পেঁয়াজবাজী
এক.
প্রথম আলো তাদের ফেসবুক পেইজে লিখলো-
- 'পাঁচ টাকায় একটা পিঁয়াজ কিনতে কেমন লাগছে পাঠক?'
কমেন্টে পার্থ ভট্টাচার্য নামে এক ভদ্রলোক লিখলো, - 'কোথায় পিঁয়াজ খাচ্ছি? সকালে পদ্মাসেতু, দুপুরে ফ্লাইওভার এবং রাতে দুই চামুচ ১৯৭১ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ছি।'
দুই.
চেম্বারের সামনে একজন ডক্টর তার ভিজিট ফি সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি টানিয়েছেন ঠিক এভাবে-
'আগামী ০১/১১/১৭ তারিখ হতে ডাক্তার ভিজিট
নতুন রোগী- ৫ কেজি পেঁয়াজ
পুরাতন রোগী- ৩ কেজি পেঁয়াজ (১ মাসের মধ্যে)
রিপোর্ট দেখা- ২ কেজি পেঁয়াজ'
তিন,
সচেতন কর্তা তার পরিবারের জন্য কেনা ৩ কেজি পেঁয়াজের পলিথিনে তালা চাবি মেরে গান ধরেছে- চাবি মাইরা দিছি একখান......চাবি মাইরা।
চার,
রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া সোনা/টাকা আসল মালিকের কাছে পৌঁছে দিল রিক্সাচালক আমিরুল। এমন শিরোনামে বহু নিউজ দেখে পুলকিত হয়েছেন। সময় এখন পেঁয়াজের। কিছুদিন আগে রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া পেঁয়াজ আসল মালিককে ফিরিয়ে দিয়ে বাহবা পেলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সাকিব!
পাঁচ,
সুনিলের বাসায় সেদিন বউ ছিলো না। বাপের বাড়ি। হোটেলে খেয়ে পেট ও পকেট দুটোর অবস্থাই কাহিল। ১৫ টাকায় দুটো ডিম কিনে স্টকে থাকা পেঁয়াজ কেটে মামলেট করতে গিয়ে টের পেলো পেঁয়াজ কী জিনিস। হাত দিয়ে পেঁয়াজ কাটে কিন্তু চোখ দিয়ে পানি ঝড়ে। বউকে যখন ফোনে তার অশ্রু বিসর্জনের হেতু বলেছিল, বউ তখন জোড়ে হেসে উঠেছিল। একেবারে খিলখিলিয়ে হাসি। সুনিল এরপর বহুবার মনে মনে আশা করেছে, পেঁয়াজ কাটার সময় বউয়ের চোখে যেন অশ্রু ঝড়ে; সে তখন অট্টহাসি দিয়ে রিপ্লাই দিবে। কিন্তু সুনিলের বউ পেঁয়াজ কাটে আর হাসে! আজ পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে কিচেন থেকে প্রশ্ন আসলো, কত টাকা কেজি? সুনিল বলে, ৯০ টাকা। বউ নিশ্চুপ। কী যেন বলতে বলতে (গালি কিনা স্পষ্ট নয়) পেঁয়াজ কাটছে। সুনিল খেয়াল করলো, ওর প্রিয়তমা স্ত্রীর চোখে অশ্রু ঝড়ছে। এমন দিনে সুনিলের হাসি পাওয়ার কথা। কিন্তু এ কী! সুনিলের চোখের কোণেও এক ফোঁটা অশ্রু। মধ্যবিত্ত জীবনের অশ্রু। পেঁয়াজ কেনার সুখের অশ্রু। গত সপ্তাহ জুড়ে পেঁয়াজ ছাড়াই তরকারি খেতে হয়েছে যে !