অরিগ্যামি // নিউজ পেপার দিয়ে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য তৈরি
আমার বাংলা ব্লগের সকল বাংলাভাষী সদস্যগনকে জানাই আমার সালাম। সবাই কেমন আছেন? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি। সবাইকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ।
এতক্ষণে আমার টাইটেল দেখে হয়তো আপনারা একটু আশ্চর্য হয়েছেন তাই না। নিউজ পেপার দিয়ে আবার কিভাবে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য তৈরি করা হয়েছে? এই বিষয় জানতে হলে আমার পোস্ট পড়তে হবে আর দেখতে হবে। হ্যাঁ আজ একদম ভিন্ন একটি অরিগ্যামি নিয়ে এসেছি। এই ধরনের জিনিস শোপিস হিসেবে সাজিয়ে রাখলেও দেখতে খুব সুন্দর দেখাবে। এখন বলছি নিউজ পেপার দিয়ে কি বানিয়েছি। আজ নিউজ পেপার দিয়ে গ্ৰামীণ সংস্কৃতিতে হারিয়ে যাওয়া কুয়ার অরিগ্যামি তৈরি করেছি। যখন ছোট ছিলাম তখন এই ধরণের কুয়া দেখতে পেতাম। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা হারিয়ে গিয়েছে। বর্তমানে তা হারিয়ে গিয়েছে আর সবার বাড়িতে এখন নলকূপের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আমাদের বাড়িতে একটি ছিল কুয়া ছিল আর সেখান থেকে সবাই পানি নিয়ে যেতো। খুব ছোট বেলায় দেখতাম মা চাচিরা বালতি দিয়ে পানি উঠাতো আর সেই পানি যেমন ঠান্ডা ছিল তেমনি খেতেও খুব সুস্বাদু। কিন্তু কালের বর্তমানে আমাদের গ্ৰাম থেকে তা হারিয়ে গিয়েছে। আপনাদের দিকে রয়েছে কিনা সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে জানিয়ে দেবেন?আমি আজ চেষ্টা করেছি সেই পুরনো কথা সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। বর্তমানের ছেলেমেয়েদের কুয়ার কথা বললে একদমই চিনবে না।
এই অরিগ্যামি বানাতে আমার অনেক সময় লেগেছিল। প্রায় ৪ থেকে ৫ ঘন্টা লেগেছিলো। তবে যখন সম্পূর্ণ তৈরি করার পর দেখতে এত ভালো লেগেছে তখন মনে হলো আমার কষ্ট সার্থক হয়েছে। এই ধরনের জিনিস তৈরি করতে যেমন ভালো লাগে তেমনি দেখতেও খুব সুন্দর লাগে। পোস্টের ভ্যারিয়েশন আনার জন্য মাঝে মাঝে এমন কিছু তৈরি করতে হয় যা নিজের কাছে যেমন ভালো লাগবে তেমনি সবার কাছেও অনেক ভালো লাগবে। যাই হোক কথা না বাড়িয়ে চলুন ধাপগুলো দেখে নেওয়া যাক।
২. পোস্টার রং
৩. তুলি
৪. কাঁচি
৫ . গাম
৬. পুঁতি
৭. কম্পাস
৮. কাটুন পেপার
✠ ১ম ধাপ✠
প্রথমে নিউজ পেপার লম্বা করে ভাঁজ করে নিলাম। এবার কাঁচি দিয়ে কেটে নেবো।
✠২য় ধাপ✠
এবার চিকন ভাবে ভাঁজ করে লাঠির মতো বানিয়ে নেবো। এরপর কিছু লাঠি বড় ছোট করে কেটে নেবো।
✠৩য় ধাপ✠
এরপর বড় ছোট মিলিয়ে কিছু লাঠি চকলেট কালার করে নেব। তাঁর গাম দিয়ে লাগিয়ে মই এর মতো বানিয়ে নেবো।
✠৪র্থ ধাপ✠
এবার একটি কাটুন পেপার কেটে নেবো। এরপর তার উপর সবুজ কালার রঙিন কাগজ গাম দিয়ে লাগিয়ে নেবো।
✠৫ম ধাপ✠
এবার বানিয়ে রাখা মই কাটুন পেপারের চারপাশে গাম দিয়ে লাগিয়ে নেবো। এরপর তাদের উপরে পুঁতি লাগিয়ে নেবো।
✠৬ষ্ট ধাপ✠
এবার একটি হলুদ পেপার কেটে নেবো। এরপর আরও কিছু লাঠি ছোট করে কেটে নেবো।
✠৭ম ধাপ✠
এবার এই ছোট লাঠি গুলো হলুদ পেপারের মধ্যে গাম দিয়ে লাগিয়ে নেবো। এরপর চকলেট কালার করে নেব। তারপর দু'পাশে দু'টো এবং মাঝখানে একটি লম্বা লাঠি গাম দিয়ে লাগিয়ে নেবো।
✠৮ম ধাপ✠
এ পর্যায়ে কাটুন পেপার কে গোল করে কেটে নেবো। এরপর রং করে নেবো।
✠৯ম ধাপ✠
এবার এই গোল বৃত্ত দিয়ে কুয়ার অংশ বানিয়ে নেব। এরপর কুয়ার দু'পাশে দু'টো লাঠি লাগিয়ে নেবো। তারপর কিছু রিং লাগিয়ে নেবো।
✠ ১০ম ধাপ✠
এবার আবারও একটি মই ও দুটি চাকা বানিয়ে নেব।
✠ ১১তম ধাপ✠
এরপর কুয়ার উপরে লাগিয়ে নেবো।
✠১২ তম ধাপ✠
এবার একটি লাল পেপার কেটে নেবো। এরপর লম্বা লাঠি লাগিয়ে রং করে নেবো।
✠শেষ ধাপ✠
