আমার কাছে আমি ভীষণ দামী🙂
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি,সুস্থ আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার আজ তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি।আশাকরি আমার আজকের ব্লগ টি আপনাদের ভালো লাগবে।
লাইফে বাঁচতে হলে চলার পথে বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কখনো সে চলার পথ হয় দুর্গম গিরিপথের ন্যায়, কখনো আবার ধারালো সূচের মতো। এজন্যই অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এবং বিপদ আপদ কে উপেক্ষা করে সফলতার পথে এবং সাফল্যময়ী জীবনের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সর্বপ্রথম নিজেকে ভালোবাসতে হবে। যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে এবং সর্বোপরি নিজের যত্ন নিতে হবে।তার কারণ হলো আমি আমার কাছে ভীষণ দামী।এই পৃথিবীতে কেউ কারো আপন নয়,সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত।সবাই শুধু নিজের প্রয়োজনে আপনাকে ব্যবহার করবে।যতোদিন নিজের স্বার্থ হাসিল না হবে ততোদিন আপনার খুব কদর করবে দিনে হাজার বার আপনার খোঁজখবর রাখবে। তখন আপনি তাঁর কাছে আপনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তিতে পরিণত হবেন।তারপর যেদিন তার কার্য সিদ্ধি হবে তারপর থেকে দেখবেন তার পুরো চরিত্রটাই পরিবর্তন হয়ে গেছে।তখন সে আর আপনার খোঁজখবর নেওয়া কামিয়ে দিবে তারপর আস্তে আস্তে একেবারেই সবকিছু বন্ধ করে দিবে আর একটা সময় গিয়ে তো এমন কিছু করবে যাতে আপনি নিজে থেকেই তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করতে বাধ্য হবেন।এটা আপনার আমার সবার সাথে প্রতিনিয়ত ঘটে চলছে।
আমি ছোটবেলা থেকেই খুবই মানুষের সাথে মিশতে পছন্দ করি এবং অল্প সময়ে সবাইকে আপন করে নেওয়ার মতো ক্ষমতা হয়তো ঈশ্বর আমাকে দিয়েছেন।আমার পরিবার আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব প্রতিবেশী এমন কেউ নেই যে তারা আমাকে দ্বারা উপকৃত হয়নি।আমার মনে হয় আমার জ্ঞান বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে এমন কোনো খারাপ কাজ করেছি যার জন্য অন্য কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তার জন্য আমি অপরাধ বোধ করেছি।আমি জ্ঞানত অবস্থায় কখনোই কারো কনো ক্ষতি করিনি বরং নিজের ক্ষতি করে হলেও মানুষের উপকার করেছি আর শেষমেশ আমি নিজেই খারাপ হয়েছি বারংবার।
তারপরও আমি মানুষের সাথে কখনোই খারাপ আচরণ করিনি নিজের কষ্ট হলেও সবার সাথে সমান ভাবে ভালো ব্যবহার করেছি এবং ভালোবেসেছি।বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমরা কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হই আর তখন নিজেদের ভুল গুলো বুঝতে পারি।কিন্তু তখন আর আমাদের নতুন করে নিজেকে পরিবর্তন করার সময় বা সুযোগ থাকে না।২০২৪ সালের মাঝামাঝি থেকে শেষ পর্যন্ত যে পরিমাণ বাস্তবতার সম্মুখীন হয়েছি তাতে করে জীবনের চরম মুহূর্ত বলা চলে।প্রথমত নিজের শহর পরিচিত মানুষজন ছেড়ে নতুন জায়গায় আসা তার কয়দিন পরেই দেশের ভয়ানক অবস্থা স্বামীর জীবনমরন পরিস্থিতি তৈরি হয়,নিজেদের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা।