চাল-কুমড়ার বড়ির তৈরি রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে আমি একটা রেসিপি শেয়ার করে নেবো। এই রেসিপিটা গতকাল দুপুরের দিকে তৈরি করেছিলাম। এই রেসিপিটা তৈরি করেছিলাম মূলত একটা নিরামিষ রেসিপি। আমি আসলে নিরামিষ তেমন খাইনা বললেও চলে, যখন খেতে ইচ্ছা হয় তখনি একটুআদ্দুক করা হয়ে থাকে। নিরামিষ আমার তেমন একটা ভালো লাগেনা খেতে। তবে আমাদের বাড়িতে সপ্তাহে একবার করে নিরামিষ চলে, আর সবাই খেলেও আমি আমিষ করে খাই। তবে গতকাল আমারও নিরামিষ খেতে ইচ্ছা হচ্ছিলো তাই মাকে বললাম সেই যখন আজকে আলাদা করে কিছু করা হচ্ছে না তাহলে আমিই করি রান্নাটা, কারণ নিরামিষটা প্রতি সপ্তাহে মা করে সবসময়। আর এই নিরামিষটা করেছিলাম চাল কুমড়োর বড়ি দিয়ে। অল্প কিছু বড়ি ছিল সেগুলো সব দিয়ে আর সাথে আলু দিয়ে একটা নিরামিষ তৈরি করে ফেলেছিলাম। এই চাল কুমড়োর বড়ি তেলে ভেজেও খেতে ভালো লাগে। আমি রান্নার সময় কয়টা আলাদা করে ভেজেছিলাম শুধু খাওয়ার জন্য, কিন্তু নুন দিতে ভুলে গেছিলাম হা হা, ফলে বেস্বাদ মতো লেগেছিলো। তবে এই তরকারিগুলো একটু ভুনা মতো করলে একটু ভালো হয়, আমি এই তরকারিটাও আটো আটো মতো করেছিলাম ঝোল অনেকটা কমিয়ে দিয়ে। তবে দুপুরের থেকে রাতে যেন আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছিলো তরকারিটা। কিছু কিছু তরকারি আসলে গরম গরম ভালো না লাগলেও ঠান্ডা অবস্থায় তরকারিটা কিন্তু দারুন লাগে। যাইহোক এখন এই নিরামিষ রেসিপিটার মূল বিষয়ের দিকে চলে যাবো।


☫প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ:☫

✦উপকরণ
পরিমাণ✦
চাল-কুমড়ার বড়ি
২০০ গ্রাম
গোল আলু
৭ টি
পেঁয়াজ
২ টি
রসুন
২ টি
কাঁচা লঙ্কা
৮ টি
গোটা জিরা
পরিমাণমতো
শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো
১ চামচ
সরিষার তেল
পরিমাণমতো
লবন
৩.৫ চামচ
হলুদ
৩ চামচ
জিরা গুঁড়ো
১ চামচ


গোল আলু, পেঁয়াজ, রসুন


কাঁচা লঙ্কা, সরিষার তেল, লবন, হলুদ, জিরা গুঁড়ো


✦এখন রেসিপিটা যেভাবে প্রস্তুত করলাম---


☬প্রস্তুত প্রণালী:☬


➤একটি বাটিতে ২০০ গ্রাম এর মতো কিছু বড়ি ঢেলে নিয়েছিলাম। এরপর সব আলুগুলোর এক এক করে খোসা ভালোভাবে ছালিয়ে নিয়েছিলাম।

➤আলুগুলোর খোসা ছালানোর পরে কেটে ছোট ছোট পিচ তৈরি করে নিয়েছিলাম এবং পরে জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম। এরপর কাঁচা লঙ্কাগুলো সব কেটে নিয়েছিলাম।

➤পেঁয়াজ এর খোসা ভালো করে ছালিয়ে নিয়েছিলাম এবং কেটে নিয়েছিলাম। এরপর রসুনের কোয়াগুলো আলাদা করে খোসা ছালিয়ে পেঁয়াজ এর সাথে রেখে দিয়েছিলাম এবং পরে সব জল দিয়ে ধুয়ে নিয়েছিলাম।

➤কড়াইতে খুবই হালকা তেল দিয়ে বড়িগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর সব খানিক্ষন নেড়েচেড়ে ভালোভাবে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤বড়ি ভাজার পরে কড়াইতে তেল দিয়ে এবার আলুর পিচগুলো সব ঢেলে দিয়েছিলাম। এরপর লাল মতো করে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤আলুর পরে কড়াইতে সামান্য তেল দিয়ে তাতে পেঁয়াজ-রসুন দিয়ে দিয়েছিলাম এবং ভালোভাবে ভেজে তুলে নিয়েছিলাম।

