ঢাকার দুর্বিষহ জীবন থেকে মুক্তি চাই মানুষ।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো এবং সুস্থ আছেন।
আর কয়েক মাস পরেই বাংলাদেশ ত্রিদেশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন হতে পারে। জাতীয় নির্বাচনে ঢাকার মধ্যে বিষয়টির আসন রয়েছে। বৃষ্টি আসনেই বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা তাদের দলীয় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। সবার মুখে একটি আশ্বাস সবাই চাই দূষণ, দখল আর যানজটমুক্ত ঢাকা নগরী গড়ে তুলবে অথচ ঢাকার দুর্বিষহ জীবন থেকে মুক্তি চাই মানুষ।
ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী, সুযোগ সুবিধার কেন্দ্র, চাকরি-ব্যবসার বড় জায়গা। দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ আসে শুধু জীবিকা, শিক্ষা বা চিকিৎসার আশায়। কিন্তু এই শহরে বসবাস করা এখন অনেকের জন্যই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। কখনো যানজটে আটকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট হচ্ছে, কখনো ধুলাবালিতে শ্বাস নেওয়াই কষ্টকর হয়ে পড়ে। নানা সমস্যায় জর্জরিত শহরটি মানুষকে প্রতিদিন নতুন নতুন ভোগান্তির মধ্যে ফেলছে। তারপরও জীবিকার টানে কেউ ঢাকা ছাড়তে পারে না।
ঢাকায় এখন দূষণ, দখল, জানজট আর বিশৃঙ্খলা যেন নিত্যদিনের চিত্র। চারপাশের নদী-খাল দখল হয়ে গেছে, বৃষ্টির অল্প পানিতেই রাস্তায় হাঁটু বা কোমর পানি জমে যায়। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে জলাবদ্ধতা শহরের বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু বর্ষায়ই নয়, বছরের নানা সময় এই জলাবদ্ধতার কারণে অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী সবার জীবন বিপর্যস্ত, ক্লান্ত,দুর্বিষহ।
সবচেয়ে ভয়ংকর সমস্যা হলো যানজট। সামান্য দূরত্বে যেতে ঘন্টার পর ঘন্টা লেগে যায়। প্রতিদিন বিপুল কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। গত বছর এক প্রতিবেদনে দেখেছিলাম ঢাকার যানজটে বছরে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ ক্ষতি হয়। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে মানুষের মন বিরক্তিতে ভরে ওঠে। আবার অসুস্থ মানুষ কিংবা অ্যাম্বুলেন্স যদি এই জটে আটকে পড়ে, তখন ঘটে আরও বড় বিপদ। অনেক সময় শুধু যানজটের কারণেই রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে।
বায়ুদূষণ আরেকটি বড় দুর্ভোগ। শীতকালে ধুলা, গ্রীষ্মে ধোঁয়া, বর্ষাকালে কাঁদাপানি সারা বছর নগরবাসীকে শ্বাসকষ্ট, কাশি, চোখ জ্বালা, হাঁপানি, সহ নানা রোগে ভুগতে হয়। বছরে লাখের বেশি রোগী শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় হাসপাতালে আসে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। নতুন করে এখন ডাস্ট এলার্জির রোগীর সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে।
এদিকে ঢাকা এখন শব্দদূষণের দিক দিয়েও বিশ্বের শীর্ষে। রাস্তার হর্ন, নির্মাণকাজ, জনসমাগম সব মিলিয়ে শব্দের মাত্রা ভয়ানক পর্যায়ে পৌঁছেছে। যেখানে মানুষের জন্য গ্রহণযোগ্য শব্দমাত্রা ৫৫ ডেসিবেল, সেখানে ঢাকায় তা প্রায় দ্বিগুণ।
শহরের ফুটপাতগুলোও বেশিরভাগই দখল হয়ে আছে। হকার, অবৈধ পার্কিং, রাস্তার পাশে ব্যবসা এসব কারণে পথচারীদের রাস্তার মাঝ দিয়েই হাঁটতে হয়। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে, আর যানজট আরও তীব্র হয়। তাছাড়া বহু স্থানে ফুটপাত খোলা প্রস্রাবখানায় পরিণত হওয়ায় পথচারীদের চলাচল আরও কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এসব বিশৃঙ্খলার মূল কারণ হলো পরিকল্পনার অভাব, আইন প্রয়োগে অনীহা এবং জবাবদিহির অভাব। ফুটপাত দখলমুক্ত করতে মাঝে মাঝে অভিযান হলেও মাসোহারা গ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে কখনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। খাল-জলাশয় দখল হয়ে গেলেও প্রশাসন অনেক সময় নিষ্ক্রিয় থাকে। ফলে পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে।
গুলশান-বনানী বা বারিধারার মতো ভিআইপি এলাকাও এখন আর আগের মতো বাসযোগ্য নেই। বাণিজ্যিকীকরণের কারণে এসব আবাসিক এলাকা ভিড় ও বিশৃঙ্খলায় পরিণত হচ্ছে। ফলে যারা শান্তিপূর্ণ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের আশায় এসব এলাকায় বসবাস করতেন, তাদের জীবনও এখন দুর্বিষহ।
সবকিছু মিলিয়ে ঢাকা এখন এমন এক শহর, যেখানে মানুষ বাস করতে চায় না, কিন্তু উপায় না থাকায় থাকতে বাধ্য হয়। কারণ চাকরি, ব্যবসা, শিক্ষা সবকিছুই এই শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এখানেই সুযোগ বেশি, তাই মানুষ সব কষ্ট সত্ত্বেও ঢাকা ছাড়তে পারে না।
ঢাকা যেন একদিকে কষ্টের শহর, অন্যদিকে জীবিকার শহর। তাই মানুষ বারবার বলে ঢাকা ছেড়ে যেতে চাই, কিন্তু জীবিকার জন্য পারি না। শত কষ্টের মাঝেও একটি অজানা আকর্ষণ চুম্বকের মতো টেনে ধরে রাখে আমাদেরকে।
ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য করার জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ, ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত করা, কার্যকর পরিবহনব্যবস্থা এবং প্রশাসনের জবাবদিহি নিশ্চিত করা। নইলে এক সময় এই শহর পুরোপুরি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। সামনের জাতীয় সংসদে নির্বাচনে জয় হলে অনেক প্রার্থী এসব সমস্যা থেকে মুক্তি দিবে বলে আশ্বাস দিচ্ছে। এখন রাজধানী বাসি সিদ্ধান্ত নিবে কে ওয়াদা রক্ষা করবে আর কে সারাজীবন আশ্বাস দিয়ে যাবে। রাজধানী বাসীর শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server

















