ভ্রমন কাহিনী

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago

আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন সবাই আশা করি ভাল আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।নতুন একটি টপিক নিয়ে আজ আবারো আপনাদের সামনে হাজির হলাম।আজকে আপনাদের সামনে একটি ভ্রমন কাহিনি নিয়ে বিস্তারিত বলবো।স্থান যশোর বিনোদিয়া পার্ক।

বিনোদিয়া পার্কের,

অবস্থান যশোর জেলা শহর হতে ৫ কিলোমিটার দূরে যশোর ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন।আমি সহ আমার টিম মেম্বার খুলনা থেকে রওনা হয়েছিলাম।সকাল ৭.৩০ টার ট্রেন ওঠে পড়লাম আমরা ১৯ জন।সাথে নিয়ে নিলাম নিজেদের সকালের নাস্তা।

b11.jpg

৭.৩৫ থেকে ট্রেনের সাইরেন দিয়ে পথচলা শুরু করলো।আমরা প্রত্যেকে নিজ-নিজ সিট খুজে পাইলাম।এবং সেখানে বসে পড়লাম।সাধারণ ট্রেনে অগ্রীম সিট কাটতে হয়,অগ্রীম টিকিট কাটার পরেও অনেকে সিট বঞ্চিত হয়।চারদিকে সবুজ মাঠ,মাঠের পরে মাঠ পেরিয়ে যাচ্ছে ট্রেন তার গতিতে।দেখা মিললো কৃষকের সাথে তার গরুর পাল।সকাল ৮.৩০ আমরা সবাই আমাদের নাস্তা শেষ করলাম টেনে।সকালের নাস্তায় অন্তভুক্ত ছিল রুটি,কলা,পড়টা,ডিম এবং পানি।শরীরের ভিতরে যখন পুরো এনার্জি আলে আসলো আমরা গানের একটি আসর জমানো শুরু করলাম।ভাওয়ালী দিয়ে শুরু হলো আমাদের গানের আসর।এরি মাঝে নিজেরা কিছু ছবিও তুললাম।আস্তে আস্তে ট্রেন এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে চলা শুরু করলো।২ ঘন্টা র এই জার্নিতে শেষের দিকে গান গেয়ে সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়ে।তার সুবাদে আমরা কিছু সময় সবাই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।কারন খুব সকালে আমাদের সবাইকে নিজেদের গুছিয়ে স্টেশনে আসা হয়েছিল।২ ঘন্টা পার করার পর আমরা পৌছালাম যশোর স্টেশনে।সবাই তড়িঘড়ি করে নেমে পড়লাম। কারন আর বেশি দেড়ি নাই আমাদের গন্তব্যে পৌছানোর জন্য।

b1.jpg

সেখান থেকে অটোরিকশা করে আমাদের যেতে হবে বিনোদিয়া পার্কে।৪ টা অটো ভাড়া করলাম চুক্তি সাপেক্ষে তারা আমাদের পার্কের সামনে দিয়ে আসবেন।যশোর এর রোড সাইড আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।বিশেষ করে ক্যান্টনমেন্ট এলাকা যেটা খুবি সুন্দর এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।ক্যান্টনমেন্ট এর বাগেনে দেখতে পেলাম সারি সারি আম গাছ।সব কিছু মিলিয়ে যশোর কেন জানি মনে স্থান করে নিয়েছে।

b2.jpg

সকাল ১০.৩০ এর আমরা বিনোদিয়া পার্কে পৌঁছাতে পারি।শুরুতেই রয়েছে বিশাল সাইনবোর্ড দেওয়া গেট।তার পাশে টিকিট কাউন্টার।টিকিট সংগ্রহ করলাম।পূর্নবয়স্ক দের জন্য ৫০ টাকা হলেও স্টুডেন্ট হওয়ায় ২০ টাকা দিয়ে আমরা ভিতরে ডুকতে পারলাম।

