ছোট গল্প ||| একজন মানুষ গড়ার কারিগর।
আসসালামু আলাইকুম।
একজন মানুষ গড়ার কারিগর।
আজকে আমি আবারো আপনাদের মাঝে নতুন একটি ছোট গল্প নিয়ে হাজির হতে চলেছি।আমার মনে হয় আমার গল্পগুলো আপনাদের একটু হলেও নজরে এসেছে যেটা আপনাদের মন্তব্য গুলো থেকে বুঝতে পেরেছি।তাই আবারও একটি ছোট গল্প লেখার আগ্রহ এবং উৎসাহ বোধ করছি।এবারের গল্পটিও বর্তমান সমাজে ঘটে যাওয়া সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা।তবে গল্পটি যদি আপনাদের মনে একটু জায়গা করে নিতে পারে।তাহলে অবশ্যই আপনাদের সু চিন্তিত মতামত এবং পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করবেন আশা রাখি।
পৃথিবী একটি রঙ্গমঞ্চ।এই মঞ্চে একেকজন একেক ভাবে নিজের জীবনটাকে উপভোগ করেন। অনেকেই উপভোগ করেন অনেক শান শওকত এর মধ্য দিয়ে আরও অনেকে উপভোগ করেন মানুষের সঙ্গে নিজের সুখকে বিলিয়ে দিয়ে।সবার মধ্যে নিজের সুখকে বিলিয়ে দেয় এমন একজন মানুষের জীবন কাহিনী নিয়ে আমার এই গল্পটি শুরু করছি।আমার গল্পগুলো সব সময় বাস্তব ভিত্তিক এবং সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখার চেষ্টা করি।জানিনা আমার গল্পগুলো আপনাদেরকে কতটুকু প্রশান্তি দেয় ও পড়তে আগ্রহ সৃষ্টি করে।
গ্রামের সহজ সরল আলী মাস্টার ছোটবেলা থেকেই গ্রামে বাস করতেন।তিনি একজন পেশায় চাকরিজীবী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে সে দীর্ঘদিন ছাত্র-ছাত্রী পড়াইয়া আসছেন।সেই সুবাদে গ্রামের লোকজন এবং আশেপাশের লোকজন ও অত্র এলাকার লোকজনদের সাথে তার সুন্দর একটি সম্পর্ক এবং পরিচিতি আছে।মাস্টার মশায়ের চার ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তানের সংসার এবং তার সংসার অনেক সুন্দর ও গোছালো।চার ছেলের মধ্যে বড় ছেলে সংসার দেখাশোনার কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন এবং বাকি তিন ছেলে এবং মেয়েরা পড়াশোনার প্রতি মোটামুটি মনোনিবেশ করেছিল।শেষ পর্যন্ত চার ছেলের মধ্যে এক ছেলে সংসার দেখাশোনা, এক ছেলে এ বি পাস করেন,তৃতীয় ছেলে সেনাবাহিনীতে এবং ছোট ছেলে অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ছিল।আর দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেন এবং ছোট মেয়েও পড়াশোনা করছেন মাস্টার্সে।এই হলো মাস্টার মশাই এর সংসারের হাল হাঁকিকত।
সব মিলিয়ে মাস্টার মশাই মোটামুটি অত্র এলাকার মধ্যে খুব স্বনামধন্য এবং একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি হিসেবে সকলেই তাকে অনেক সম্মান করনে।মাস্টারমশাইও সকলের সম্মানের মর্যাদা দিয়ে চলেন এবং তার চলাফেরাতেও ছোট বড় সকলেই প্রশংসা করতেন।তবে পৃথিবীর নিয়ম তো আর কখনো কোনো পরিবারের জন্য আলাদা হয় না।প্রত্যেকটা পরিবারের জন্য নিয়ম একই এবং একই ধরনের পরিস্থিতি বিরাজ করে যেটা মাস্টার মশায়ের পরিবারেরও ঘটে গেল।অর্থাৎ মাস্টার মশাইয়ের তিন ছেলে বিয়ে করার পরে যার যার সংসার আলাদা করে নিয়ে বসলো।এমন সময় মাস্টার মশাই চাকরি থেকে রিটায়ারমেন্টে চলে আসলেন আর রিটারমেন্টে চলে আসার পরে প্রত্যেকটি লোকের ইনকাম অনেক কমে যায়,যার কারণে তার পক্ষে পরিবারের সকল দায় দায়িত্ব নিয়ে চলা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
