বিভিন্ন সময়ে কলিগদের সাথে শেয়ার করা টিফিন

in Incredible India9 months ago (edited)
IMG_20250317_091151.jpg


হ্যালো বন্ধুরা

হঠাৎ করে গ্যালারিতে ছবি ঘাটতে ঘাটতে কিছু ছবি চোখে পড়ল ,যা বিভিন্ন সময় তুলে রেখেছিলাম এর মধ্য থেকে কয়েকটি ছবি সিলেক্ট করলাম, আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব বলে।

ছবি কথা বলে, আসলে আমার এই ছবিগুলো বিভিন্ন সময় তোলা ‌।একটা থেকে আরেকটার মধ্যে সময়ের পার্থক্য অনেক ।কিন্তু আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো প্রতিটা ছবি । প্রতিটা ছবির পিছনে ই কিছু না কিছু কাহিনী রয়েছে ।তাই আজ সেই গল্প কাহিনী নিয়েই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম।

আর আমার কাছে ভালো লাগলো বলেই আপনাদের সাথে শেয়ার করছি ।হয়তো আপনাদের কাছে ভালো লাগবে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেই শুরু করছি।

একদিন হঠাৎ করে আমার এক কলিগ বলল ,চলো পিয়াজু খাই। আমি বললাম! পিয়াজু পাব কোথায়? কারণ আমাদের ক্যাম্পাসের ভেতরে তো কোনো হোটেল নেই। তাছাড়া আমরা বাসা থেকে টুকটাক নাস্তা নিয়ে যাই। যেহেতু মর্নিং স্কুল একটা দেড়টার মধ্যে বাসায় চলে আসি। তাই ভারি খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয় না।

IMG20250218113913.jpg

নাস্তা হিসেবে যে যা খাই সেটাই আবার বক্সে করে অল্প করে নিয়ে যাই ।সময়ের ফাঁকে একটু খেয়ে পানি খাওয়ার জন্য ।তাইলে শরীরে একটু এনার্জি আসে। টিচিং প্রফেশনটা একটা বেন স্ট্রমিং কাজ ।তাই একটা ক্লাস নিলে খিদে লেগে যায়। আমাদের প্রায় সব কলিগদের ব্যাগেই ,বিশেষ করে মহিলা কলিগদের ব্যাগে কিছু না কিছু খাবার সব সময়ই থাকে।

তবে আমি জানতাম না আমার স্কুলে যে ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করেছে পরীক্ষামূলকভাবে ।স্কুলে অস্থায়ীভাবে ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করেছে। কারণ হলো টিফিনের সময় ছেলে মেয়েরা টিফিন করার জন্য যে বাসায় বা বাইরে বের হয় ,পরবর্তী ক্লাস গুলোতে তারা আর উপস্থিত থাকে না ।আর টিফিনের পর অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস থাকে ।তাই স্টুডেন্টদেরকে স্কুল মুখি করার জন্য এবং স্কুল পালানোর প্রবণতা কমানোর জন্য কর্তৃপক্ষ পরীক্ষামূলকভাবে ভাসমান পেইন্টিং তৈরি করেছেন।

অর্থাৎ আমাদের পাশের বাজার থেকে কিছু খাবার কিনে নিয়ে এসে এখানে বিক্রি করবে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত । তারপর ওনার আবার চলে যাবে। আমি ছুটিতে ছিলাম তাই আমি জানিনা। হঠাৎ, করে এক মামা হোটেল থেকে কিছু সিঙ্গারা, পুরী ,রিয়াজু সাথে কিছু বিস্কুটের প্যাকেট ছিল। কারণ হলো সবার রুচি তো আর একরকম না। যে যেটা খেতে পছন্দ করে সে তো সেটাই নিয়ে খেতে চায়,সেজন্য এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

যাইহোক,আমার এক কলিগ যেয়ে কয়েকটি পিয়াজু নিয়ে আসলো ।মজার বিষয় হলো ,আমার সবচেয়ে পছন্দের খাবার হচ্ছে পিয়াজু ।ভাজা পুড়ার মধ্যে আমি পেঁয়াজু টাকেই বেশি পছন্দ করি ।রমজান মাস আসলে আমার বাসা আর কিছু থাক বা না থাক পিয়াজু অবশ্যই থাকবে।

তবে খুব ভালো লেগেছিল একেবারে গরম গরম পিয়াজি ।তাই আবার ক্যামেরা বন্দি করে রেখেছিলাম। এই প্লাটফর্মে কাজ করার পর থেকে যে কোন জায়গায় যে কোন কিছু করি না কেন ক্যামেরা বন্দী করে রাখার চেষ্টা করি। পরবর্তীতে যাতে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারি। এত করে উপকার হল যে,সব সময় তো আর ছবি উঠানো হয় না। পুরনো কিছু ছবি দিও আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারা বা মনের ভাবনা গুলো প্রকাশ করতে পারা এই আর কি।

