বাৎসরিক মাহফিল ও একটি সন্ধ্যা।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো এবং সুস্থ আছেন।
আজ আমাদের বাসার সামনে অনুষ্ঠিত হলো স্থানীয় একটি মাদ্রাসার আয়োজনে বাৎসরিক মাহফিল। প্রতিবছরই মাদ্রাসাটির পক্ষ থেকে এই মাহফিলের আয়োজন করা হয়, তবে এ বছরের মাহফিলটি যেন আমার চোখে একটু বেশি বিশেষ হয়ে ধরা দিল। কারণ এই মাহফিলের মাধ্যমে সম্মানিত করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানের আটজন হাফিজ ছাত্রকে। যারা ধৈর্য, নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে পবিত্র কোরআনুল কারীম সম্পূর্ণ মুখস্থ করেছে। এটা সত্যিই গর্বের, অনুপ্রেরণার এবং আবেগের বিষয়।
মাহফিলটি অনুষ্ঠিত হয়েছে আমাদের বাসার সামনে থাকা একটি বিল্ডিংয়ের পাশের ফাঁকা জায়গায় এবং সেই স্থান থেকে একটু দূরের মেইন রাস্তার ওপাশের এক সাইটে। পুরো এলাকা সাজানো হয়েছিল রঙিন কাপড়, আলোকসজ্জা ও সুন্দর ব্যানারে। উপরে ঝোলানো হয়েছিল বর্ণিল প্যান্ডেল বেগুনি, সবুজ ও লাল রঙের মিশ্রণ এলাকাটিকে উৎসবমুখর করে তুলেছিল। চারপাশে সাদা কাপড় দিয়ে ঘেরা হয়েছিল অনুষ্ঠানস্থল, যাতে পুরো জায়গা একটি পরিপাটি আঙ্গিনা হয়ে ওঠে। আর ভিতরে যেন বাতাস প্রবেশ করতে না পারে সেই ব্যাবস্থাও ছিল।
আমি অফিস থেকে বাসায় এসে রাত আটটার দিকে নুসাইবা ও তার আম্মুকে নিয়ে প্রথমবারের মতো মাহফিলে গিয়ে পরিবেশটা দেখে এলাম। তখনো মানুষ আসছিল, ধীরে ধীরে আয়োজনটি জমে উঠছিল। তাদেরকে কিছু খাবার কিনে বাসায় দিয়ে পরে রাত ১০টার দিকে আবার গেলাম। তখন মাহফিলে ভীড় বেশ জমজমাট। আশেপাশের এলাকার মানুষ, দোকানি, শিশু, বৃদ্ধ সবাই যেন একটি আধ্যাত্মিক মুহে ডুবে ছিল।
মাহফিলের মূল আকর্ষণ ছিল আটজন নতুন হাফিজ ছাত্রকে পাগড়ি প্রদান। তাদের জন্য মঞ্চের সামনে বিশেষ একটি ব্যবস্থা ছিল। ছোট ছোট হাফিজ ছাত্রদের যখন মঞ্চে ডাকা হলো, তখন পুরো পরিবেশে যেন এক আনন্দের ঢেউ বয়ে গেল। সাদা পাঞ্জাবি, টুপিতে ছোট্ট এই শিশু-কিশোর হাফিজদের দেখে সত্যিই মুগ্ধ না হয়ে থাকা যায় না। কোরআনের হাফিজ হওয়া এটা শুধু মুখস্থ করা নয়, বরং এটা নৈতিকতা, আত্মসংযম ও পরিশ্রমের একটি দীর্ঘ পথচলার সম্মান।
মাহফিলের প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট আলেম, মাওলানা আবদুল আওয়াল সাহেব। তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে ইসলামী আলোচনা করে থাকেন, এবং তার বক্তব্যে সর্বদা সহজ-সরল ও হৃদয় আকর্ষন ভাষা ব্যবহার করেন। তিনি যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন শুনে সত্যিই ভালো লাগছিল। তার উপদেশগুলো ছিল বাস্তব জীবনের সাথে মিশে থাকা কিভাবে পরিবার, সমাজ এবং ধর্মীয় জীবনকে সুন্দর রাখা যায়, কিভাবে সন্তানদের আদর্শ জীবন গড়ে তোলা যায় এসব বিষয় নিয়ে তিনি কথা বললেন। মাত্র আধা ঘণ্টা হলেও তার বক্তব্য হৃদয়ে দাগ কেটে যায়।
মাহফিলের অন্যতম বিশেষ দিক ছিল মানুষের ভীড়। মঞ্চের সামনে বসে থাকা মানুষদের মধ্যে শ্রদ্ধা, শান্তি ও মনোযোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। ছোট বাচ্চারা বাবা-মায়ের পাশে বসে মন দিয়ে বক্তৃতা শুনছিল। কেউ কেউ মোবাইলে ভিডিও করছিল, কেউ ছবি তুলছিল সব মিলিয়ে একধরনের আধ্যাত্মিক ও সামাজিক মিলনমেলা তৈরি হয়েছিল।
মাহফিলের পাশের দোকানগুলোও আলোয় ঝলমল করছিল। আমি সেখানে দাঁড়িয়ে কিছু ফটোগ্রাফিও করেছি। দোকানিদের উৎসাহ, মানুষের ভীড়, আলো-ঝলমল পরিবেশ সব মিলিয়ে একটি চমৎকার রাত কাটল।
আজকের মাহফিলটি আমার কাছে শুধু একটি অনুষ্ঠান ছিল না, বরং ছিল একটি হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া অভিজ্ঞতা। হাফিজ ছাত্রদের সম্মাননা, অতিথির বক্তব্য, মানুষের ভীড় সবকিছু মিলিয়ে যেন একটি শান্তি, আধ্যাত্মিকতা ও আনন্দে ভরা রাত উপহার পেয়েছি। এমন আয়োজন প্রতিবছরই হয় তবে এবার তা আরও বেশি উপভোগ করেছি, বিশেষ করে পরিবারসহ গিয়ে অংশ নিতে পেরে।
আল্লাহ এই মাদ্রাসার ছাত্রদের, শিক্ষকদের এবং আয়োজকদের উত্তম প্রতিদান দিন এই কামনা রইল।
Location- Chashara,Narayanganj
Mobile- Realme C-53
@joniprins
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server



















