Indian Museum ভ্রমণ -পর্ব ১৬

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

Indian Museum ভ্রমণ -পর্ব ১৬


পূর্বের এপিসোড : Indian Museum ভ্রমণ -পর্ব ১৫


শুভ অপরাহ্ন বন্ধুরা,
আজকে আবার শীতটা খুব জাঁকিয়ে বসেছে । সকালে ঘুম থেকেই উঠে এমন একটা দুঃসংবাদ শুনলাম যে মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেলো । প্রয়াত নারায়ণ দেবনাথ । আমার ছোটবেলা যার আঁকা কমিক্সে রঙিন সেই মানুষ টা আজ চলে গেলেন । একটি যুগের অবসান ঘটলো ।হাঁদা-ভোঁদা, নন্টে-ফন্টে, বাঁটুল দি গ্রেট, বাহাদুর বেড়াল সবার পথ চলা থামলো । একেলা হয়ে গেলো সব্বাই ।

শ্মশানের চিতায় নারায়ণ দেবনাথ-কে যখন তোলা হবে তখন কে জানে সবার অলক্ষ্যে ভিড়ের মধ্যে হাঁদা-ভোঁদা, নন্টে-ফন্টে, বাঁটুল উপস্থিত থাকবে হয়তো । তাদের স্রষ্টা কে সর্বশেষ দেখে দু'ফোঁটা চোখের জল উৎসর্গ করবে । শ্মশানের আগুনে নারায়ণ দেবনাথ পুড়বে, কিন্তু পুড়বে না তার হৃদয়, পুড়বে না তাঁর সৃষ্টি । লক্ষ লক্ষ বাঙালি ছেলেদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন তিনি । আজীবন । মানুষের শরীরের মৃত্যু আছে কিন্তু মৃত্যু নেই তার সৃষ্টির । "হাঁদা-ভোঁদা, নন্টে-ফন্টে, বাঁটুল দি গ্রেট" যুগ যুগ জিও ।

আজকে আমি আবারো হাজির হয়েছি বেশ কিছু মাংসাশী শিকারী প্রাণী ও নিরীহ তৃণভোজী প্রাণীদের স্টাফ করা দেহের ফোটোগ্রাফি নিয়ে ।

১. চিতল বা চিত্রল হরিণ
২. বব ক্যাট ও ভারতীয় নেকড়ে বাঘ
৩. সোনালী লাঙ্গুর হনুমান, শ্লথ, ম্যাকাক, সিংহলেজী বেবুন, বব ক্যাট, কালো মুখো হনুমান ও বুনো শূকর
৪. শম্বর হরিন
৫. এশীয় বুনো গাধা
৬. ইয়াক বা চমরী গাই
৭. গয়াল বা মিথুন

তো চলুন দেখে নেওয়া যাক আজকের আয়োজন ।


চিতল বা চিত্রল হরিণ । এই হরিনের গায়ে সাদা সাদা ফোঁটা করে থাকে । আমাদের দক্ষিনাঞ্চলের সুন্দরবনে এই চিতল হরিনের অবাধ বিচরণ রয়েছে । প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় এদের ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


বব ক্যাট (বাঁয়ে) ও ভারতীয় নেকড়ে বাঘ (ডানে) । বব ক্যাটের বিশেষত্ব হচ্ছে এদের লেজ থাকে খাটো । ছাগলের লেজের মতো । কান থাকে অতিমাত্রায় সূচালো । আর নেকড়ে বাঘ আসলে "শ্ব", অর্থাৎ এক জাতের কুকুর শ্রেণীর প্রাণী । যেমন ভাল্লুক । ভাল্লুকও কিন্তু কুকুর জাতীয় প্রাণী । আর যাবতীয় বাঘ, সিংহ, চিতা, লেপার্ড, জাগুয়ার হলো বেড়াল জাতীয় প্রাণী । ভারতীয় নেকড়ে সাইজে একটা কুকুরের থেকে অনেক বড় হয়ে থাকে । এরা দলবদ্ধ সামাজিক জীব । এবং দারুন শিকারী ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


সোনালী লাঙ্গুর হনুমান (সবার উপরে বাঁয়ে), শ্লথ (সবার উপরে ডানে), ম্যাকাক (নিচের তাকে পিছনের সারিতে বাঁয়ে ), সিংহলেজী বেবুন (নিচের তাকে পিছনের সারিতে ডানে), বব ক্যাট (নিচের তাকে সামনের সারিতে বাঁয়ে ), কালো মুখো হনুমান (নিচের তাকে সামনের সারিতে মাঝে )ও বুনো শূকর (নিচের তাকে সামনের সারিতে সর্বডানে )
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


শম্বর হরিনের স্টাফড মাথা (শিং সহ) । ভারতীয় অরণ্যের সব চাইতে বৃহদাকার হরিণ হলো এই শম্বর জাতীয় হরিণ । আকারে এক একটা মোষের মতো বড় ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


এশীয় বুনো গাধা । এক সময়ে এদেরকে প্রচুর পরিমাণে পাওয়ায় গেলেও বর্তমানে এরা বিলুপ্তপ্রায় জীব ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ইয়াক বা চমরী গাই । হিমালয়ের পাদদেশে, নেপাল, ভুটান ও তিব্বতে এদের প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় । এদের গায়ের লোম প্রচুর এবং সেগুলো উলের মতো ও প্রচুর লম্বা লম্বা, ঝালরের মতো । তীব্র ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচার জন্যই অভিযোজিত হয়ে এদের লোম এমন হয়েছে ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


