গল্প :-ভাগ্য যখন খারাপ হয় সব দিকে খারাপ।

in আমার বাংলা ব্লগ10 days ago

IMG_20241229_111930.jpg

ক্যানভা দিয়ে তৈরি,

হ্যালো বন্ধুরা,

সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে খুবই ভাল আছি।আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করব। আশা করবো গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে। আমাদের চারপাশে প্রায় বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। যেগুলো থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়ার অনেক বিষয় রয়েছে। এজন্য এই সকল বিষয়গুলো আপনাদের শেয়ার করলে আপনারাও অনেক কিছু শিখতে পারবেন। এমনকি অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে অবগত হবেন। এইজন্য আমি চেষ্টা করি বিভিন্ন বিষয়গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরার জন্য। এখন মানুষের আসলে ভরসা নেই। একেকজন একেক ধরনের, এবং একেক জন একেক ধরনের মানসিকতার।

আজকে আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব আমার এক ক্লাসমেটের জীবনের গল্প। আমাদের সাথে একটি মেয়ে পড়ালেখা করেছিল নাম তার শিল্পী। শিল্পী ক্লাস প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত একসাথে লেখাপড়া করলেন। শিল্পী খুব ভদ্র এবং ভালো একটি মেয়ে। শিল্পী যখন দশম শ্রেণীতে পড়তেন তখন তার বাবা এলাকার একটি ছেলের কাছে তাকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। যদিও শিল্পী অনেক চেষ্টা করেছে লেখাপড়া করার জন্য। এবং তার বাবা ওই ছেলের কাছে তাকে বিয়ে দিবে। আসলে ছেলেটি বিদেশী জাহাজে চাকরি করে। এই কারণে ছেলেটির অবস্থা খুব ভাল ছিল। এবং দশম শ্রেণী পড়ালেখা অবস্থা তাকে ওই ছেলের কাছে বিয়ে দিলেন।

বিয়ে হওয়ার পর শিল্পীর পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার পর শিল্পীর সংসার জীবনে মনোযোগ দেয়। এবং বিয়ের কয়েক মাস পর জামাই বিদেশ চলে যায়। এবং তার ঘরে একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়। এবং তার স্বামী প্রায় ছয় মাস পর পর দেশে আসে। এবং শিল্পী সংসার জীবন একদম সুখী ছিল। হঠাৎ করে বিয়ের দুই বছর পর তার জামাই বিদেশে জাহাজে কাজ করার সময় দুর্ঘটনা মারা যায়। সাথে সাথে শিল্পীর সংসার জীবন অন্ধকার নেমে আসলো। শুধুমাত্র একটি ছেলে তাও এক বছরের। পরিবারে শশুর এবং শাশুড়ি আছে। এবং শ্বশুর শাশুড়িকে দেখার মত লোকও নেই। এবং শিল্পীর পরিবার অনেক চেষ্টা করেছে তাকে এখান থেকে নিয়ে অন্য জায়গায় বিয়ে দেওয়ার জন্য।

তখন শিল্পী বলেছে তাদের ছেলেও নাই আমিও যদি চলে যাই শ্বশুর শাশুড়িকে এবং আমার ছেলেকে কে দেখাশোনা করবে। এদিকে শিল্পীর শ্বশুর শাশুড়ি বলতেছে তাকে তাদের কাছে থাকার জন্য। এবং তাকে তারা মেয়ে হিসেবে রাখবে। প্রয়োজনে বিয়ে বসলে তাকে তারা বিয়ে দিয়ে তাদের বাড়িতে রাখবে ছেলেটিকে। শিল্পী একদম জটিল সিদ্ধান্ত নিলেন। সেই আর দিয়ে বসবে না, এই ছেলেকে নিয়ে থাকবে। সত্যি বলতে শিল্পী এই ছেলে কে নিয়ে রয়ে গেল বিয়ে বসল না। এবং তার ভাগ্য সে মেনে নিলেন। যদিও শিল্পীর স্বামীদের জায়গা সম্পর্কে অনেক ছিল। তার শশুর ওইগুলো দেখাশোনা করতো এবং তাদের সংসার ভালই যাচ্ছিল।

এবং দেখতে দেখতে কয়েক বছর হয়ে গেল। এদিকে শিল্পীর ছেলেও আস্তে আস্তে বড় হয়ে গেল। এবং সে ইতিমধ্যে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। হঠাৎ করে শিল্পের ছেলের আবদার করেছে তাকে একটি বাইক কিনে দেওয়ার জন্য। তখন ছেলেটির দাদা বলতেছে একটিমাত্র নাতি তাকে একটি বাইক কিনে দিই। আর তাদের পরিবারে তো অন্য কোন ছেলে নেই। যদিও শিল্পী প্রথমে মানা করেছে তাকে বাইক কিনে না দিতে। কিন্তু শিল্পীর ছেলে বলতেছে তাকে বাইক কিনে দিতে হবে। এদিকে দাদাও অনেক আদর করে ছেলেটিকে। এবং দাদা খুশি হয়ে ছেলেটিকে একটি বাইক কিনে দিলেন। ছেলেটি বাইক পেয়ে অনেক খুশি হল।

