শুভ নববর্ষ ১৪৩০ | Bengali New Year

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

bangla-noboborsho-ge0e638a9e.jpeg

Image : Pixabay | Edit : Snapseed

নমস্কার,

বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সকলেই ভালো আছেন। ইশ্বরের কৃপায় আমিও ভালো আছি। বাঙালি নতুন বছরে পদার্পণ করলো। বাংলা সনের আরো একটি বছর সমাপ্ত হলো। শুরুতে তাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যদের জন্য রইলো নববর্ষের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।

যদিও বর্ষ শুরুর প্রাক্কালটা একটু অন্যরকম ভাবে হলো। অন্য বছরের তুলনায় গ্রীষ্মের দাবদাহ এবছর অনেকটাই বেশি। প্রতি বছর চৈত্রের শেষ থেকে গ্রীষ্মের যথেষ্ট প্রভাব থাকলেও এ বছরটা সম্পূর্ণই আলাদা, সূর্য্যদেব এবছর আমাদের উপরে ভীষণ খাপ্পা হয়ে আছেন। বিগত কদিন তিনি রীতিমতো আগুন ঝড়িয়ে চলেছেন। জানি না পরিস্থিতি থেকে মুক্তি কবে মিলবে তবে বছর শুরুর দিনটা ভয়াবহ দাবহাহের মধ্যে দিয়ে কাটলো।

ছোটবেলায় যদিও পহেলা বৈশাখ মানেই ছিল এক অন্যরকম অনুভূতি। সকালে বাড়িতে পুজো হওয়ার পরই বেরিয়ে যেতাম দোকানে দোকানে হালখাতা করতে। যেহেতু আজকের দিনেই বাঙালির বছর শুরু তাই প্রত্যেক দোকানে দেবী লক্ষ্মী ও দেবতা গণপতির পুজো করে হালখাতা অনুষ্ঠিত হয় অর্থাৎ পুজো করে নতুন ব্যবসায়িক সালের শুরু। সে কারণে বহু দোকান থেকে পাওয়া যায় হালখাতার নিমন্ত্রণ। হালখাতার সুবাদে তাই পুরো দিনটা কাটতো আত্মীয়-পরিচিতদের দোকানে দোকানে ঘোরাঘুরি করেই। হালখাতার করতে গিয়ে পেতাম নতুন বছরের ক্যালেন্ডার এবং অনেক কিছু দিয়ে ঠাঁসা মিষ্টি মিষ্টান্নর প্যাকেট। ছোটবেলায় এগুলো ছিলো বেশি আনন্দের। সারাদিন ধরে এ দোকান থেকে বেরিয়ে ওই দোকানে গিয়ে নতুন বাংলা ক্যালেন্ডার নেওয়া, পুজোর প্রসাদ পাওয়া সাথে ঝাল মিষ্টি ঝুড়ি ভাজা আর নানা ধরনের মিষ্টি। দোকানে বসেই যেগুলো খেয়ে নিতাম। তারপর বাড়িতেও নিয়ে আসার প্যাকেট পেতাম।

মিষ্টির প্যাকেটের সাথে আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস বাড়িতে নিয়ে আসা হয় তা হলো বাংলা পঞ্জিকা। যা দেখেই পুরো আসন্ন বাংলা বছরের কখন কি পুজো পার্বণ আছে তা সবই আগে জেনে নেওয়া যায়।

pexels-pure-punjabi-7182054.jpg

Image : Pexels


বর্তমান সময়ে সে সবের অনেক কিছুই বদলে গেছে। অনেক রীতিনীতি বদলেছে। আগে বাঙালির ঘরে ঘরে বাংলা তারিখ মেনে সব কিছু করা হতো। এখন সেখানে অনেকটাই পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে ইংরেজি তারিখের চল টাই বেশি। যদিও কিছু কিছু কাজে বাংলা তারিখের ব্যবহার চলে তবে সেটা যৎসামান্যই এবং দিন দিন সেটাও ক্রমশ হ্রাস পেয়ে চলেছে। তার সাথে হ্রাস পাচ্ছে আমাদের সত্ত্বা, বাঙালি জাতির সত্ত্বা। আমি বলছি না যে বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে ইংরেজি তারিখ বা ভাষার ব্যবহার খারাপ। তবে নিজেদের সত্ত্বা হারিয়ে ফেলে কোনো জাতির কল্যাণ হতে পারে না। তাই বাঙ্গালার প্রথম স্বাধীন রাজা শশাঙ্কের হাত ধরে প্রথম চালু হওয়া আজকের ১৪৩০ বঙ্গাব্দের প্রথম তারিখে সবাই প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হই যে আমরা সকলে মিলে এগিয়ে এসে দায়িত্ব সহকারে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলা ভাষা ও বাঙালি সত্ত্বার জন্য কাজ করবো। যাতে ভবিষৎ প্রজন্ম বাংলা তারিখ ভুলে না বসে।


সবশেষে নতুন বছর মানে পুরনো বছরের দুঃখ কষ্টগুলোকে ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে চলা। নতুন বছর মানে ফেলে আসা দুঃস্বপ্ন ভুলে নতুন স্বপ্ন গড়া। তাই চলুন আসন্ন সময়ের শুভ কামনা জানিয়ে সব কিছু নতুন রূপে শুরু করি।




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness


Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

|| Join HEROISM ||

Sort:  
 last year 

আসলে দাদা আগের দিনের নববর্ষের সাথে এখনকার নববর্ষের কোন তুনলা হয় না। আর এবারের নববর্ষ সত্যি অনেক গরমের মধ্যে কেটেছে। আর আমরা বাংলা সনকে ভুলতে চলেছি। তবে এটা ঠিক অনেক ক্ষেত্রেই বাংলা পঞ্জিকা ছাড়া চলেনা। যাইহোক দাদা নতুন বছর মানে পুরানো দিনের সকল গ্লানি মুছে নতুনকে বরণ করে নেওয়া। আশাকরি নতুন বছর সবারই জীবনে আনন্দ বয়ে আনবে।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ দাদা সুন্দর লিখেছেন।

 last year 

দাদা নববর্ষের অনেক অনেক শুভেচ্ছা আপনাকে। বাংলা নববর্ষকে নিয়ে ছেলাবেলার আর আগের দিনের বেশ সুন্দর সুন্দর কিছু স্মৃতি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আসলে আগের দিনে পহেলা বৈশাখ আর এখনকার পহেলা বৈশাখে অনেক ফারাক দাদা। তবু আপনার পোস্টের মাধ্যমে বাংলা নববর্ষকে নতুন করে আরও একবার খুঁজে পেলাম।

 last year 

ভাইয়া আপনাকে নববর্ষের শুভেচ্ছা রইল।আশা করছি পুরনো বছরের সব গ্লানি মুছে নতুন বছর সবার ভালো কাটুক।অতিরিক্ত গরমে এবারের পহেলা বৈশাখ তেমন একটা ভালো যায়নি,দ্রুতই এই তাপদাহ হয়তো কেটে যাবে।জি ভাইয়া একদম ঠিক বলেছেন ,অনেক কিছুই বদলে গেছে।আসলে যুগ আপডেট হওয়াতে যেমন কিছু ভালো হয়েছে আমাদের, তেমনি অনেক রীতিনীতি সংস্কৃতি আমরা হারিয়েছি।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 64143.39
ETH 2638.98
USDT 1.00
SBD 2.80