||বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে টুনটুনি পাখি|| লটকন ফলের মায়া ত্যাগ করে দুটি টুনটুনি ছানার জীবন রক্ষা

in Steem For Tradition2 years ago

Hello friends
আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন



বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে টুনটুনি পাখি

Polish_20230417_104708754~2.jpg

🐦🐥🐦🐧🕊🦅🐣🐤🐥🐦🐧🕊🦅🦜



1681705091586.jpg

এক সময় আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখা যেত। বর্তমানে অনেক কম দেখা যায়। বিভিন্ন প্রজাতির পাখি প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে। অন্যতম কারণ হচ্ছে বন ধ্বংস এবং গাছপালার পরিমাণ কমে যাওয়া। পাখি বিলুপ্ত হওয়ার পিছনে পাখি শিকারীদের বিরাট অবদান রয়েছে। পাখি শিকার করে তারা নিজেরাও খেয়ে থাকে এবং বিক্রিও করে থাকে।


IMG_20230403_170714_020-01.jpeg

IMG_20230405_101248_383-01.jpeg


টুনটুনি পাখি ও প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।ছোটবেলায় দেখতাম বিভিন্ন ঝোপঝারে টুনটুনি পাখি। এই পাখি অনেক ছোট এতটাই ছোট যে ঝোপঝাড়ের ভিতর থাকলে ঠিকমত বোঝা যায় না। কিন্তু এই পাখি অনেক জোরে ডাকতে পারে। পার্বতীপুরে যখন ছিলাম আমাদের আবাসিকে প্রচুর পাখি দেখতাম।পরে ধীরে ধীরে সেগুলো কমে গিয়েছে। আমি চার বছর আগে একটি লটকন গাছ লাগিয়েছিলাম, আমার ছোট একটি বাগানে।


IMG_20230403_171214_003-01.jpeg

IMG_20230403_171207_854-01.jpeg


IMG_20230403_170835_349-01~2.jpeg

লটকন গাছটি লাগানোর কিছুদিন পরে ছাগল একবার গাছের মাথা খেয়ে ফেলেছিল। তারপর আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। এভাবে বেশ কয়েকবার ছাগলের হামলার শিকার হয়েছিল। গাছটি তারপরও গাছটি এখন মোটামুটি বড় হয়েছে। এবার গাছে প্রথমবার লটকন ধরেছে যেটা দেখে সত্যিই আমি অনেক উচ্ছ্বাসিত। নিজে গাছ লাগিয়েছি,সেই গাছে ফল ধরেছে এটা আমার কাছে এক ধরনের আবেগ।


IMG_20230403_170921_918-01.jpeg

যেহেতু এবছর বৃষ্টির পরিমাণ কম তাই লটকন ধরার পর ঝরে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। তাই মাঝে মাঝে এক ভাইয়ের পরামর্শে স্প্রে করতাম। গত কয়েকদিন আগেও আমি স্প্রে করাতে ছিলাম। গাছের এক পাশে আমার স্প্রে করা শেষ অপর পাশে যখন স্প্রে করতে যাব ঠিক তখন আমার চোখে পড়ল খড়কুটা জাতীয় কিছু একটা। স্প্রে করা থামিয়ে গাছের ডাল টেনে দেখলাম এটি একটি পাখির বাসা। আরেকটু কাছে নিয়ে যখন উপর থেকে দেখলাম এবং আমি অনেকটা অবাক হলাম, ভিতরে ছোট ছোট দুটি টুনটুনি পাখির বাচ্চা। মনে হচ্ছে দু-একদিনের তখনো চোখ ফোটেনি। আশেপাশে কোথাও মা পাখিটাকে দেখতে পেলাম না।কিন্তু এতটুকু বুঝতে পারলাম অবশ্যই আশেপাশে কোথাও আছে।


