আরণ্যক!!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আমি সাধারণত কোন বই একবারের বেশি পড়ি না। বই বলতে এখানে আমি উপন্যাস টাইপের বই বোঝাচ্ছি। আমার একাডেমিক কোন বই না। বলতে গেলে আমি ঐভাবে সময়ই পাই না। সপ্তাহে একটা বই শেষ করাও বেশ কষ্টকর হয়ে গিয়েছে ইদানিং। তবে একটা বইয়ের ক্ষেএে এটা একেবারে আলাদা। একটা উপন্যাস আছে যেটা এখন পযর্ন্ত আমি পাঁচবার পড়েছি। ভবিষ্যতে আরও কতবার পড়ব তার কোন ঠিক নেই। এটা আমার খুবই পছন্দের একটা উপন্যাস। প্রতিবার যখন আমি পূণরায় বইটা পড়া শুরু করি আমি একেবারে নতুন করে অনুধাবন করি। মনে হয় হ্যা বিগত সময় যখন এটা পড়েছিলাম এই ব্যাপার টা আমি অনূভব করতে পারিনি। উপন্যাস টা পড়লে আমার ডিপ্রেশন পযর্ন্ত কমে যায়। এটা বিভূতিভূষণের লেখা বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটা উপন্যাস। আমি বলছি আরণ্যকের কথা। বিশ্ববাসী যদি বাংলা ভাষা বুঝতো তাহলে এই আরণ্যক উপন্যাসের জন্যই বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় নোবেল পেতেন।
একটা চাকরির সুবাদে কলকাতার ছেলে সত্যচরণ কে চলে যেতে হয় সেখান থেকে বহুদূরে এক অরণ্য প্রান্তরে। সেখানকার বিশাল বনভূমির সে ম্যানেজার। চাকরি টা হয় তার বন্ধুর সুবাদে। কলকাতায় মানুষের মধ্যে বড় হওয়া সত্যচরণ প্রথম প্রথম ঐ অরণ্য প্রান্তরে গিয়ে হাঁফিয়ে উঠে। তার মন কোনভাবেই টিকতে চাই না। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে সবকিছু পাল্টে গেল। বনভূমি অরণ্যের প্রেমে পড়ে গেল সত্যচরণ। ওখানকার মানুষেরা বাঙালি না। বাঙালিদের সাথে তাদের জীবনধারার পার্থক্য বিস্তর। এবং ওখানকার মানুষেরা সাধারণত খুবই গরীব। ওখানে গিয়ে সত্যচরণ লবটুলিয়া, নাঢ়া বইহার, ফুলকিয়া বইহার, মোহনপুর রিজার্ভ ফরেস্ট এর প্রেমেই পড়ে যায় একপ্রকার। পাশাপাশি সরস্বতী কুন্ডী তো আছেই। কুন্ডী বলতে সাধারণত নদীকে বোঝাই।
একে একে সত্যচরণের পরিচয় হয় রাজু পাঁড়ে, যুগল প্রসাদ, ধাতুরিয়া, মঞ্চী, কুন্তা, ধাওতাল সাহু আরও অনেকের সাথে। বিশেষ করে আদিবাসী রাজা দোবরু পান্না এবং ভানুমতির কথা আলাদাভাবে বলতে হয়। উপন্যাসে এদের সবার জীবন কে খুবই চমৎকার ভাবে ব্যাখ্যা বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং ঐ অঞ্চলে দুই জাতির মানুষ বেশি। প্রথমত রাজপুত। এরা শাসকশ্রেণির কিছুটা উচু জাতের। অন্যরা গাঙ্গোতা প্রজা। এরা সাধারণ নিরিহ মানুষ। রাজপুত এবং গাঙ্গোতা দুইটা ভিন্ন জাতির মধ্যের সম্পর্ক টা বিভূতিভূষণ এতো চমৎকার ভাবে তুলে ধরেছেন সেটা সত্যি অসাধারণ। ঐ অঞ্চলের মানুষেরা সাধারণত খুবই গরীব। ভাত তারা একেবারেই খেতে পাই না। ভাত তাদের কাছে অতীব সুখাদ্য। সাধারণত গাঙ্গোতা প্রজারা কোন ভোজের সময় এই ভাত খেতে পারে।
সাধারণত ঐ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ মকাই সিদ্ধ, চিনার দানা সহ এগুলো খেয়ে থাকে। লেখক তাদের জীবন ধারা এতো অসাধারণ ভাবে উপন্যাসে ফুটিয়ে তুলেছে আমি যতবারই উপন্যাস টা পড়ি আমি মুগ্ধ হয়ে যায়। কেউ যদি আমার পছন্দের পাঁচটা উপন্যাসের নাম বলতে বলে আমি হয়তো ১-৫ শুধু আরণ্যকের নামই বলে যাব। একটা সময় গিয়ে জমিদারের অধিকাংশ জমি প্রজাবিলি হয়ে যায়। সত্যচরণকেও ঐ আরণ্য ছেড়ে চলে আসতে হয়। বহুবছর পরেও তার মনে পড়ে লবটুলিয়া ফুলকিয়া বইহারের ঐ জঙ্গল। মঞ্চী কিংবা কুন্তির কথা। আদিবাসি রাজা দোবরু পান্নার কথা। ঐ রাজবংশের মেয়ে রাজকন্যা সরল বন্যবালা ভানুমতির কথা। আরণ্যক যেন একটা মৃত হৃদয় প্রাণের সঞ্চার করতে সক্ষম।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।



.png)



Daily task
https://x.com/Emon423/status/1994678530295435600?t=FONGdqaw9XONd12qQvBTkA&s=19
https://x.com/Emon423/status/1994678720335073418?t=YZ6twCxXGSZ6LDt1VFBiXA&s=19