সোনার ফসল।
গ্রীষ্মকাল। ঘরে ঘরে নতুন ধানের আগমন। তীব্র গরমে ধান পেকেছে মাঠের পর মাঠ। বাতাসে মৃদুমন্দ গরম ঝাঁঝ। চারপাশের পরিবেশ গুমগুম করছে। সাথে নতুন ধানের মঁ মঁ করা গন্ধ। বাতাসে মাঠের পর মাঠ যেন হলুদ এবং সবুজে মেলা সমুদ্রে ঢেউয়ের পর ঢেউ আসছে। মাথা নেড়ে ওরা যেন ডাকছে বাংলার কৃষকদের। অসাধারণ সে দৃশ্য যেন চোখ জুরিয়ে দেয়। মাঠের মাঝে একটুখানি বিকেল বেলা দাড়িয়ে থাকলে মন ভালো হয়ে যায়। কী যেন একটা আনন্দ এসে ভর করে মনের মাঝে।
কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের এই রূপ গ্রামে না গেলে আপনার চোখে মিলবে না। বাংলার কৃষকদের হাজারো দুঃখের, কষ্টের, পরিশ্রমের এই সোনার ফসল। তাদের এই ফল মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উপার্জন করা ফল। প্রতিটি গাছ যেন তাদের আদরে বড় করা সন্তানের মতো।
গ্রীষ্ম কালে গ্রামে আসলেই চোখে পড়বে বাড়ি বাড়ি সোনালী ধানের ঢিবি। মানুষ জন ব্যস্ত নতুন ধানের যত্ন করা নিয়ে। এই ধান মাঠ থেকে কেটে এনে প্রথমে মাড়াই করতে হয়। তারপর সিদ্ধ করে শুখানোর মামলা। আমরা যারা গরমে বার বার চাই বৃষ্টি হোক বৃষ্টি হোক তখন এই মানুষেরা রোদে পুড়ে ধান শুখানোর পাল্লা শুরু করে আকাশের সাথে। হাজার গরম আর রোদ হোক না কেন তারা আবারও রোদ চায়, আবারো চায় মেঘমুক্ত আকাশ।
আমাদের মেঘ তাদের কাছে মাঝে মাঝে দুরাশার কারণ হয়ে ওঠে। তাদের দুশ্চিন্তায় আকাশের কালো যেন আরো কালো হয়ে ওঠে। কখনও হঠাৎ বৃষ্টিতে আমাদের হয় আনন্দ আর তাদের হয় কষ্ট। শুকনা ধান সব ভিজে একাকার হয়ে যায়। গৃহপালিত পশুদের জন্য শুখানো খড় সআ কিছু ভিজে জুবজুবে হয়ে যায়। আর বৃষ্টি যদি টানা দুদিন থাকে তাহলেই শেষ। সবকিছু পঁচে গন্ধ বের হয়ে যায়।
আমাদের প্রধান খাবার ভাত। এই ভাত তৈরির কতো প্রক্রিয়া সে সম্পর্কে আমাদের ধারণা খুবই কম। তার উপর এবার রোজার মাঝেই চলে এসেছে নতুন ধানের কারবার। গ্রামের মানুষের রোদে পুরে কাজ করতে রোজা রাখা প্রায় অসাধ্য হয়ে পরে। ঘরের মাঝে এসিতে বসে থেকেই আমাদের পিসাসায় ক্লান্ত হয়ে আসে সারা শরীর। তাহলে সেই হতভাগা দের কথা একটি বার চিন্তা করে দেখবেন তাদের কী অবস্থা হয়।
আসুন না আমরা এই রমজান মাসে আমাদের সকল কৃষক ভাইদের জন্য দোয়া করি। আল্লাহ যেন তাদের কষ্ট লাঘব করে দেয়। তারা যেন সুন্দর ভাবে তাদের কার্য সমাধা করে ইদের খুশিকে বরণ করে নিতে পারে। ভালো ভাবে যেন তারা রোজা রাখতে পারে। আমাদের জন্য যাদের এতো কষ্ট তাদের জন্য কি আমরা এই দোয়াটুকু করতে পারিনা?
শুধু নিজেকে নিয়ে চিন্তা না করে আসুন আমরা সবাই সমস্বরে বলি,
মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য। একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না?