IMG_20230403_171406_817-01.jpeg

আমার লটকন গাছের তিনটে পাতার মধ্যে এই বাসাটি করেছে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে। তারপর আমি আর সেই গাছে স্প্রে করার মতন সাহস পেলাম না। ছোট পাখির বাচ্চা দুটি দেখে আমি অনেক আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লাম। যেভাবেই হোক রক্ষা করতে হবে। তারপর আর স্প্রে করলাম না। আমার সব লটকন ফল যদি ঝরে যায় তাও আমার এতটুকু খারাপ লাগবে না। আমার তখন চিন্তা যেভাবে হোক পাখির বাচ্চা দুটোকে বাঁচাতে হবে।আমি স্প্রে করলে হয়তো আমার লটকন ফলগুলো গাছ থেকে ঝরে পড়বে না কিন্তু পাখির বাচ্চাগুলো মারা যাবে। তাই নিজের আবেগকে মাটি দিয়ে পাখির বাচ্চার কথা চিন্তা করে স্প্রে না করেই ফিরে গেলাম।


IMG_20230403_170736_270-01.jpeg

তারপর কয়েক ঘন্টা পর পর এসে আমি খেয়াল করতাম মা পাখিটা আসে কিনা বিকেলবেলা হঠাৎ দেখতে পেলাম মা পাখিটা তাদের বাচ্চা নিয়ে বসে আছে। যেটা দেখে আমার অনেক ভালো লাগলো। বাড়ির সবাইকে আমি সেখানে যেতে নিষেধ করলাম। যাতে কোনভাবেই তারা ডিস্টার্ব না করে। তার কিছুদিন পরে পাখি দুটো বাচ্চা নিয়ে চলে যায় যখন উড়তে শিখে।


IMG_20230403_171312_705-01.jpeg

IMG_20230403_170736_270-01.jpeg


পাখির বাসাটি এখন আমার গাছে সেভাবেই রয়েছে দেখে অনেক ভালো লাগে। অবাক করা বিষয়ে আমি স্প্রে করা বাদ দিলেও আমার গাছের ফল তেমন একটা ঝড় হয়নি। আমি সত্যিই খুব আনন্দিত যে আমার কোন কারণে দুটো পাখির জীবন নষ্ট হয়নি। আমি না দেখে যদি সেদিন পুরোগাছি স্প্রে করে দিতাম, পাখির বাচ্চা গুলো মারা যেত।পরে নিজেকে আমি কোনোভাবে ক্ষমা করতে পারতাম না, অপরাধবোধ কাজ করতে সব সময়।


IMG_20230405_101315_560-01.jpeg

IMG_20230405_101442_521-01.jpeg

আমাদের সকলেরই উচিত গাছে যখন স্প্রে করা হবে, তখন ভালোভাবে দেখে নিতে হবে কোন পাখির বাসা আছে কিনা এবং বাসায় ডিম বা বাচ্চা আছে কিনা। আমাদের সবাইকে পাখি রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। বাড়ির আশেপাশে বেশি করে গাছ লাগাতে হবে। পাখি শিকারীদের প্রতিহত করতে হবে। তাহলে হয়তো এসব পাখির বিলুপ্ত হওয়া থেকে আমরা রক্ষা করতে পারবো। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে।

🐦🐥🐦🐧🕊🦅🐣🐤🐥🐦🐧🕊🦅🦜



লোকেশন: টাঙ্গাইল
ফটোগ্রাফার : @selimreza1
camera: Tecno pro8




আমার পরিচয়

আমি মো: সেলিম রেজা। আমি বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরি করি।ফটোগ্রাফি করতে আমার অনেক ভালো লাগে। আমি লেখালেখি, বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণ করতে বেশি পছন্দ করি।

ধন‍্যবাদ সবাইকে

You can also vote for @bangla.witness witnesses

3zpz8WQe4SNGWd7TzozjPgq3rggennavDx3XPY35pEAVnpvDGTmz6yM4BdeUwpQ8vMxtR3sQse9kG46R2Lk4NBaGfzPmL5tiA85DdFd7TDvbMGaNMAY2RBgSWfNp5kM1Qjr3515gWKvjxzADBcu4.png

Vote for @bangla.witness

Sort:  
 2 years ago 

ছোট বেলায় অনেক দেখেছি এবং পাখি পাড়িয়ে ছিলাম। তবে আমার মনে আছে একবার আমি পাখি পাড়াতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম। বাহ চমৎকার লাগল আমার কাছে সবগুলো ফটোগ্রাফি। তবে উপস্থাপনা ভালোই লাগল। 💞😊

