Life will always go on! অপরিবর্তিত সত্য!

in Incredible India13 days ago

1000069402.jpg

দায়িত্বের আড়ালে নিজের অনুভূতি সমানে চাপা দিয়ে চলেছি সেই শৈশব থেকে, আজও সবকিছু যেনো অপরিবর্তিত রয়ে গেছে!

দেখতে দেখতে ১০ দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেছে, এ যেনো এক্ অবিশ্বাস্য অথচ বাস্তব সত্য কারোর জন্য কিছুই বোধহয় থেমে থাকে না!

জীবনযাত্রা তার নিজের ধারাবাহিকতা মেনে এগিয়ে চলে! যেমন অন্যের ক্ষেত্রে বিষয়টি প্রযোজ্য তেমনি একদিন আমরা চিরতরে হারিয়ে গেলেও বাকিদের জীবন যাত্রা থেমে থাকবে না!

এটাই বাস্তব যেটা অনেকের ক্ষেত্রে সহজেই মেনে নেওয়া গেলেও কিছু সম্পর্কের শূন্যতা চিরকাল বয়ে বেড়াতে হয়।

ভারাক্রান্ত মন নিয়ে লেখাটা লিখছি, কারণ আজকাল আর কাউকে বিশেষ নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে মন চায় না।

আজকে যে দিনটির কথা উল্লেখ করছি সেটা ২৪ তারিখের, অর্থাৎ আমাদের ছেড়ে দিদির মেয়ের চির বিদায়ের পর দিন!

1000069398.jpg

জীবনে একটার পর একটা সম্পর্ক হারিয়ে বুঝেছি, সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেউ নেই যিনি মনের অভিব্যক্তি বুঝতে পারেন!

দিদি পরদিন স্টারমল গিয়েছিল সঙ্গে তার বন্ধু ছিল, আর আমার বাড়ি ফেরার পথেই যেহেতু স্টারমল পড়ে তাই আমিও একসাথেই বেড়িয়েছিলাম বাড়ি ফিরবো তাই, এছাড়াও অনলাইনে জিনিসের অর্ডার দেওয়া ছিল এবং সময়ের আগেই জিনিষ এসে একবার ডেলিভারী বয় ঘুরে গিয়েছিল, যেহেতু ছেলেটি পরিচিত তাই সন্ধ্যায় আসতে বলে দিয়েছিলাম।

1000069400.jpg1000069401.jpg

আমার হাতে সময় কম ছিল, এছাড়াও অনেক বিষয় আমি সত্যি বলতে মন থেকে মেনে নিতে পারি না, তবে কিছু পরিস্থিতি উপেক্ষার উপায় থাকে না, তাই কফি খেয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম বাড়ির উদ্দ্যেশে!

যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে সেই মানুষগুলোর জায়গায় রেখে বোঝার প্রয়াস করি এত সহজেই কি কাছের মানুষগুলোকে ভুলে যাওয়া যায়?

জীবিত অবস্থায় কত নালিশ, কত বাক বিতন্ডা তারপর যখন না ফেরার দেশে পাড়ি জমায় সেই মানুষগুলো, কত অবলীলায় যে যার মতো করে নিজের পথ বেছে নেয়!

কতগুলো বিষয় আজকের এই লেখায় উল্লেখ না করলেই নয়, আর সেটা হলো কোনো মানুষ সেটা পরিচিত হোক, সম্পর্কে আবদ্ধ থাকে কিংবা নাই থাকুক কখনোই কোনো মানুষকে প্রয়োজন হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়!
কেনো বলছি? কারণ! মানুষদের মধ্যে অনুভূতি থাকে তারা বস্তু নয় তাই মুখে প্রকাশ না করলেও মনের মধ্যে কিছু অভিব্যক্তি কাজ করে!

  • পরদিন আমার বড় দিদির কিছু ছবি তুলেছিলাম মলে:-

1000069396.jpg

1000069397.jpg

1000069395.jpg

অনেকেই মনে করেন অর্থ দিয়ে প্রয়োজনের সময় পাশে থাকা মানুষদের সময়, কৃতজ্ঞতার মূল্য চুকিয়ে ফেলা যায়!
ক্ষমতা আছে তাই প্রয়োজন শেষ হয়ে গেলে, কিংবা মনের মত কথা, কাজ না হলে অপমান করে তাড়িয়ে দেওয়া যায়!

এরা ভুলে যায় সময়ের চাকা সর্বদা ঘুরছে, আর অন্তরালে একজন সকলের সব হিসেব রাখছেন, তাই আর যাই অন্যায় আমাদের দাড়া হোক না কেনো জেনে শুনে কারোর মনকে আহত করতে নেই!

যারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবেন না, সময় তাদেরকে ঠিক নিজের শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলে একদিন! তবে, সেটির মূল্য কত ভয়ংকর ভাবে চুকাতে হতে পারে তার আন্দাজ খুব কম মানুষ অনুভব করতে পারেন, যতক্ষণ সময় বাস্তব শিক্ষার হাত ধরে থাবা না বসাচ্ছে!

পাশে অনেক মানুষ থাকলেই তারা শেষ পর্যন্ত সঙ্গ দেবে এমন গ্যারান্টি কতজন দিতে পরে বলুন তো?

