পরিবার নিয়ে বাইরে ঘোরা ফেরা (দ্বিতীয় পর্ব)।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


পুরাতন সুইচ গেট থেকে হেঁটে আমরা নতুন সুইচগেটের দিকে যেতে লাগলাম। তবে এই দুই সুইচগেটের মাঝখানের একটা রাস্তা বেশ চমৎকার করে তৈরি করা হয়েছে। রাস্তাটা কিছুদূর গিয়ে শেষ হয়ে গিয়েছে। যেখানে রাস্তাটা শেষ হয়েছে সেখান থেকে সামনে পুরো নদী দেখা যায়। খেয়াল করে দেখে বুঝতে পারলাম এ রাস্তাটি তৈরি করা হয়েছে দর্শনার্থীদের দেখার উদ্দেশ্যে। যদিও আগে এই রাস্তা দিয়েই এক সময় সমস্ত যানবাহন চলাচল করতো। তবে এখন এই রাস্তাটিকে বন্ধ করে দর্শনার্থীদের সময় কাটানোর জায়গায় পরিণত করা হয়েছে। যাই হোক আমরা নতুন সুইচগেটের কাছাকাছি এসে দেখতে পেলাম সেটি এখনো চালু হয়নি। তবে চালু না হলেও নতুন সুইচগেট দেখতে অনেক ভালো লাগছিলো।

IMG_20230710_171429.jpg

সেখানে পৌঁছে চিন্তা করতে লাগলাম এই সুইচগেটের নির্মাণ কাজ তো শেষ হয়েছে বেশ কিছুদিন হোলো। এখনো কেন চালু হচ্ছে না? পরবর্তীতে মনে হোলো হয়তো কোন কাজ এখনো বাকি রয়ে গিয়েছে যে জন্য এই নতুন সুইচগেট চালু হয়নি। যাইহোক সেখানে পৌঁছে আমরা দেখতে পেলাম একটি ছেলে সুইচগেটের উপর থেকে লাফ দিয়ে নিচের পানিতে পড়ল। এত উপর থেকে লাফ দিতে দেখে আমার রীতিমতো ভয় লাগছিলো। কিন্তু বুঝতে পারলাম এটা তাদের কাছে কোন ব্যাপারই না। কারন আমরা একসময় পুরাতন সুইচগেট এর উপর থেকেও স্থানীয় এমন অনেক ছোট ছোট ছেলেদেরকে লাফ দিয়ে নিচের পানিতে পড়তে দেখেছি। যেই পানি দেখলে আমাদের রীতিমতো ভয় লাগে সেই পানির ভেতরে এরা কিভাবে লাফ দেয় সেটা এখনো বুঝতে পারি না।

IMG_20230710_171737.jpg

নতুন সুইচগেট এর কাছে পৌঁছে দেখতে পেলাম এটিও দর্শনার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। যদিও আমরা যেদিন গিয়েছিলাম সেদিন সেখানে লোক সংখ্যা ছিল একেবারেই কম। কিন্তু দুদিন আগে আমি ফেসবুকের একটা পোস্টে দেখেছিলাম এখানে অসংখ্য মানুষ ভিড় করেছিল। আসলে আমাদের শহরে মানুষের বিনোদনের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই তো। তাই এই সমস্ত জায়গাতে সবাই এসে ভিড় জমায়। আমরা যখন নতুন সুইচগেটের পাশ দিয়ে হাঁটছিলাম তখন দেখতে পেলাম দুটি মেয়ে উপর থেকে নিচের দিকে নেমে গেলো। নতুন সুইচগেটের দুই পাশ বোল্ডার দিয়ে বাঁধিয়ে পাকা করে রাখা হয়েছে যাতে পানির তোড়ে আশেপাশের এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তবে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত বেশ খানিকটা পথ। এতটা ঢালু পথে মেয়ে দুটো কিভাবে নামলো আমরা সেটাই চিন্তা করছিলাম।

IMG_20230710_171304.jpg

তাদেরকে দেখে আমার মেয়েও বায়না ধরলো নিচে নামার জন্য। কিন্তু ছোট বাচ্চা সাথে নিয়ে এতটা নিচে নামার সাহস পেলাম না। আমি আর আমার স্ত্রী দুজন আলাপ করছিলাম যে এখনো নতুন সুইচগেটটি কেন চালু হয়নি। পরবর্তীতে খেয়াল করে দেখলাম সুইচগেটের অপর পাড়ের কিছু ছোটখাটো কাজ তখনও বাকি রয়েছে। সেটা দেখার পর বুঝতে পারলাম কেন সুইচগেট এখনো চালু হয়নি। গত বছর আমরা যখন এখানে এসেছিলাম তখন দেখতে পেয়েছিলাম সুইচগেটের কাছাকাছি পানির ভেতরে একটি নৌকায় রেস্টুরেন্ট তৈরি করা হয়েছিলো। আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম একদিন এসে সেই রেস্টুরেন্ট থেকে খাওয়া-দাওয়া করবো। কিন্তু এবার এসে দেখতে পেলাম সেই রেস্টুরেন্টটি আর নেই। যারফলে আমাদের সেই রেস্টুরেন্ট থেকে খাওয়ার ইচ্ছাটা অপূর্ণই থেকে গেলো। যে কোন জায়গায় ঘুরতে গেলে আমাদের টুকটাক খাওয়া-দাওয়া চলতে থাকে। খাওয়া-দাওয়া ছাড়া ঘোরাফেরাটা মনে হয় অসম্পূর্ণ থাকে।

IMG_20230710_171433.jpg

যাইহোক সেখানে আরো কিছুটা সময় কাটিয়ে আমরা পদ্মা পাড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। তবে আমাদের দেশে যে সমস্ত জায়গায় মানুষজন ঘোরাফেরা করতে যায় সেখানকার ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সবাই দর্শনার্থীদেরকে ঠকানোর কাজে ব্যস্ত থাকে। আমরা সুইচগেট থেকে পদ্মা পাড়ের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য রিক্সা ঠিক করতে গেলে রিক্সাওয়ালা আমাদের কাছে দ্বিগুনেরও বেশি ভাড়া চাইলো। সে মনে করেছিল আমরা হয়তো বাইরে থেকে এসেছি। এ কারণেই সে আমাদের কাছে বেশি ভাড়া চেয়েছিলো। আমরা তার রিকশায় না গিয়ে পরবর্তীতে অন্য আরেকটি রিক্সা ঠিক করে সেটাতে করে পদ্মা পাড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। (চলবে)

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানলক্ষ্মীপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

জায়গাটি সত্যি অনেক সুন্দর। তাইতো দর্শনার্থীদের জন্য রাস্তাটি ফাঁকা করে রাখা হয়েছে। যাতে করে সবাই ঘোরাঘুরি করতে পারে। আর নদী অঞ্চলের বাচ্চা কাচ্চাগুলো ছোটবেলা থেকেই নদীর পানিতে নামতে শিখে যায়। তাইতো তারা ভয় পায় না। সময়টা ভালো কেটেছে বুঝতে পারছি ভাইয়া। আর রিক্সাওয়ালাদের কথা কি বলবো ইচ্ছা মতো ভাড়া চাইলেই তারা যেন বেঁচে যায়।