হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আশাকরি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবৃন্দু আল্লাহর রহমতে ভালো আছে। আমার নাম ইমা অন্য দিনের মতো আজও আমি আপনাদের সাথে নতুন কিছু শেয়ার করতে এসেছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে সবজি মামার জীবনের গল্প শেয়ার করতে এসেছি ।গল্প লিখতে আমার অনেক ভালো লাগে কেননা গল্পের মাধ্যমে আমি আমার পুরনো দিনের কথা শেয়ার করতে পারি। গল্প লিখার সময় ছোটবেলার স্মৃতি গুলো মনে পড়ে যায় ।অতীতে যা ঘটেছে সেগুলো আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারি ।আমাদের গ্রামটার নাম ষোলোটাকা গ্রাম এ গ্রামটা খুব ছোট ।আমাদের মহল্লাটা ঘনবসতি তেমন একটা জায়গা নেই। এই গলির ভেতর একটা সবজিওয়ালা সবজি বিক্রয় করতে আসে। শুধুমাত্র শুক্রবারে আসে না ।শুক্রবারে জুম্মার নামাজ পড়ার কারণে শুক্রবার তিনি বাড়িতেই থাকে। নিজের পরিবারের সাথে থাকে। সবজিওয়ালা লোকটি আসলেই অনেক ভালো। সবজিওয়ালার বয়স অন্তত ৭০ বছর হবে। ৭০ বছর হলেও লোকটা এখনো অনেক ডাট আছে। লোকটার কথাবার্তা এবং হাঁটাচলা দেখে কেউ হয়তো বলবে না লোকটার বয়স এত।আমার বিয়ে হওয়া প্রায় চার বছর হয়ে আসছে। আমি বিয়ে হয়ে এসে সবজিওয়ালাকে দেখেছি। সে প্রতিনিয়তন আমাদের গলিতে সবজি বিক্রয় করতে আসে। তার কাছে রসুন আলু বিভিন্ন ধরনের সবজি পাওয়া যায়। অনেকে বলে লোকটা নাকি প্রায় ২০ বছর ধরে সবজি বিক্রয় করছে ষোলোটাকা গ্রামে ।লোকটার ব্যবহার আচার ভালো বলে হয়তো এতদিন ধরে এক জায়গায় ব্যবসা করতে পারছে। তার কথা এতো ভালো যে মানুষ তাকে অনেক ভালোবাসে। সবজিওয়ালা মানুষকে বাকি দিয়ে থাকে। অনেকেই সবজিওয়ালার কাছ থেকে বাকি করে সবজি কিনে থাকে। যখন আবার হাতে টাকা হয় তখন বাকিগুলো দিয়ে দেয়।
Source
সবজিওয়ালাকে আমরা মামা বলে থাকি। মামা প্রায় সকাল সাতটার দিকে আসে বাড়ি যেতে যেতে প্রায় তিনটে বেজে যায় ।কতগুলো সবজি প্রতিদিন মাথায় নিয়ে এক গলিতে প্রায় দুই থেকে তিনবার আসে। কেউ যদি বলে আমাকে একটু পরে ঝাল বা আলু দিয়ে যাও তখন মামা তাই দিয়ে যায়। মামা দুপুর বেলায় দোকানে বিভিন্ন ধরনের শুকনো খাবার খেয়ে থাকে। অনেকদিন আবার মামার বাড়িওয়ালা মামার জন্য রুটি বানিয়ে দেয়। প্রতিনিয়ত হয়তো দিতে পারে না কিন্তু মাঝেমধ্যেই দেখি মামা দুপুরবেলায় বসে রুটি খাচ্ছে ।মামা তিনটে মেয়ে তিনটে মেয়েরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এখন বাসায় মামার আর মামি। যখন সবজি কিনতে যায় তখন তার পরিবারের গল্প আমাদের কাছে বলে। শুক্রবারে মামা সবজি বিক্রয় থেকে বিরত থাকে। শুক্রবার মামা মাঝেমধ্যে মামীকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাই। মামা যদি দু একদিন আসা বন্ধ করে দেয় তাহলে আমাদের মহল্লার লোক নিরুপায় হয়ে যাই। কেননা বেশিরভাগই মানুষ মামার কাছ থেকে সবজি কিনে থাকে। যখন মামার ক্ষেতের ফসল ওঠার সময় হয় তখন মামা বেশিরভাগই সময় অনেকদিন আসেনা । খেতের ফসল উঠিয়ে ঘরে রেখে তারপর মামা আবার সবজি বিক্রয় করতে আসে ।
