স্কুল জীবনের একটি মজাদার ঘটনা। পর্ব : প্রথম।

in আমার বাংলা ব্লগ22 days ago

কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ? আশাকরি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আসলে আজ স্কুল জীবনের একটি মজাদার ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


image.png



সোর্স


আসলে বর্তমান সময়ে ছাত্র-ছাত্রীরা তারা তাদের স্কুল জীবনে তেমন বেশি একটা আনন্দ উপভোগ করতে পারে না। কিন্তু আমাদের সময় এরকম ছিল না। আমরা এমন একটা দিন নেই যে দিনটা স্কুল ছুটি করতাম। আসলে বড় কোন ধরনের অসুখ-বিসুখ না হলে আমরা কখনো স্কুল কামাই করতাম না। এছাড়াও মনে হতো যে ছুটির দিনগুলোতে যদি স্কুল থাকতো তাহলে আরো ভালো হতো। কারণ স্কুলে যাওয়া আমাদের একটা নেশা ছিল। কারণ স্কুলে গেলে আমরা বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করতাম এবং আড্ডা দিতাম। যদিও তখনকার সময়ে স্কুলে যাওয়ার জন্য আমাদের অভিভাবকরা আমাদের কখনো জোর করতেন না। আসলে সবাই মিলে একসাথে স্কুল যাওয়া এবং স্কুল ছুটির পর একসাথে বাড়িতে চলে আসার মজাটাই আলাদা ছিল।


আসলে স্কুল জীবনে বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন ধরনের মজার ঘটনা রয়েছে। তেমনি আমার একটা মজার ঘটনা রয়েছে। আসলে আজকে সেই মজার ঘটনাটা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আসলে প্রথম যখন আমরা সপ্তম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হলাম তখন আমাদের নতুন বই পাওয়ার একটা অন্যরকম আনন্দ ছিল। আসলে অষ্টম শ্রেণীর প্রায় ৩-৪ মাস পরে আমাদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা শুরু হল। আসলে অন্যান্য সাবজেক্টের প্রতি তেমন আমার কোন একটা আকর্ষণ ছিল না। কিন্তু আমার অংকের প্রতি অন্য রকম একটা আকর্ষণ ছিল। আসলে অন্যান্য সাবজেক্টে ক্লাসের সবথেকে বেশি নম্বর আমি না পেলেও অঙ্ক সাবজেক্টে আমি সবসময় ক্লাসের সবথেকে বেশি নম্বর পেতাম। আর এজন্য স্যারদের কাছে আমি অন্যরকম একটা ভালোবাসা পেতাম।


আসলে অংক করাটা আমার একটা নেশা ছিল। যখন আমি অংক সাবজেক্ট নিয়ে পড়তে বসতাম তখন যে সময় পার হয়ে যেত তা আমি মোটেও বুঝে উঠতে পারতাম না। আসলে নতুন নতুন অংক করতে এবং অংক করে যখন সঠিক হত তখন অন্যরকম একটা আনন্দ পেতাম আমি। যাইহোক অন্যান্য পরীক্ষার সময় বন্ধু বান্ধবীরা যেমন আমার একটা গুরুত্ব দিত না। কিন্তু যেদিন অংক পরীক্ষা আসত তখন সবাই আমাকে একটু অন্যরকম ভাবে দেখতো এবং আমার পাশে বসার জন্য সব সময় চেষ্টা করত। আসলে পরীক্ষার সময় কেউ যদি কোন অংক না পারতো তাহলে আমিই একমাত্র ভরসা ছিলাম। আসলে আমি কখনো অংক সাবজেক্টে ৯০ এর নিচে পাইনি। এছাড়াও অন্যান্য সাবজেক্টে কিন্তু তেমন একটা খারাপ ছিলাম না।


যাইহোক অংক পরীক্ষার দিন আমি ক্লাসের মাঝের দিকে বসলাম। এছাড়া অন্যান্য বন্ধুরা তখন নিজেদের মাঝে লড়াই শুরু করল যে কে আমার পাশে বসবে। যাইহোক ক্লাসে যারা আমার সব থেকে বেশি প্রিয় বন্ধু তারাই কিন্তু আমার পাশে বসতে পারল। কারন আমি অবশ্যই আমার সেই প্রিয় বন্ধুগুলোকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। যদিও অন্যান্য সময় যেসব বন্ধুরা আমাকে তেমন একটা প্রাধান্য দেয় না তাই আমিও তাদের তেমন একটা প্রাধান্য দেই না। যাইহোক আমার সামনে কয়েকজন খারাপ স্টুডেন্ট বসলো এবং একটু পেছনের দিকে আর কয়েকজন খারাপ স্টুডেন্ট বসলো। এরপর ঘন্টা বাজতেই অংকের প্রশ্ন এবং খাতা দিয়ে দিলেন শিক্ষকেরা। আসলে আমার একটা অন্যতম ট্যালেন্ট ছিল যে আমি অংক পরীক্ষার দিন তিন ঘণ্টার বদলে এক ঘন্টা দশ পনেরো মিনিটের ভিতরে আমি অংকের খাতা জমা দিয়ে দিতাম। কেননা আমার অংক করতে তেমন একটা বেশি সময় লাগতো না।