সকলের প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ। এই লোগো কমিউনিটি থেকে নেওয়া।
আমার পরিচয়
আমি @mstnusrat স্টিমিটে কাজ করছি ডিসেম্বর ২০২১ থেকে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের, বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। আমি আঁকতে পছন্দ করি। এছাড়া কবিতা লিখি গল্প লিখি ও পড়তে ভালোবাসি। উপন্যাস পড়তে ভালোবাসি এবং রিভিউ দিয়ে থাকি। এছাড়া ফটোগ্রাফি এবং কার্ফ্ট করতেও বেশ ভালো লাগে। স্টিমিট এর একজন সাধারণ ইউজার আমি। সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন। সামনে আরও ভালো ভালো কাজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করার ইচ্ছে আছে।ধন্যবাদ।
ডিভাইস :Huawei
মডেল:y7pro
ছবিতে :mstnusrat
লোকেশন:Gobindaganj
এই রকম প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে। এরকম ধানের ফটোগ্রাফি আমি ভীষণ পছন্দ করি। খুব সুন্দর ভাবে আপনি সোনার ফসল এর ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ আপু।
জি আপু অবশ্যই আমরা দোয়া করি, সব রকম ঝামেলা শেষ করে যাতে কৃষকরা সবকিছু ভালোভাবে সম্পূর্ণ করে ঈদের আনন্দটা সুন্দর ভাবে কাটাতে পারে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু কৃষকদের কথা ভেবে আপনি সুন্দর একটি পোষ্ট তুলে ধরেছেন, সাথে তাদের দুঃখ কষ্ট গুলো শেয়ার করেছেন বেশ ভাল লেগেছে আপনার পোস্টটি পড়ে।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মতামতের জন্য।
আপনি একদম ঠিক বলেছেন আপু আমরা এমনিতে বসে বসে গরমের কারণে শুধু বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করি। কিন্তু কৃষকেরা এত কষ্ট করে ধান ফলায় সারাদিন পরিশ্রম করার পরেও তারা আবারও রোদ হওয়ার জন্য প্রার্থনা করে। কারণ বদ না হলে তাদের ধান শুকাতে অনেক বেশি সমস্যা হয় এমনকি অনেকের ধান অনেক নষ্ট হয়ে যায়। গ্রামের মানুষেরা তাদের ধানের আশায় বসে থাকে। আপনার কথাগুলো বেশ ভালো লাগলো আপু।
জ্বি আপু তাদের অনেক কষ্ট হয়।ধন্যবাদ।
আসলে আপনি ঠিকই বলেছেন আপু এই রমজান মাসে কৃষকদের জন্য আমাদের দোয়া করা উচিত। কারন তারা খুব কষ্ট করে আমাদের এই সোনার ফসল ফলায়। আসলে আমরা যারা তাদের ফসল কিনে খাই। তারা আসলে তাদের কষ্টটুকু বুঝিনা। আসলে ধানবোনা থেকে তোলা পর্যন্ত কত যে কষ্ট একমাত্র কৃষক সেটা বোঝে।খুব সুন্দর লিখেছেন আপু। কৃষকদের জন্য এরকম ভাবনা আপনার আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
জ্বি ভাই আপনাকেও ধন্যবাদ।
ওয়াও আপু আপনি দারুন লিখেছেন। আপনি গ্রামের ফসলের মাঠের ও কৃষকদের কষ্টের ফল ঘোষণার ফসল সম্পর্কে আপনার অনুভূতি গুলো দারুন ভাবে প্রকাশ করেছেন আমাদের মাঝে। সত্যি বলেছেন কৃষকদের কাছে এই প্রশ্নগুলো সন্তানের মতো তারা নিজের সন্তানের মত ছোট থেকে গড়ে তোলা পর্যন্ত লালন করে। তারা যখনই ফসল তাদের ঘরে তোলে তাদের চোখে-মুখে যে আনন্দ লক্ষ্য করা যায় তা আপনাকে পরম প্রশান্তি এনে দেয়। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সেইসাথে আপনাকে অগ্রিম ঈদের শুভেচ্ছা রইল ঈদ মোবারক।
ধন্যবাদ আপু। ইদ মোবারক।
সোনার ফসল মাঠ থেকে
আসতে শুরু করেছে কৃষকের আঙ্গিনায়,
মাঠ থেকে এনে গোলায় উঠিয়ে কৃষক
সুখী মনে গান গায়।।
জ্বি ভাইয়া একদম ঠিক বলেছেন।
আসলেই গ্রামবাংলার মানুষের জন্য ধান একটি সোনার ফসল। এই সময় দেখা যায় কৃষক পাকা ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে আসে। আমাদের নিজেদের ধানো পেকেছে এবং সে গুলো কেটে বাড়ি নিয়ে আসা হচ্ছে।
সব কাজ দ্রুত শেষ হোক সুন্দর মতো এই কামনা।
বর্তমান সময়টা কৃষকদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক জায়গায় কৃষকদের উঠতি ইরি-বোরো ধান ঘরে তোলার। ধুম পড়েছে। আপনি অনেক সুন্দর করে ফটোগ্রাফি এবং কৃষকের কষ্টের কথা ধরেছেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ ভাইয়া।