জেনারেল রাইটিং: শৈশবের ঈদের আনন্দ।

in আমার বাংলা ব্লগ9 months ago
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু /আদাব

🌿আমি তানহা তানজিল তরসা। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @tanha001


আজ ২৮ মার্চ রোজ শুক্রবার ২০২৫ ইং:।

বাংলায় ১৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।

হ্যালো বন্ধুরা..........

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি পরিবার পরিজন নিয়ে। আশাকরছি আপনারাও সবাই অনেক ভালো আছেন পরিবার নিয়ে। প্রতিদিনের মতো আজও আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি জেনারেল রাইটিং নিয়ে হাজির হয়েছি।লেখালেখি করতে আমি বরাবরই অনেক বেশি পছন্দ করি। ঠিক পড়তেও ততটাই পছন্দ করি।আশা করছি আমার লেখা শৈশবের ঈদের আনন্দ জেনারেল রাইটিংটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে।চলুন তাহলে শুরু করা যাক।

ai-generated-8571158_1280.png

Source
ঈদ এক অমুল্য উৎসব যা আমাদের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে থাকে। তবে শৈশবের ঈদের আনন্দের সঙ্গে আর কোনও আনন্দের তুলনা চলে না। ছোটবেলায় ঈদ ছিল এক বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা, যেখানে খুশি ও আনন্দে মেতে উঠতাম আমরা। ঈদের দিনটির প্রত্যেকটি মুহূর্ত মনে হত এক আশ্চর্য ঘটনা। সেই দিনটির স্মৃতি এখনো হৃদয়ে গেঁথে আছে।শৈশবে ঈদের আগের দিনগুলো বিশেষ ছিল। রোজার মাস শেষ হওয়ার সাথে সাথে ঈদের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যেত। বাবা-মা বিশেষ করে মা বাড়ি সাফ-সুতরা করতেন। ঘর সাজানো হতো নতুন কাপড়ের মতো। ঈদের বাজারের কথা তো আর না বললাম। সেই বাজারে ঘুরে ঘুরে নতুন জামা-কাপড়, মিষ্টি, মুখরোচক খাবার, খেলনা সবকিছু কেনার এক অদ্ভুত আনন্দ ছিল। তবে সবচেয়ে আনন্দের ছিল ঈদের আগের রাতের অপেক্ষা। রাতে মেহেদি পড়া ও বাজি ফোটানো এইগুলো ছিলো অনেক বেশি মজার। রাত থেকে গুনগুন করে ঈদ নামাজের প্রস্তুতি চলত। সকাল বেলা বাবা-মা আমাদের নতুন জামা কাপড় পরিয়ে দিতেন।ঈদের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সবার প্রথম কাজ ছিল গোসল করা। গোসল শেষ হলে নতুন পোশাক পরা। তারপর সবাই একসঙ্গে ঈদ সালাতের জন্য মসজিদে যেত। মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করার পরে সবার মুখে হাসি আর আনন্দ ছিল। ঈদের দিন পরিবারের সবাই একত্রে খেতে বসত, একে অপরকে ঈদ মোবারক বলত, ছোটরা বড়দের পায়ে হাত রেখে ঈদ মোবারক বলত এবং ছোটরা বড়দের কাছ থেকে সালামি নেই। এরপর একে অপরকে খুশির দানে ভরিয়ে দিত। সেই দিনটি ছিল আমাদের ছোট্ট জীবনে এক বিশেষ দিন, যেখানে একরাশ আনন্দ আর ভালোবাসা ছিল।

ঈদের আনন্দের এক বিশেষ দিক ছিল পাড়া-প্রতিবেশী ও বন্ধুদের সঙ্গে ঈদের মিলনমেলা। সেই দিনগুলোতে সবার মুখে হাসি ছিল এবং একে অপরকে উপহার দেওয়ার অদ্ভুত আনন্দ ছিল। আমরা ছোটরা ঈদ উপলক্ষে নিজেদের জন্য নতুন নতুন খেলনা নিয়ে খেলা করতাম। কখনও সাইকেলে ঘুরাঘুরি করতাম আবার কখনও বাজি ফোটানো , কখনও বা দৌড়ঝাঁপে মেতে উঠতাম। কখনো বন্ধুদের বাড়িতে যাওয়ার সময় মিষ্টি খেতে খেতে গল্প করতাম, কখনো ছোটদের মধ্যে চকলেট আর মিষ্টির প্রতিযোগিতা চলে যেত।ঈদের দিন ঘরেই ছিল নানা ধরনের খাবারের আয়োজন। বিকেলে কাচ্চি, বিরিয়ানি, সেমাই, পায়েশ এসব খাবারের সুগন্ধে পুরো বাড়ি ভরে উঠত। মা-বাবার সঙ্গেও আনন্দে কাটানো সেই মুহূর্তগুলো মনে হয় যেন আজও জীবন্ত।ঈদের আনন্দ শুধু খাবার বা পোশাকের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং ছিল এক অদ্ভুত ভালোবাসা ও সান্নিধ্য। পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং পাড়া-প্রতিবেশীদের মাঝে যে সম্পর্কের বন্ধন ছিল তা এক সত্যিকারের ঈদ উপহার ছিল। শৈশবের ঈদ ছিল অবর্ণনীয় আনন্দের দিন, যেখানে শুধুমাত্র খুশি, ভালোবাসা এবং সাদৃশ্য ছিল। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে সেই শৈশবের ঈদের আনন্দ আমাকে জীবনের প্রতি একটি আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি দেয়। ঈদ শুধু উৎসব নয়, এটি এক টুকরো সুখ, শান্তি ও একতার প্রতিনিধিত্ব।শৈশবের ঈদের আনন্দ কখনো ভুলার নয়।এই আনন্দটা আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার।

