আখের রস খাওয়ার গল্প। || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ -২৮শে অগ্রহায়ণ | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | হেমন্ত-কাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
আগের সপ্তাহের রবিবারের আড্ডা ঘরে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলাম। সেখানে আমাদের এলাকায় যে আখের গুড় তৈরি হয় সে সম্পর্কে কিছু কথা বলেছিলাম এবং সবাইকে আখের গরম গুড় এবং মুড়ি খাওয়ার দাওয়াত দিয়েছিলাম। সেদিন থেকেই চিন্তা ভাবনা ছিল একদিন নদীর পাড়ে অর্থাৎ চর এলাকায় গিয়ে গরম গুড় খেয়ে আসবো। তবে হঠাৎ করেই কয়েকদিন শীতের প্রকোপ অত্যাধিক পরিমাণে বেড়েছে সারাদিন ভরপুর কুয়াশা যেন শীতের আগমনকে আবার নতুন করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে প্রচন্ড কুয়াশা দেখে আন্দাজ করা যায় আজকে আর সূর্যের দেখা পাওয়া যাবে না। এরকম আবহাওয়া সাধারণত আখের রস থেকে গুড় তৈরি করার পদ্ধতি বন্ধ থাকে। তাই ভাবছিলাম কিছুদিন পরে গিয়ে আখের গুড় এবং আখের রস খাবো। যাই হোক সবকিছু তো আর পরিকল্পনা অনুযায়ী হয় না কিছু কিছু কাজ আপনি না চাওয়ার ক্ষেত্রেও হয়ে যায়। সকালবেলা প্রচন্ড কুয়াশা থাকার কারণে আমি এগারোটার দিকে আবার কম্বলের নিচে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। বাইরে শীতের প্রকোপ আর বাতাস যার কারণে চাইছিলাম কম্বলের নিচে গিয়ে গরম হয় কিন্তু হঠাৎ করে ই সায়েম মামা ফোন দিয়ে বলল তোমাদের এলাকায় এসেছি তুমি কোথায়?? সে বলল বাড়ির সামনে দাঁড়াও আমি আসতেছি। আবার উঠে সোয়েটার পড়লাম তারপর রাস্তার উপর গিয়ে দাঁড়ালাম কিছু সময়ের মধ্যে মামা চলে আসলো।
মামার সঙ্গে পাশের এলাকায় একটি কাজের জন্য যাওয়ার কথা ছিল মূলত সেই উদ্দেশ্যেই যাচ্ছিলাম কিন্তু মাঝ এলাকা থেকে একটা ফোন আসলো তখন মামা বলল সামনে আর যাব না চলো নদীর দিকে যাই। আমি তাকে বলতেছিলাম এই ঠান্ডা বাতাসের মধ্যে নদীর দিকে গেলে আরো বেশি শীত লাগবে। তখন মামা আবার আমাকে বলছিল আরে ব্যাটা এই বয়সে বাতাসে যদি শীত লাগে তাহলে শেষ বয়সে কি করবা হা হা হা। নদীর পাশে ঘিরে যে রাস্তা সে রাস্তা দিয়ে বাইক নিয়ে ধীরে ধীরে যাচ্ছিলাম তখনই দেখতে পেলাম আখের রস মাড়াই করে গুড় উৎপাদন করা হচ্ছে মূলত আগুনের ধোঁয়া দেখে সেটা বুঝতে পারলাম। তখন মামা নিজ থেকে আমাকে অফার দিলো চলো আখের গুড় খেয়ে আসি আমিও বললাম চলেন যাই একটু গরম হয়ে আসি। বাইক নিয়ে সোজা সেখানে চলে গেলাম গিয়ে দেখলাম সম্পর্কে আমার এক মামার খুলা। আমাদের এলাকায় আখের রস মারাই করে গুড় উৎপাদনকারী জায়গাটাকে খুলা বলা হয়। এই কথাটা অবশ্য রবিবারের আড্ডা ঘরে সেদিন বলেছিলাম। ছবিগুলোতে তুলে ধরেছি কিভাবে আখ মাড়াই করে আখের রস সংগ্রহ করা হয়।আমি একটা গ্লাস নিয়ে সেখান থেকে আখের রস পরিষ্কার করতে একটি ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিয়েছিলাম। এক গ্লাসের বেশি আখের রস খাওয়া সম্ভব হয়নি।