আসলে সমস্যাটা হল আধঘন্টা যেতে না যেতেই আমি দেখতে পেলাম যে আমার পায়ের কাছে একটা কাগজ রয়েছে। আসলে আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না যে কাগজটা কিসের। তাই আমি পায়ের কাছ থেকে কাগজটা হাতে তুলে নিলাম। কারণ যেহেতু কাগজগুলো একটা বিদ্যার জিনিস। আরেকটি পায়ের নিচে থাকলে কেমন যেন একটা মনে হয়। আসলে যখন আমি নিজ থেকে কাগজটি হাতে তুলে নিলাম তখন ক্লাসে কর্মরত শিক্ষক অর্থাৎ যিনি আমাদের পরীক্ষার গার্ড দিচ্ছেন তিনি দেখে আমার কাছে চলে এলেন। তখন স্যার আমাকে বললেন যে তোর হাতে ওটা কি কাগজ। তখন আমি স্যারকে বললাম যে, স্যার এই কাগজটি আমার পায়ের নিচে ঘোরাঘুরি করছিল। আসলে তখন আমি খুলে দেখিনি যে কাগজের ভিতরে কি লেখা রয়েছে।



কারণ কাগজটি তোলার সাথে সাথেই স্যার আমার কাছে চলে এলেন এবং আমার কাছ থেকে কাগজটি নিয়ে নিলেন। আসলে তখন স্যার কাগজটি খুলে দেখতে পেলেন যে এটি একটি নকল কাগজ। অর্থাৎ পরীক্ষার হলে কেউ একজন একটা অংক নকল করে নিয়ে এসেছে সেই অংকটি এই কাগজে লেখা রয়েছে। যাইহোক স্যার আমাকে বলল যে এ তো দেখি পরীক্ষায় যে অংকটি এসেছে সেই অংকটি। তো প্রথমত আমি একটু ভয় পেয়ে গেলাম। যেহেতু নকল করার জন্য যে ছাত্রটি কাগজ নিয়ে এসেছে সেই কাগজটি আমি নিজ থেকে তুলেছি এবং স্যার প্রথম ওই কাগজটি আমার হাতে দেখেছেন। তখন আমি স্যারকে বললাম যে স্যার আমি অংকের নকল করার জন্য কোন কাগজ নিয়ে আসেনি। আসলে অন্যান্য বন্ধুরাও একটু বেশি ভয় পেয়ে গেল।



আশাকরি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।



সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।



11-20-04-359_512.gif

ধন্যবাদ সবাইকে।

2XmsB3ZF6jJG7218A8ghgBmbB3W4Hm94fHM8vdisDLD4EuDS1mKCnUwr2WPdiRhWod2Rf2CCtBiK8N3pspzqnCWafFzVigrzmtsxCskMPdzGxv6X2qA4C6XCzVtoT7DrPdhaLQmVXDtTsoDBnDnkqY1H7mbiRmNAo6VRbcH65Ky8sUcB6iD2CGuEkfhUpCrHvemi76oe4F.gif

IMG_20210107_075142 (2).jpg

আমার নাম নিলয় মজুমদার। আমি একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র। আমার মাতৃভাষা হলো বাংলা। আমার ভাষা হলো বাংলা। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি। আমি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। নতুন নতুন জিনিস তৈরী করতে আমি খুব ভালোবাসি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে আমার খুব ভালো লাগে।

Sort:  
 22 days ago 

স্কুল জীবনের একটি মজাদার ঘটনা-১ম পর্ব অনেক সুন্দর হয়েছে ভাইয়া। বেশ ভালো লেগেছে আমার। আপনার লেখা পড়ে আমার স্কুল জীবনের কথা মনে পড়ে গেল। আপনি একদম ঠিক বলেছেন, দলবেধে স্কুলে যাওয়া-আসার মজাটাই আলাদা ছিল। ভিষণ মিস করি সেই দিন গুলো। অংকে ট্যালেন্ট ছাত্র কি স্যারকে বুঝাতে পারবে ,সে সত্যি পায়ের কাছে কাগজটি পেয়েছে-এটা তাঁর নয়? ২য় পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

 22 days ago 

আপনার স্কুল জীবনের ঘটনা শুনে আমার স্কুলের কথা মনে পরে গেলো।আপনার মতো আমিও অঙ্ক পরিক্ষায় টপ করতাম। আপনার পরিক্ষার হলের ঘটনা টি ও দারুণ ছিলো। দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করি খুব তারাতারি দ্বিতীয় পর্ব দেখতে পারবো।ধন্যবাদ আপনাকে।

 22 days ago 

আপনার ছোট স্কুল জীবনের সুন্দর ঘটনা শেয়ার করেছেন। আসলে আমাদের সকলের কম বেশি এমন ঘটনা রয়েছে যা স্মরণ করলে অতীতের মধুর স্মৃতি মনে আসে। আর নিজে এই সমস্ত ঘটনাগুলো ব্যক্ত করে অন্যদের মাঝে জানার সুযোগ করে দেওয়ার মজা আলাদা। খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার এই অতীতের ঘটনা জানতে পেরে। পরীক্ষার সময় সবাই এমনটাই চায়, অংক পরীক্ষায় অনেকেই ভালো পারে তার কাছে বসার চেষ্টা করে থাকে।

 22 days ago 

ছোটবেলা আমিও স্কুল কামাই করতাম না। প্রতিদিন যেতাম স্কুলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতাম। তবে দাদা আমি আপনার মতো অংকে ভালো ছাএ ছিলাম না। আপনার মতো অতো মার্ক অংকে স্কুলে কখনো পাইনি। এইটা একটা সমস্যা স‍্যার ধারণা করেছিল আপনি হয়তো নকল টা করেছেন। পরবর্তীতে কী হয়েছিল সেটা জানার জন্য কৌতূহল সৃষ্টি হচ্ছে। আশাকরি পরবর্তী পর্বে জানতে পারব।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 67621.06
ETH 3787.11
USDT 1.00
SBD 3.50