স্বামীর বিপদের দিনে তার পাশে থাকতে না পারা দূর থেকে শুধু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া আর কিছুই করার ছিলো না।ঐ সময় অনেক মানুষ কে খুব ভালোভাবে চিনতে পেরেছি কে আপন আর কে স্বার্থের জন্য আমাদেরকে ব্যবহার করেছে।তারপর বদলী জনিত কারণে বেতন বন্ধ হয়ে যায়।আমরা যারা বেতন নির্ভরশীল মানুষ আমাদের মাসিক যে বেতন পায় তা দিয়েই সারা মাস চলতে হয় এবং এটার উপরই আমার জীবন অতিবাহিত হয়।সেখানে যদি তিন মাস ধরে বেতন বন্ধ থাকে তাহলে সাংসারিক খরচ বাচ্চাদের লেখাপড়া নিজেদের খাওয়াপরা সবকিছুই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।আমরা এমন এক পর্যায়ে আছি যেখান থেকে কারো কাছে সাহায্য চাওয়াটা আমাদের জন্য খুবই লজ্জাজনক একটি ব্যাপার হয়ে যায়।সেদিক থেকে হাজার কষ্ট হলেও কিছু বলার থাকে না।সবকিছু নিয়ে যখন একেবারেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে একদম অসুস্থ হয়ে পড়ি।তখন আমার স্বামী আমাকে অনেক ভাবে বোঝাতে লাগলো যে এখন আমাদের খারাপ দিন এটা ক্ষণস্থায়ী একটা সময় গিয়ে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।আমরা তো না খেয়ে নেই তাহলে এত্তো চিন্তা করছো কেনো? আসলে বিয়ের পর থেকে বেতন পাওয়ার পর পুরো টাকাটা আমার হাতে তুলে দিয়ে আমার স্বামী নিশ্চিন্তে থাকতো।আর আমি হিসেব করে কোথায় কতো টাকা দিতে হবে কতো টাকা বাজারঘাট হবে সবকিছুই আমি নিজের হাতে করে আসছি। আর এটা এক দুই বছরের বিষয় না আজ ঊনিশ বছর ধরে এই নিয়মেই সংসার করে আসছি,তাই হঠাৎ করে বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খুবই হতাশ হয়ে পড়ি।বাসা ভাড়া বাচ্চাদের স্কুল কলেজ পড়াশোনা এবং সংসারের মাসিক খরচ বাদে আমার চিকিৎসা খরচ সবমিলিয়ে প্রতি মাসে ৪০ হাজার টাকা লাগে।তাই তিন মাসে লাখ টাকার উপরে চলে গেছে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য এটা খুবই কষ্টদায়ক হয়ে যায় কারণ আমাদের এত্তো টাকা জমানো নাই যে সেগুলো দিয়ে মাসের পর মাস চলতে পারবো তাই চিন্তা চলেই আসে।তারপরও ঈশ্বরের অশেষ কৃপা যে এখনো খেয়েপড়ে বেঁচে আছি।এসব নিয়ে চিন্তা করতে করতে কাজকর্ম কিছুই করতে পারিনি সেই সাথে শরীর মন সবকিছুই নষ্ট হয়ে গেছে।
আমার স্বামী-সন্তান সবসময়ই আমাকে বোঝায় যে আমাদের সবকিছুই ঠিক হয়ে যাবে তুমি শুধু শুধু চিন্তা করে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছো তাতে আরও বেশি ক্ষতি হচ্ছে।আমার মেয়েরা এতোটাই লক্ষ্মী যে ওরা বলে মা আমরা কষ্ট করে খাবো তারপরও কখনো কারো কাছে হেল্প নিবো না। দরকার হয় আমরা একটা ডিম ভেজে তিনজন খাবো তাও ভালো তুমি চিন্তা করো না।ওরা যখন এগুলো বলে তখন আমি সত্যিই মন থেকে অনেক সাহস পাই তখন কোনো সমস্যা আর সমস্যা মনে হয় না।ওদের মুখের দিকে তাকিয়ে সবকিছু ভুলে আবারও নতুন করে সবকিছু শুরু করেছি।সংসারের কাজকর্ম কমিউনিটিতে কাজ সময় দেওয়া সবকিছু করার চেষ্টা করছি।একটা জিনিস বুঝতে পারলাম দিনশেষে মানুষের চেয়ে টাকাটাই বেশি প্রয়োজন।আমি সবার কাছে শুধুই প্রয়োজন ছিলাম কিন্তু কখনো কারো কাছে প্রিয়জন হতে পারিনি।তাই এখন থেকে মনে করি আমি শুধু আমার কাছেই দামী।আর তাই আমার ভালো থাকাটা আমাকেই নিশ্চিত করতে হবে।
সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং পারিপার্শ্বিক মানুষের কথা চিন্তা না করে নিজের ভালো টা চিন্তা করবেন।তাতে করে আর কিছু না হোক দিনশেষে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারবেন যে আমি ভালো আছি সুখে আছি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনি কিন্তু অনেক সুন্দর কথা বলেছেন আজকের এই পোষ্টের মাঝে। মানুষের জীবন চলার পথে অনেক কিছুর সম্মুখীন হতে হয়। তাই এক কথায় বলতে গেলে মানুষের জীবন সংগ্রামী ময়। তাই এই জীবনে নিজে সুস্থ থাকা ভালো থাকা সব কিছুর মধ্যে রয়েছে এক অন্যরকম অনুভূতি। আর নিজের এই পথ চলার মধ্যে নিজেই নিজের সম্পদ। সবকিছু সম্মুখে নিজেকেই হতে হয়। তাই নিজের মূল্যায়ন নিজেকেই তৈরি করতে হবে।
জ্বি ভাইয়া, মানুষের জীবন সবসময়ই সংগ্রামের হয়ে থাকে একেক জনের সমস্যা একেক রকমের।তাই আমাদের উচিত সকল সমস্যা উপেক্ষা করে নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া।ধন্যবাদ ভাইয়া।
প্রোমোশন লিংক
যে নিজেকে দাম দিতে পারে না সে কখনোই কোন জায়গায় দাম পায় না। আসলে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেকে মূল্যায়ন করাটা অনেক জরুরী।যেহেতু জীবনে আসা প্রতিটি বাধায় নিজেকেই প্রতিরোধ করতে হয়, তাই নিজেকে ভালো রাখাটা সবথেকে বড় বড় বিষয়। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো আপু। ধন্যবাদ অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
অনেক ভালো লাগলো আপু আপনার এই পোস্ট পড়ে। আপনার সন্তানরা আপনার কষ্ট দুঃখ বোঝে এবং তারা এত লক্ষ্মীর মত কথা বলে শুনি তো আমারই ভালো লাগলো। যে সন্তানরা পিতা-মাতার দুঃখ বুঝে তারা মানুষের মত মানুষ হয়। দোয়া করি বাবুদের জন্য। আর এটা ঠিক নিজেই নিজের সম্পদ। তাই নিজের কাছে দামি হয়ে উঠতে হবে যে কোন মূল্যে যে কোন পরিস্থিতিতে।
হ্যাঁ আপু আমার মেয়েরা বর্তমান সময়ের বাচ্চাদের মতো নয়, ওরা সবকিছু বোঝে এবং খুবই লক্ষ্মী। দোয়া করবেন আপু যাতে মানুষের মতো মানুষ হয়।ধন্যবাদ আপু।
আপু আপনার কথাগুলোর সাথে আমি শতভাগ সহমত পোষণ করলাম। আমি নিজেও একবার এমন জীবন মরণ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পরেছিলাম, তখন আমার পাশে কাউকে পাইনি। যাইহোক সৃষ্টিকর্তা বিপদ দেন এবং তিনিই বিপদ মুক্ত করেন। উপর ওয়ালা আপনাকে ঠিক আগের মতো সবকিছু সুন্দরভাবে গুছিয়ে নেয়ার তৌফিক দান করুন এই কামনা করছি। দিনশেষে শুধুমাত্র আমরা নিজেরাই নিজের কাছে দামী।
জ্বি ভাইয়া বিপদে পড়লে তবেই না মানুষ চেনা যায়।দেশের অস্থিরতার পর এক সাথে ৩০ হাজার লোকের বদলী হয়েছে তাই কাগজপত্র করতেও তো সময়ের ব্যাপার তাই একটু সাময়িক সমস্যায় আছি।তবে ভগবান ভরসা সবকিছুই অল্প দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।জীবনের এই চরম বাস্তবতা না আসলে হয়তোবা মানুষ চিনতাম না এটার খুব দরকার ছিলো।দোয়া করবেন,ধন্যবাদ ভাইয়া।