অনুগল্প- মায়াবী রাতের পরী||
আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।
বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আমি @shopon700 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। অনুগল্প লিখতে আমার খুবই ভালো লাগে। আমি অনেক আগে থেকেই অনুগল্প লিখি। যেহেতু আমি অনেকদিন স্টিমিট থেকে দূরে ছিলাম আর ব্লগিং থেকেও দূরে ছিলাম তাই অনেকদিন গল্প লেখা হয়নি। এখন নতুনভাবে আবারও গল্প লেখা শুরু করেছি। যখন আমি আপনাদের থেকে দূরে ছিলাম তখন আর গল্প লিখতে ইচ্ছে করেনি। অনেকদিন পর আবার যখন সুযোগ পেয়েছি তখন গল্প লেখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। হয়তো চেষ্টা করলে এক সময় সফলতা আসবে। আমি মনে করি মানুষ যখন বারবার চেষ্টা করে তখন একবার না একবার সফলতার মুখ দেখতে পায়। আমিও চেষ্টা করে যাচ্ছি। আর আজকে নতুন একটি অনুগল্প লিখে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করছি আমার লেখা অনুগল্প সকলের কাছে ভালো লাগবে।
অনুগল্প-মায়াবী রাতের পরী:
জার্নি করতে সীমান্তর একদম ভালো লাগেনা। যেহেতু মামাতো ভাইয়ের বিয়ে তাই অনেক দূর জার্নি করে সীমান্তকে যেতেই হবে। মামাতো ভাই যে তার অনেক ভালো বন্ধু। সীমান্তের মামাতো ভাইয়ের নাম নিখিল। সীমান্ত নিখিলের বিয়েতে যাবে না এটা কেউ মানতেই পারে না। সীমান্ত জার্নি করতে খুবই বিরক্ত হয়। কি আর করার নিখিলের বিয়েতে না গেলে নিখিল অনেক মন খারাপ করবে। এবার সীমান্ত নিখিলদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য রওনা দিল। প্রথমে সিএনজিতে করে বাসস্ট্যান্ডে গেল। বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে টিকিট কেটে উঠে পড়ল গাড়িতে। জার্নি করতে সীমান্তের খুব বিরক্ত লাগে। অনেক সময় পার হয়ে যাওয়ার পরেও যখন সীমান্ত দেখল গাড়ি ছাড়ছে না তখন ভাবলো বাহিরে গিয়ে একটু ঘুরাঘুরি করে আবার গাড়িতে উঠবে। সীমান্ত গাড়ি থেকে নেমে একটু হাটাহাটি করল। এরপর যখন গাড়িতে উঠলো তখন সীমান্ত দেখলো তার পাশের সিটে একটি মেয়ে বসেছে। সীমান্ত বুঝতে পারছিল না কি করবে। এরপর বাস ছেড়ে দিল। তাই সীমান্ত নিজের সিটে বসে পড়ল।
সীমান্ত একটি মেয়ের পাশে বসে আছে এটা ভেবে তার আরো বিরক্ত লাগছিল। মেয়েটি খুব সম্ভবত একটি বই পড়ছিল। বই পড়ার কারণে তার মুখটা ভালোভাবে দেখা যাচ্ছে না। এভাবে অনেক সময় কেটে গেল। বাস চলছে নিজের গতিতে। রাত যত গভীর হচ্ছে চারপাশের নিস্তব্ধতা বেড়ে যাচ্ছে। সীমান্ত ঘুমাতে গিয়েও ঘুমাতে পারছেনা। হঠাৎ করে সীমান্ত খেয়াল করল তার পাশে ঘুমন্ত এক পরী বসে আছে। ঘুমের ঘোরে তার হাতের বইটা নিচে পড়ে গেছে। মায়াবী রাত আর ঘুমন্ত পরীকে দেখে সীমান্তের মনে ভালো লাগার জন্ম নিয়েছিল। অপলক দৃষ্টিতে সীমান্ত মেয়েটির দিকে তাকিয়ে ছিল। শুধু অবাক হয়ে দেখছিল। রাতের সৌন্দর্য আর তার পাশে বসে থাকা ঘুমন্ত পরী তার মনে অন্যরকমের ভালোলাগা তৈরি করেছিল।
