পকেটমার হতে সাবধান!
19-08-25
** ০৪ ভাদ্র , ১৪৩২ বঙ্গাব্দ**
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো ভালো থাকাটা হয় না যখন পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে আপনি ভালো থাকতে পারেন না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি প্রতিদিন নানারকন অপরাধচক্র সংঘটিত হচ্ছে তার মধ্যে পকেটমার একটি। এ ঘটনাগুলো ঘটে সাধারণ ভীড়পূর্ণ এলাকায় যেমন ধরেন রেলস্টেশনে, বাস স্টেশনে, ফেরিঘাটে অথবা মেলায়! পকেটমার একটি চক্র তাদের ফাদ পেতে বসে থাকে কখনো তারা একটা শিকারিকে ঘায়েল করতে হবে। পুরুষ মানুষ যেহেতু ওয়ালেট বা মানিব্যাগ ইউজ করে তারাই বেশি পকেটমারের শিকার হয়। এখন কথা হলো আপনি যদি সচেতন না হন তাহলে কিন্তু পকেটমার এর কবলে বারবার পরতে হবে আপনাকে। মানিব্যাগ এ অনেক ইনফরমেটিভ কাগজ, আইডিকার্ড থেকে থাকে। এগুলো হারালে দেখা যায় ব্যক্তিজীবনে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
রাস্তাঘাটে চলতে গেলে নিজের ও পকেটের দিকে সচেতন থাকা জরুরি। আমি যখন ঢাকায় আসলাম তখন থেকেই এ শব্দটার সাথে আমি পরিচিত বেশি। তারপর থেকে আমি যেখানেই যায় না কেন চোখ কান সবসময় খোলা রাখি! প্রচন্ড ভীড়ের মাঝেও পকেটের মানিব্যাগের দিকে খেয়াল থাকে। এটা আসলে এমনি এমনি হয়নি। একটা ঘটনা শেয়ার করাই যেতে পারে। সাধারণত ঢাকা গেলে ট্রেনে যাতায়াত করি আমি। ট্রেনে গেলে যানজটের কবলে পরতে হয় না। সময়ও কম লাগে। তো কিছুদিন আগে জয়দেবপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্য কমিউটার ট্রেনে উঠলাম। এগুলো নরমালি লোকাল ট্রেন। লোকাল ট্রেনে সিকিউরিটি কম থাকে বলায় যেতে পারে। টিটি তেমন দেখা যায় না, পুলিশকেও দেখা যায়। এজন্য অপরাধচক্রের টার্গেট থাকে এসব লোকাল ট্রেন।
লোকাল ট্রেনে উঠে কোনো সিট পেলাম না। যেহেতু বিকাল বেলার দিকে ছিল এজন্য ট্রেনে মোটামোটি মানুষের ভীড় ছিল অনেক। সিট না পেয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। আমার পাশেই এক মুরুব্বি। দেখে মনে কিছুটা স্মার্ট আছে। পাঞ্জাবী পরে আছে। লক্ষ্য করার বিষয় হলো উনি ফোনটা সেই পাঞ্জাবীর পকেটেই রেখেছে! এমনভাবে রেখেছিল পকেটমারের জন্য একটুকুও অসুবিধে হয়নি। আমি ভদ্রলোককে একবার সতর্ক করলাম। কিন্তু কি মনে করে আবার পাঞ্জাবীর পকেটেই রাখলো! ট্রেন যখন টঙ্গী স্টেশনে আসলো তখনই ভদ্রলোকের পকেট থেকে ফোনটা হাওয়া! পরে গেছে না কি নিয়ে গেছে ভদ্রলোকের খেয়াল নেই!
ট্রেনে মোটামোটি হৈচৈ কান্ড হয়ে গেল। ভদ্রলোক তো চিন্তায় পরে গেল। এতো এতো নাম্বার! ফোনের বিকাশে কিছু টাকাও ছিল! সেগুলোর কি হবে! ভদ্রলোক ঢাকা যাচ্ছিল বেড়াতে। কিন্তু এখন যে ফোন নিয়ে গেল, নাম্বারও নেই! তারপর আরেকজনের ফোন দিয়ে ফোন করে জানাল! আসলে এমন ঘটনা প্রতিদিন ঘটে ট্রেনে! ঘটনাগুলো ছোট হলেও এগুলো ধীরে ধীরে বাড়ছে! অপরাধ ছোট কিংবা বড় নেই সবগুলোই হলো অপরাধ। ঘটনা থেকে দুইটা শিক্ষা নেয়া যেতে পারে। এক হলো সচেতনতা বৃদ্ধি করা। আপনি নিজেই যদি সচেতন না হোন তাহলে এমন ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটবে আপনার সাথে। আবার ট্রেনে যারা জানালার পাশে বসে ফোন ইউজ করেন তারাও সাবধান! কারণ চলন্ত ট্রেনে আপনার হাত থেকেই ফোন নিয়ে উধাও হয়ে যাবে।
তখন আর যতই আফসোস করেন লাভ হবে না। এজন্য ট্রেনে জানালার পাশে বসলে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করুন। বিশেষ করে ট্রেন ছাড়ার পরে ফোন ইউজ করা থেকে বিরত থাকুন। রাতের বেলা ট্রেন দিয়ে আসলে ট্রেনের জানালা বন্ধ করে রাখতে পারেন যদি লং জার্নির ট্রিপ হয়! আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ট্রেন থেকে নামার সময় ভীড় এড়িয়ে চলুন, তাড়াহুরা করবেন না! এ সময়টাতে পকেটমার আপনার পকেট থেকে কিছু নিয়ে গেলেও টের পাবেন না! এজন্য আমাদের সচেতন থাকাটাই জরুরি আসলে। এ ব্যাপারে সবাই সচেতন থাকলে পকেটমারের মতো অরাধচক্রটা আর সুযোগ পাবে না। যেহেতু এ ঘটনাগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে পৌঁছানো ও কঠিন এজন্য আমাদেরই সচেতন থাকা জরুরি। নিরাপদ ও সুন্দর যাত্রার জন্য এ বিষয়গুলো মনে রাখা জরুরি।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বিএসসি করছি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয় (ডুয়েট) থেকে । পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত চার বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
পকেটমারের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। শহরাঞ্চলে পকেটমার বেশি। আর যারা এরকম কাজ করে তারা সত্যিই অনেক খারাপ মানুষ। কারণ একজন মানুষ সবকিছু হারিয়ে একেবারে অসহায় হয়ে পড়ে।