কৈ মাছ বিক্রি করে পিকনিক || আমার বাংলা ব্লগ
আজ - শনিবার
ছোটবেলা থেকে মাছ ধরতে আমার অনেক ভালো লাগে। জীবনের যে কত মাছ ধরেছি তা বলে হয়তোবা শেষ করার নয়, আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার সেই ছোটবেলার মাছ ধরার কিছু স্মৃতি শেয়ার করব তবে চলুন শুরু করি । আমাদের এদিকে তেমন একটা নদী-নালা না থাকলেও খাল বিল হাওর, বাওর এগুলো প্রচুর রয়েছে। বিশেষ করে যখন অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হয় তখন হাওর বাওর গুলো পানিতে টই টুম্বুর করে । এবং কয়েক মাসের মধ্যেই ওখানে বিভিন্ন প্রকার মাছের দেখা মিলে তার ভেতরে উল্লেখযোগ্য কৈ মাছ, চ্যাং মাছ, বোয়াল মাছ , তেলাপিয়া মাছ এছাড়াও অনেক ধরনের ছোট মাছ। অন্যান্য মাছ যেমনি ধরা হোক না কেন কৈ মাছের প্রতি আমার অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করে কারণ কৈ মাছ খেতে যেমন আমি ভালোবাসি তেমনি এটি দেখতেও আমার অনেক ভালো লাগে। বলা যেতে পারে কৈ মাছ আমার একটা প্রিয় মাছ। কৈ মাছ ধরার আবার অনেক কলা কৌশল রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সিপ দিয়ে কৈ মাছ ধরা। মাছ ধরার জন্য সিপের মাথায় টপ ব্যবহার করে এবং সরিষা তেলের খৈল একসঙ্গে মিশিয়ে দিলে কৈ মাছ দারুন ওঠে।
আসলে সিপ দিয়ে মাছ ধরার জন্য অনেক ধৈর্যের প্রয়োজন যেটা আমার একেবারেই কম । যার কারণে আমি সিপ দিয়ে তেমন একটা মাছ ধরিনা তবে কারেন্ট জাল দিয়ে হাওর বাওরে গিয়ে আমরা বন্ধুবান্ধব মিলে প্রচুর মাছ ধরেছি। বয়স তখন হয়তোবা ১১ থেকে ১২ বছরের মধ্যে হবে তখন বন্ধু-বান্ধব সবাই মিলে একদিন সিদ্ধান্ত নেয়া হলো যে আজকে বিলে গিয়ে সবাই কৈ মাছ ধরবো । এবং তারপরে ওই মাছ দিয়ে সবাই মিলে পিকনিক করবো। তো যেমন কথা তেমন কাজ সবাই মিলে বাসা থেকে একটা বড় গামলা এবং একটা বড় হাড়ি নিয়ে আসলাম । আসলে গামলা দিয়ে পানি ছেকা হবে এবং হাড়িতে করে মাছ রাখা হবে। এবার বিলের ভিতর এসে একটা নির্দিষ্ট জায়গা নির্বাচন করলাম যেখানে মাছের আনাগোনা রয়েছে। তো দেখলাম একটি পুকুরের পাশে কিছু ঝোপঝাড় ছিল এবং ওর ভিতরে অনেকগুলো কৈ মাছ এবং শিং মাছ এর আনাগোনা ।তো ওই জায়গাটা আমরা সবাই মিলে কাদা দিয়ে আটকে ফেললাম এবং গোল করে বাধা দেওয়ার পরে।
এবার সবাই মিলে গামলা দিয়ে সেকতে শুরু করলাম। এভাবে প্রায় কয়েক ঘন্টা সেকার পরে পানি প্রায় শেষ হয়ে আসছিল এবং তখন ওইখানে যত মাছ ছিল সব দেখা যাচ্ছিল। 