আখের রস খাওয়ার পরে সেখানকার বেশ কিছু ছবি তুলেছিলাম মূলত আখের রস মারাই করার পরে আখের রস গুলো কিভাবে একটি টিনের পাত্রের মধ্যে দিয়ে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করা হয় সেই প্রস্তুত প্রণালীটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আর মাটির পাত্রে সেই গরম আখের গুড় গুলো রেখে দেওয়া হয়। যদি ছবিগুলো দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন একজন ব্যক্তি আখের রস নিয়ে গিয়ে বড় একটি টিনের পাত্রের মধ্যে ঢেলে দিচ্ছে আর তার নিচের অংশে একজন লোক চুলায় আগুন জ্বালাচ্ছে। মাটির তৈরি চুলার উপর টিনের তৈরি পাত্রটি বসিয়ে দিয়ে তার মধ্যে রস দিয়ে আগুনের তাপ এর মাধ্যমে কার্যক্রম চলে। মূলত সেখানে গিয়েছিলাম গরম গুড় খেতে কিন্তু গরম গুড় কিছু সময় আগেই নামিয়ে ফেলা হয়েছে তাই সেখানে মাটির পাত্রে যে গরম গুড় রাখা হয়েছে সেখান থেকে সামান্য একটু খেয়েছিলাম। তবে সকালবেলা ঠান্ডা আখের রসটা বেশ মজা লেগেছিল সেটা মনে রাখার মত। পরবর্তীতে মামাকে বললাম একদিন বিকেল বেলায় আখের গরম গুড় সেই সাথে মচমচে মুড়ি খেতে হবে। মামা অবশ্য পরবর্তী সপ্তাহে আসলে এরকম একটা প্ল্যানিং আমাদের আছে।
আপাতত খাওয়া-দাওয়ার বিষয়টা শেষ করলাম এখন শুধু বাড়িতে ফেরা বাকি। অনেক সময় সেখানে দাঁড়িয়ে লোকজনের আখের রস থেকে গুড় তৈরির পদ্ধতি দেখলাম আবার আখ মারাই এর পর অবশিষ্ট যে ছোবড়া জাতীয় অংশটা থাকে সেটা রোদে শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। মূলত আখ জমি থেকে সংগ্রহ করার পরে সেটা মাড়াই করার পর রস গুড়ে পরিণত করা হয় আর অবশিষ্ট ছোবড়া রোদে শুকানোর অপর জ্বালানি হিসেবে রেখে দেওয়া হয় আর সেটা দিয়েই আগুন জ্বালিয়ে রসকে আখের গুড়ে পরিণত করা হয়। এজন্যই আবহাওয়া খারাপ হলে আখ মারাইয়ের কার্যক্রম বন্ধ থাকে কারণ জ্বালানি সরবরাহ থাকে না।
আজকের পোস্টে শুধু আঁখ মারাইয়ের পর কিভাবে আখের গুড় তৈরি করতে হয় সেটার কিছু কার্যপ্রণালী আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করেছি পরবর্তীতে আখের গুড় কিভাবে নামিয়ে মাটির পাত্রে রেখে সেটা বাজারজাত করা হয় সেটা নিয়ে একটা পোস্ট শেয়ার করব। সেই সাথে আখের গরম গুড় এবং মচমচে মুড়ি খাওয়ার বিষয়টাও আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করব।
⬇️📥 | ⬇️📥 |
---|---|
ডিভাইস | Samsung galaxy A52 |
ফটোগ্রাফার | @kazi-raihan |
লোকেশন | |
সময় | ডিসেম্বর,২০২৪ |
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বন্ধু এভাবে আমাদের ফাঁকি দিয়ে আখের রস এবং গুড় খেয়ে আসলে! যেটা আমার খুবই পছন্দের। সকাল বেলা এক গ্লাস আখের রস খাওয়ার অনুভূতিটা সত্যিই অসাধারণ। অনেক ভালো মুহূর্ত ছিল। আমাদের সাথে সেই সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।