যায় অনেক ধরনের কাপড়-চোপড়ের দোকান রয়েছে। আমার ক্যামেরার সামনে যে মামা রয়েছে তিনি বিছানার চাদর বিক্রি করেন। আমি ওনার কাছে বিছানার চাদরের দাম করেছিলাম। তিনি বিছানার চাদর গুলো ৩০০ টাকা করে বিক্রি করে। তবে এই চাদর গুলো তেমন ভালো নয়। কয়েকদিন ব্যবহার করার পরে নষ্ট হয়ে যায়। আমরা যে বিছানার চাদরটি ব্যবহার করি সেটির দাম ৮৫০ টাকা। একটু দাম দিয়ে বিছানার চাদর গুলো নিলে মোটামুটি অনেকদিন ব্যবহার করা যায়।

তারপর আরেকটু সামনে গিয়ে দেখলাম এক মামা বাচ্চাদের খেলনা বিক্রয় করতেছে। এখানে বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের খেলনা রয়েছে। সবগুলো খেলানাই প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি। আর প্লাস্টিকের একটি উপকার হলো এগুলো সহজে ভাঙ্গে না। হয়তো নষ্ট হয়ে যাই তারপরও অনেকদিন থাকে। এগুলো দিয়ে বাচ্চারা অনেকদিন খেলতে পারে। আমাদের বাবু যেহেতু অনেক ছোট, এখনো খেলনা দিয়ে খেলার বয়স হয়নি। তাই আমরা কোন খেলনা না কিনে সামনের দিকে হাঁটতে লাগলাম।

বন্ধুরা মেলার মধ্যে আরো অনেক কিছু ছিল। সবগুলো একদিনে শেয়ার করা সম্ভব নয়। তাই আমি চিন্তা করেছি ধীরে ধীরে কয়েকটা পর্বের মাধ্যমে সবগুলো ফটোগ্রাফি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আজকে আর বাড়াবো না এখান থেকে বিদায় নিলাম। সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ হাফেজ।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।

ফটোগ্রাফির বিবরণ:

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSj1ATxRsaEvyH89EyziiK3D1ksn1tTDvDwLCveqrhctVcDnDqtNbsqFMtuqD1RetzrgjG.png

ডিভাইসমোবাইল
মডেলরেডমি নোট-৮
টাইটেলসাপ্তাহিক মেলায় ঘোরাঘুরির প্রথম পর্ব।।
স্থানভুইঘর,নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা। ।
তারিখ১২/০৫/২০২৪
কমিউনিটিআমার বাংলা ব্লগ
ফটোগ্রাফার@titash

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSfQKFP87GjNCaLdCLKkYFWdxRmYuKurkfDpnYWoUUypXiwgziwKKNP24nNC65i32Am8Fp.png

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

আমার পরিচিতি

আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপ করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9uuNWjCEgJj5LnknUa3pWA9yop6dT9GDfEUZtz2oDgA9ocMHrCEtkFpngXowo13q8Mn1YvzEMh5bSRg1SNaKSZwbsLwb3YA.png

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siCoMX3by8iWdE4qYzWA7pZHzh4KthdoHPj2eEciPaXhHTdxhx5dKApkU8hxE3mUrybeUbtQCvbs4JC247APSjksrR6prneL2GBtrunMiz4r5CiYySVGKj1e3nT19qBCX5ekz5F.png

5QqP4NVdsPNcDeePyfoZLTLv8efTACU5P6GADTBgMgfXR7uJx5fN91AE46tFfFA7GwMq22wjUwwY5XDyUBMksyZSJGUEyK1Re6UWVZ1PqVR2ntgu73qAW8iDh6yPt8YVsiJ7enc87gmY874JVVHPQo6hSZvUs47FymTjqs43bSUF1Wvtd8T.jpg

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzL1as2zt5nA5iP9iEBmXtJKZZD3SHGtdFKZ13Up5EmSAxpDYtwYvvxyhsR48F5wdZ6ZhgEKtW9w1csKVawJHrqc3fgSkcpz8WsTY1MvhswZsey8zNe3vkwTdKjCivA3Z6dpaPre.png

ddddoo.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.031
BTC 67790.81
ETH 3815.03
USDT 1.00
SBD 3.51