বিরক্তিকর এক সকালে প্রশান্তির দেখা
আজ - বৃহস্পতিবার
হাই! বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে চলেছি বামুন্দি বাজারে তার কিনতে গিয়ে বিরক্তিকর মুহূর্তে অনুভূতি এবং বাড়ি ফিরতে প্রশান্তির ফিরে পাওয়ার অনুভূতি। আশা করব পোস্টটি পড়ার মধ্য দিয়ে অনেক কিছু অনুভব করবেন।
বেশ কয়েক মাস আগে, বিশেষ প্রয়োজনে উপস্থিত হলাম বামুন্দি বাজারে। এই বাজারটা আমাদের গাংনী মেহেরপুরের অন্যতম বাজার। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের জিনিস এই বাজারে খুব সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়। আমাদের বাড়ি থেকে আর দশ কিলো দূরে বাজারটা। তাই যে কোন মুহূর্তে প্রয়োজনে এই বাজারে উপস্থিত হয়ে যায়। গ্রামীণ রাস্তা হওয়ায় মোটরসাইকেলে ১৫ মিনিট সময় লাগে। এই দিন সকাল বেলায় উপস্থিত হয়েছিলাম কারেন্টের তার নেওয়ার জন্য। বিষয় ছিল পুকুর ছেকে মাছ ধরতে হবে। বাড়িতে মোটর সংযোগ করে ফেলেছি কিন্তু কিছু তারের শর্ট পড়েছে। তাই ভেবেছিলাম এক কয়েল ধরে তার কিনে নিয়ে যাব। তাই মোটর সংযোগ করতে তারের প্রয়োজন হাওয়াই উপস্থিত হয়েছিলাম বামুন্দি বাজারে। যেহেতু সকাল সকাল উপস্থিত হয়ে পড়েছিলাম তাই লক্ষ্য করে দেখলাম বাজারে দোকানপাট এখনো তেমন খোলা হয়নি। ইলেকট্রনিক্স এর দোকান সবেমাত্র একটা খোলা শুরু হয়েছে। এইজন্য বেশ অনেকক্ষণ আমাকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল বাজারের একটি দোকানে দাঁড়িয়ে। আমি তখন বাজারে আছি পরিস্থিতি উপভোগ করেছিলাম। যখন বিকেল টাইম তখন সারা রাস্তা ধরে কত মানুষের চলাচল কেনাকাটা ব্যস্ততা। কিন্তু সকালবেলা যেন শান্ত শিষ্ট একটি বাজারে লোক নিয়েছে। মানুষের উপস্থিতি যেমন কম তেমনি বাজারে দোকানগুলো বন্ধ। এমনই ভাবে ভাবতে ভাবতে এক দেড় ঘন্টা পার হয়ে গেল। এরপর লক্ষ করলাম অনেকগুলো দোকান খোলা শুরু হয়েছে।
এরপর ইলেকট্রনিক্সের দোকানে উপস্থিত হয়ে তারের কথা বললাম। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় প্রায় আট থেকে দশটা ইলেকট্রনিক্স এর দোকানে উপস্থিত হয়েছি কিন্তু যে তার প্রয়োজন সেটা খুঁজে পেলাম না। কারণ ওই মুহূর্তে আমার প্রয়োজন ছিল অ্যালুমিনিয়ামের ৩৬/৭৬ তার। যার মধ্যে পাঁচটা এলুমিনিয়ামের খেই থাকবে। এই পারোটা আমাদের নিকটস্থ রায়পুর বাজারে সাড়ে ১৬০০ টাকা কয়েল বলেছিল। কিন্তু এই বাজারে এসেও এই দামি শুনতে পারলাম কিন্তু কোন দোকানে নেই। শুধু তার নয় সাথে আরো কিছু জিনিস কিনতে হবে তাই এই বাজারে এসে উপস্থিত হয়েছিলাম। কারণ জানে অন্যান্য বাজারে দাম একটু বেশি হয়ে থাকে আর এই বাজারে পরিচিত দোকান রয়েছে অনেক। কিন্তু আর কি করার তার পেলাম না। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর একাধিক দোকানে ঘোরাঘুরি করে যখন তার পেলাম না তখন খুবই বিরক্তি ফিল করছিলাম। বাকি জিনিসগুলো কিনে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। বুঝতে পারছেন কারেন্টের লাইন জুড়তে হলে অনেক টেপের প্রয়োজন হয়। তাই ডর্জন ধরে কেনার চেষ্টা করি।
এরপর বাড়িতে যেতেই তেল পাম্পের তেল নিতে হয়েছিল মোটরসাইকেলে। সেখানে দেখতে পারলাম খুব সুন্দর একটি কাঠ গোলাপ ফুলের গাছ। ইতোমধ্যে আমাদের পরিবার থেকে একজন এই ফুলের গাছের ফটোগ্রাফি পোস্ট করেছিল। তাই মনে পড়ে গেল এই ফুল গাছের কথা। তাই সুযোগ বুঝে একটা ফটো ধারণ করে নিলাম। এরপর চলতি পথে আরো একটি স্থান থেকে কচুরিপানা ফুলের ফটো ধারণ করলাম। আর এভাবে বাড়ির দিকে আসতে দেখতে পারলাম কয়েকটা ছোট ছেলেদের ঘুড়ি ওড়ানোর মুহূর্ত।