➤মূল ভাজার পর্ব শেষ হয়ে গেলে কড়াইতে পুনরায় তেল দিয়ে তাতে গোটা জিরা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর জিরাটা হালকা ভাজা মতো হয়ে আসলে তাতে ভেজে রাখা আলুর পিচগুলো সব দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤আলু দেওয়ার পরে তাতে পেঁয়াজ-রসুনের ভাজা অংশটা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাতে কাঁচা লঙ্কা দিয়ে স্বাদ মতো লবন আর হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤আলুর সাথে নেড়েচেড়ে লবন-হলুদ মিশিয়ে নিয়েছিলাম এবং পরে তাতে ১ চামচের মতো লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤পুনরায় লঙ্কার গুঁড়োটা আলুর সাথে মিশিয়ে নিয়েছিলাম এবং তাতে পরিমাণমতো জল দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤জল দেওয়ার পরে খানিক্ষন ধরে ভালোভাবে ফুটিয়ে আলুগুলো ভালোভাবে সিদ্ধ মতো করে নিয়েছিলাম। এরপর কয়েকটি সিদ্ধ আলুর পিচ একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

➤আলুর পিচগুলো হাতা দিয়ে চেপে চেপে ভালোভাবে গলিয়ে সফ্ট করে নিয়েছিলাম। এরপর তরকারিতে ভেজে রাখা বড়িগুলো সব দিয়ে দিয়েছিলাম।

➤বড়ি দেওয়ার কিছুক্ষন বাদে তাতে গলিয়ে রাখা আলুর অংশটা দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারির সাথে মিশিয়ে দিয়ে আরো খানিক্ষন দেরি করেছিলাম ভালোভাবে হয়ে আসার জন্য।

➤জ্বাল দিয়ে ঝোলটা অনেকটা কমিয়ে নিয়েছিলাম এবং পরে জ্বাল নিভিয়ে তাতে জিরা গুঁড়ো দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তরকারিটা পরিবেশনের জন্য একটি পাত্রে তুলে নিয়েছিলাম।

রেসিপি বাই, @winkles

শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

আমি রান্নার সময় কয়টা আলাদা করে ভেজেছিলাম শুধু খাওয়ার জন্য, কিন্তু নুন দিতে ভুলে গেছিলাম হা হা, ফলে বেস্বাদ মতো লেগেছিলো।

কথায় আছে ঝগড়া বিহীন প্রেম আর আর লবণ বিহীন তরকারি একই কথা। লবণ ছাড়া তরকারি খেতে কেমন হয়েছিল জানিনা তবে বুঝতে পারছি বেস্বাদ মতই হয়েছিল🤪। আমাদের বৌদি যদি পাশে থাকতো তাহলে বোধহয় এই ভুলটা আর হতো না। তাই জলদি জলদি বৌদিকে ঘরে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতে হবে মনে হচ্ছে। যাইহোক দাদা নিরামিষ খেতে আমারও ভালো লাগেনা। তবে মাঝে মাঝে যদি কুমড়ো বড়ি দিয়ে সবজি রান্না করা হয় তাহলে খেতে ভালো লাগে। আর শীতকালে তরকারিটা একটু ঠান্ডা হলে খেতে বেশি ভালো লাগে আমার কাছে। আজকের এই রেসিপি দারুন হয়েছে দাদা। মজার একটি রেসিপি দেখে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

চাল-কুমড়ার বড়ির তৈরি রেসিপি দেখি অনেক সুস্বাদু মনে হচ্ছে দাদা। আপনি খুবই মজাদার রেসিপি তৈরি করলেন। আপনার রেসিপির পরিবেশন আমার খুবই ভালো লাগে, কারণ আপনি খুবই সুন্দরভাবে ধাপে ধাপে রেসিপিটি পরিবেশন করেন। যার মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই শিখতে পারি। আসলে কুমড়া বড়ি আমারও খুব ভালো লাগে নিরামিষ এর সাথে খেতে। তেলে ভেজে নিলে আরও বেশি ভালো লাগে। তবে আমিও একদিন আপনার মত এই কুমড়া বড়ি তেলে ভেজে খেয়ে ছিলাম। খেতে খুবই মজাদার হয়েছিল। আপনিও তেলে ভেজে ছিলেন পেয়েছেন কিন্তু লবণ দিতে ভুলে গেছেন হাহাহা, যার কারণে অন্যরকম খেতে লেগেছে।আসলে লবন ছাড়া কোন কিছুই খতে মজা লাগে না। যাইহোক আপনার রেসিপি পরিবেশন আমার খুবই ভালো লেগেছে দাদা এবং পুষ্টিকর রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

সব সময় স্বাদ গ্রহণ করা হলে, বেস্বাদ গ্রহণের দায়িত্বটা কে নিবে। তাই কুমড়ো বড়ির বেস্বাদের দায়িত্বটা না হয় একদিন আপনার কাঁধেই পড়ল দাদা। কুমড়া বড়ি আমরা সব সময় মাছের সাথে ঝোল করে খাই। এভাবে কখনো আলুর সাথে সুস্বাদু রেসিপি তৈরি করে খাইনি। আপনার পোস্টে চাল কুমড়ার বড়ির তৈরি রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুব স্বাদ হবে। তাই একদিন এভাবে বাসায় ট্রাই করে দেখব। মজার মজার রেসিপি গুলো প্রতিনিয়ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো।