🤭 তারপরে আমি এবং রাসেল দুজনে মিলে মাছ ধরতে শুরু করলাম । এবং বাকি যেই কয়জন ছিল ওরা পানির সেকতে শুরু করল। এভাবে কিছুক্ষণ পানি সেকার পরে ওখান থেকে প্রায় ৫ থেকে ৬ কেজি কৈ মাছ এবং চেং মাছ পেলাম। এখন যেহেতু আমরা অনেক মানুষ ছিলাম তাই ভাবলাম আরেকটা ছোট্ট জায়গা সেকে কিছু মাছ নিয়ে সবাই মিলে একসঙ্গে মজা করে পিকনিক করব। তো এজন্য পাশের আরেকটি ছোট্ট জায়গায় একইভাবে পানি সাকার পরে ওখান থেকেও প্রায় দুই আড়াই কেজি মতো মাছ পেয়ে গেলাম। এখন আমরা যা প্ল্যান করে আসছিলাম সেই তুলনায় এখানে অনেক বেশি মাছ পেয়ে গিয়েছি। তারপরে সিদ্ধান্ত নিলাম যে এত মাছ দিয়ে পিকনিক করার চেয়ে এই মাছগুলো বিক্রি করে মুরগির মাংস দিয়ে পিকনিক করলে বিষয়টা বেশ দারুন হবে। তো তারপরে বাড়িতে ফিরে এসে ওই মাছগুলো কয়েকটা মানুষের কাছে বিক্রি করে দিলাম এবং ওখান থেকে প্রায়ই বারোশো টাকা মতো পেয়ে গিয়েছিলাম।
এবার মাছ বিক্রি করার পরে সবাই বাসা থেকে গোসল শেষ করে এসে চলে গেলাম মুরগি ক্রয় করতে। এবার মুরগি ক্রয় করে এনে বাড়িতে , বাড়িতে গিয়ে চাল তেল ইত্যাদি সরঞ্জাম গুলো সবার বাড়ি থেকে একটু ,একটু করে উঠিয়ে সবাই মিলে একসঙ্গে রান্না করে সেদিন পিকনিক করেছিলাম। আসলে বিষয়টা বেশ দারুন লেগেছিল আমার কাছে কারণ মাছ ধরতে গিয়ে মুরগি দিয়ে পিকনিক করলাম 🤭। তো এভাবেই আমরা প্রতিবছর আমাদের এলাকার বিভিন্ন জায়গার থেকে অনেক মাছ ধরি। বিশেষ করে যখন ধানের মাঠগুলো পানিতে ডুবে যায় তখন ওইখানে প্রচুর পরিমাণে মাছ হয়ে থাকে এবং ওখান থেকে ছিপ দিয়েও প্রতিদিন দুই থেকে তিন কেজি মাছ ধরা সম্ভব। অনেক সময় দেখা যায় যারা মাছ ধরতে অনেক ভালবাসে তারা অনেক দুরদুরান্ত থেকে আমাদের এলাকায় ছিপ দিয়ে মাছ ধরতে আসে। যাই হোক এই বিষয় নিয়ে অন্যদিন আরেকটি ব্লগ বানানো যাবে আজকে এ পর্যন্তই আবারো খুব শীঘ্রই দেখা হচ্ছে নতুন কোন পোস্টে ততক্ষণ সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন এটাই কামনা করি।
🫂ধন্যবাদ!!!🤵
ব্লগার | @emonv |
---|
[[🔉প্রিয় স্টিমিট ইউজারগন,,]]👩💻"ইমন ব্লগ"👩💻 এর পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। আমার নাম মোঃ ইমন রেজা। বর্তমানে আমি একজন মাধ্যমিক🏫 । আমি প্রায়শই নিজেকে আবিস্কার করি। কেননা এটা আমার কথায় এবং লিখাই নতুন স্বাদ যুক্ত করে, যার ফলে আমি নিজের সবথেকে ভালো টুকু আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে পারি। আমি প্রতিদিন একবার নিজের সাথে কথা বলি, কারণ এটা আমার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেয়। আমি ভ্রমণ করতে এবং ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। আমি প্রতিনিয়ত নতুন ,নতুন মানুষদের সাথে মিশে তাদের জীবনের অভিজ্ঞতার ভালোটুকু আমার জীবনে বাস্তবায়িত করতে পছন্দ করি।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
