ক্রিয়েটিভ রাইটিং || ছোট গল্প : টিয়ারা (পর্ব -০১)

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি।

আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে একটি ছোট গল্প শেয়ার করবো। গল্পের নাম "টিয়ারা"। গল্পটির প্রথম পর্ব নিচে দেখে নেওয়া যাক।

green-parrot-8593960_1280.jpg

ইমেজ সোর্স

ছোটবেলা থেকেই অমিতের পাখি পোষার খুব শখ। সে বিগত কয়েক বছর ধরেই তার বাবাকে পাখি এনে দেওয়ার জন্য বলে পুষবে বলে। কিন্তু তার বাবা এতদিনে এনে দেয়নি কারণ পাখি পুষতে গেলে অনেকটাই যত্ন করতে হয়। আরেকটু বয়স বেশি না হলে এই পাখিদের যত্নের ব্যাপারটা বুঝতে পারবে না, এইজন্যই অমিতকে সে এতদিন পাখি কিনে দেয়নি। তবে অমিত এখন একটু বড় হয়েছে। এখন তার বয়স মোটামুটি আট নয়ের মধ্যে। পাখির যত্ন অল্প হলেও সে এখন করতে পারবে। সেজন্য এই বছর এলাকার এক মেলা থেকে তার বাবা তাকে একটি সবুজ টিয়া পাখি কিনে দিয়েছে। তাদের গ্রামের এই মেলায় বিভিন্ন ধরনের পাখি পাওয়া যায়। তার মধ্যে শালিক পাখি, টিয়া পাখি, কবুতর এগুলাই বেশি পাওয়া যায়।

অনেক আবদার করার পরেই অমিতের এই শখ পূরণ হয়েছে। অমিতের বাবা অমিত কে যে টিয়া পাখিটি এনে দিয়েছিল তার বয়স ছিল মোটামুটি দেড় মাসের মত। অমিতকে পাখি কিনে দেওয়ার পর অমিতের অনেক বেশি উৎসাহ এই পাখি নিয়ে। সে বড়দের কাছ থেকে এই পাখি কি করে যত্ন করে রাখবে, সেই সম্পর্কে পরামর্শ নিয়ে বেড়াচ্ছে। পাখিকে কি খাওয়াবে, কি করলে পাখির ভালো হবে, কত চিন্তা তার মাথায়! পাখি আনার পর কয়েকদিন পর সে অনেক ভেবে এই পাখিটির নাম দিয়েছে "টিয়ারা"। ভালোবেসে এখন সে তাকে "টিয়ারা" বলেই ডাকে

সে ছোট অবস্থা থেকেই সে তার টিয়ারা কে বিভিন্ন ধরনের ফল,ভাত, এসব খাওয়াচ্ছে। এই পাখির সাথে সাথে তার বাবা পাখি রাখার খাঁচাও কিনে এনেছিল। তবে পাখিটিকে সবসময় অমিত খাঁচার ভিতর রাখে না। মাঝে মাঝে সে এই পাখিকে সাথে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। বাড়িতে কোন কাজ করলেও তাকে পাশে বসিয়ে রেখে করে। এভাবে আস্তে আস্তে অমিতের সাথে বড় হতে থাকে এই টিয়ারা। অমিত এই টিয়ারার বড় হওয়া দেখছে আস্তে আস্তে। টিয়ারার গায়ে এখন অনেক পালক এসেছে এবং সে এখন নিজে থেকেই খেতে পারে, অমিতকে আর খাইয়ে দিতে হয় না তাকে সবসময়।

অমিতদের বাড়িতে কোন আত্মীয়-স্বজন আসলে অমিত তাদেরকে ডেকে ডেকে এই টিয়ারাকে দেখায় এবং তার টিয়ারা সম্পর্কে ভালো ভালো কথা বলে সবাইকে। তার টিয়ারা এখন তার অনেকটাই কথা শোনে এবং তার কথা বুঝতে পারে। সত্যি বলতে, এই টিয়া পাখিকে ছোট থেকে ট্রেনিং দেওয়া হলে এরা মানুষের মতো কিছুটা কথা বলা শিখতে পারে। এই ব্যাপারটা অমিতও কোথা থেকে যেন শুনেছে, সেই জন্য ছোট থেকেই এই তার টিয়ারা কে কথা বলানো শেখাচ্ছে। যদিও এখন টিয়ারা কোন কথা বলতে পারে না। তবে অমিতের ডাকে সে সাড়া দেয় । অমিত যদি কোন সময় বাড়িতে না থাকে, তাহলে সে ডেকে ডেকে সবাইকে পাগল করে দেয়। আর অমিত যখন বাড়ি ফিরে আসে তখন সে খুশিতে ছোটাছুটি শুরু করে দেয়।