 2 years ago 

এমনিতে চাল-কুমড়ার বড়ি বেশ ভালোই লাগে খেতে।তবে অনেকসময় হয় কি,খুব একটা সিদ্ধ না হলে খেতে কেমন একটা লাগে।
এভাবে কখনো খেয়ে দেখিনি,বেশিরভাগ মাছের তরকারিতে দিয়েই রান্না করে আম্মু।সুন্দর ছিল উপস্থাপনা। শুভ কামনা রইলো।

 2 years ago 

দাদা একটু লবনের কারনে আপনার ভাজা বড়ির স্বাদ টা জলে গেল, হা হা হা। আমি যদিও কখনো চাল-কুমড়ার বড়ি খায় নি তবে আমার এক যশোরের বন্ধু এরকম বড়ি রান্না করে খাওয়েছিলো। খেতে অনেক ভাল লাগে। আজকে আপনাকে প্রথম দেখলাম নিরামিষ রান্না করলেন। তবে শেষে ঝোলটা কমিয়ে ফেলার কারনে স্বাদটা বেশি লেগেছে। আর সাপ্তাহে একদিন নিরামিষ খেলে মনে হয় ভালই হয়। ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

আমি শুধু মনে মনে এটাই ভাবছি যখন আপনি নুন দিতে ভুলে গিয়েছিলেন, তারপরে সেটা খেতে কেমন লেগেছিল হাহাহা। আমি মনে করি আমিষের পাশাপাশি মাঝে মাঝে নিরামিষ খাওয়া উচিত। কুমড়ো বড়ি বরাবরই আমার কাছে অনেক বেশি সুস্বাদু লাগে আর এখন শীতের সময় এখন এ ধরনের রেসিপি খেতে আরো বেশি লোভনীয় হয়ে থাকে। মজাদার এই রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

ভাই আপনার চাল কুমড়ার বরির রেসিপিটি চমৎকার হয়েছে ।চাল কুমড়ো দিয়ে যে বরি তৈরি করা যায় এটি আমার জানা ছিল না। যাইহোক চাল কুমড়ো বরির দারুন একটি রেসিপি তৈরি করেছেন। প্রথমে আলুগুলোকে ভেঙে নেওয়ার কারণে আমার মনে হয় এটা অনেক বেশি ঘন হয়েছে। আর আপনার রেসিপি মানেই তো দুর্দান্ত কিছু। খেতে যে সুস্বাদু হবে এটি বোঝাই যায়। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আমার তো তরকারিটা দেখেই খিদে চেপে ধরেছে। আমি চাল কুমড়ার বড়ি অনেকদিন খাইনি। গ্রামের বাড়িতে গেলে খাওয়া পরে আরকি। দাদা কিছু বড়ি ভেজে রেখেও লাভ হলোনা লবণ দেয়ার ভুলে তেমন খেতে পারলেন না বুঝলাম।
আমার পরিবারেও সপ্তাহে অন্তত একদিন নিরামিষ খাচ্ছি আমরা, এটা কিন্তু শরীরের জন্য বেশ ভালো। সবমিলিয়ে তরকারিটা সুস্বাদু হয়েছে বোঝাই যাচ্ছে।

দোয়া রইল পুরো পরিবারের জন্য 🥀

 2 years ago 

ভাইয়া আমি নিরামিষ আমিষ দুইভাবে খেতে পারি কোন সমস্যা হয় না। তবে হ্যাঁ অনেকের নিরামিষ একেবারে খেতে পারে না । চাল কুমড়ার বড়ি তৈরি খুব সুন্দর একটি রেসিপি করেছেন ভাইয়া। আপনার রান্না গুলো সব সময় লোভনীয় লাগে দেখতে, কারণ কালার টা খুব চমৎকার লাগে। আপনি তো বিশাল বড় রাধুনি🥰।

 2 years ago 

কুমড়ো বড়ি রান্না করার আগে ভেজে তুলে নেওয়ার পর আমিও কয়েকটা বড়ি একটু কড়া করে ভেজে খাই খেতে খুবই ভালো লাগে কিন্তু আমিও দাদা আপনার মতো এই ভুলটাই করি লবণ দেওয়ার কথা মনে থাকে না খাওয়ার সময় বুঝতে পারি যে ভাজার সময় লবণ দেওয়া হয়নি। তখন কি আর করা বড়িতে একটু লবণ ছিটিয়ে খেয়ে নেই। নিরামিষ খাবার অনেকেই খেতে পছন্দ করে না কিন্তু নিরামিষ খাবার আমার খুবই প্রিয় খাবার। আমি বেশিরভাগ সময় নিরামিষ খাবার খাই আর নিরামিষ রান্নাটাও খুব ভালো করি😑 কুমড়ো বড়ি দিয়ে এভাবে আলু পেঁয়াজ রসুন দিয়ে রান্না করা যায় তা আমার জানা ছিল না। আজকে নতুন একটা রেসিপি শিখে নিলাম। দাদা আপনি ঠিকই বলেছেন কিছু কিছু তরকারি আছে যেগুলো গরমের চেয়ে ঠান্ডা খেতেই বেশি সুস্বাদু লাগে। কুমড়ো বড়ির নতুন রেসিপি টি শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।🙏