নাটক রিভিউ "উড়ে যায় বকপক্ষী" ১৫ তম পর্ব
আজ মঙ্গলবার
আজ
মঙ্গলবার ২০২৪
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমি আপনাদের দোয়ায় মোটামুটি অনেক ভালো আছি। সকলকে শুভকামনা জানিয়ে শুরু করছি নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি নাটক রিভিউ নিয়ে। নাটকের নাম 'উড়ে যায় বকপক্ষী', যা আমার অতি প্রিয় একটি নাটক। নাটকটির মূল পর্ব ২৬ টি। আজ আমি আপনাদের মাঝে ১৫ তম পর্ব রিভিউ আকারে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।
❤️স্ক্রিনশট: ইউটিউব❤️
| নাম | উড়ে যায় বকপক্ষী |
|---|---|
| রচনা | হুমায়ূন আহমেদ |
| পরিচালক | হুমায়ূন আহমেদ |
| অভিনয়ে | মেহের আফরোজ শাওন,রিয়াজ,চ্যালেঞ্জার,মাসুম আজিজ,ফারুক আহমেদ,স্বাধীন খসরু,এজাজুল ইসলাম,ড. ইনামুল হক,সালেহ আহমেদ সহ আরো অনেকে। |
| দেশ | বাংলাদেশ |
| ভাষা | বাংলা |
| ধরণ | হাস্যরসাত্মক এবং সামাজিক |
| পর্বের সংখ্যা | ২৬ |
| রিভিউ | ১৫ তম পর্ব |
| দৈর্ঘ্য | ২০ মিনিট ৫৫ সেকেন্ড |
| প্ল্যাটফর্ম | ইউটিউব চ্যানেল @NTVNatok |
প্রধান চরিত্রেঃ
চ্যালেঞ্জার (ফজলু চাচা)
মেহের আফরোজ শাওন (পুষ্প)
ফারুক আহমেদ (তৈয়ব)
মাসুম আজিজ (মজিদ মিয়া) সহ আরো অনেকে
উড়ে যায় বকপক্ষী নাটকের 15 তম পর্বের শুরুতে আমরা লক্ষ্য করে দেখেছি চেয়ারম্যানের ইলেকশন শুরু হয়েছে। আর এই ইলেকশনকে কেন্দ্র করে না নানান আয়োজন আনন্দ মিছিল সবকিছু। রানিং জিনিস চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি মিছিল নিয়ে গ্রামের মধ্যে বের হয়েছেন। তার উপস্থিতিতে অনেক মানুষের আগমন এবং আনন্দ উল্লাস মিছিল। চেয়ারম্যান তার দলবল নিয়ে ভোটকেন্দ্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে ভোটকেন্দ্রে বিপরীত পক্ষ অর্থাৎ সোলায়মান মন্ডলের কুটুম জনগণের জন্য দুধ খাওয়ার আয়োজন করিয়াছেন। যারা ভোট দিবে তারাই দুধ খেতে পারবে। আবার যারা ভোট দিবে তার বাচ্চারাও দুধ খেতে পারবে। তাদের নির্দিষ্ট একটি অফিস তৈরি করা হয়েছে সে অফিসের পাশে একটি গাই গরুর বেঁধে রাখা হয়েছে। যেন জনগণ তাদেরকে দেখে দুধ খেতে আসেন এবং তাদের গরু মার্কায় ভোট দেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় দুধ খাওয়ার উদ্দেশ্যে মানুষজন কম আসছে ভোট দেওয়ার জন্য মানুষজন কম আসছে। লক্ষ্য করে তারা দেখেছে বেশিরভাগ ঘড়ি মার্কা অর্থাৎ যিনি চেয়ারম্যান ছিলেন তার ভোট পড়তে বেশি।
