খুশির বিয়েতে আমার কাটানো কিছু মুহূর্ত // পর্ব-০২(শেষ পর্ব)।
হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ সোমবার। ০৪ ই মার্চ, ২০২৪ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।
প্রথমে বর যাত্রীদের কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ দেয়া হলো। তারপর তাদের সবাইকে স্পেশাল ভাবে নাস্তা করানোর কার্যক্রম শুরু করেছিল। শুধু বরযাত্রীদেরই নয় আশপাশের এলাকা থেকে আগত সকল আত্মীয়-স্বজনদেরকে একত্রে বসিয়ে নাস্তা করানো হয়েছিল। নাস্তা খাওয়ার সময় আমাদের সকলের অনেক বেশি আনন্দ অনুভব হয়েছিল। বিশেষ করে রাজের ছোট মামা ও খালাকে নিয়ে স্পেশাল আনন্দের ব্যবস্থা করেছিলাম।
আপনারা উপরের ছবিতে যাদের দেখছেন তারা হলো রাজের আপন মামা এবং রাজের ছোট নানার মেয়ে। ওদের আবার পারিবারিকভাবেই বিবাহের কথাবার্তা চূড়ান্ত করে রেখেছে। ওদের দুজনার পরিণত বয়স হওয়ার সাথে সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেওয়া হবে। আর ওদের নিয়েই আমি ওখানে বেশ হাস্যকর একটি পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলাম। বিশেষ করে রাজের খালা রাজের মামার মুখে মিষ্টি দিতে চেয়েছিল, কিন্তু রাজের মামা বলেছিল দুলাভাইয়ের মুখে বেশি করে মিষ্টি দে। তারপরেই তো সকলের মুখে হি হি হি। আমি বললাম দাও আমার মুখেই মিষ্টি দাও কিন্তু মনে রেখো আমি কিন্তু বিয়ে করতে পারবো না। আর সে কথা শুনে তো সকলেই হা হা করে বাঁশ ভাঙ্গা হাসি দিল। আমার ছেলে কিছু না বুঝেও সকলের সাথে তাল মিলিয়ে পোকায় খাওয়া দাঁত বের করে হাসতে লাগলো। আর সকলকে হাসানোর জন্যই ছিল আমার এই ছোট্ট আয়োজনটা।
নাস্তা খাওয়া শেষ করে আমরা সকলেই অল্প সময়ের জন্য বিশ্রাম নিয়েছিলাম। তারপর শুভ বিবাহের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। শুভ বিবাহের কার্যক্রম শুরু করার পরে আমাকে মেয়ের পক্ষ থেকে বিয়ের সাক্ষী হওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু আমি উক্ত শুভ বিবাহের সাক্ষী হতে একেবারেই নারাজ ছিলাম। কারণ এরকম শুভ বিবাহের সাক্ষী হতে হয় স্থানীয় সমাজের মন্ডলদের। তারপর আমার পরামর্শে উক্ত স্থানের মন্ডল এবং খুশির বড় আব্বুর ছেলে খুশির বিয়ের সাক্ষী হলো। নগদ কুড়ি হাজার এক টাকা দেনমোহরের বিনিময়ে শুভ বিবাহের কার্যক্রম সুসম্পন্ন হলো। তারপর আমরা সকলেই সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা করলাম যাতে নতুন দম্পতির জীবন সুখী ও সমৃদ্ধশালী হয়। এরপর খাওয়া দাওয়া শেষ করে হাত ধোয়ার পর্ব চলে আসলো। খুশির ছোট বোন এবং তার চাচাতো বোনেরা আমার বেয়াই এর হাত ধোয়ানোর সাথে সাথে আমার হাতও ধোয়ানো শুরু করেছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল তাদের নতুন দুলাভাই এবং আমার কাছ থেকে বড় অংকের টাকা আদায় করা। কিন্তু আমি কৌশল করে টাকা দেওয়ার বিষয়টা সম্পূর্ণরূপে ঢেলে দিয়েছিলাম আমার নতুন বেয়াইয়ের উপর। পুরো 1700 টাকা দিয়ে হাত ধোয়ানোর কেস মেটাতে হয়েছিল আমার নতুন বেয়াইকে।
তারপরে সকল কার্যক্রম শেষ করে যখন আমার বেয়াই আমার বেয়াইনকে নিয়ে গাড়িতে উঠবে তার কিছুক্ষণ পূর্বে তাদের দুজনকে পাশাপাশি বসিয়ে মিষ্টি খাওয়ানোর পর্বটা শেষ করা হয়েছিল। আমার বেয়াইনের ইচ্ছে ছিল ক্ষীর খাওয়ানোর অনুষ্ঠানে আমার হাতের ক্ষীর খাওয়া। কিন্তু সেটা অনাকাঙ্খিতভাবে সম্ভব হয়নি। তাই আমার বেয়াইনের বিয়ের দিনে শেষ আনন্দটুকু আমার মাধ্যমেই হয়েছিল। প্রথমে আমি আমার বেয়াইয়ের মুখে মিষ্টি দিয়েছিলাম। কিন্তু এতটা সহজে আমার বেয়াই এর মুখে মিষ্টি দিয়েছিলাম না। যখন মিষ্টি খাওয়ার জন্য বেয়াই মুখ হা করেছিল ঠিক তখনই আমি মিষ্টি দেয়া থেকে বিরত হয়েছিলাম। আর এরকম দৃশ্য দেখে সকলের মতো বেয়াইয়ের নতুন বউ পর্যন্ত হেসেছিল। তারপর এরকম হাস্যকর ভাবে বেয়াইয়ের মিষ্টি