নতুন প্রবীণদের নিয়ে আমার লেখা ছোট একটি গল্প - পর্ব ১২

in #steemit16 days ago

সতের বছর বয়সী জামিলা সাতাশ বছর বয়সী যুবক জামিলের সাথে ঘর ছাড়েন । অনেক স্বপ্ন সাধ নিয়ে বাবা মা, ভাইবোনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে সামর্থ্যবান পরিবারের সন্তান জামিলের উপর আস্থা রেখেছিলেন। ভালোবাসার মোহ কেটে গেলে জামিল জামিলাকে টাঙ্গাইলের যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেয় । অনিচ্ছাসত্ত্বেও জামিলা মানবজাতির আদিম পেশায় নিযুক্ত হয়। প্রতিনিয়ত নানা রকম মানুষের সান্নিধ্যে বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়। কামাতুর পুরুষের কথাবার্তা, আচার-আচরণ প্রায় একই রকম । একদিন এক যুবক তাঁর ঘরে এসে হাজির। তাঁকে দেখে জামিলার বুকটা কেঁপে উঠলো। এমন খদ্দের এর আগে আর কোনদিন দেখেনি।

চেহারায়, আচরণে কথাবার্তায় জামিলা মুগ্ধ। যুবক বিছানায় শুয়ে জামিলাকে মাথা টিপে দিতে বললো । মাথায় হাত রাখার কয়েক মিনিটের মধ্যে যুবকটি ঘুমিয়ে পড়লো । বাইরে তুমুল বৃষ্টি । জামিলা দরজায় দাঁড়িয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। বৃষ্টি থামার কোন লক্ষ্মণ নেই। ঘন্টা দুয়েকের টানা বৃষ্টি সন্ধ্যায় থামলো। যুবক ঘুম থেকে জেগে জামিলাকে জিজ্ঞেস করলো, তোমার নাম কি? আমার নাম জামিলা । যুবকটি বললো, আমার নাম কামাল । শহরে থাকি । পকেটে থেকে কড়কড়ে একটা পাঁচশো টাকার নোট হাতে দিয়ে বললো, টাকাটা রাখো। কাজ ছাড়া আপনি টাকা দেন কেন? আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই দিলাম । জামিলা টাকাটা বুকের মধ্যে রেখে যুবকের চলে যাওয়ার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেন । আগে কোনদিন কেউ একশো টাকার বেশি দেয় নি। কাজ ছাড়া পাঁচশো টাকা পেয়ে হিসাব মিলাতে পারছেন না । প্রায় প্রতিদিন কামাল জামিলার ঘরে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে যায় । কামাল জামিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়।

IMG_6451.JPG

গত ষাট বছর ধরে মাসুদ হাজী ব্যবসা বাণিজ্যের সাথে যুক্ত আছেন । কাজ শুরু করেছিলেন দোকান কর্মচারী হিসেবে। এখন তিনি দশটি দোকানের মালিক। সারাদেশে পাইকারি বিক্রি করেন। গাড়ি বাড়ি সহায় সম্পদ হয়েছে। দান খয়রাতে বেশ নাম করেছেন। ছেলের আশায় দশটি মেয়ের বাবা হয়েছেন । তিনি নিয়তির উপর নির্ভর করেন। স্ত্রীকে বুঝিয়েছিলেন ছেলে হলে এতদিনে হয়ে যেত। স্ত্রী নিয়তি মেনে নিতে পারেন নি তাই চেষ্টা চালিয়ে গেছেন । বরাবরই একই ফল পেয়েছেন। মাসুদ হাজী স্ত্রীকে ঠাট্টা করে বলেন, তুমি হলে গিয়ে গার্লস স্কুলের বাস। এখান থেকে শুধু মেয়েরাই নামবে। আমি ধনী হলাম মেয়েদের ভাগ্যে। বেহেশতে যাবো এতগুলো মেয়ের দোয়ায় । স্ত্রী সফুরাকে পুত্রের জন্য হাহাকার করতে দেখে মাসুদ হাজীর মনটা খারাপ হয়ে যায়।

মাসুদ হাজীরা আট ভাই দুই বোন ছিল। সন্তান লালনপালনে অভাবের সংসারে বাবা-মার দুঃখকষ্ট চোখের সামনে ভাসে । শুধু দুবেলা খাবারের বিনিময়ে মাসুদ হাজী দোকানের কর্মচারী হয়েছিল । মাসুদ হাজীর স্ত্রী ভরাপেট, আঁতুড়ঘর, হাসপাতাল, শিশুপালনে জীবন কাটিয়ে দিলেন । যেন সন্তান উৎপাদনের কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। মাসুদ হাজী প্রতিমাসে সাতদিন ঢাকার বাইরে ব্যবসায়িক কাজে থাকেন। এই সময়ে মোবাইল বন্ধ রাখেন। এটা পরিবারের কেউ মানতে চান না। সফুরা মোবাইল খোলা রাখার অনুরোধ করেছে অথবা ফোন করে ভালো আছে এটুকু সংবাদ অন্তত একবার দেয়। মাসুদ হাজী এসব পাত্তা দেয় নি । কানাঘুষা চলছে মাসুদ হাজীর বিভিন্ন জেলায় স্ত্রী রয়েছে। স্ত্রী সফুরার কাছে এসব কথা আসে। তিনি তথ্যপ্রদানকারীকে বলেন, বিয়ে করা কি খারাপ? নাকি লুচ্চামি করা খারাপ? তিনি আমার ভরণপোষণ দেন । আমার নামে বাড়ি গাড়ি করে দিয়েছেন । মাসুদ হাজী কি করে না করে সেই খবর দেয়ার জন্য আপনার এত গরজ কেন?" অভিযোগকারীরা হতাশ হয়ে ফিরে যায়।

Sort:  

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @fxsajol,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 67730.39
ETH 3820.69
USDT 1.00
SBD 3.55