দুর্নীতি বিরোধী দিবসে দুর্নীতিবাজদের স্ট্যাটাস।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো এবং সুস্থ আছেন।
প্রতি বছর ৯ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী পালিত হয় আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয় বিভিন্ন কর্মসূচি, আলোচনা সভা, সচেতনতামূলক পোস্টার ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বার্তার মাধ্যমে। কিন্তু প্রশ্ন হলো শুধু দিবস পালন করলেই কি দুর্নীতি কমে? বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজলে তীব্র হতাশাই চিত্র উঠে আসে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে বারবার উঠে আসে দুর্নীতি। দুর্নীতির গভীর শিকড় এ দেশে বহু পুরোনো। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর থেকেই পূর্ববাংলা তথা পরবর্তীতে বাংলাদেশের সমাজ, প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় দুর্নীতির চিত্র দেখা যায়। আর ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর সুযোগ-সুবিধা, প্রশাসনিক শক্তি ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহারের মধ্য দিয়ে দুর্নীতি আরও বিস্তার হয়েছে। বৈধ-অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখল, ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, বিদেশে টাকা পাচার এসব যেন বাংলাদেশের রাজনীতি ও প্রশাসনে বহুদিন ধরেই পরিচিত বাস্তবতা।
স্বাধীনতার পর থেকে যেসব সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তাদের অনেকেই দুর্নীতি রোধের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। ক্ষমতায় আসার পর সুযোগের সদ্ব্যবহার নয়, বরং অপব্যবহারই হয়েছে বেশি। কোটি কোটি টাকা বিভিন্ন প্রকল্পের নামে খরচ দেখিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে দেশের বাইরে। এমনকি কিছু দল পরপর কয়েক বছর আন্তর্জাতিক দুর্নীতির সূচকে শীর্ষে থাকা চ্যাম্পিয়ন হিসেবেও কুখ্যাত ছিল। দেশের মানুষ এসব জানে, বোঝে, এবং দিনে দিনে আরও সচেতন হচ্ছে।
কিন্তু মজার বিষয় হলো যেসব রাজনৈতিক শক্তি দুর্নীতির জন্য সবচেয়ে বেশি সমালোচিত, তারাই আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি নির্মূল করবো, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবো, আমরাই দুর্নীতি রোধ করবো, এমন নানা আশ্বাস দেয়। এতে সাধারণ মানুষ হাসে, বিরক্ত হয়, এবং মনে মনে বলে দুর্নীতিবাজরাই আবার দুর্নীতি বিরোধী দিবসে নীতির বাণী শোনাচ্ছে।
এই ভণ্ডামি অনেকের কাছেই অত্যন্ত হাস্যকর মনে হয়। কারণ জনগণ এখন আগের মতো অন্ধ নয়। অতীতের মতো মানুষকে বোকা বানানোর যুগ চলে গেছে। বর্তমান প্রজন্ম জানে, কোন দল ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি বাড়বে আর কোন দল রাষ্ট্রযন্ত্রকে স্বচ্ছ রাখার চেষ্টা করবে।
বাংলাদেশে দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দেশের অর্থনীতি এর উপর সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত। বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পে অতিরিক্ত বাজেট, কমিশন সিন্ডিকেট, কাগজে-কলমে কাজ দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ এসব দেশের উন্নয়নকে থামিয়ে দিয়েছে। অর্থনৈতিক বৈষম্য বেড়েছে, ধনী আরও ধনী হচ্ছে আর সাধারণ মানুষ যথার্থ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দুর্নীতি যত বাড়ে, দেশ তত পিছিয়ে পড়ে এটাই বাস্তবতা। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে দুর্নীতির মাত্রা কম বলে তারা অল্প সময়েই এগিয়ে যেতে পারে। আর দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলো উন্নয়নের পথে বারবার ব্যর্থ হয়।
বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। দুর্নীতি বন্ধ না হলে আগামী ১০০ বছরেও এই দেশ প্রকৃত অর্থে উন্নত হবে না। এটা অনেক বিশেষজ্ঞের মূল্যায়ন। তাই শুধু দিবস পালন নয়, দরকার সত্যিকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সুষ্ঠু প্রশাসনিক ব্যবস্থা, স্বচ্ছতা, এবং দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ দেওয়া।
আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ শুধু স্বপ্ন নয় এটা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার। দুর্নীতি রোধ করতে হলে সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সৎ থাকতে হবে এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।
আশা করি আগামী তরুনপ্রজন্ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাদের মত শক্তভাবে প্রকাশ করবে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server

