source
মামা সকালে তার বাড়ি থেকে সবজি নিয়ে আসে ভ্যানে করে। আবার যখন সবজি বিক্রি করা হয়ে যায় তখন তার দাড়ি ও বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র একজনের বাড়িতে রেখে যায়। তিনি আবার বাসায় ফিরে যান। হঠাৎ একদিন মামা সব সবজি বিক্রি করা হয়ে গিয়েছে। এবং সে বাসায় যাওয়ার জন্য ভ্যানে করে যাচ্ছিল। ভ্যানওয়ালা ভ্যানটা খুব একটা দূরত্ব চালাচ্ছিল না ।হঠাৎ ভ্যানের সামনে কোথা থেকে কুকুর চলে আসে ।তখন কোন উপায় ছিল না জোরে করে যখন ব্রেক ধরে তখন মামা ভ্যান থেকে ছিটকে পড়ে যায় । সেই সময় একটা মোটরসাইকেল এসে মামার গায়ের উপর দিয়ে চলে যায় ।মোটরসাইকেল আলারো কোন দোষ ছিল না, এটা একটা এডসেন্স ছিল ।সে নিজেও বুঝতে পারছিল না ওই সময় এসে কি করবে। তখন মামাকে খুব তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মাথায় অনেক আঘাত হয়েছিল। সেজন্য প্রচুর রক্ত খন্ন হয়েছিল ।রক্ত দেওয়ার পরেও মামাকে আর বাঁচানো যায়নি ।কিছুক্ষনের মধ্যে মামা মারা যান। আসলেই কার যে কখন মৃত্যু হয় কেউ জানে না ।আজগে এই পর্যন্ত শেষ করছি কোনদিন নতুন গল্প নিয়ে আবার আপনাদের সামনে হাজির হব। ।
🌹 ধন্যবাদ সবাইকে🌹
আশা করি সবজি মামার জীবনের গল্প আপনাদের ভালো লাগবে । আজকে এই পর্যন্ত শেষ করছি অন্য দিন নতুন কিছু নিয়ে আবার আপনাদের সামনে হাজির হব।
ব্লগার | @mdemaislam00 |
ব্লগিং ডিভাইস | infinix note 11pro |
অনুবাদে | মোছাঃ ইমা খাতুন |
আমার নাম মোছাঃ ইমা খাতুন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বর্তমান ঠিকানা ষোলটাকা, গাংনী মেহেরপুর। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি করতে অনেক পছন্দ করি এছাড়াও আমি লেখালেখি এবং ডাই পোস্ট করতে ভালোবাসি। আমি এসএসসি পাশ করেছি আমাদের গ্রাম থেকে এবং পাশাপাশি ব্লগিং করি এবং নিজের যোগ্যতাকে যোগ্য অবস্থান দেওয়ার চেষ্টা করি। আমি বিশ্বাস করি মানুষ একদিন হয়তো থাকবে না কিন্তু মানুষের কর্ম সারা জীবন থেকে যাবে এই জন্য আমি কাজের ভিতরে আসল শান্তি খুঁজে পাই।
সবজি মামার গল্প পড়ে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। আসলে এমন ঘটনা মানুষের মাঝে শেয়ার করলে অনেক কিছু জানার সুযোগ মিলে। তিনি সকালে আসেন তিনটার দিকে ফিরে যান তবে আপনাদের ওই গলিতে দুই তিন বার আসা-যাওয়া করেন। আর এভাবেই কিন্তু একজন ব্যবসিকের জীবন।
ধন্যবাদ আপু মনোযোগ সহকারে গল্পটি পড়ার জন্য।
বাহ আপু দারুন সবজি মামার জীবনের গল্প লিখেছেন। আপনার গল্প পড়ে খুব ভালো লাগলো। তবে মামা মারা যান এই বিষয়টা শুনে খুব খারাপ লাগছে। সত্যি কার যে কখন মৃত্যু হয় কেউ জানে না আপু। ধন্যবাদ আপনাকে গল্প টি শেয়ার করার জন্য।
জি ভাইয়া আমাদেরও অনেক খারাপ লেগেছিল যখন জানতে পেরেছিলাম।
আপনার গল্পটি পড়ে অনেক কিছু শিখতে পেলাম। আর এভাবেই আসলে একজন ব্যবসাহীর জীবন চলে।আর আপনাদের গলিতে বারবার আসা-যাওয়া করার মাধ্যমে তার সঙ্গে আপনারা একটা আত্মীয় সম্পর্ক করে ফেলেছেন বড় আত্মীয় কিন্তু মামা।যাকে এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।