ভূমিকম্প!!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
শুক্রবার সাড়ে দশটা হবে সম্ভবত। তখন আমি ছিলাম ক্যাম্পাসে। শুক্রবার দিনটা সারাদিনই ক্যাম্পাসে থাকতে হয়। একের পর এক ক্লাস ল্যাব এসব লেগেই থাকে। তখন চলছিল এনার্জি কনভার্সন ল্যাব। এক্সপেরিমেন্ট শেষ করে ডাটা গুলো নিয়ে ক্যালকুলেশন করছি। এরমধ্যে বেশ কয়েকবার ফাজলামিও করেছি। তখন হঠাৎ অন্যরকম একটা অনূভুতি। প্রথমে বোধগম্য না হলেও পরবর্তীতে মূহূর্তেই বুঝতে পারলাম এটা মোটেই স্বাভাবিক না। হ্যা ভূমিকম্পই হচ্ছে। আমাদের ল্যাবের স্যারই প্রথমে কথাটা উচ্চারণ করল। আমাদের ইউনিভার্সিটির ৬ তলা বিশিষ্ট ভবনের আমরা ছিলাম একেবারে নিচতলায়। এমন কম্পন আমি আগে কখনও দেখি নাই। সঙ্গে সঙ্গে ভেতরে সবাই চিল্লাচিল্লি শুরু করে দিলো। বেশ কয়েকজন ধস্তাধস্তি করে ছুটে বের হয়ে গেল।
আমি তখনও বের হয়নি। কিন্তু ততক্ষণে ভূমিকম্প থেমে গিয়েছে। পরবর্তীতে দেখি আমাদের ক্লাস টিচার মোহনা ম্যাম নিজেও বের হয়ে গিয়েছে। আমরা কয়েকজন শুধু রয়েছি। আমরাও যদি ওদের মতো করে তাড়াহুড়ো করে বের হতে যেতাম তাহলে একটা দূর্ঘটনা ওখানে ঘটে যেত ভূমিকম্পের আতঙ্কেই। যাইহোক যখন সবকিছু স্বাভাবিক হলো গুগল নোটিফিকেশন পাঠালো। ভূমিকম্পের মাএা ছিল ৫.৫। তবে এবার যেন অনূভুত হয়েছে একটু বেশিই। অধিকাংশ বলছিল এবারের মতো আর কখনও নাকি তারা ভূমিকম্প অনূভব করেনি একেবারেই। আমার নিজের ক্ষেএেও ব্যাপার টা এইরকমই। যাইহোক ঐ ক্লাস টা শেষ করে যখন চতুর্থ তলায় গেছি পরবর্তী ক্লাসটা করতে ততক্ষণে আরেক ঘটনা ঘটে গিয়েছে।
ইউনিভার্সিটির বেশ কিছু দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেটা ভূমিকম্পের প্রভাবেই। না সেটা একেবারে বড়সড় ফাটল মোটেই না। ঐ চিড় ধরেছে আর কী। আমাদের কোঅর্ডিনেটর স্যার সেটা দেখে আর ঝুঁকি নেয়নি। তক্ষণাৎক্ষণাৎ আমাদের ঐদিনের সব অফলাইন ক্লাস বন্ধ করা হয় । সেগুলো সব অনলাইনে করতে বলে। এবং ঐ অবস্থায় যেন আমরা দ্রুত ক্যাম্পাস ত্যাগ করি ঐরকমই একটা ইমেইল আমরা পাই। অর্থাৎ আর কোন ক্লাস হয়নি। পুরো বাংলাদেশ একেবারে আতঙ্কিত। পুরো বাংলাদেশে জুড়ে এই ভূমিকম্পের প্রভাবে বেশ কয়েকজন মারা গিয়েছে। আহত প্রায় শতাধিক। বিশেষ করে পুরান ঢাকার অবস্থা বেশি খারাপ। অনেক গুলো ভবন ধসে যাওয়ার মুখে রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাএ ঐসময়ে জীবন বাঁচাতে দিয়েছে দ্বিতীয় তলা থেকে লাফ। ফলাফল পা ভেঙে গিয়েছে বেশ কয়েকজনের।
এটা তো গেল শুক্রবারের কথা। যেকোনো বড় ভূমিকম্প হলে ঢাকার অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যাবে না। প্রথমত বাংলাদেশ একেবারে ঢাকা কেন্দ্রীক। একটা বৃহৎ অংশের মানুষ এখানে থাকে। পাশাপাশি ঢাকার অধিকাংশ বিল্ডিং তৈরি হয়েছে কোন বিল্ডিং কোড না মেনে। একটা ভবনের থেকে আরেকটা ভবনের দূরত্ব মাএ কয়েক হাত। অনেক সময় সেটাও নেই। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক মেজর বলেছিল যদি কখনও ৮,৯ মাএার ভূমিকম্প হয় আমরা ঢাকা থেকে লাশ বের করার রাস্তা পাবো না। এই হলো অবস্থা। এগুলো দেখার পর আর কিছু মাথায় আসেনি।ঢাকা পুরোপুরি গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিত নগরায়ন হিসেবে। যে যখন যেখানে যেভাবে পেরেছে বহুতল ভবন দাঁড় করিয়ে দিয়েছে কোন কিছু না মেনে। এটা একদিনে হয়নি। এটা হয়েছে বহুবছর ধরে। বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে ঢাকার অস্তিত্ব বিলীন হতে পারে।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।



.png)



Daily task
https://x.com/Emon423/status/1992498986964709884?t=Lhseiz8c9EOcsdvaBBoVKg&s=19