ভোটের অবস্থা যখন ভালো হচ্ছে না তখন গরু মার্কার পক্ষ থেকে সোলায়মান এর কুটুম জান প্রাণ দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ছোট ছোট বাচ্চাদের দুধ খাওয়ানোর এবং মহিলাদের দুধ খাওয়ানোর। কিন্তু এত কিছু করেও কোন মানুষজন তাদের লাইনে আসছেন না ভোট দেওয়ার জন্য। এদিকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ঘড়ি মার্কার চেয়ারম্যান মানুষের হাতে ১০০ করে টাকা দিচ্ছেন। পথে-ঘাটে যেখানে যাকে পাচ্ছেন তার হাতে ১০০ করে টাকা দিচ্ছেন সবাই যেন ঘড়ি মার্কায় ভোট দেয়। ঠিক সেই সুযোগে তৈয়ব আলী ১০০ টাকার জায়গায় 200 টাকা চেয়ারম্যানের হাত থেকে বের করে নিলেন। কারন সে ঘড়ি মার্কার পক্ষ হয়ে কাজ করছে এমনটাই বোঝানোর চেষ্টা করছেন, তাই তার খরচা আছে বেশি।
আজকে ভোটের দিন সকল কেন্দ্রে ভোট চলছে কিন্তু সোলাইমান মন্ডল কোন কেন্দ্রে ভোট দেখতে যান নাই ঘরে বসে রয়েছেন। এদিকে গানের তলের সেই মেয়েটা তার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। বিভিন্ন জনের কানে বিভিন্ন রকম কথা বলছেন। মেয়েটা সোলাইমানের স্ত্রী কে বলেছে তাকে বিবাহ করে এনেছে সুলাইমান। তৈয়বকে একথা বলেছেন। তাই সোলায়মানের স্ত্রী সন্দেহ করেছেন নতুন স্ত্রীকে ঘরে রেখে এসে ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছেন না। কিন্তু তার এমন কথাবার্তা গুলো সোলায়মান এর কাছে উদ্ভট মনে হয়েছে। কারণ এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তিনি সহজ সরল মানুষ। একজন অসহায় মেয়েকে বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছে তাই বলে সে যা তা বলবে তার নামে।
এদিকে ঘুরে মার্কার এজেন্ট এবং চেয়ারম্যান প্রার্থী রাস্তাঘাটে সব জায়গায় টাকা ধরিয়ে বেড়াচ্ছেন মানুষদের। তারা চেষ্টা করছেন মন প্রাণ দিয়ে ভোট কেনার জন্য। কিন্তু কোন ভাবেও গানের দলের কৈতরির মাকে টাকা দিয়ে কিনতে পারলেন না। উনি কখনো ভোট বিক্রয় করেন না। উনি সবসময় সততার পথে চলার চেষ্টা করেন। তাই এই বিষয়টা ধরে মার্কার লোকজন জানার পর চেয়ারম্যান প্রার্থীকে বিষয়টা বলেন। চেয়ারম্যান গ্রামের মধ্যে প্রবেশ করেন এবং চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে বাড়িতে এমনকি পথে ঘাটে যারা ভোট দিতে যাচ্ছেন তাদের হাতে টাকা দিতে।
ভোটের খবর জানতে চাইলেন সোলাইমান তার কুটুম এর কাছে। সে তার কুটুমকে জানালো লোকজন দুধ খাওয়ার জন্য আসছে না ভেজাল দুধ কয়জন খায়। তখন উনি তার কুটুমকে প্রশ্ন করলেন ভেজাল দুধ মানে আমি তো খাঁটি দুধ খাওয়ার টাকা দিয়েছি। তখন সে বিস্তারিত বললেন দুধে পানি মিশিয়েছেন। তখন সোলায়মান প্রচন্ড কষ্ট পেলেন এবং বললেন তুমি সুবিধার মানুষ না। তখন তার কুটুম তাকে বুঝিয়ে বলল সে একজন খারাপ মানুষ কেউ যদি তাকে খারাপ মানুষ বলে তার আরো ভালো লাগে। কিন্তু এদিকে তাদের বাড়িতে যে একটি মহিলা এসে বসে রয়েছে বউ বসেছে তার কি করা যায়। সোলায়মানের স্ত্রী তাকে চলে যেতে বলেছেন টাকা দিয়েছেন তার পরেও যায় নাই। তার কুটুম ভাবল মেয়েটাকে মেরে বাড়ি থেকে বিদায় করি। কিন্তু মেয়েটা মিথ্যা করে বলল তার পেটে সোলায়মান এর বাচ্চা রয়েছে, তাকে যেন না মারা হয়। বিষয়টা সাংঘাতিক হয়ে গেল। তাই সে ভাবলো আগে ভোটের বিষয়টা মিটুক, তারপর এই মেয়েকে দেখা যাবে।
