আজকের কবিতা- ব্যবহার! (Poetry-Deportment!)
|
---|
ব্যবহার শুধু বস্তুর নয়,
মানুষের ও যে হয়;
যেদিকেই যাই, স্বার্থপরতার
গন্ধ, সর্বদা নাসিকায় লেগে রয়!
কে বলে? সমাজ উন্নত!
উন্নত আজ শির?
আনাচে কানাচে আজও
কেবল স্বার্থপর দের ভিড়!
নগ্নতা শুধু শরীরের নয়
ভাষায় মিলেছে দেখা;
প্রতিবাদে আছি একলা দাঁড়িয়ে
বাকিসব দিক ফাঁকা।
চক্রান্ত আজও আড়ালেই রয়;
সত্যের ধারা সম্মুখে বয়!
খেয়ে মুখ মুছে, করে যোগ বিয়োগ;
পাপাগারে সামিল হচ্ছে নিয়োগ!
জানি তুমি দেখছ বসে,
পূর্ণ তব খেরো খাতা;
সামনেই তো দীপাবলি!
একহাতে খড়গ, আরেক হাতে?
থাকবে পাপীর কাটা মাথা!
মায়ের ক্ষমতা মূর্খরা জানে না
জানবেনা তারা কভু;
শত আঘাতেও তাই, মুখ ফুটে আসে
ওই মূর্খদের ক্ষমা করো প্রভু।
দিকভ্রান্ত পথিক যে সব,
সামান্য লোভে হই হই রব!
ডাকলেই কেউ, সাথে সাথে দেয় সাড়া;
নির্বোধ সব, জানেনা....
আজকের কর্ম, কালকেও করবে তাড়া!
আজকে নিজের অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ করবার প্রয়াস করেছি কিছু শব্দ সমষ্টি দ্বারা।
তবে, এখনও অনেককিছু জমা রাখা আছে অন্তরে! ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আজ বিকেলে বেড়িয়েছিলাম। আজকে শনিবার তাই স্টেশনের কাছে নব নির্মিত শনি দেবতার মন্দিরে বেশ ভিড় ছিল।
হিন্দু ধর্মে শনি দেবতাকে কর্মের দেবতা বলা হয়, মানে কর্মফল দাতা হিসেবে তিনি পূজিত হন।
এর আগেও লেখায় উল্লেখ করেছিলাম, ভারতের মুম্বাই এ (আগে বম্বে নাম ছিল) শনি শিংনাপুর নামে একটি গ্রামের কোনো বাড়িতেই কোনো দরজা নেই, রয়েছে শুধু দরজার কাঠামো!
(নব নির্মিত শনি দেবের মন্দির) |
---|
ওই গ্রামে শনিদেব পূজিত হন, এবং গ্রামবাসী বিশ্বাস করেন, শনিদেব তাদেরকে সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষার জন্য সেখানে উপস্থিত আছেন। এই বিশ্বাসের পিছনে রয়েছে অনেক বাস্তব ঘটনা। এই উন্নত যুগে দাঁড়িয়েও অনেককিছু কে বিজ্ঞান আবিষ্কার বা বলা যেতে পারে ছুঁতে পারেনি, গ্রামটি তারই নিদর্শন।
আপনারা চাইলে গুগল থেকে বের করে বিষয়টি পড়তে পারেন, কারণ এই অদ্ভুত বিষয়টি দেখতে বহু পর্যটকদের ভিড় হয় সেই গ্রামে।
গ্রামের মানুষ নির্ভয়ে অর্থ এবং অলংকার উন্মুক্ত অবস্থায় আজও রেখে দেন, এবং কখনো চুরি করবার সাহস কেউ দেখায় না, তার পিছনেও অনেক সত্য ঘটনা রয়েছে।
সৃষ্টিকর্তার উপস্থিতির বহু নিদর্শন বহু ঘটনায় প্রমাণিত, আর ঠিক সেই কারণে নিজে অন্তর থেকে স্বচ্ছ থাকার প্রয়াস করি তাঁর কাছে।
কথায় আছে, ব্যবহার মানুষের পরিচয়। আর, সেই ব্যবহার খানিক কর্মের ফল বহন করে।
কাউকে সামনে সম্মান করে পিছনে অপমান যেমন পাপে সামিল, ঠিক তেমনি কারোর বিশ্বাস, ভরসা আর আস্থাকে আত্মস্বার্থে কাজে ব্যবহার করাটাও পাপে সামিল।
মানুষ কোনো যন্ত্র নয়, তাই তার অনুভূতি আছে আর সেই অনুভূতিকে ছোটো করে, অথবা বিশ্বাসকে ব্যবহার করে ছলনার আশ্রয় নিয়ে কিছুদূর পৌঁছনো সম্ভব হলেও, বেশিদূর যাওয়া অসম্ভব।
কারণ, জীবনের শেষ অঙ্ক না মিলিয়ে কারোর ছুটি নেই। হিসেব একজন অন্তরালে রেখে চলেছেন সকলের ক্ষেত্রেই, আর সেই হিসেবে খাতা পূর্ণ হলে কর্ম অনুযায়ী ফল পেয়ে তবেই ছুটি।