পূর্ণবয়স্ক গয়ালের মাথা, শিং ও পূর্ণাঙ্গ কঙ্কাল । এরা আসলে এক ধরণের বুনো গাই । ভারতে এরা "মিথুন" বা "গয়াল" নামে পরিচিত । চিটাগাং বাইসন নামেও ডাকে এদের কেউ কেউ ।
স্থান : Indian Museum, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।


ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ


Sort:  
 2 years ago 

মাংসাশী ও ত্রিণোভজি প্রানীর অসাধারণ ফটোগ্রাফি করেছেন।।
সত্যি মিউজিয়াম টা দারুণ।।।
ধন্যবাদ দাদা সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।।

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



 2 years ago 
ঠিকই বলেছেন দাদা সবাইকে একা রেখে চলে গেলেন সত্যিই খুব খারাপ লাগছে।হাঁদা-ভোঁদা, নন্টে-ফন্টে, বাঁটুল দি গ্রেট তাদের নামের সাথে যুগ যুগ বেঁচে থাকবেন প্রয়াত নারায়ণ দেবনাথ। আপনার প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফি পোস্টের মাধ্যমে আস্তে আস্তে ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম ঘুরে দেখা হয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেকটা ছবি খুব সুন্দর হয়েছে। এশীয় বুনো গাধার ছবি দুটো আমার কাছে বেশী ভালো লেগেছে। আর আপনি ছবিগুলা এত সুন্দর করে তুলেন মনে হয় যে সত্যিই চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
 2 years ago 

দাদা আজকে আপনি খুবই শোকাহত ও মর্মাহত প্রয়াত নারায়ণ মুখার্জি মারা যাওয়ায়। আমরাও শোকাহত তার স্মৃতি বিজড়িত নন্টে ফন্টে চিত্র আমার কাছে খুবই ভাল লাগত। এই ধরনের কার্টুন দেখতে কার না ভালো লাগে ।অনেক মজা পাই এই ধরনের কার্টুন দেখে। তার কথা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আপনার আজকের ফটোগ্রাফি খুব সুন্দর ছিল। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 
ইয়াক বা চমরী গাইকে এই প্রথম বার দেখলাম ও নাম শুনলাম। আসলে এর আগে এটিকে দেখার কোনো অবকাশ ছিল না। আপনার মাধ্যমেই টা জানতে পারলাম। আর বাকি আলোকচিত্র গুলোও বেশ সুন্দর ছিল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
 2 years ago 

চিতল বা চিত্রল হরিণ

আমাদের এই অঞ্চলে আমরা সাধারণত সবর্দা এই হরিণগুলো উপস্থিতি দেখি, তবে যাই হোক এই হরিণগুলোকে দেখতে ভালো লাগে। এক ধরনের মায়া কাজ করে।

শ্মশানের চিতায় নারায়ণ দেবনাথ-কে যখন তোলা হবে তখন কে জানে সবার অলক্ষ্যে ভিড়ের মধ্যে হাঁদা-ভোঁদা, নন্টে-ফন্টে, বাঁটুল উপস্থিত থাকবে হয়তো ।

এটা ছিলো আজকের সব চেয়ে দূঃখের একটি সংবাদ। সত্যি মনটা খারাপ হয়ে গেছে। তবুও তিনি চির অমর হয়ে থাকবেন তার সৃষ্টির মাঝে।

 2 years ago 

শ্রদ্ধা জানাই প্রয়াত নারায়ণ দেবনাথের উদ্দেশ্যে। দাদা আপনার মত আমি ও ভাবি সৃষ্টিশীল মানুষের বিদায়ে তার সৃষ্টি নিশ্চই অলক্ষে এসে দাড়ায়। আজকের স্টাফ এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো লাগলো চামরী গাই,আর সোনালী লাঙ্গুর হনুমান।

 2 years ago 

বরাবরের মতো আজকের পোস্টও থেকেও আমি অনেক কিছু জানতে পারলাম দাদা। আপনি খুব সুন্দর ভাবে প্রতিটি প্রাণীর ছবি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মাঝে তুলে ধরেছেন। বুনো গাধা ,সোনালী রংয়ের হনুমান, সম্পর্কে আজ নতুনভাবে জানলাম। প্রতিদিন আপনার এই পোস্ট গুলোর অপেক্ষায় থাকি দাদা। আপনার মাধ্যমে প্রতিদিন নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পারছে এই প্রাণীগুলো সম্পর্কে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

নারায়ণ দেবনাথ এর সৃষ্টির মধ্যে নন্টে ফন্টের সঙ্গে আমি বেশ পরিচিত। ছোটবেলায় এই কমিকস গুলো খুবই ভালো লাগতো। অসাধারণ সব সৃষ্টির স্রষ্টা চলে গেলেন। তিনি চলে গেলেন কিন্তু তার সৃষ্টি থেকে যাবে। প্রার্থনা করি সৃষ্টিকর্তা তার আত্মাকে শান্তিতে রাখুন। সবশেষে বরাবরের মত আবারো কিছু দারুন সংরক্ষিত প্রাণী দেহ দেখতে পেলাম। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

যখন নির্মলদা এনাউন্সমেন্ট ঘোষণা দিলেন নারায়ণ দেবনাথ স্যার না ফেরার দেশে চলে গেছেন খবরটা শুনে ভীষণ খারাপ লেগেছিল আমার। হয়তো উনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে কিন্তু উনার সৃষ্টি থেকে যাবে আজীবন যখন উনার কৃষ্ট কর্ম গুলো দেখবো তখন খুব ভীষণ মিস করব এই মহান কারিগর কে। 😢🙏

Coin Marketplace

STEEM 0.29
TRX 0.12
JST 0.033
BTC 63732.43
ETH 3135.73
USDT 1.00
SBD 3.83