শৈশবের স্মৃতিচারণ-খেজুরের রস🥰
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার আজ তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি।আশাকরি আমার আজকের ব্লগ টি আপনাদের ভালো লাগবে।
খেজুরের রস অনেক উপকারী এবং পুষ্টিকর যা শীতের দিনে খেজুরের রস আমাদের শরীরে শক্তি এনে দেয়।শীতের দিনে খেজুরের রস সকলের পছন্দের শীর্ষে থাকে।খেজুরের রসের কথা মনে পড়লে মনে পড়ে যায় শৈশবের কথা।শীতের দিনে ভোরবেলা খেজুর গাছের টাটকা রস খাওয়ার আনন্দটাই ছিল অন্য রকমের।আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন দেখতাম ভোরবেলা দুটো মাটির কলসি ভরে কাঁধে করে খেজুরের রস এনে গ্রামে বিক্রি করা হতো।একটি বড় গ্লাস ভর্তি খেজুরের রসের দাম ছিলো এক থেকে দুই টাকা।তারপর সময়ের ব্যবধানে আস্তে আস্তে সেটা ৫ টাকায় পরিণত হলো।আমরা খুব ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে বসে থাকতাম কখন রসওয়ালা আসবে,কখন আমরা টাটকা খেজুরের রস খেতে পারবো!আমাদের বাড়িতে যখন খেজুরের রস আনতো দেখা যেতো একটা কলসির রস পুরোটাই আমাদের বাড়িতেই লেগে যেতো।তার কারণ হলো আমাদের যৌথ পরিবার সদস্য সংখ্যা অনেক বেশি তাই যে কোন কিছুই হোক না কেনো সবকিছুই একটু বেশি পরিমাণে লাগে।
প্রথমে আমরা টাটকা রস খেতাম তারপরে কিছুটা জ্বাল দিয়ে চা বানিয়ে খাওয়া হতো আবার কিছুটা দিয়ে পায়েস রান্না করতো এভাবেই আমরা খেজুরের রস খেয়েছি। টাটকা রসটা খুব একটা খেতে দিত না কারণ শীতের দিনে ঠান্ডা লাগবে বলে সেজন্য রস দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করে আমাদেরকে খাওয়ানো হতো।হে ছোটবেলার দিনগুলো খুবই মিস করি।এভাবেই আমাদের কেটেছে ছোটবেলা গুলো।তারপর মাঝে কিছুদিন খেজুরের রস খাওয়া একেবারেই বন্ধ হয়ে গেলো নিপা ভাইরাসের কারণে।চারদিকে যে পরিমাণে নিপা ভাইরাস ছড়িয়ে গেল তাতে করে খেজুরের রস খাওয়া একবারেই বন্ধ হয়ে গেলো প্রায় ৪-৫ বছর আর খেজুরের রস খাওয়া হয়নি।তারপর শহরে থাকার কারণে আরো অধিক সময়ে এই সুন্দর জিনিস টি থেকে আমরা বঞ্চিত ছিলাম।
গতকাল হঠাৎ করেই আমার প্রতিবেশী এক ভাবির ছেলে সকাল সকাল গেইট নক করছিলো!আমি তখনও বিছানা থেকে উঠিনি ছুটির দিনগুলো একটু বেলা করেই ঘুম থেকে ওঠা হয়।গেইট খুলেই দেখি প্রতিবেশী সাঈম ওকে দেখে আমি একটু অবাক হলাম! তার কারণ আমরা এখানে খুব বেশিদিন হলো আসিনি সেভাবে কারো সাথে মেশার সুযোগও এখন পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি তাই প্রতিবেশী কেউ আমার বাসায় আসবে এটা একটু অবাক হওয়ার মতোই ব্যাপার!যাইহোক তারপরও আমার হাতে একটি বরফ বোতল ধরিয়ে দিলো আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম এতে কি আছে? তখন ও বললো আন্টি আমরা ভোরবেলা সব বন্ধুরা মিলে খেজুরের রস খেতে গিয়েছিলাম সেখান থেকে খেজুরের রস এনেছি তাই ভাবলাম আপনাদেরকে দিয়ে যাই,আমি আসলে ভাবতে পারছিলাম না কি করা উচিত!যাইহোক ও ছোট মানুষ শখ করে এনেছে তাই আর আমি না করতে পারলাম না।আমি ওকে টাকার কথা জিজ্ঞেস করলাম কত টাকা দিতে হবে?তখনও লজ্জা পেয়ে বললো কি বলেন আন্টি!টাকা কেনো দিতে হবে? আমি অনেকগুলো এনেছি তাই ভাবলাম আপনাদের কেউ দিয়ে চাই আপনারা সবাই মিলে খাবেন এটাই আমার আনন্দ।আসলে তখন তার কিছু বলার থাকে না,শুধু থ্যাঙ্ক ইউ জানিয়ে দিলাম।তারপর বাসায় এসে বসতে বললাম কিন্তু ও বসতে চাইছিলো না বললো আন্টি আজকে না আরেকদিন আসবো বলে চলে গেলো।
অনেক বছর পর খেজুরের রস হাতে পেয়ে সত্যিই আমি খুব আনন্দিত হয়েছিলাম।এটা একটি সাধারণ জিনিস কিন্তু এর সাথে শৈশবের অনেক স্মৃতি ও অনেক ভালোলাগার মুহূর্ত জড়িয়ে আছে।সাথে সাথেই আমরা সবাই মিলে খেজুরের রস খেলাম এত পরিমানে টেস্টি ছিলো এতো মিষ্টি তা বলার মতো নয়।অনেকদিন পর টাটকা খেজুরের রস খেয়ে খুবই তৃপ্তি অনুভব করেছিলাম।খেজুরের রস খাওয়ার পর আবারো মনে মনে সাঈম'কে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানিয়েছি। আমি মানুষ হিসেবে কেমন জানি না তবে যেখানেই থাকি আমার আশেপাশের সবাই কেন জানি আমাকে খুবই ভালোবাসে এবং সবাই বেশ আপন মনে করে এটাই আমার কাছে পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার বলে মনে হয়।সবই তাঁর কৃপা।🙏
