আশা করি ঈশ্বরের আশীর্বাদে সকলে খুব ভালো আছেন।আমিও বেশ ভালোই আছি। আজকে আমার ছুটির দিন। তাই কালকে কাজ শেষ করার পরেই ভাবলাম কিছু একটা খাওয়া যাক। আসলে আমাদের মত পেটুকদের জীবনে খাওয়া ছাড়া আর কি বা সত্যি বলুন?আমার তো মাঝে মাঝে মনে হয় যে আমার মরার আগেও আমি বলবো একটু খেয়ে নি তারপর যাই।যাই হোক একটা কথার কথা বললাম। কেউ কিছু মনে করবেন না। আসলে বেশ কিছুদিন ধরে মনটা একটু কেএফসি কেএফসি করছিল।সেই কারণে কালকে কাজ করে উঠেই কেএফসিতে একটা মিঙ্গেল বাকেট অর্ডার করে দিলাম।আসলে ভাই না থাকাতে এসব খাবার আমি অর্ডার সাধারনত করি না। কারণ আমার একার পক্ষে পুরোটা শেষ করে ওঠা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। আর আমাদের বাড়িতে যেহেতু চিকেন খাওয়া হয়না,সে কারণে মা এসব ফ্রিজে তুলতেও দেয় না।

তাই যেটুকু খাওয়ার খাও।বাকিটা ফেলতেই হয়। সব বাকেট চেক করে দেখলাম মিঙ্গেল বাকেটটাই তুলনামূলক একটু ছোট।তাই এটাই অর্ডার করলাম।মিঙ্গেল বাকেটের মধ্যে ছিল দুটো চিকেন স্ট্রিপ আর চার থেকে পাঁচটা চিকেন উইং, একটা স্মল চিকেন পপকর্ন, একটা স্মল ফ্রেঞ্চ ফ্রাই আর ছিল একটা পেপসি। কম্পালসারি হিসেবে সস যেমন ওরা দেয় তেমনি দিয়েছিল চারটে। ডেলিভারি চার্জ নিয়ে মোটামুটি খরচ হয়েছিল ৫৪১ টাকা ভারতীয় মুদ্রায়। অর্ডার করেছিলাম প্রায় রাত্রি পৌনে এগারোটা নাগাদ। প্ল্যান ছিল রাত জেগে হইচই একটা সিনেমা দেখব আর এসব ভাজাঘুজি খাব। আসলে এগুলো শুনলে সবাই বলবে ভীষণই আনহেলদি জীবনযাপন, কিন্তু মাঝে মাঝে আনহেল্দী হলেও কমফোর্ট লাইফ লিড করতে সবারই পছন্দ। বিশেষ করে একটা ছুটির দিনে।

খাবারটা আসতে সময় লেগেছিল সাড়ে এগারোটা নাগাদ। তারপরে প্যাকেট গুলো খুলে খিচ খিচ করে কয়েকটা ছবি তুলেই বসে পড়লাম সিনেমা দেখতে আর এগুলো খেতে। হৈচৈ খুলে দেখে হৈচৈ ওপেন হচ্ছে না। সেই কারণে অবশেষে জি ফাইভে একটা সিনেমা দেখলাম। সেটা রিভিউ পরের দিন আসছে। আপাতত খাবারের রিভিউ টা দি। প্রত্যেকটা খাবার এত রাতে অর্ডার করলেও বেশ গরম ছিল যেমনটা ওরা গরম পরিবেশন করে। আর যে ডেলিভারি পার্টনার ছিল সে খুব তাড়াতাড়ি ডেলিভারি টা আমাকে পৌঁছে দিয়ে গেছে। তাতে খাবারটা বিশেষ ঠান্ডা হয়নি।

প্রথমেই শুরু করেছিলাম চিকেন স্ট্রিপসগুলো দিয়ে। সাধারণত কেএফসি চিকেন স্ট্রিপসে কোনরকম মশলা মাখানো থাকে না। তবে একই প্যাকেটের ভেতরে চিকেন উইংস আর স্ট্রিপস টা দেওয়ার কারণে স্ট্রিপ্স গুলো বেশ মশলাদার আরো সুস্বাদু হয়ে উঠেছে। কেএফসি চিকেন নিয়ে আলাদা করে তো কোন কিছু বলার নেই। তবে আমি শুনেছি বিভিন্ন দেশের ফ্লেভার বিভিন্ন রকম হয়। তবে আমার মনে হয় না ভারত এবং বাংলাদেশের বিশেষ কোন তফাৎ হবে। চিকেন স্ট্রিপ্স এর সাইজটা বেশ বড় ছিল দুটো খাওয়ার পরে সত্যি বলতে আমার মনে হচ্ছিল যেন চার ভাগের দু'ভাগেই পেট ভরে গেল।

এর পরে আসি চিকেন উইংসগুলো নিয়ে। চিকেন উইংস আমার সবসময়ই পছন্দের একটা আইটেম। বিশেষ করে উইংসের দুটো হাড় ধরে সম্পূর্ণ চিকেন টা মুখে পুরে নিতে বেশ মজা লাগে।এর ওপরে যে কোটিংটা দেওয়া ছিল বেশ মচমচে ছিল। সাথে একটা বিশেষ মশলা খানিকটা ম্যাগি মশলার স্বাদ, সে মশলা দেওয়াতে আরো যেন আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল।

এরপর আসি ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এর দিকে। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই গুলো সত্যি বলতে এসি চলার পরেও সেভাবে নরম হয়ে যায়নি। বেশ ক্রিসপি ছিল ফ্রেঞ্চ ফ্রাই আমি রেখে দিয়েছিলাম। কারণ ভেবেছিলাম আজকেই বাবাকে আর মাকে খাওয়াবো। তো তারাও খেয়ে বলল বেশ ভালো লেগেছে। তাদেরকে দেওয়ার সময় আজ কড়াইয়ে খানিকটা গরম করে দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই আগের মতনই একই ক্রিসপি ছিল ফ্রেন্চ ফ্রাই গুলো। এরপরে আসি চিকেন পপকর্নের দিকে। এক সময় চিকেন পপকর্ন খুবই ভালো লাগতো আমার কেএফসির। তবে ইদানিং কালে কেন জানি কোন স্বাদ পাইনা চিকেন পপকর্নের। আমার মনে হয় এতে আরেকটু মশলা দিলে জিনিসটার স্বাদ আরো খুলতো।

যাই হোক চিকেন পপকর্ন আমার মোটামুটি লেগেছে।পেপসি নিয়ে আলাদা করে কিছুই বলার নেই আমরা। সবাই পেপসি খেয়েছি। পেপসি, পেপসির মতনই ছিল। ওভার অল পুরো খাবারের বাকেট টাকে আমি পাঁচে চার তো দেবোই।

বাংলাদেশেও কি এই মিঙ্গেল বাকেট টা পাওয়া যায় কিনা অবশ্যই জানাবেন।আর ইন্ডিয়ার কে কে মিঙ্গেল বাকেটটা খেয়েছেন সেটাও জানাবেন।জানি খুবই কমন একটা বাকেট। তবুও জানাবেন। আজ এখানেই শেষ করছি। কেমন লাগলো সেটাও জানাবেন। আবার আসবো নতুন কোন উপস্থাপনা নিয়ে। সকলে খুব ভালো থাকবেন।