কিন্তু কিছু করার নেই মাস্টার মশাই এর কারণ তার ছেলেরা এখন মোটামুটি সকলেই স্বয়ং সম্পূর্ণ এবং নিজ নিজ পরিবার নিয়ে তাদের চলাফেরা অনেক সুন্দর গতিতে চলছে।আর এই গতিশীল পরিবার গুলোকে আর একাত্তরে করা সম্ভব না এটা মাস্টার মশাই বুঝে গেছেন।এই ভেবে মাস্টার মশাই তার গৃহিনীকে বললেন যে যত কষ্টই হোক আমাদের সংসার আমাদেরকেই চালাতে হবে।ছেলেদেরকে কখনো আর এই সংসারে আনা যাবে না কারণ তারা এখন অনেক ভালোভাবে চলছে।আমি চাই তারা তাদের নিজ নিজ পরিবার সুন্দরভাবে চালিয়ে নিয়ে যাক এবং আমাদের নাতিপুতিরা যেন ভালোভাবে মানুষ হতে পারে সে দোয়াই করি।
আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার। আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।তাই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং তাদের সহযোগিতায় নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখি।
আসলে একটা সময় আসে যখন সবাই কিন্তু আগের ধারায় ফিরে যায়। আমি মাঝে মাঝে চিন্তা করি আপন বা পর, নিজের রক্তের বাঁধনের মানুষ একটা সময় নিজের থেকেই আলাদা থাকার মত সিদ্ধান্ত নেয়। আর তখনই কিন্তু পরিবারের মধ্যমণি যারা তারা অসহায় হয়ে পড়ে। এক সন্তান হলে তো একজনের উপর নির্ভর থাকে।কিন্তু অধিক সন্তান হলে কারো উপরই নির্ভর করে থাকতে পারেন না। কারণ সবাই নিজের মত আলাদা। যাইহোক গল্পটা পড়ে ভালো লাগলো আপু। মাঝে মাঝে এভাবে গল্প শেয়ার করলে আরো ভালো লাগবে।
সুন্দর মন্তব্য করে সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ আপু।
আসলে শিক্ষা এমন একটা জিনিস এই গুণটা যার মধ্যে রয়েছে। সে আর কিছু না পারলেও নিজের পরিবার সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করার যে বিষয়টি সেটা তিনি ভালোভাবেই করতে পারে । তেমনি মাস্টারমশাই নিজের সকল সন্তানকে প্রতিষ্ঠিত করেছে এটাই তার অনেক বড় প্রাপ্তি। তার পরিবারের সুখের এটাই মূল কারণ অনেক ভালো লাগলো আসলেই শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর।
সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
শিক্ষামূলক একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপু। আদর্শ মানুষের মধ্যে সবকিছুই থাকার দরকার। শিক্ষায় মানুষের সফলতা আনতে পারে না।বাবা-মার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য সকল সন্তানেরই। আমাদের সকলের উচিত বাবা-মার শেষ সময় পাশে থাকা। মাস্টার মশাই সারা জীবন কষ্ট করে তার ছেলে মেয়েদের পড়ালেন।এখন শেষ বয়সে ছেলেমেয়েরা তাকে ছেড়ে আলাদা হয়েছে। গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো আপু। আশা করি আরো সুন্দর সুন্দর গল্প আপনার কাছ থেকে পাব।
সুন্দর মন্তব্য করে সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ আপু।
মাস্টার মশাই তার সন্তানগুলোকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছে ঠিকই, কিন্তু ঠিকঠাক বাবা মার উপর দায়িত্ব নেওয়ার যে ব্যাপারটা, সেটা হয়তো তাদেরকে শেখাতে পারেন নি। এইজন্যই হয়তো তারা বিয়ে করার পর বাবা-মাকে এভাবে আলাদা করে রেখে তাদের নিজ নিজ সংসারের দিকে এতটা ঝুঁকে পড়েছে। তবে মাস্টার মশাই নিঃসন্দেহে খুব ভালো মানুষ, এই জন্য তিনি কোন ঝামেলা করেননি। তিনি নিজেও চেয়েছেন যেন তার ছেলেরা অনেক ভালো থাকে তাদের পরিবার নিয়ে।
গঠনমূলক মন্তব্য করে কাজে উৎসাহ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ দাদা।