যারা কেবলমাত্র লাভ ক্ষতির হিসেব কষে জীবনযাপন করেন, জীবনের শেষ পাতে তাদের লোকসান ছাড়া কিছুই পড়ে থাকে না! কারণ, যে কর্মের পিছনে স্বার্থ থাকে, সেটিকে সৃষ্টিকর্তা সুফল বলে গণ্য করেন না।
(অস্তমিত রবি) |
---|
উদিত সূর্য্য যেমন নিজেদের নব নির্মিত করবার সুযোগ করে দেয়;
ঠিক তেমনি অস্তমিত রবি বলে যায়, পিছন ফিরে তাকিয়ে, নিজের ভুলগুলোকে শুধরে নিতে।
জীবনের এক্ একটি মুহূর্ত অনেক মূল্যবান, কাজেই, প্রতিটি মুহূর্তকে গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করে নিজেকে প্রতিদিন একটু একটু করে উন্নত করাটাই বোধহয় শ্রেয়।
কবিতার নামকরণ যথার্থ হয়েছে। পাশাপাশি, কবিতার প্রতিটি শব্দের অর্থ যেন কবিতায় প্রাণের সঞ্চার করেছে। এছাড়া, ছন্দের মিল অসাধারণ যেটা না বললে অন্যায় হবে।
এবার আসছি কবিতা প্রসঙ্গে আমার অভিমতে; সত্যি কথা বলতে ব্যবহার এই শব্দটির সঠিক প্রয়োগ কদাচিৎ দেখা যায়। এই কদাচিৎ দের দলভুক্ত আমিও। কিন্তু যেটা সেটা সম্মুখে বলতেই আমি অভ্যস্ত আর এটাকে আমি আমার সৎ সাহস বলেই দাবি করবো।
এই ব্যবহারের ক্ষেত্রে যেটা আমার সবচাইতে বেশি অপছন্দ তা হলো দুটি চরিত্র। স্বয়ং ঈশ্বরই সকলের প্রিয় না তাহলে আমরা সেখানে কি? তাহলে এই ব্যবহারে উভয়কূল রক্ষার থেকে অপ্রিয় সত্য কথাই শ্রেয় যেটা ঈশ্বর ও পছন্দ করেন।
সর্বশেষ একটা কথা বলতেই হবে যে নারী কিন্তু শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল না। বরং ধৈর্য্যশীল এবং নমনীয়। তাই ভুল করে সেটাকে দুর্বল মনে করাটা সবচাইতে বড় ভুল। অসুরদের বিনাশে নারীরূপেই ঈশ্বরের আবির্ভাব হয়েছিল।
সব মিলিয়ে কবিতা এবং কবিতার সাথে যুক্ত থাকা প্রতিটি শব্দ এবং বাক্য অসাধারণ হয়েছে দিদি। পরবর্তী আকর্ষণীয় লেখা পরিদর্শনের অপেক্ষায় রইলাম।
THE QUEST TEAM has supported your comment. We support quality posts, good comments anywhere, and any tags
@sduttaskitchen,
ধন্যবাদ ম্যাম, আপনার মূল্যবান সমর্থনের জন্যা।
দিদি আপনার লেখার ধরন সত্যিই আমার মন ছুঁয়ে গেল। এত সুন্দর শব্দ চয়ন, এত গভীর ভাবনা চিন্তা সত্যিই এক কথায় অনবদ্য। আপনার আগের কিছু পোস্ট ও ইতিমধ্যেই পড়েছি । আমি সত্যিই আপনার লেখনীর বড়ো ফ্যান হয়ে গিয়েছি।
আজকাল একজন মানুষ আর এক মানুষ কে পণ্য দ্রব্যের মতোই ব্যবহার করে। নিজ স্বার্থ সিদ্ধির জন্য অন্যকে ব্যবহার করা এবং স্বার্থ মিটে গেলে তাকে ভুলে যাওয়ার মতো নিকৃষ্টতম কাজ আর হতে পারে না। নিজের সাথেও এইরকম বহুবার ঘটেছে। তবে আমি ভীষণ পরিবারের ভগবানের বিশ্বাসের। করি কোনো একজন আছেন তিনি উপর থেকে সমস্ত কিছু দেখছেন এবং প্রত্যেকটি তার যথার্থ জবাব তিনি নিজেই দেবে। এই পৃথিবীতে যে যার সাথে যেমন আচরণ করবে, অন্য কেউ না কেউ সেই একই আচরণ তাকে অবশ্যই ফেরত দেবে।
আর আপনার পোস্ট থেকে শনি শিংনাপুর গ্রামের কথা জানতে পারলাম যেটা আমার আগে জানা ছিল না। সত্যিই বিজ্ঞান অনেক দূর তার ডালপালা বিস্তার করলেও আমাদের মনের বিশ্বাসকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারেনি। আর তাছাড়া কথাতেই আছে "বিশ্বাসে মেলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর।" তাই ভগবানের ওপর বিশ্বাস রেখে সমস্ত পাপ কর্ম থেকে দূরে থাকায় শ্রেয়।