হঠাৎ করে মেয়েটির ঘুম ভেঙে যায়। আর মেয়েটি চোখ খুলে দেখে কেউ একজন তার দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েটির হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়াতে সীমান্ত অনেক লজ্জা পেয়েছিল। এরপর নিজের চোখ সরিয়ে নেয়। মেয়েটিও নিজেকে সামলে নেয়। মেয়েটিকে প্রথম দেখেই সীমান্তের ভালো লেগে যায়। তার পাশে বসে থাকা মেয়েটিকে কিছু বলতে পারে না। তার কথা শুধু ভেবেই যাচ্ছিল। সীমান্ত রাতের সৌন্দর্য দেখে কখনো মুগ্ধ হয়নি। প্রথমবার এই মায়াবী রাতের সৌন্দর্য দেখে সীমান্ত মুগ্ধ হয়েছিল। কারণ মায়াবী রাতের সৌন্দর্যে তার পাশে বসে থাকা পরীটিকে দেখে সীমান্তের মনে ভালো লাগা তৈরি হয়েছিল। এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ করেই কখন যে সীমান্তের চোখ লেগে গেছে বুঝতে পারেনি। বাসের হেলপারের ডাকাডাকিতে সীমাতের ঘুম ভেঙে যায়। চোখ খুলে দেখে তার পাশের সেই মেয়েটি নেই। সীমান্ত তখন অনেক মন খারাপ করে। বুঝতে পারে সে হয়তো আগেই নেমে গেছে।
সীমান্ত এখনো সেই স্মৃতিগুলো ভুলতে পারছে না। এদিকে নিখিলের বিয়ের আয়োজন নিয়ে সবাই ব্যস্ত। কিন্তু সীমান্তের মনে সেই মায়াবী রাতের স্মৃতিগুলো বার বার ভেসে উঠছিল। আর সেই সাথে ঘুমন্ত পরীর মুখখানি ভেসে উঠছিল। হয়তো সীমান্ত চাইলেও সেই স্মৃতি ভুলতে পারবেনা। কারণ সেই ঘুমন্ত পরী যে ছিল তার প্রথম ভালোলাগা। মায়াবী রাতের সেই পরীকে ভুলা তার সম্ভব না। অনেক ব্যস্ততার মাঝেও বারবার ঘুমন্ত পরীকে মনে করছিল সে। এভাবেই অচেনা সেই পরীটি তার জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। হয়তো হঠাৎ আবার কোন একদিন চলার পথে তাদের দেখা হয়ে যাবে। যাত্রাপথে এরকম অনেক পরীর সাথে আমাদের দেখা হয়। কিন্তু হঠাৎ করে যেমন তারা আসে তেমনি হঠাৎ করেই হারিয়ে যায়।
🥀ধন্যবাদ সকলকে।🌹
আমি মো: স্বপন । আমি একজন বাংলাদেশী। ব্যক্তিজীবনে আমি আইন পেশার সাথে জড়িত। এছাড়াও ফটোগ্রাফি, পেইন্টিং ও ব্লগিং করা হচ্ছে আমার অন্যতম শখ। আমার স্টিমিট আইডি নাম @shopon700। আমি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে স্টিমিট ব্লগিং শুরু করি। আমি গর্বিত, কারণ আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাইড ব্লগার।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সীমান্তের গল্প পড়তে পড়তে আমিও যেন সেখানে উপস্থিত হয়ে গেছিলাম। খুব সুন্দর একটি গল্প আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। বেশ ভালো লাগলো আমার সুন্দর অনুভূতিমূলক একটি গল্প পড়ে।
আমি বুঝতে পেরেছি আমার এই গল্পটি আপনার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। এত সুন্দর ভাবে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।