ভিতরে প্রবেশ করে ডান দিকে তাকালেই দেখা মিলবে ছোট্ট একটি পুকুর।দেখে মনে হবে পুকুরে ঝরনা থেকে পানি আসছে।পুকুরের ঠিক মাঝ বরাবর রয়েছে একটি সুন্দর জলপরীর মুর্তি।যা গেটের প্রধান আকর্ষন।তার একটু সামনে আগালে দেখা মিলবে মিনি সাইজের চিড়িয়াখানা। যেখানেও টাকা দিয়ে টিকিট নিতে হবে।একটু সামনে গেলে বিশাল মাঠ।যেখানে আছে ছোট্ট থেকে শুরু করে বড়দের আনন্দ উপভোগের জিনিস পত্র।দোলন,চড়কি,বিশাল দাবা কোট ইত্যাদি।মাঠের মাঝে ছোট একটি দোকান রয়েছে।যেখানে খাবারের দাম সবকিছুতে ২ টাকা বেশি।এটা নিয়ম।

b3.jpg

মাঠের মাঝে অবস্থান একটি দোতালা ঘর।সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে হয়।সময় করে একটি ছবি তুলে ছিলাম ঘরের ভিতর।
একটি মিনি সাইজের খাল রয়েছে পার্কের ভিতরে।খালের উপরে রয়েছে কয়েকটি ব্রিজ।ব্রিজের উপর ছবি গুলো খুবি সুন্দর হয়েছিল।খালের পাশে বাউন্ডারি দিয়ে ঘেরা জায়গায় কিছু হরিন দেখতে পেলাম।বড় ছোট মিলিয়ে ২০-২২ টি হরিণ ছিলো।দেখতে পেলাম মহা মূল্যবান রক্তকরবী গাছ।যেটা আমি জীবনে প্রথম দেখতে পেয়েছিলাম।

bb.jpg

b6.jpg

b4.jpg

সময় ১২ টা বেজে গেলে আমরা শুরু করলাম আমাদের লঠারি অনুষ্ঠান। যেখনে সর্বমোট ১০ টি পুরস্কার ছিলো।আমি ৫ম পুরুস্কার টি পেয়েছিলাম।

b5.jpg

সময় দুপুর ১ টা। আমরা বেরিয়ে পড়লাম দুপুরের খাবার খাওয়ার উদ্দেশ্য। যশোরের সবচেয়ে ভালো রেস্তোরাঁ পাঁচ-ফোঁরন এ আমরা দুপুরের খাবার শেষ করে নিলাম।

bbb.jpg

আমরা যশোরের আরো বিভিন্ন স্থান ঘুরে বিকাল ৫.৩০ ট্রেন ধরলাম।ফিরতে ৮.৩০ সময় হয়ে গিয়েছিলো।ওই সময়ে সবাই ক্লান্ত শরীর নিয়ে ট্রেনে ঘুমিয়ে পড়েছিল।এটাই ছিলো একদিনের জার্নি।

bbbb.jpg

সবাইকে ধন্যবাদ

logo (bangla blog).png

arif red.jpg

আমি-আরিফুল ইসলাম।স্টিমিট আইডি-@apulam. জাতীয়তা:বাংলাদেশী।বর্তমানে আমি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত ডিসিপ্লিন এ ২য় বর্ষে অধ্যায়নরত।২০২৫ সালের ফেব্রয়ারি মাসের ৪ তারিখে যুক্ত হয়েছি।ফটোগ্রাফি করার প্রবল ইচ্ছাশক্তি রয়েছে।পাশাপাশি ভ্রমন পছন্দ করি।স্বপ্ন দেখি বিশ্ব ভ্রমন করার।
Sort:  
 9 months ago 

যশোর ভ্রমণের বর্ণনা পড়ে মনে হলো যেন আমিও সেই ট্রেনযাত্রার সঙ্গী ছিলাম।সবুজ মাঠ, গান, আড্ডা ,একটা প্রাণবন্ত পরিবেশের ছবি গুলো দেখে যেন চোখের সামনে ভেসে উঠলো। বিনোদিয়া পার্কের বিবরণও বেশ চমৎকার! জলপরীর মূর্তি, মিনি চিড়িয়াখানা, বিশাল দাবা কোট,সব মিলিয়ে সত্যিই দারুণ একটা জায়গা। লটারি জেতার আনন্দ আর পাঁচ-ফোঁরনে জম্পেশ খাওয়া-দাওয়া—সবকিছু একসাথে অসাধারণ একটা অভিজ্ঞতা মনে হলো , ধন্যবাদ।