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
প্রোমোশন লিংক
সত্যি খেজুরের রসের কথা গুলো পড়ে আমিও শৈশবে চলে গিয়েছিলাম।আমারা আগে খেজুর গাছের নিচে আ করে দাড়িয়ে থাকতাম কখন এক ফোঁটা রস এসে মুখে পড়বে দিনে হাড়ি লাগাতো না আর একটু করে পরতো আমরা খেতাম।খেজুরের রসের চা খাওয়া হয়নি কখনো আপনার প্রতিবেশীর কল্যানে খেতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট টি ভাগ করে নিয়েছেন জন্য।
একদম ঠিক কথা বলেছো আমরাও তো ছোটবেলায় এরকম করতাম খেজুরের গাছের নিচে দাঁড়িয়ে থাকতাম!আমাদের পুকুর পাড়ে দুইটা খেজুরের গাছ ছিলো তুমি কি দেখেছিলে?ওই গাছগুলোতে তেমন কখনো রস কাটা হয়নি তবে মনে পড়ে দুই একবার গাছ কাটা হয়েছিল রসের জন্য তখন আমরা গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম।সত্যিই আমাদের ছোটবেলা গুলো কতোই না মজা ছিলো।
ছোটবেলায় আমাদের পরিবারেরও ঠিক এভাবে খেজুরের রস দিয়ে বিভিন্ন কিছু তৈরি করে খেতে দেখা গেছে। প্রথমত খেজুরের রস হাতে পেলেই এক গ্লাস খেয়ে নিতাম সবাই মিলে। এরপর বাকি রস দিয়ে বিভিন্ন কিছু হতো। যাইহোক আপনার এই পোস্ট যেন সেই দিনের কথা মনে করে দিল।
আপনি অনেক সুন্দর স্মৃতি স্মরণ করেছেন এই খেজুরের রস খাওয়া কে কেন্দ্র করে। এখন শীতের সময় চলে এসেছে। এখনই খেজুরের রস খাওয়ার উপযুক্ত সময়। তবে হে খেজুরের রস শুধু আমরা এই খাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখি নাই, বিভিন্ন কিছু তৈরি করেছি এই দিয়ে। অনেক ভালো লাগলো আপু আপনার পোস্ট পড়ে।
সময়ের সাথে সাথে সব কিছুর দাম বেড়ে যাচ্ছে। খেজুরের রস খাওয়ার অভিজ্ঞতা আমার নেই। তবে অনেকের কাছে শুনেছি শীতের সকালে খেজুরের রস খাওয়ার মজাই আলাদা। ভালো লাগলো আপু আপনার পোস্ট পড়ে।
তাহলে তো আপু আপনি অনেক মজা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন,এই মজার কথা বলে বোঝানো সম্ভব নয়।একবার খেয়ে দেখবেন এটা খেতে যতো না টেস্ট কিন্তু এই ভালোলগার অনুভূতি টা তারচেয়ে অনেক গুণ বেশি।
শীতকালে কুয়াশা ঘেরা সকালে খেজুর গাছ থেকে টাটকা রস পেরে খাওয়ার মজাই আলাদা। ছোটবেলায় কত খেয়েছি কিন্তু এখন তো আর পাওয়া যায় না। আপনি তো দেখছি ইতিমধ্যেই খেয়ে ফেলেছেন। এ বছর এখনো রস খাওয়া হয়নি। দেখেই খেতে ইচ্ছা করছে। আর খেজুরের রসের পায়েসের কথা কি আর বলবো। আহা!ভালো লাগলো আপনার রস খাওয়ার মুহূর্ত পড়ে।
জাস্ট ওয়াও আপু আপনি খেজুরের রস নিয়ে অনেক সুন্দর একটি টপিক আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন যা পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। এবং পাশাপাশি আমার সেই ছোটবেলার কথাও মনে পড়ে গেল। শীতের দিন কুয়াশা ভেজা সকালে বাবার কাছ থেকে দুইটা টাকা নিয়ে বাজারে চলে যেতাম খেজুরের রসের সাথে বন রুটি মিলিয়ে খাওয়ার জন্য। তখন এক টাকা দিয়ে চার গ্লাস খেজুরের রস পাওয়া যেত এবং দুটি বোন রুটি পাওয়া যেত। এই দিনগুলি আজ আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গিয়েছে। যাইহোক আপু আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে আমার ছোটবেলার স্মৃতিগুলো মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য।
আগে খেজুরের রস খুবই কম দামে পাওয়া যেতো আর এখন যেমন দাম বেশি তেমন সচারাচর পাওয়াও যায় না।আপনার ছোটবেলার কথা গুলো জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া।ধন্যবাদ।
খেজুরের রস আমার ভীষণ পছন্দের একটা খাবার। আমাদের বাড়িতে একটি খেজুর গাছ ছিল প্রতি বছর শীতের সময় আমি খেজুরের রস খেতাম। খেজুরের রস খাওয়াটা শৈশবের সময়টা মনে করিয়ে দেই। পোস্টটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো আপু ধন্যবাদ।