ছোটবেলায় আমিও নানার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে বড়শি দিয়ে অনেক মাছ ধরেছি। তবে কখনো হাওর বাওর কিংবা খাল বিলে গিয়ে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা হয়নি। তবে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য অনেক দেখেছি। যাই হোক ভাই, সেই ছোটবেলায় বন্ধুদের সাথে বিলে গিয়ে পানি ছেকে অনেকগুলোই কই মাছ ধরেছিলেন এবং ১২০০ টাকায় বিক্রিও করেছিলেন। আর সেই টাকা দিয়ে বন্ধুরা মিলে মুরগির মাংস দিয়ে খুব মজা করে পিকনিক খেয়েছেন, আর এমন ঘটনা সত্যিই স্মরণীয় হয়ে রয়। খুব ভালো লাগলো ভাই, কই মাছ বিক্রি করে পিকনিক খাবার সুন্দর গল্পটি পড়ে।
জি ভাই, গল্পটি আপনার কাছে অনেক ভালো লেগেছে এটাই আমার আসল প্রাপ্তি। ❤️
খুব সুন্দর একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার আজকের এই পোস্ট পড়ার মধ্য দিয়ে বেশ অনেক কিছু জানার সুযোগ হলো আমার। আসলে এমন ঘটনা জানলে বেশ ভালো লাগে।
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে ❤️, জানিনা কি, কি শিখতেন তবে কিছু শিখতে পেরেছেন এটা জেনে খুব ভালো লাগলো।
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। সত্যি আপনার পোস্টে দেখে কেমন হাসি পাচ্ছে তেমনি মনে হচ্ছে বেশ মজার কাহিনী লুকিয়ে আছে। মজার কাহিনীটা হচ্ছে মাছ বিক্রি করে পিকনিক আরে বাহ বিষয়টা বেশ ভালো লাগলো। কৈ মাছের দাম তো অনেক ভালো তাতে পিকনিকের আয়োজনটাও ছিল অনেক ভালো বেশ ভালো লাগলো। আরে বন্ধু তুমি দেখছি এই কৈ মাছ বিক্রি করে মুরগি দিয়ে আর দাওয়াত দিলানা কেমন হলো কও। তবে তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন হাস্যকর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
এবার পিকনিক করলে অবশ্যই দাওয়াত পাবা বন্ধু। ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য ❤️
দারুণ মজার পিকনিকের গল্প ভাইয়া।অসাধারণ সুন্দর গল্প।বন্ধুরা মিলে বেশ অনেক মাছ ধরেছেন এবং খুব ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে মাছ গুলো বিক্রি করে মুরগী এনে পিকনিক করবেন। বাড়ি বাড়ি তেল চাল তুলে মজা করে মুরগি দিয়ে পিকনিক খেয়েছেন এবং আমাদের সাথে তা স্মৃতিচারণ করলেন খুব ভালো লাগলো।ধন্যবাদ সুন্দর একটি শৈশবের স্মৃতিচারণ করা জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ আপু এমন চমৎকার একটি কমেন্ট করার জন্য।
কৈ মাছ আমারও একসময় অনেক প্রিয় মাছ ছিল ভাই। তাছাড়া ছোটবেলায় আমি যখন গ্রামে থাকতাম তখন আমি নিজেও কিন্তু বন্ধু বান্ধবের সাথে এরকম মাছ ধরতে যেতাম। তবে ভাই আপনাদের মাছ বিক্রি করে মুরগির মাংস কিনে পিকনিক করার কনসেপ্টটা কিন্তু আমার কাছে বেশ ভালই লাগলো। আমরা তো ঘর থেকে চাল বিক্রি করতাম এবং সেই টাকা দিয়ে পিকনিক করতাম। হা হা হা...😁😁