চলতি পথে দুইটা ছেলে বেশ সুন্দরভাবে ঘুড়ি উড়াই ছিল। আমি দূর থেকে তাদের দেখে ভেবেছিলাম একটু থামবো। তবে খেয়াল করে দেখলাম আমার গাড়ির আগ মুহূর্তে তারা একটু পাগলামি করছিল ঘুড়ি উড়ানো নিয়ে। তাই বাধ্যভাবে থামতে হলো তাদের সামনে। তাদেরকে আমি কাছে ডাকলাম। তারা রীতিমতো ভয় পেয়ে গেছিল। ভেবেছিল হয়তো আমি তাদেরকে ডেকে মারবো। অথবা তাদের ঘুড়ি ছিঁড়িয়ে দেবো। তারা ভয়তে ভয়তে দু এক পা আমার সামনে এগিয়ে আসছে আর পিছিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি শান্ত মনে হাসিখুশি ভাবে তাদেরকে কাছে ডাকছিলাম। এরপর আমার পাশে আসলো। কারণ তাদের নাম জিজ্ঞেস করলাম। কে কোন ক্লাসে পড়ে জানতে চাইলাম। তারা ডিটেলস আমাকে বলল। এরপর আমি তাদের ফটো ধারণ করতে চাইলাম। তারা আনন্দ সহকারে দাঁড়িয়ে পড়ল। তারপর বলল আমরা ভয় পেয়েছিলাম হয়তো আপনি আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করবেন তাই ভেবে। আমি তাদেরকে সান্ত্বনা দিয়ে কথা বললাম। তারা প্রশ্ন করলো আপনার youtube চ্যানেল আছে? আপনি কি সাংবাদিক? আমি কিছুটা পরিচয় তুলে ধরলাম। এরপর তাদের ঘুড়ি ওড়ানো দেখলাম। তাদেরকে বুঝিয়ে বললাম রাস্তার উপরে কখনো ঘুড়ি নিয়ে দৌড়াবে না। যে কোন মুহূর্তে তোমরা পড়ে যেতে পারো অথবা এক্সিডেন্ট হতে পারে। আমার কথা শুনলো এবং বুঝলো। সেখানে বেশ আধা ঘন্টার মত টাইম পার করলাম তাদের সাথে। যেন ছোটবেলার অনেক মুহুর্ত খুঁজে পেলাম। হয়তো এ বিষয়টা পরবর্তী পোস্টটি শেয়ার করব। বিরক্তিকর মুহূর্তের সেই অনুভূতিটা দূর হয়ে গেল ঘুড়ি ওড়ানো বাচ্চাদের সাথে সময় পার করে। যেন আধা ঘন্টার মধ্যে ছোটবেলার শত শত মধুর স্মৃতি মনে পড়ে গেল। আমিও তাদের সাথে ছোট মানুষের মতো কথাবার্তা বলা ও আনন্দ লিপ্ত হলাম। বিরক্তিকর্তা যেন কখন হারিয়ে গেল মন থেকে। খুঁজে পেলাম তো শান্তির দেখা। এরপর সোজা বাড়িতে চলে আসলাম। আর এভাবেই বিরক্তকর মুহূর্ত ও প্রশান্তির মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলাম এক সকালে।
Photography device: Infinix hot 11s
Location
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
| বিষয় | বামুন্দি বাজারে কেনাকাটা |
|---|---|
| ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
| লোকেশন | বামুন্দি, গাংনী-মেহেরপুর |
| ব্লগার | @sumon09 |
| দেশ | বাংলাদেশ |
| পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
|---|














ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুণ একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। আসলে ভাইয়া আমরা অনেক সময় ব্যস্ত সময় পার করে থাকি। আপনি দেখতে বাজারে অনেক কেনাকাটা করেছেন এতে সত্যিই অনেক ব্যস্ততার সাথে সময় পার করেছেন। তবে বাসায় ফেরার মুহূর্তে ছেলেরা ঘুড়ি উড়াচ্ছিল দেখতে পেয়ে আপনার ভালো লেগেছে। আর ভালোলাগা থেকে ছবিগুলো সংগ্রহ করে আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন। দেখে আমার খুব ভালো লাগলো ধন্যবাদ ভাই শেয়ার করার জন্য।
অনেকদিন পর বেশ ভালো লেগেছিল এমন দৃশ্যের মাঝামাঝি থেকে
আসলে ভাই শৈশবের স্মৃতিগুলো চোখের সামনে ধরা পড়লে মনের অজান্তেই মনটা কেমন জানি ভালো হয়ে যায়। নানা ব্যস্ততার কারণে আপনি অস্বস্তির দিন যাপন করলেও দিনশেষে আপনি ছোট্ট একটি দৃশ্য দেখেই প্রশান্তি অনুভব করেছেন।
হ্যাঁ ঘুড়ি উড়ানোর মুহূর্ত আনন্দ ও প্রশান্তি তো হবেই।
অনেক মিস করি সেই সময়টাকে।