অমিতকে এখন নিয়মিত স্কুলে যেতে হয়। তাই যে সময়টাতে অমিত স্কুলে থাকে, সেই সময়টাতে টিয়ারা মন খারাপ থাকে অনেকটা অমিতকে না দেখতে পেয়ে। আবার অমিত যখন স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে আসে তখন মনে হয় টিয়ারা স্বস্তি পায়। অমিত হাতে করে খাবার না দিয়ে যদি অন্য কেউ খাবার দেয় তাহলে টিয়ারা সেই খাবার খায় না। অমিতের প্রতি টিয়ারার এমন ভালোবাসা দেখে বাড়ির সবাইও অবাক। টিয়ারা এবং অমিতের মধ্যে যে সুন্দর একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, এটা সবারই নজর কেড়ে নিয়েছে।

চলবে...


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীক্রিয়েটিভ রাইটিং (ছোট গল্প)
লোকেশনবারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, আমার আজকে শেয়ার করা "টিয়ারা" গল্পের প্রথম পর্ব তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

পাখিরাও ভালোবাসা বোঝে যেমন গল্পের এই টিয়া পাখির সাথে অমিতের ভালোবাসা তৈরি হয়েছে তাই অমিত যখন স্কুলে যায় তখন টিয়া পাখিটি মন খারাপ করে বসে থাকে। আবার অন্য কেউ খাবার দিলেও সেটা খেতে চায় না।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই, পাখিরাও মানুষের ভালোবাসা বোঝে। যাইহোক, গল্পটি পড়ে আপনার সুন্দর এই মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

অমিতের এই টিয়া পাখির কাহিনী পড়ে বেশ ভালো লাগলো। মানুষের বিভিন্ন রকমের সব থেকে থাকে। তার মধ্যে পাখি পোষ মানানো একটা অন্যরকম ভালো লাগা। যেহেতু অমিতের বাবা তার টিয়া পাখি কিনে এনে দিয়েছে তাই তার বিভিন্ন চিন্তা শুরু হয়ে গেছে কি খাওয়ালে পাখিটা ভালো থাকবে। তাই সে বড়দের পরামর্শ নিয়েছে। এরপর দিনদিন নিজের মতো করে গড়ে তুলেছে তাই পাখিটা তার হাতে ছাড়া অন্যের হাতে খেতে চায় না এবং অনেক কিছু বুঝতে শিখেছে। সত্যিই এমন একটা সুন্দর পোস্ট পড়ে বেশ ভালো লাগলো আমার।

 2 years ago 

আমার শেয়ার করা এই পোস্টটি আপনার কাছে সুন্দর লেগেছে, জেনে ভালো লাগলো ভাই। আপনার এত সুন্দর মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপনার লেখার টিয়ারা গল্পটার প্রথম পর্ব পড়ে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। এরকম অনেকেই রয়েছে ছোটবেলা থেকেই তাদের পাখি পোষার অনেক বেশি শখ থাকে। আমার নিজেরও কিন্তু ছোটবেলা থেকে পাখির পোশাক শখ ছিল। তবে যেদিন বুঝতে পেরেছি পাখিগুলোকে বন্দী করে রাখতে হয়, আর তাদের স্বাধীনতাটাই কেড়ে নেওয়া হয় এটার মাধ্যমে, তখন থেকে আর ইচ্ছাটা নেই। অমিত অনেক খুশি হয়েছিল যখন তার বাবা থাকে টিয়া পাখি কিনে দিয়েছিল। দেখছি সে অনেক যত্ন করেই পাখিটাকে পালন করতেছে। আর পাখিটাও তাকে ছাড়া কিছুই বোঝে না। তাদের একে অপরের প্রতি ভালোবাসা দেখে অনেক ভালো লাগলো। সুন্দর একটা গল্প ছিল এটি।

