নতুন প্রবীণদের নিয়ে আমার লেখা ছোট একটি গল্প - পর্ব ১৩

in #new14 days ago

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মাদারীপুর ক্যাম্প থেকে আশপাশের এলাকায় হামলা চালিয়ে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করতো। একদিনে শরিয়তপুরের মধ্যপাড়ায় তিনশো মানুষকে হত্যা করে। শরিয়তপুরে বিভিন্ন বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সময় টাকা পয়সা সোনা গয়না নিয়ে যেত। যে নারীদের পছন্দ হতো তাঁদের মাদারীপুর ক্যাম্পে নিয়ে আসতো। সুমিত্রা, যোগমায়া, যুগলবালাসহ অনেক নারী পাকবাহিনীর হাতে নির্যাতিতা । এই তিনজনকে শহরের একইপাড়া থেকে নিয়ে যায় । তিন সন্তানের জননী সুচিত্রা মালোর বয়স তখন পঁয়ত্রিশ বছর । স্বাধীন দেশে বিজয়ের পতাকা হাতে মুক্তি বাহিনীর আগমনে ক্যাম্প থেকে সুমিত্রাসহ অন্যরা মুক্তি পেল।

সন্তানরা মাকে পেয়ে বেজায় খুশি। স্ত্রীকে ফিরে পেয়ে স্বামী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন । বড় সংসারে সবার মুখে ভাত জোটানোর লড়াই জারি রাখতে সুমিত্রা স্বামীর সহযাত্রী হলো । দিন রাত সীমাহীন খাটুনি করে শান্তি স্বস্তির দেখা মেলে না । সুমিত্রা পর পর তিন সন্তান জন্ম দিলেন । কাউকে বাঁচাতে পারলেন না। অবশেষে চতুর্থ সন্তান মেয়ে জন্ম নিল । নাম রাখলেন জয়িতা। জয়িতাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন। যুদ্ধের আগে জন্ম নেয়া ছেলেমেয়েরা অভাব অনটন আর পুষ্টিহীনতায় ভুগে শারীরিক মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল। তাদের টিকে থাকার লড়াই যে কোন সময়ে থেমে যাবার সম্ভাবনা ছিল। সেই আশংকাই সত্যি হয়েছিল সুমিত্রার জীবনে 1 প্রথমে ছেলে পরে মেয়েকে হারিয়ে জীবনকে নতুন করে পেলেন। একসময়ে জীবনযুদ্ধের লড়াকু সহযোদ্ধা স্বামীটিও চলে গেলেন । বেঁচে থাকা মেজো মেয়েটিকে বিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হবার চেষ্টা চালিয়ে ছিলেন কিন্তু মুক্তি মিলেনি। অসুখ বিসুখ আর স্বজন হারানোর শোকে সুমিত্রার শরীর ভেঙ্গে পড়েছে। শারীরিক পরিশ্রমের কাজ আর করতে পারে না ।

ঘরে ঢুকেই মিলা বুঝতে পারছেন কর্তা টয়লেটে আছেন। দুর্গন্ধে শোবার ঘরে দাঁড়ানো কঠিন। চিৎকার করে বললেন, ফ্লাশ করে দাও! কত করে বলি টয়লেট ব্যবহারের সময় কয়েকবার ফ্লাশ করে নিতে। কিছুতেই শোনানো যায় না! বিচ্ছিরি গন্ধে বমি আসে। পিএইচডি করেছো কিন্তু টয়লেট ব্যবহার শিখতে পারলে না! মিলার চেঁচামেচি শুনে মিলন টয়লেটের দরজা খানিকটা খুলে মুখ বের করে জিজ্ঞেস করলো, কিছু বলছো? মিলা বলল, না, কিছু বলছি না ! মিলন বলল, তবে কিসের চেঁচামেচি শুনলাম? মিলার উত্তর, তোমার মাথা আর মুণ্ডু শুনেছো! তুমি টয়লেটে গেলে পুরো বাসা গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে যায় !

IMG_6602.jpg

মিলন বলে, এ আর নতুন কি? গত চল্লিশ বছর ধরে তোমার এই অভিযোগ শুনে আসছি। টয়লেট ব্যবহার করে হারপিক দিয়ে পরিস্কার করি। এয়ার ফ্রেশনার রেখেছি। তারপরও তোমার অস্বস্তি! বিকল্প কি? মিলা বলল, আগে তো তুমি অফিসে টয়লেট ব্যবহার করতে। চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করে বাসায় টয়লেট করছো! টয়লেট নোংরা করে রাখো। বিচ্ছিরি গন্ধে আমার বমি আসে। মিলন বলে, টয়লেট থেকে সুগন্ধি আসে না সেটা হাজারবার বলেও তোমাকে বোঝানো সম্ভব হয়নি। ক'টা দিন সবুর করো । তুমি আলাদা টয়লেট পাবে। মিলা বলে, তুমি এখন পর্যন্ত গোসল করা শিখলে না । মাথায় শ্যাম্পু করো, গায়ে সাবান মাখো তা দেয়ালে ছিটকে পড়ে! আসার সময় একটু পানি ছিটিয়ে দিলে কি সমস্যা হতো? আজ পর্যন্ত নিজের লুঙ্গি গামছাটা ধুতে পারলে না। দাড়ি কামাও কিন্তু রেজর পরিস্কার করতে পারো না। ব্রাশে টুথপেষ্ট নাও ছিপি খোলা থাকে । ব্রাশে সাবানের ফেনা। কত আর বলবো! পারো শুধু তর্ক করতে! মিলন বুঝিয়ে বলে, নানা কারণে তুমি আমার উপর রেগে আছো । সেজন্য আমার খুঁত ধরার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকো।

Sort:  

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @fxsajol,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 67730.39
ETH 3820.69
USDT 1.00
SBD 3.55