বন্ধুরা, কেমন আছো সবাই?
আমি বেশ আছি না ভালো না, বরং যন্ত্রণার মাঝে। আসলে মাঝে মাঝে এই রকম কিছু যন্ত্রনা সব কিছুকে আরো বেশী জটিল ও কঠিন করে তোলে। আমি একটু ব্যতিক্রম, এটা অন্তত সবাই বেশ বুঝে গেছো। কিন্তু একটা বিষয় তোমরা এখনো বুঝতে পারো নাই, আর সেটা হলো আমি মানসিক চাপ কিন্তু যন্ত্রণা কোনটাই সহ্য করতে পারি না। হ্যা, আমার সহ্য করার ক্ষমতা অনেক কম। তাই আমি ছোট বেলা হতেই একটু ভিন্ন ভাবে বেড়ে উঠেছি। আজ তোমাদের সাথে হয়তো ভাবছো একটু বেশী মজা করি, কিন্তু না বাস্তব জীবনে আমি এর চাইতেও বেশী মজা করি। সর্বদা সাধারণ কিছুর মাঝে অন্য রকম ফানি কিছু করার চেষ্টা করি, তাতে শুধু আমি না বরং উপস্থিত সবাই কিছুটা হলেও মজা পায়।
এর আগে তো আপনাদের বলেছি, মাঝে মাঝে কোথায় বেড়াতে যাওয়ার পূর্বে আপনাদের ভাবি বলেই দেয়, সেখানে গিয়ে কিন্তু কোন ধরনের পাগলামি করবে না, মানুষ হাসানোর কোন ধরকার নেই। চুপচাপ থাকবে, সবার সাথে সৌজন্যমূলক কথাবার্তা বলবে এর বাহিরে কিছু না। আমি আসলেই এসব নিয়ে কোন চিন্তা করি না, বরং নিজের মতো করে সব কিছুকে গন্য করার চেষ্টা করি। যেখানে যতটা সম্ভব মজা করার কিংবা নিজেকে আনন্দে রাখার চেষ্টা করি। আসলে যন্ত্রণা কিংবা মানসিক চাপ আমাকে খুব দ্রুত বিপর্যস্ত করে তোলে, আমি সেগুলোকে সামলে উঠতে পারি না। এই একটা বড় দুর্বলতা আমার জীবনে রয়ে গেছে, হয়তো সেটা দূর করা আমার পক্ষে সম্ভব না, হয়তো সেটা দূর করার মানসিকতা আমার মাঝে নেই, তাই আমি সেটা নিয়ে একদমই চেষ্টা করি না।
গতকাল বুষ্টার ডোজ নিয়ে বেশ কাহিল অবস্থায় আছি আমি, আসলে প্রথম দুই ডোজ সিনোফার্মার ছিলো বলে খুব একটা টের পাই নাই, যার কারনে বুস্টার ডোজ নিয়ে সবাই যখন নানা ধরনের যন্ত্রণার কথা বলতেছিলো, আমি মোটেও সেটা বিশ্বাস করি নাই। কিন্তু বুস্টার ডোজ নেয়ার পর বুঝতে পারছি, ব্যথা কাকে বলে এবং কি কি, সত্যি বেশ যন্ত্রণাদায়ক একটা দিন পার করছি আমি। আজকের অফিস এবং রোজা দুটোই মিস করেছি আমি। আজকের পোষ্ট লেখার ক্ষেত্রেও বেশ কষ্ট হচ্ছে তবুও চেষ্টা করছি কিছু লেখার। আজ যা বলছি বা বলবো সবই হবে উল্টা-পাল্টা এবং এলোমেলো, হয়তো কোনটার সাথে সামঞ্জস্য বা মিল খুঁজে পাবেন না। তো এ থেকে আরো একটা বিষয় স্পষ্ট ধারণা পেতে সক্ষম হবেন, সেটা হলো হাসি খুশি মানসিকতায় আমার লেখা কতটা ভালো হয় আর যন্ত্রণাদায়ক মানসিকতায় তা কতটা খারাপ হয়।