পোস্টের বিষয়জেনারেল রাইটিং
পোস্টকারীতানহা তানজিল তরসা
ডিভাইসরেডমি নোট ১১
লোকেশনপাবনা
আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আর লেখার অমিল ও ভূল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখেবেন।


১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আমি তানহা তানজিল তরসা। আমার স্টিম আইডির নাম @tanha001। আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। আমি বিবাহিতা। আমার একটা ছেলে সন্তান আছে। আমি ফটোগ্রাফি, গান গাইতে,রান্না করতে ও বাইকে ঘুরতে অনেক পছন্দ করি। আমার জন্ম স্থান কালিগঞ্জ থানা ঝিনাইদহ জেলায়। আমি পেশায় এক গৃহিনী। পাশাপাশি আমি আমার পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। আমি আমার হাসবেন্ড এর চাকরির সূত্রে পাবনা চাটমোহর এ বসবাস করছি।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি দেখার জন্য ও সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। স্পেশালি ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, এডমিন ও মডারেটরদের যারা আমাকে এত সুন্দর একটা কমিউনিটিতে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে এবং আমাকে প্রতিনিয়ত সাপোর্ট করছেন।


১০%প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


Logo.png

Banner.png

6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjo14VRtrFGNGuScBaPWHFR95FMmxtaAQvZLdKKbw85hHmvHKVuG8nshgvcyhSXjbnmrykQUbSLSKCvvZEFx.png

Sort:  
 9 months ago 

Screenshot_2025-03-28-19-08-40-431_com.android.chrome.jpg

Screenshot_2025-03-28-19-06-14-192_com.twitter.android.jpg

Screenshot_2025-03-28-19-04-55-123_com.twitter.android.jpg

Screenshot_2025-03-28-19-04-12-611_com.twitter.android.jpg

 9 months ago 

শৈশবের ঈদের আনন্দ নিয়ে লেখা পড়ে নস্টালজিক হয়ে গেলাম।সত্যিই, ছোটবেলার ঈদের খুশি, সালামি পাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরা আর মজার খাবার খাওয়া, সব মিলিয়ে ঈদের দিনটা ছিল অসাধারণ।এমন সুন্দর স্মৃতিচারণের জন্য ধন্যবাদ আপু।

 9 months ago 

আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।

 9 months ago 

শৈশবের প্রত্যেকটা মুহূর্ত অনেক বেশি সুন্দর ছিল। আসলে শৈশবের ঈদের আনন্দ গুলো এখন আর নেই। দিন গুলো আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো আপু।

 9 months ago 

পোস্টটি পড়ে ভালো লাগার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।

 9 months ago 

শৈশবের ঈদ আর এখানকার ঈদের মধ্যে রাতে দিনে তফাৎ। শৈশবে আমরা যেভাবে খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করতাম এবং খুব সুন্দরভাবে ঈদের আনন্দ উদযাপন করতাম সেটি এখন আর কোথাও উদযাপন করা যায় না৷ ছোটবেলার যে মুহূর্ত রয়েছে সেটি আমরা এখন কোনভাবেই ছোটদের মধ্যেও দেখতে পাই না৷ তারা তাদের মতো করে উদযাপন করে৷ আর আমরা যেভাবে ঈদ উদযাপন করেছিলাম তা এখন দেখা যায় না৷ খুব সুন্দরভাবে আজকে এই পোস্টের মধ্যে খুব সুন্দর কিছু কথা শেয়ার করেছেন৷ অনেক ধন্যবাদ আপনাকে৷

 9 months ago 

আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাই, আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।