আবার অর্থ থাকলেই সামাজিক পরিচিতি লাভ সম্ভব এটার ও কিন্তু কোনো বাস্তবিক ভিত্তি নেই!
এই সমাজে অনেক কম উপার্জন করেও অনেকে অধিক পরিচিতি পায়, আবার অধিক উপার্জন করেও মুখ লুকিয়ে বেড়াতে হয়!

যেদিনের কথা বলছি সেটা ছিল ২৭ তারিখ, যেহেতু সেদিন বৃহস্পতিবার ঘরের কাজ সেরে দিদির কাছে পৌঁছতে খানিক বেলা হয়েছিল, কি মনে করে জানিনা যাবার সময় গৌরীপুর কালী মন্দিরে পুজো দেবো ঠিক করে মিষ্টি কিনেছিলাম।

1000069774.jpg

1000069383.jpg1000069382.jpg

1000069384.jpg

তবে, যখন পৌঁছলাম তখন দুপুর একটার বেশি হয়ে গিয়েছিল তাই মন্দিরের গেট বন্ধ শুরু হয়ে গিয়েছিল, তৎসত্ত্বেও যে মহিলা তালা দিচ্ছিলেন তিনি আমাকে ভিতরে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন, এবং পুরোহিত নিজে মায়ের কাছে পুজো দিয়ে আমাকে প্রসাদ দিয়েছিলেন!

অনেকেই ভাবতে পারেন এরমধ্যে আলাদা কি আছে?
দুটি বিষয় যার প্রথমটি হলো, মা কালী আমার মনের উদ্দেশ্য বুঝেছিলেন, তাই বন্ধ দ্বারের আড়ালে আমার নিবেদন পৌঁছেছিল!

দ্বিতীয় বিষয় হলো, ব্যবহার! শৈশব থেকে ওই এলাকায় বড় হয়েছি, তখন মন্দির এত বড় ছিল না, মানুষ বদলে গেছে সময়ের হাত ধরে, মন্দিরের আকার বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু কিছু মানুষের মধ্যে মানবিকতা আজও বিদ্যমান।

কে কিভাবে, কোন সময়, এই পৃথিবীতে আসবে এটাও যেমন সৃষ্টিকর্তা নির্ধারণ করেন, তেমনি এই ধরা হতে কিভাবে, কোন সময়, কাকে চিরতরে বিদায় নিতে হবে সেটাও সৃষ্টিকর্তা নির্ধারণ করেন, তবে পার্থক্য হলো, কারোর জন্য থাকে যন্ত্রণা বিহীন বিদায়, আর কিছু মানুষদের কর্মফল ভোগ করে যন্ত্রণা সয়ে বিদায় নিতে হয়, এই যা পার্থক্য।

1000069393.jpg1000069394.jpg

আমার মধ্যে এমন একটা লড়াই চলছে, সঙ্গে এত প্রশ্ন যেগুলো নিয়ে লিখতে বসলে বোধহয় লেখায় ইতি টানা অসম্ভব, তাই সেগুলো মনের মধ্যে চাপা রেখে আজকের লেখা এখানেই শেষ করছি।

ভালো থাকুন সবাই আর দয়া করে মানুষকে মানুষ ভাবুন বস্তু নয়! এত সহজে আজকে আপনি কাউকে ভুলে গেলে, আগামীতে সেই জায়গায় আপনাকেও থাকতে হতে পারে!

কি জানি! আমি ভুল ও হতে পারি, জীবনের মূল্য প্রাণহীন দেহের চাইতে অধিক! কারণ জীবন থাকলে সেখানে ইচ্ছে পূরণের রসদ সরবরাহের ব্যাংক খোলা থাকে আর অপরটির ক্ষেত্রে? উত্তর সকলেরই জানা!

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  
 12 days ago 

আজকে দুপুরেই আপ্নার দিদির একমাত্র মেয়ের হহঠাৎ মৃত্যু নিয়ে লেখাটা পড়েছিলাম ।পড়ার পরে খানিকটা সম্ভিত হয়ে ভাবতেছিলাম এমন মৃত্যুতো সাধারণত একটু বেশি বয়সের মানুষের হয়ে থাকে ।তবে মৃত্যু যেকোন সময় যেকোন মানুষের কাছে আসতে পারে এটা ভেবে নিজেকে বুঝিয়েছিলাম সেই সাথে আপনার দিদির মনের কথাও ভাবতেছিলাম কারন আমিও একজন মা।
আজকে আপনার দিদির শপিং মলের ছবিগুলো দেখে সত্যিই অবাক হয়ে গেলাম।কারণ সদ্য সন্তানহারা মায়ের এমন ছবি দেখতে আমার চোখ অভ্যস্থ নয় ।
কিন্তু একটু পরেই সেই সম্ভিতভাবটা কাটিয়ে উঠে তার মনের অবস্থাটা বুঝতে চেষ্টা করলাম।আসলে তার মনের ভেতরে যে ঝড় বয়ে চলেছে সেটা বোঝার ক্ষমতা আমাদের নেই।সেটা থেকে সে যদি এভাবে বের হওয়ার চেষ্টা করে তাহলে তাকে সাপোর্ট করাই উচিত ।
সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি আপানারা দুজনেরই যেন এই শোক থেকে কিছুটা হলেও বের হয়ে আসতে পারেন যদিও জানি এটা প্রায় অসম্ভব ।
ভালো থাকবেন সবসময় ।

 10 days ago 

Thank you so much , ma'am.

Loading...