যাইহোক, আজ লিখতে চেয়েছিলাম প্রতারণা বা ধোকা নিয়ে কিছু কথা, কারন আমাদের জীবন আমরা প্রায় অন্যের দ্বারা ধোকায় যেমন পতিত হই ঠিক তেমনি নানাভাবে অন্যদেরকেও প্রতারণার ফাঁদে আটকে দেই। দেখুন আমরা যে বিষয়টির জন্য যোগ্য না বা যেটা অর্জন করার যোগ্যতা আমাদের মাঝে নেই, সেটাকে যখন ভিন্নভাবে অর্জন করার চেষ্টা করি, তখনই সেটাকে প্রতারণার ফাঁদে আটকে দেই। প্রতারণা কি শুধু আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে? না সেটা একদমই ঠিক না, বরং সেটা হতে পারে আপনার কথার দ্বারা, সেটা হতে পারে আপনার ব্যবহারের দ্বারা। যা আমরা নিছক কিছু প্রাপ্তির আশায় প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছি। আধুনিক প্রযুক্তির এই যুগে সেটা আরো বেশী সহজতর হয়েছে আমাদের জন্য। আমরাই চাইলেই কারো সাথে হাসি মুখে মিথ্যে বলে দিচ্ছি, প্রযুক্তির আড়ালে অন্যায়ভাবে কোন সুবিধা নিতে কুণ্ঠিতবোধ করছি না, বরং কিছু প্রাপ্তির প্রত্যাশায় আরো বেশী উৎসাহী হয়ে উঠছি।
কিন্তু কেন? আমরা যা প্রাপ্তির যোগ্য না সেটার ক্ষেত্রে কেন এতো বেশী আগ্রহী হয়ে উঠছি, কেন সেটা প্রাপ্তিতে অন্যদের ধোকা দিচ্ছি? আসলে প্রাপ্তির আশা আমাদের হৃদয়কে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে দিচ্ছে এবং আমাদের বিবেককে অবরুদ্ধ করে দিচ্ছে, যার কারনে প্রাপ্তির প্রত্যাশাটি ভালো না খারাপ সেটা বুঝার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলছি আমরা। তবে আমি এটাও দেখেছি শিক্ষিত মানুষগুলো এই ক্ষেত্রে বেশী অভিজ্ঞ, সার্টিফিকেটের ওজনে যাদের নাম অনেক বেশী ভারী হয়ে যায়, তারাই প্রতারণার অস্ত্রটি বেশী ব্যবহার করে থাকে। যাইহোক, প্রতারণার মাধ্যমে কিছু অর্জন করা সম্ভব হলেও সেটা খুব বেশী স্থায়িত্বশীল হয়না, এর অজস্র প্রমান আমাদের চারপাশে রয়েছে। তবুও আমরা সাময়িক এই প্রাপ্তির প্রত্যাশায় প্রতারণা করতে পিছপা হচ্ছি না, সঠিক বোধদয় হোক আমাদের, নিচু মানসিকতা হতে বেরিয়ে আসি আমরা, সেই প্রত্যাশায় একটা কবিতার কিছু অংশ আপনাদের সাথে শেয়ার করছি, এটা অনেক আগে লেখা হয়েছিলো কিন্তু তা আর শেয়ার করা হয় নাই।
মুচকি হাসিতে ভাবছো বিজয়ী
দিয়ে কাউকে মিছে ধোকা,
ধোকা দিয়ে হয়না কেউ বিজয়ী
হচ্ছো তুমি আরো বেশী অপরাধী।
নিজের কাছে বনছো দোষী
সাজছো তুমি অতি বোকা,
নিজেকে নিয়ে যাচ্ছো কোথায়
কিছু পাওয়ার লোভী মানসিকতায়।
অতি লোভে প্রতারণায় যাচ্ছ কেন ছুটে
নগন্য কিছু প্রাপ্তির লোভে অস্থির হৃদয়ে
ভেবে দেখো নিদারুণ ব্যাথায় দুঃখি তারা
লোভে পড়ে দিচ্ছো যাদের তুমি ধোকা।
কুৎসিত বাসনায় আক্রান্ত হৃদয়
জড়াচ্ছো তাই অসৎ প্রতারণায়
বিজয়ী হওয়ার নেশা তোমার
বিবেক অবরুদ্ধ মিথ্যে আশায়।
প্রতারণা ঠকবাজিতে হচ্ছো কেন দোষী?
নিছক মজার ছলে কাকে দিচ্ছো ফাঁকি?