এবার কুয়ার উপরে চাল লাগিয়ে নেবো। এরপর কিছু রঙিন পুঁতি দিয়ে চাল সাজিয়ে নেবো।
✠ফাইনাল আউটপুট✠
সবশেষে এবার এই কুয়া প্রথমে বানিয়ে রাখা ঘরের মধ্যে ঘাম দিয়ে লাগিয়ে নেবো। এরপর তার পাশে কিছু জিনিস দিয়ে সাজিয়ে দিলাম।
এটি বানানো যেমন কঠিন ছিল তেমনি বর্ণনা লেখাটাও বেশ কঠিন। তবে সম্পূর্ণ কাজ শেষ করে সুন্দর ভাবে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে পেরে খুব ভালো লেগেছে।
শ্রেণী | অরিগ্যামি |
---|---|
ক্যামেরা | Vivo Y16 |
চিত্রকর | @tanjima |
লোকেশন | ঢাক, বাংলাদেশ |
বন্ধুরা, আজকে শেয়ার করা "ক্লে দিয়ে মিনি চুলার অরিগ্যামি" আপনাদের কাছে কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং নিরাপদে থাকবেন। সবার জন্য শুভকামনা রইল। আল্লাহ হাফেজ।
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।
নিউজ পেপার দিয়ে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে সত্যিই মুগ্ধ হলাম আপু। পানির এই কুয়ার গল্প অনেক শুনেছি কিন্তু কোনদিনও স্বচক্ষে দেখার সৌভাগ্য হয়নি আমার। আপনি পানির এই কুয়া এত নিখুঁতভাবে তৈরি করেছেন যা সত্যিই প্রশংসনীয়। এটি তৈরি করতে আপনি অনেক পরিশ্রম করেছেন তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। কালার করে দেওয়ার জন্য অনেক সুন্দর লাগছে আজকের এই অরিগ্যামিটি।
আপু আপনি কুয়ার গল্প শুনেছেন আর আমি দেখেছি। আমাদের বাড়িতে ছিল। অনেক বড় একটি কুয়া ছিল আর এর পানি খেতে খুব ভালো লাগতো। হ্যাঁ আপু এটি বানাতে অনেক পরিশ্রম লেগেছিল। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।
আপু আপনি ঠিকই বলেছেন একটা সময় আমাদের দেশে এই কুয়ার ব্যাপক প্রচলন ছিল ।সব বাড়িতে একটি করে কুয়া ছিল। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে এখন এই কুয়া আর কোথাও দেখা যায় না ।এখনকার বাচ্চারা তো এগুলো চিনবেই না ।বেশ ভালো লাগলো আপনি নিউজ পেপার দিয়ে পুরনো ঐতিহ্য আবার আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। সত্যি ভীষণ ভালো লাগলো ।আর এটি তৈরি করতে আপনার যে প্রচুর সময় লেগেছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে ।কিন্তু চমৎকার বানিয়েছেন ।বেশ ভালো লাগলো ।ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক বলেছেন আপু এখনকার বাচ্চারা এই ধরনের কুয়া চিনবেই না। দিন যাচ্ছে আর সবকিছু হারিয়ে যাচ্ছে। হ্যাঁ আপু এটি তৈরি করতে আমার অনেক সময় লেগেছিল। তবে আপনাদের সুন্দর মন্তব্য পেয়ে সেই কষ্ট ভুলে গিয়েছি। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
আরে বাহ!! আপু, আপনি তো খুব সুন্দর করে নিউজ পেপার দিয়ে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য কুয়ার অরিগ্যামি তৈরি করেছেন। ছোটবেলায় আমিও এই কুয়াগুলো গ্রামে গিয়ে দেখেছিলাম। তবে সময়ের ব্যবধানে এখন আর এই কুয়াগুলো ব্যবহার হয় না। যার কারনে কোথাও আর এই ঐতিহ্যবাহী কুয়াগুলো দেখতে পাওয়া যায় না। যাইহোক আপু, আপনি দক্ষতার সাথে খুব সুন্দর করে নিউজ পেপার দিয়ে হারিয়ে যাওয়া কুয়ার অরিগ্যামি তৈরি করেছেন দেখে ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ভাইয়া আপনিও কুয়া দেখেছেন জেনে ভালো লাগলো। হ্যাঁ ভাইয়া আগের দিনের সবকিছু হারিয়ে গিয়েছে। তবে মাঝে মাঝে সেই জিনিস গুলো দেখলে খুব ভালো লাগে। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
নিউজ পেপার ও পোস্টার অঙ্গে খুবই সুন্দর একটি কুয়ার অরিগেমি তৈরি করেছেন। আগে প্রতিটি বাড়িতেই এরকম জিনিস দেখা যেত। কিন্তু কালের পরিবর্তনে এই জিনিসগুলো এখন হারিয়ে গেছে। তবে আপনার তৈরি জিনিসটি দেখে পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে গেল।