এদিকে পুষ্প বিষ খাওয়ার জন্য প্রস্তুত। ফজলু চাচা কে বলেছিল বিষ এনে দিতে। ফজলু চাচা একটি কাছের বোতলে বিষ এনেছে। পুষ্পর ইচ্ছে সেজেগুজে তারপর বিষ খাবে। তাই সে ভোট দিতে না গিয়ে সাজা গুজা শুরু করেছে। এরপর বিষের শিশি মুখের উপর ধরে খেতে লেগেছে। কিন্তু পুষ্প বুঝতে পারল এখানে বিষ নেই এখানে তো পানি। তখন ফজলু চাচা বিস্তারিত তাকে খুলে বলল। সে পাগল হতে পারে কিন্তু এতটা পাগল নয় যে মেয়েটাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলবে। পাশে পরীক্ষা করার জন্য বোতলের মধ্যে পানি পুরে এনেছে। এরপর বিস্তারিত তাকে বলল। এতে যেন চাচা ভাতিজার মধ্যে অন্যরকম ভালোবাসা মায়া-মমতা জাগ্রত হল। পুষ্প আর বিষ খাবে এমন কথা মুখে আনবে না। সে সবার জন্য বাঁচবে এমনটা ওয়াদা করলো।
এদিকে নতুন একটি ব্যক্তির আগমন ঘটলো পুষ্পদের গ্রামে। পথের মধ্যে নতুন ব্যক্তির সাথে দেখা হল তৈয়বের। তৈবের কাছে গানের ওস্তাদের বাড়ির কথা জানতে চাইলেন। এবং জানতে চাইলেন বৈদেশীর কথা। কিন্তু তৈয়ব এমন খারাপ আচরণ করল যেটা মোটে গ্রহণযোগ্য ছিল না। এরপর দেখা যায় নতুন ব্যক্তি টা খুঁজতে খুঁজতে পুষ্পদের বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়েছে। কিন্তু বাড়িতে কোন লোকজন নেই। বারান্দায় একটা বান্দর বাধা রয়েছে। বান্দরটা সবসময় তাকে কামড়ানোর জন্য ছোবল মারছে। মানুষটা বারবার প্রশ্ন করতে থাকলেন বাড়িতে কেউ আছে কিনা। কিন্তু কোন সাড়াশব্দ পেলেন না। আর এভাবে এই পর্বের সমাপ্তি আসে।
আমরা পড়ে যায় বকপক্ষে নাটকের 15 তম পর্বে লক্ষ্য করেছি এলাকায় ইলেকশনের কর্মকাণ্ড চলছে। তাই দুই দল এর লোকজন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিভাবে ভোট সংরক্ষণ করা যায়। এখানে সোলায়মান এর কুটুমকে লক্ষ্য করা গেছে মানুষকে পানি মিশানো দুধ খেতে দিচ্ছে, কিন্তু লোকজন তাদের দুধ খেতেও আসছে না ভোট দিতে আসছেন না। অন্যদিকে ঘড়ি মার্কার ভোটার মানুষের মাঝে ১০০ টাকা করে দিচ্ছেন এবং ভোট পাওয়ার আশায় নিজের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আরো লক্ষ্য করেছি পুষ্প যখন জানতে পেরেছে তার মা ভালো নয় তাই সে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করার চিন্তা। সে বিষ সংরক্ষণ করেছে ফজলু চাচার মাধ্যমে। কিন্তু ফজলু চাচা পাগল হলেও