সবার উপরে আছেন যিনি শ্রষ্ঠা
শেষ বিচারে পড়বে সেদিন ধরা।
ছলচাতুরি ধোকাবাজি এসো ছাড়ি সব
প্রতারণা শঠতা ছুড়ে ফেলি সব
ন্যায়ের সাথে থাকবো মোরা শপথ করি পাঠ
অন্যায়ের বিপক্ষে লড়বো মোরা হাতে রেখে হাত।
Image from Pixabay 1 and 2
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
সত্যি কথা বলতে যারা মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙে পড়ে তারাই মানুষের সাথে বেশি মিশতে পছন্দ করে। আর মানুষকে হাসাতে পছন্দ করে। কথায় আছে যে যত বেশি হাসে তার ভেতরে ততো বেশি কষ্ট লুকিয়ে আছে। আপনি আপনার এই কষ্টের মাঝেও অনেক সুন্দর একটি কবিতা উপহার দিয়েছেন। আসলে আপনি দুদিন থেকে অসুস্থ এটা আমরা সকলেই জানি। আমরা সকলেই আপনার সুস্থতা কামনা করছি। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আপনার এই কবিতা উপস্থাপন করেছেন। আসলে ধোকা এক প্রকারের নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা মানুষকে ধোঁকা দেয় তারা কখনো সফলতা অর্জন করতে পারে না। ধোঁকার মিথ্যে নেশা তাদের জীবনকে ধ্বংস করে দেয়।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু, আপনার সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য, সত্যি বলতে মানুষরা আমাদের এক সাইড দেখতে পারে কিন্তু আলো বিপরীতে আরো একটি সাইড যে থাকে সেটা কেউ বুঝতে পারে না। এই ক্ষেত্রে আপনাকে কিছুটা চালাক মনে হয়েছে আমার, হি হি হি
আসলে এটাই সত্য যে যে মানুষ সবাইকে হাসায় সে কিন্তু কষ্টে থাকে। তার কস্ট টা আমাদের মাঝে প্রকাশ করে না যে। চার্লি চাপলিন নামে একজন ছিল সে সবাইকে হাসাতে কিন্তু হাসির পিছনে তার কান্না লুকিয়ে থাকত।আসলে করোনা ডোজ দেয়ার পর ব্যথা কেন হয় বুঝতেই পারিনা। আমি তো প্রথম ডোজ দেওয়ার পর হাতটা তুলতে পারি নাই।
কষ্ট মানে ভাই খুবই কষ্টকার একটা বিষয়, ন্যায়ের বিষয়টি মানুষের কাছে আজ অন্য রকম কিছু বরং অন্যায়কে সবাই বেশী ভালোবাসে।
ভাইয়া আমি প্রথমেই আপনার সুস্থতা কামনা করছি। আপনি কয়েকদিন থেকেই খুবই মানসিক চাপের মধ্যে আছেন এটা আমরা বুঝতে পারছি। সৃষ্টিকর্তা যেমন আমাদের জীবনে কষ্ট দেন তেমনি সেই কষ্টগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে সহায়তা করেন। তবে যাইহোক ভাইয়া আপনি কিন্তু আজকে অনেক সুন্দর একটি কবিতা উপহার দিয়েছেন। আসলে যে যতই ধোকা দিক না কেন উপরে একজন আছেন তিনি সব কিছু দেখছেন। মানুষের চোখ ফাঁকি দেওয়া গেলেও তার চোখ কখনো ফাঁকি দেওয়া সম্ভব নয়। একদিন ঠিকই সেই কাজের বিচার হবে। অনেক সুন্দর একটি কবিতা লিখে আমাদের সকলের মাঝে উপহার দিয়েছেন এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া। সেইসাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। 💗💗💗💗
আসলে আমরা যদি আমাদের কর্মফল নিয়ে বিবেচনা করি এবং উপরের একজন সব দেখছেন এটা স্বীকার করতে পারি, তাহলে হয়তো আমাদের দ্বারা এতোটা অন্যায় হতো না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Please check my new project, STEEM.NFT. Thank you!
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
বুস্টার ডোজ নেয়ার পর ব্যথার এমন অনুভূতি হয় জানা ছিল না। ভেবেছিলাম ভ্যাকসিন এর কোর্স কমপ্লিট করব কিন্তু এখন তো ভয় লেগে গেল। যাই হোক প্রত্যেক ব্যক্তি তার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে বেঁচে থাকুক এটাই প্রত্যাশা। আমাদের সদা হাসিখুশি আর আনন্দ প্রিয় হাফিজুল্লাহ ভাই চিরকাল এভাবেই থাক এই প্রত্যাশা সব সময়।
হুম, সত্যি এ অন্য রকম একটা অভিজ্ঞতা এই রকম হবে বুঝতে পারলে সত্যি বলছি আমি বুস্টার ডোজ নিতাম না।
এই লাইনটি সকলের জীবনের ক্ষেত্রেই কার্যকর হলেই পৃথিবীটা সুন্দর হবে।
আপনার অবস্থা দেখে তো এখন আমারই ভয় লাগছে।
কিন্তু কে শুনে কার কথা, সবাই ধোকাবাজি বেশী বেশী করতে আগ্রহী। ভয় পেলে কাজ হবে না, ভয়কে জয় করে বুস্টার ডোজ নিতে হবে হি হি হি।
আশা করি ভাইয়া, ভালো আছেন? আপনি খুব সুন্দর করে সময় উপযোগী কবিতা লিখেছেন। খুবই অসাধারণ হয়েছে। আসলে বর্তমান সময়ে সবাই মুখোশ পড়ে থাকে মুখের আর মুখোশ পার্থক্য করা খুব মুশকিল হয়ে পড়ে। বর্তমান সময়ে সবাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ছলচাতুরি ধোকা বাজির আশ্রয় গঠন করেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিশেষ করে আপনার কবিতার এই লাইন গুলো আমার কাছে বেশ দুর্দান্ত মনে হচ্ছে।
এত অসাধারন কবিতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অন্তর অন্তর থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। ভালো থাকবেন ভাইয়া।