খাওয়ানোর পর্ব শেষ করে বেয়াইনকে মিষ্টি খাওয়ানোর পর্ব শুরু করেছিলাম। কিন্তু মিষ্টি খাওয়ার জন্য বেয়াইন তার মুখ আর হা করে না। বেয়াইন মনে করেছিল হয়তো তার স্বামীর মতো অবস্থা তাকেও করবো। কিন্তু অনেকবার বলার পরে বেয়াইন যখন তার মুখ চিতল মাছের মতো হা করলো তখন একবারই একটা মিষ্টি মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম। মিষ্টির কিছু অংশ বেয়াইনের মুখের মধ্যে গেল এবং কিছু অংশ বাইরে পড়ে গেল। কিন্তু মিষ্টির মধুর রস আমার বেয়াইনের নতুন শাড়িতে লেগে গেল। আর এই বিষয়টা নিয়ে সব থেকে বেশি হাসির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল ওই সময়। কপালটা ভালো যে, ওই সময় কোন বয়ঃজৈষ্ঠ মানুষ উপস্থিত ছিল না। যাহোক, বিয়ের দিনের শেষ মুহূর্তটুকু এভাবেই অত্যন্ত আনন্দের সাথে কাটিয়েছিলাম।
তারপর সকল কার্যক্রম শেষ করার পরে নতুন দম্পতিকে সামনে রেখে আমরা আবার ফটোসেশন এর কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। অনেকেই তাদের মোবাইল ফোনে আমাকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্নভাবে সেলফি উঠালো। আমিও আমার মোবাইল ফোন দিয়ে অনেকগুলো ছবি তুললে রাখলাম। ফটোসেশন এর কার্যক্রম শেষ হওয়ার সাথে সাথে বিদায়ের ঘন্টা বেজে গেল। আমার বেয়াই ও বেয়াইন পরিবারের পিতা-মাতা ও অন্যান্য অভিভাবকদের সালাম করলো এবং দোয়া নিলো। আর এমন মুহূর্তে আমার বেয়াইন সহ সকলেই অত্যন্ত আবেগী হয়ে উঠলো। সকলের চোখ দিয়ে নোনা জল গড়াতে লাগলো। সত্যি বলতে মেয়েদের জন্য নিঃসন্দেহে অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ হল নিজের জন্মস্থান, নিজ বাসস্থান ত্যাগ করে অন্যের বাসস্থানকে, অন্য বাড়ির পরকে আপন করে নেওয়া। আর এরকম বিদায়ের মুহূর্তে বাংলার প্রতিটি মেয়ের চোখ অশ্রুতে ভিজে অস্বাভাবিক কিছুই নয়। গাড়িতে ওঠার একেবারেই সামান্য পূর্বে খুশি আমাকে বলেছিল, "ভাইয়া আমাকে দেখতে আমার শ্বশুর বাড়িতে যাবেন"। খুশির এই কথাটি শুনে এবং খুশির মুখের দিকে তাকিয়ে আমিও মুহূর্তের মধ্যে ইমোশনে জড়িয়ে গেলাম। সত্যি বলতে আমার আপন কোন বোন নেই কিন্তু খুশি আমার আপন বোনের মতোই ছিল। তারপর একেবারেই শেষ সময় আমার বেয়াইকে বলেছিলাম, "বেয়াই খুশিকে দেখে রেখো এবং তার প্রতি সবসময় খেয়াল রেখো"।
আমার পরিচয়।
আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।
১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।
সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।
খুশির বিয়েতে কাটানো আপনার সুন্দর মনের অনুভূতি আপনি আমাদের মাঝে অসাধারণভাবে উপস্থাপন করেছেন। বেশ ভালো লাগলো তার বিয়ের অনুষ্ঠানের বিষয়টা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন দেখে। দুজনাকে বেশ মানিয়েছে। দোয়া করি তাদের দাম্পত্য জীবন যেন সুখী হয়।
অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
বিয়ে বাড়িতে গেলে আনন্দ তো হবেই। কারণ আনন্দ প্রহর মুহূর্তে সবাই খুশি থাকে আর এই মুহূর্তগুলো অনেক বেশি ভালো লাগে। দারুন সময় কাটিয়েছেন দেখছি। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ঠিকই বলেছেন বিয়ে বাড়ি মানেই আনন্দ। আর এরকম বিয়ে বাড়িতে আনন্দের কোন সীমা থাকে না।
বিয়ে বাড়ি মানে এই খুশি আর আনন্দ৷ সেখানে খুব সুন্দর সুন্দর কিছু সময় আমরা সকলে অতিবাহিত করি৷ আপনিও খুশির বিয়েতে খুব সুন্দর কিছু মুহূর্ত উপভোগ করেছেন এবং তা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন৷ যেভাবে আপনি এখানে সবগুলো মুহূর্ত শেয়ার করেছেন তার বর্ণনার পাশাপাশি সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফিও শেয়ার করেছেন৷ অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য৷
আমার পোস্টটি পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।