IMG20250225115722.jpg

বাহ্ ! দেখুন কি মজার ভর্তা ভাত। এটি হচ্ছে খূদের ভাত ।আমার এলাকায় এটিকে খুদের ভাত বলে। আপনাদের এলাকায় কি বলে তা জানিনা। এর সাথে ছিল গরম গরম হরেক রকমের ভর্তা। তবে সব ভর্তা গরম ছিল না কিছু ভর্তা ঠান্ডা ও ছিল। কিন্তু খুদের ভাতটা একেবারে গরম ছিল রান্না করে হটপটে করে নিয়ে এসেছে ,যাতে করে আমরা গরম গরম খেতে পারি ।তাছাড়া খোদের ভাত গরম না হলে মজাও |লাগে না। সবাই সেই লেভেলের মজা করে খুদের ভাত খেয়েছিলাম ।আমিও সুযোগ মতো কিছু ছবি তুলে রেখেছি আপনাদের সাথে শেয়ার করব বলে।

IMG20250224115949.jpg

এই যে মুড়ি মাখা ,এটি কিন্তু আমার স্কুলের সামনে না। এটি আমাদের কোয়াটারের বাহিরে একটি লোক বিক্রি করে ।ছেলে মেয়েরা যখন টিফিন আনতে বাজারে যায়, তখন তাদের কাছে টাকা দিয়ে দিলে তারা নিয়ে আসে ।আমি একটি স্টুডেন্ট এর কাছে টাকা দিয়ে দিয়েছিলাম । তাই সে আসার সময় এই সুস্বাদু এবং অসাধারণ মজার এ ঝাল মুড়ি টা নিয়ে এসেছিল ।সবাই এই মামার মুড়ি মাখা খুব পছন্দ করে। তাছাড়া প্রচুর বিক্রি হয়, আমার মনে হয় উনি প্রতি মাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকার চেয়ে বেশি এই ঝাল মুড়ি বিক্রি করে পায়।

তাছাড়া আমার কাছে এই মামাকে শিক্ষিত মনে হয়। তার কথাবার্তা ধরন দেখে মনে হয় সে শিক্ষিত। বেকারত্ব যেভাবে বেড়েছে ,তাই আত্মসম্মানের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। নিজের পেট বাঁচাতে হবে। ফ্যামিলির হাল ধরতে হবে। ওনাকে আমি স্যালুট জানাই উনার এই মহতি উদ্যোগের জন্য। আমাদের উদ্যোক্তা হতে হবে, তাহলেই দেশের উন্নয়নের টাকা ঘুরবে।

IMG20250218191100.jpg

এখন যেটি দেখছেন সেটি হচ্ছে পাকোড়া অর্থাৎ ভুট্টার পাকোড়া আমি জীবনের প্রথম ভোট্টা দিয়ে এই পাকোড়া বানিয়েছি ।গরম গরমে খেতে বেশ ভালোই লাগে। আমাকে এক কলিগ দেখিয়ে দিয়েছিল কিভাবে এই ভুট্টা করা ভাবতে হয়। তাই কিছুদিন আগে হাফ কেজির মত আস্ত ভূট্টা কিনে এনেছিলাম বাজার থেকে। আর আমার কলিগের বলা পরামর্শ মত এই ভুট্টা গুলো ভেজেছি। যে ওনি আমাকে শিখিয়ে দিয়েছেন মোটামুটি ওনার কাছ থেকে শিখেই তৈরি করেছি তাই ওনার জন্য নিয়ে এসেছি ।তাই বলে কি শুধু উনার জন্য একা আনা যায় ।সবাই তো টেবিলে বসে থাকে। তাই সবাই যাতে খেতে পারে সেই অনুপাতেই নিয়ে এসেছিলাম।

এই ছিল আমার স্কুলে বিভিন্ন সময়ে খাওয়া হালকা টিফিনের বর্ণনা ।যা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। হয়তো আপনাদের ভালো লাগবে ।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ,মাহে রমজানের শুভেচ্ছা।

Sort:  
Loading...
Loading...
 9 months ago 

এটা একদম ঠিক কথা বলেছেন এবং আমি বিশ্বাস করি ছবি কথা বলেন,, আসলে আমাদের মোবাইলে ধারণ করা এমনও কিছু ছবি আছে যে গুলো দেখে আমাদের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে,, এমন কিছু আমরা উপভোগ করি যে গুলো আমাদের নিজের অজান্তে অনেক আনন্দ নিয়ে আসে,, যাইহোক বিভিন্ন সময়ে কলিগদের সাথে শেয়ার করা টিফিনের মুহূর্তটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।