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

আপনি সুন্দর একটা পোস্ট উপস্থাপন করেছেন ভাই,আপনার পুরো পোস্ট আমি পরছি ভাই, আসলে এখন আগের মত টুনটুনি পাখি গুলো দেখা যায় না, আপনি সুন্দর একটা প্রানী কে বাছাই দিয়েছেন, আপনি হইতো স্প্রে করলে আপনার ফল গুলো ভালো হইতো কিন্তু আপনি স্প্রে করলে দুটি জীবন চলে যেতো,আপনি সুন্দর একটা কাজ করছেন ভাই, আপনার কাজ দেখে আমি আসলেই মুগ্ধ হলাম, আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটা পোস্ট করার জন্য।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ ভাই।অসাধারন মন্তব্যের জন্য

 2 years ago 

সবচেয়ে ছোট পাখি হচ্ছে টুনটুনি পাখি, যা এখন বিলুপ্তপ্রায়। আগে দিনে টুনটুনি পাখি দেখা যেত এখন দেখা যায় না। ধন্যবাদ ভাই স্প্রে দেওয়া থেকে বিরত থেকে দুটি পাখির ছানার জীবন রক্ষা করার জন্য। মহৎ একটি কাজ করেছেন ভাই। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই, বহু বছর পর আপনার পোষ্টের মাধ্যমে টুনটুনি পাখি দেখতে পেলাম। অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি, আবারো অসংখ্য ধন্যবাদ বড় ভাই ❤️

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য

Loading...
 2 years ago 

টুনটুনির বাসা এখন আগের মত দেখা যায় না, আগে আমাদের বাসায় একটা টুনটুনির বাসা ছিল, আপনি দারুণ লেখছেন ভাইয়া, আপনার পোস্ট পরে খুব ভালো লাগলো,আপনি সুন্দর দুটি জীবন বাছিয়েছেন,আপনার ফটোগ্রাফি অনেক সুন্দর হয়েছে, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া

 2 years ago 

ধন‍‍্যবাদ আপু

 2 years ago 

অনেক দিন পরে টুনটুনি পাখির বাসা দেখলাম ভাই। কয়েক বছর আগে যখন আমি গ্রামে ছিলাম তখন এই টুনটুনি পাখির বাসা প্রায়ই জায়গায় দেখা যেতো এখন আর দেখা যায় না। দারুণ ফটোগ্রাফি করেছেন আপনি। ধন্যবাদ ❤️❤️❤️

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে টুনটুনি পাখি। এই টুনটুনি পাখি আগে দেখা যেত খুব বর্তমান সময়ে এই পাখিগুলো বিলুপ্ত প্রায়। টুনটুনি পাখিগুলো অনেক দক্ষতার সাথে বাসা বানিয়ে থাকে। আর টুনটুনি পাখিগুলো দেখতে বেশ ছোট।আপনি টুনটুনি পাখি নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ আপু

 2 years ago 

পাখিরা আমাদের ইকো সিস্টেমে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।তাই পাখিদের প্রতি মানুষের যত্নবান হওয়া দরকার।আপনি দেখেশুনি স্প্রে করেছেন এটা শুনে খুব ভালই লাগলো।আপনি খুব ভালো কাজ করেছেন ভাই।ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটু পোস্ট করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

টুনটুনি পাখি গুলো আকারে খুব ছোট হয়। তবে এরা থাকার জন্য যে বাসা তৈরি করে দেখতে কিছুটা তুলোর মতো। আর এরা সাধারণত পাতায় বাসা বানিয়ে থাকে। টুনটুনির বাচ্চা গুলো সত্যি দেখতে অসাধারণ ভাই।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

আগে দেখতাম ঝোপঝাড়ে এই ছোট পাখি টুনটুনি বাসা। এই পাখিটি দেখতে অনেক সুন্দর। টুনটুনি পাখি আর আগের মতো দেখা পাওয়া যায় না।এটি প্রায় বিলুপ্তর পথে। তবে আপনি একটি মহৎ ব্যক্তিত্বের পরিচয় দিয়েছেন ভাই। এই টুনটুনি পাখি গুলোকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। চাইলে আপনি ফলগুলো স্প্রে করে ফলের সমৃদ্ধি করতে। ছবিগুলো অসাধারণ হয়েছে। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।

 2 years ago 

অনেক ধন্যবাদ ভাই