হ্যাঁ ভাইয়া কালের পরিবর্তনে এই জিনিস গুলো হারিয়ে গিয়েছে। আমার এই পোস্ট দেখে আপনার পুরোনো স্মৃতি মনে পড়েছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।
হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য কুয়ার অরিগ্যামিটা আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে। সত্যি বলতে এটি অরিগ্যামি নয়, এটি ১০০% ডাই তৈরি করেছেন। যাইহোক দেখতে কিন্তু খুবই চমৎকার দেখাচ্ছে। এটাই সত্য যে এটি এখন নেই বললেই চলে। আমার জানামতে কোথাও দেখি নাই সত্যি কারের। মোবাইলে অথবা ইউটিউবে দেখেছি অনেকবার। কিন্তু আপনি খুবই যত্ন নিয়ে অনেক সুন্দর ভাবে এটি তৈরি করেছেন। আসলে এই ডাইগুলো তৈরি করতে অনেক বেশি পরিশ্রম হয়। আপনি অনেক পরিশ্রম করে এটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাইয়া হয়তো এটি ডাই তবে আমি অরিগ্যামির শোপিস হিসেবে তৈরি করেছি। আপনার কাছে এটি ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। আপনারা বাস্তবে এই কুয়া দেখেননি বলেই আমার আজকের এই পোস্ট। এটি তৈরি করতে যথেষ্ট সময় ও পরিশ্রম লেগেছে। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
কুয়া আমি নিজেও সামনাসামনি কখনো দেখিনি। আপনি নিউজ পেপার দিয়ে খুব সুন্দর একটি কুয়া তৈরি করেছেন। এটা সত্যি হারিয়ে যাওয়া একটা ঐতিহ্য। বেশ ভালো লাগলো আপনার ডাই প্রজেক্ট দেখে। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি জিনিস তৈরি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপু বাস্তবে কুয়া দেখেননি বলেই আমি আজ আপনাদের জন্য উপহার হিসেবে এটি নিয়ে আসলাম। যাক আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।
আমার খুব ভালোভাবে মনে আছে অনেক ছোটবেলায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তার বাড়িতে পানির কোনো ব্যবস্থা ছিলোনা।তারা গোসলের জন্য এবং বাসনপএ মাজার জন্য কুয়ার পানি ব্যবহার করতেন। এবং খাওয়ার জন্য সেচ পাম্প থেকে পানি আনতেন। সত্যি আপু এই ধরনের ঐতিহ্য গুলো এখন হারিয়ে গিয়েছে আর তো দেখাই যায় না। আপনার ডাই পোস্টটি দেখে বেশ ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি ঐতিহ্য আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
আপু আপনার সুন্দর মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার খুব ভালোভাবে মনে আছে অনেক ছোটবেলায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তার বাড়িতে পানির কোনো ব্যবস্থা ছিলোনা।তারা গোসলের জন্য এবং বাসনপএ মাজার জন্য কুয়ার পানি ব্যবহার করতেন। এবং খাওয়ার জন্য সেচ পাম্প থেকে পানি আনতেন। সত্যি আপু এই ধরনের ঐতিহ্য গুলো এখন হারিয়ে গিয়েছে আর তো দেখাই যায় না। আপনার ডাই পোস্টটি দেখে বেশ ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি ঐতিহ্য আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
হ্যাঁ আপু এই ঐতিহ্য এখন আর নেই। তাইতো আপনাদের মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য আবার পুরোনো দিনে নিয়ে গেলাম। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।
দারুন একটি ঐতিহ্য আপনি আমাদের মাঝে ফুটিয়ে তুলেছেন। আপনার সুন্দর এই ডাই পোস্ট দেখে আমি মুগ্ধ হলাম। বেশ চমৎকারভাবে আপনি এই পোস্ট আমাদের মাঝে ক্রিয়েট করে দেখিয়েছেন। খুবই ভালো লাগলো দেখে।
আমার এই পোস্ট দেখে আপনি মুগ্ধ হয়েছেন জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।
খুব সুন্দর একটি পোস্ট তৈরি করেছেন আপু। আপনার পোস্ট দেখে আমি মনে করেছিলাম কোন কনটেস্ট এর আয়োজন চলছে নাকি। তারপর মনে হল মাসের প্রথম সপ্তাহে এমন কিছু তৈরি করে দেখানোর বিষয় রয়েছে। যাইহোক অনেক ভালো লাগলো, সুন্দর হয়েছে ঐতিহ্য ধরে রাখার পদ্ধতিটা।
আপনার সুন্দর মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।