এদিকে বাইক পাওয়ার পর ছেলেটি পড়াতে লেখা দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে বাইক নিয়ে ফেনীতে যাচ্ছিল দুই বন্ধু। হঠাৎ করে বাইক এক্সিডেন্ট করে শিল্পী ছেলেটি ওই জায়গাতে মারা যায়। এবং তার বন্ধু গুরুতর এক্সিডেন্ট হয়। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তার বলতেছে সে মারা গেল। এখন অনেকে বলে দাদা বাইক কিনে দেওয়ার কারণে ছেলেটি আর জীবন হারিয়েছে। সত্যিই শিল্পী এখন ছেলের শোকে এবং স্বামীর চোখে একদম পাগল হয়ে গেল। আসলে স্বামী মারা গেছে ছেলেটিকে নিয়ে সুখী হওয়ার চেষ্টা করেছিল। এখন ছেলেটি ও মারা গেল। সত্যি বলতে শিল্পীর মত দুঃখিনী মানুষ আর নেই। এখন শিল্পী সারাক্ষণ কান্নাকাটি করে পাগলের মত হয়ে গেল। আসলে ভাগ্য যখন খারাপ হয় সবদিক দিয়ে খারাপ হয়। আসলে এই কথাগুলো লেখতে আমার কাছে খুব খারাপ লাগতেছে। আর এরকম পরিস্থিতি কারো আসুক আমরা কেউ কামনা করি না।

আমার পরিচয়

IMG_20221006_094439.jpg

আমার নাম মোঃ জামাল উদ্দিন। আর আমার ইউজার নাম @jamal7। আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। প্রথমত বাঙালি হিসেবে আমি নিজেকে অনেক গর্বিত মনে করি। কারণ বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা। তার সাথে ফটোগ্রাফি করা আমার অনেক শখ। আমি যে কোন কিছুর সুন্দরভাবে ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করি। তার সাথে ভ্রমণ করতেও ভীষণ ভালো লাগে। বিশেষ করে নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালো লাগে। তার সাথে লেখালেখি করতে ও ভীষণ ভালো লাগে। যে কোন বিষয় নিয়ে কিংবা যে কোন গল্প লিখতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আর সব সময় নতুন কিছু করার চেষ্টা। নতুন ধরনের কিছু দেখলে করার চেষ্টা করি।
35FHZ8gBpndbrF88KC8i6DmfoqNdVfSnhzJshZCJksDJs27YpCCUjp1oaP6ko3mLJbQtLE76ZKc5r3aFXKh8EK2Xg2XbxHP97436Dksrat...K3RRDcGvdyC6bx3TE39Zctd2ho1pJ1hm9nj6RC6gfhhSEVDEf6zHmiqsgBwDTEDG8onxfxrWKe5ZMmiwAvtnX6XvsCqykCT5aFqMFBq2wcdKNs74j1RgTuza3g.png

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjde9gvbjDSDFUe2t87sHycAo9yh4cXNBQ2uKuZLC2jPzA8Qx5HRSqkJDxCm2F1P...XMCuWWrUK8WEzc1spvbtGymKcxp9cSaiY7YD7nmGv2yy3TJjQK1R5Bx6mMsJqHLdPZ4gBXB1M3ZGWR3ESWZxh8hd9tvb68pfdL8xHrioiqDnHuRUqd8FYt5aog.png

ধন্যবাদ সবাইকে

IMG-20240904-WA0027.jpg

Sort:  
 10 days ago 

Screenshot_20241229_113838_com.android.chrome.jpg

Screenshot_20241229_113132_com.twitter.android.jpg

Screenshot_20241228_224948_com.peak.jpg

 10 days ago 

এখনকার ছেলেদের বাইক চালানো দেখলে আসলেই ভয় লাগে। বাইককে এরা কি মনে করে তাই বুঝি না। প্রতিদিন বাইক দুর্ঘটনায় অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। শিল্পীর জীবনে দুঃখের আসলেই শেষ নেই। স্বামী মারা যাওয়ার পর সন্তানকে নিয়ে বাঁচতে চেয়েছিল কিন্তু সন্তান এক্সিডেন্টে মারা গেল। যাইহোক শেয়ার করে ভালো করেছেন।

 9 days ago 

ঠিক বলেছেন আপু এখনকার ছেলেদের বাইক চালানো দেখলে আসলে ভয় লাগে। আমার পোস্ট পড়ে মন্তব্য করেছেন তাই ধন্যবাদ।

 10 days ago 

গল্পটি পড়ে শিল্পীর এই করুণ দশা শুনে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল ভাই। এই ঘটনা কি সত্য ঘটনা? যদি সত্য ঘটনা হয় তবে শিল্পীর জন্য খুব খারাপ লাগছে। তার স্বামীর মৃত্যুর পর সে ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু তার ছেলেও যখন চলে গেল তার কাছে আর কিছুই পড়ে রইল না। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা শুনে মন ভারাক্রান্ত হয়ে যায়।

 9 days ago 

হ্যাঁ ভাই ঘটনাটি সত্য। আসলে আমাদের এইখানেও সবাই শিল্পীর জন্য দুঃখ প্রকাশ করে।

 9 days ago 

আপনার ক্লাসমেট শিল্পীর গল্পটি পড়ে সত্যি অনেক খারাপ লাগলো। আসলে শিল্পীর জন্য অনেক খারাপ লাগলো। স্বামী হারা মানুষটি ছেলেকে নিয়ে সুখে থাকার চেষ্টা করেছে। ভাগ্য এত খারাপ ছেলেটির বাইক এক্সিডেন্ট করে মারা গেল। আর বর্তমান সময় ছেলেদের বাইক চালানো দেখলে নিজের কাছে ভয় লাগে। আসলে এসব কষ্ট গুলো ভুলার মত নয়।

 8 days ago 

হ্যাঁ স্বামী হারা মানুষটি ছেলেকে নিয়ে সুখে থাকার চেষ্টা করেছে। আসলে ভাগ্যতার পাশে নেই।