তার সেই বোধশক্তি আছে বিষ খাবে কাউকে হত্যা করা যাবে না। আর সেই জায়গায় তাদের নিচের আদরের সন্তান পুষ্প। আর ঠিক এভাবে পুষ্প যেন নতুন জীবন ফিরে পেল বিষের শিশিতে বিষ না থাকায়। এ নাটকে আমরা সব সময় বেশি আনন্দ পেয়ে থাকি তৈয়ব এবং ফজলু চাচার অভিনয় দেখে। আজকে আমরা তৈয়েবের থেকে বেশ আনন্দদায়ক কথাবার্তা পেয়েছি কর্মকান্ড পেয়েছি কিন্তু ফজলু চাচার কর্মকাণ্ডটায় হাস্যকর না থাকলেও জ্ঞানের পরিচয় দিয়েছেন। আর এদিকে সোলায়মান সাহেব নতুন এক ঝামেলায় পড়তে চলেছেন বাড়িতে একটা মেয়ের আশ্রয় দিয়ে। একদিকে ভোটের ঝামেলা আরেক দিকে এই মেয়ের ঝামেলা। হয়তো আগামীতে আমরা এর সমাধান দেখতে পারব। তবে আমি বলতে পারি এখানে প্রত্যেকজন ব্যক্তি নিজ নিজ জায়গা থেকে সুন্দর অভিনয় করে দেখিয়েছেন আমাদের। গ্রামীন পর্যায়ের সুন্দর এ নাটক আমাদের সকলের মন কাড়বে। যে যে এই নাটক এখনো দেখেনি, অবশ্যই তাদের দেখার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ এখানে শিক্ষনীয় বিষয়ে অনেক। হাসি আনন্দ বিনোদন সবকিছুর মধ্য দিয়ে অনেক কিছু জানার বোঝার এবং শেখার রয়েছে এই অভিনয়ের মধ্যে।
রিভিউটা ভিজিট করার জন্য ধন্যবাদ।
আমি মোছাঃ সিমরান জারা। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সদস্য সুমন জিরো নাইন এর পরিবার। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর। আমি একজন গৃহিণী। আমি ফটোগ্রাফি, রেসিপি পাশাপাশি ব্লগ করতে বেশি পছন্দ করে থাকি। এছাড় বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করতে ভালো লাগে। আমি এসএসসি পাশ করেছি। গাংনী ডিগ্রী কলেজে অধ্যায়ণরত রয়েছি।


















ভালোলাগার একটা নাটক আমাদের মাঝে রিভিউ করে দেখিয়েছো দেখছি। এই নাটকটা আমার কাছে ভালো লাগে। অনেক আগে দেখেছি। এই নাটকের অভিনয় গুলো গ্রামীণ পর্যায়ের তাই আমার কাছে অনেক অনেক ভালো লাগে। হ্যাঁ তৈয়বের এবার কথাগুলো আনন্দদায়।
নাটকটা ভালো লাগে জেনে খুশি হয়েছি।
অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে উড়ে যায় বকপক্ষী নাটকটার ১৫ তম পর্বের রিভিউ সম্পূর্ণ পড়তে। উড়ে যায় বকপক্ষী নাটকের রিভিউ আমার অনেক ভালো লাগে। আমি মাঝেমধ্যেই নাটক দেখার জন্য চেষ্টা করি। তবে সময়ের কারণে এখন আর খুব একটা নাটক দেখতে পারিনা। কিন্তু আমি যখনই নাটক দেখি তখনই শিক্ষনীয় নাটকগুলো দেখার জন্য চেষ্টা করি। এই নাটকটা অনেক সুন্দর ছিল। আপনি খুব সুন্দর ভাবে রিভিউ টা উপস্থাপন করেছেন। এত সময় নিয়ে নাটক না দেখে আমি মনে করি রিভিউ পড়ে নিলেই ভালো। এটার মাধ্যমে সম্পূর্ণ কাহিনী অল্প সময়ের মধ্যেই পড়ে নেওয়া যায়।
এ নাটকটাও কিন্তু অনেক শিক্ষনীয়