 2 years ago 

আমার শেয়ার করা এই গল্পটি আপনার কাছে সুন্দর লেগেছে, জেনে খুব খুশি হলাম ভাই।

তবে যেদিন বুঝতে পেরেছি পাখিগুলোকে বন্দী করে রাখতে হয়, আর তাদের স্বাধীনতাটাই কেড়ে নেওয়া হয় এটার মাধ্যমে, তখন থেকে আর ইচ্ছাটা নেই।

আপনার এই কথার সাথে আমিও একমত ভাই।

 2 years ago 

টিয়া পাখির এই চরিএ গুলো অভ‍্যাস গুলোর সঙ্গে আমি পরিচিত। একটা সময় আমারও এইরকম পোষ‍্য টিয়া ছিল। তবে সেগুলো এখন অতীত। অমিতের মতো আমিও ছোটবেলা অনেক বাইনা ধরতাম পাখি পুষব বলে। আমারও সারাদিন কাটত ঐ টিয়া পাখি টা নিয়েই। এখন পযর্ন্ত তো সব ঠিকঠাকই ছিল। আশাকরি পরবর্তী পর্বে কোন ক্লাইমেক্স আসবে ঘটনা টাই। অপেক্ষায় থাকলাম ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

আশাকরি পরবর্তী পর্বে কোন ক্লাইমেক্স আসবে ঘটনা টাই।

যেহেতু এটি একটি ছোট গল্প তাহলে তো ক্লাইমেক্স আসবেই ভাই।

 2 years ago 

টিয়া পাখি অনেকে লালন পালন করে অমিতের মতো। তবে অমিতের টিয়া পাখি লালন পালন দেখে সত্যি অনেক ভালো লাগলো। তবে আমি নিজেও দেখেছি আমাদের এখানে টিয়া পাখির কথা বলে। অমিতের টিয়া পাখি এখনো কথা বলে না তবে একসময় কথা বলবে। তবে এটি অবাক করার বিষয় অমিতের হাত থেকে টিয়া পাখি খাওয়া-দাওয়া খায়। আর টিয়া পাখির নামটাও বেশ চমৎকার রাখল অমিত। যাইহোক আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আশা করি পরে পর্ব তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন।

 2 years ago 

আমার শেয়ার করা এই পোস্টটি পড়ে আপনার অনেক ভালো লেগেছে, জেনে খুব খুশি হলাম ভাই। আপনার এই সুন্দর মন্তব্য টি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপনার লেখা গল্পগুলো আমার বেশিরভাগ সময় পড়া হয়। আর আজকের এই গল্পটার প্রথম পর্ব ও আমার পড়া হয়েছে। টিয়ারা গল্পটা অনেক সুন্দর করে লিখলেন। আমার তো মনে হয় বেশিরভাগ মানুষের পাখি পোষার ইচ্ছাটা রয়েছে। অমিত বুঝতে পারার পর থেকে পাখি পালন করতেছে আর পাখিটাকে দেখছি অনেক আপন করে নিয়েছে। ভালোভাবে যত্ন করতেছে সেই পাখিটাকে। পাখিটার সাথে তার এত ভালো ভাব হয়েছে দেখে অনেক ভালো। যাইহোক এখন আমি অপেক্ষায় থাকলাম টিয়ারা গল্পটার পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য।

 2 years ago 

আমার শেয়ার করা এই টিয়ারা গল্পটির প্রথম পর্ব আপনার কাছে অনেক সুন্দর লেগেছে, জেনে অনেক ভালো লাগলো আপু। আপনার এই প্রশংসামূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আসলে পাখিদের মধ্যে এতটাই ভালোবাসা থাকে যা মানুষের সাথে তাদের অনেক সম্পর্ক গড়ে তুলে৷ আসলে পাখি এবং মানুষের এই সম্পর্ক অনেক মূল্যবান৷ পাখিরা সহজে পোষ মেনে যায়৷ এর ফলে তারা যেভাবেই হোক না কেন এমন মানুষের সাথে ভালোভাবে চলাফেরা করতে চায়৷ একবার যদি সে পোষ মানে তখন মানুষকে ছাড়া কোন কিছুই বুঝে না৷ তেমনি এখানেও অমিতের বাবা তার জন্য পাখি নিয়ে এসেছিল এবং সেই পাখিটি তাকে ছাড়া কিছুই বুঝতো না৷ ধন্যবাদ এই পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