জেনারেল রাইটিংঃ হিমু দিবস।

in আমার বাংলা ব্লগ13 days ago (edited)

শুভেচ্ছা সবাইকে।

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? ভালো ও সুস্থ্য আছেন,আশাকরি। সকলে ভালো থাকেন এই প্রত্যাশা করি।আমিও ভাল আছি। আজ ২৮শে কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,হেমন্তকাল। ১৩ই নভেম্বর ২০২৪খ্রিষ্টাব্দ।

g.jfif

source

"হিমু কখনও জটিল পরিস্থিতিতে পড়ে না। ছোটখাট ঝামেলায় সে পড়ে। সেই সব ঝামেলা তাকে স্পর্শও করে না। সে অনেকটা হাসেঁর মত। ঝাড়া দিল গা থেকে ঝামেলা পানির মত ঝরে পড়ল"। নিজের সৃষ্টি চরিত্র সম্পর্কে উপরোক্ত কথা বলেছেন, কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমদ।বাংলাদেশে তথা বাংলা ভাষাভাষীর সাহিত্য পড়ুয়া তরুণ ছেলেরা নিজেকে হিমু ভাবেনি,বিগত শতাব্দীর ৮০/৯০ দশকে সে ধরনের তরুণ খুঁজে পাওয়া মুশকিল! হিমু চরিত্রটি হুমায়ূন আহমেদের অমর সৃষ্টি। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলা সাহিত্যে হিমু একটি অসম্ভব জনপ্রিয় কাল্পনিক চরিত্র। হলুদ পাঞ্জাবি পরে খালি পায়ে দিনরাত ঘুরে বেড়ায়।একজন বেকার যুবক কিন্তু চাকুরির সুযোগ পেয়েও চাকুরি করে না।অন্যের থেকে আলদা, আচরণে অদ্ভুত, বেখেয়ালী।টাকা পয়সার ব্যাপারে উদাসীন,একেবারে ছন্নছাড়া জীবন। ভবিষ্যত বাণী করে মানুষকে চমকে দিতে ওস্তাদ।যখন যা ইচ্ছে করত তাই করত। হুমায়ূন আহমদ ঘনিষ্ঠ অনেকে বলেছেন, তাঁর সৃষ্টি হিমু চরিত্র অনেকটা ছায়া তাঁর।

আজ হিমু দিবস। আজ হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন। এই দিনটি হিমু দিবস হিসেবে পালন করে তার ভক্তরা। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করে। এছাড়া হিমু /হুমায়ূন মেলারও আয়োজন হয়ে থাকে। এসব অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ,সাহিত্য পাঠ,তাঁর নির্দেশিত নাটক ও সিনেমার প্রদর্শন হয়ে থাকে।


তিনি শুধু কথাসাহিত্যিক ছিলেন না, একাধারে তিনি নাট্যকার ও নির্মাতা ও গীতিকার ছিলেন।সব ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন সফল।যখন যেটা করেছেন,তাঁর জনপ্রিয়তার ধারে কাছেও কেউ ছিলো না। এ প্রসঙ্গে একটি ঘটনার কথা মনে পড়লো। তখন আমরা ছোট। তখন আমাদের বিনোদন ছিল বাংলাদেশ টেলিভিশন। হুমায়ূন আহমেদের ধারাবাহিক নাটক দেখার জন্য মুখিয়ে থাকতাম। সপ্তাহে একদিন প্রচারিত হতো।বিগত শতকের ৯০/৯১ সালে "কোথাও কেউ নেই" নাটকের একটি চরিত্র ছিল "বাকের ভাই"। বাকের ভাইয়ের যাতে ফাঁসি না হয় তার জন্য সারা দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছে।মিছিল মিটিং করেছে। এমনই ছিল তাঁর জনপ্রিয়তা আর তাঁর তৈরি চরিত্রের শক্তি। এছাড়া তাঁর বই প্রকাশের পর বিক্রির যে লাইন তা এখনো মনে পড়ে।শুধু হিমু বা বাকের ভাই নয়। তাঁর অনবদ্য সৃষ্টি মিসির আলী ও রুপাকেও মনে রাখবে পাঠকরা অনেকদিন।


নন্দিত নরকে,বাদশা নমদার,শঙ্খনীল কারাগার,আগুনের পরশমনি,মেঘ বলেছে যাবো যাবো,অপেক্ষা,এইসব দিনরাত্রি,দারুচিনি দ্বীপ,হিমু সিরিজ,মিশির আলি সিরিজ,দেয়াল,জোসনা ও জননীর গল্পসহ বহু গ্রন্থের প্রণেতা হুমায়ূন আহমদ। শুধু উপন্যাস নয় বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লিখনীতেও তিনি সফল।তাঁর সাহিত্য মান নিয়ে আমার আজকের আলোচনা নয়। সে আলোচনা করবেন সাহিত্য বোদ্ধারা।শুধু এতটুকু বলতে চাই স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলা সাহিত্যে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তিনি। তরুণদের বইমুখী করতে তাঁর লিখনী ছিল টনিক।এই মহান লেখক হুমায়ুন আহমেদ ১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯ জুলাই ২০১২ সালে মৃত্যু বরণ করেন। হুমায়ূন আহমেদের পর এত জনপ্রিয়, পাঠকপ্রিয় উপন্যাসিক বাংলা সাহিত্যে এখনো দেখা যাচ্ছে না। আজ এই গুণী কথাশিল্পীর জন্মদিন। ভক্তকূলের হিমু দিবস।
হিমু দিবসে বিনম্র শ্রদ্ধা।

পোস্ট বিবরণ

শ্রেনীজেনারেল রাইটিং
ক্যামেরাRedmi Note A5
পোস্ট তৈরি@selina 75
তারিখ১৩ই নভেম্বর, ২০২৪ ইং
লোকেশনঢাকা,বাংলাদেশ

আমার পরিচয়

আমি সেলিনা আখতার শেলী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা। এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ

image.png

image.png

image.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 12 days ago 

হিমুর একটা সংলাপ আমার বেশি ভালো লাগে সেটা হলো হিমুরা কিছু করে না শুধু দেখে হাহা। হুমায়ুন আহমেদ এর এর চরিত্র এখনও আমি পড়িনি। তবে এটা বাংলাদেশে অনেক জনপ্রিয় । বিশেষ করে কয়েক জেনারেশন ধরে এটা চলে আসছে। চমৎকার লিখেছেন আপু। হুমায়ুন আহমেদ এর অমর সৃষ্টি এই হিমু।

 11 days ago 

ঠিক তাই বেশ জনপ্রিয় চরিত্র হলো এই হিমু। হুমায়ুন আহমেদ আমাদের বই পড়া শিখিয়েছে । এটা মানতেই হবে। ধন্যবাদ ভাইয়া।