মেধা বৃত্তি পরীক্ষার দিনের একটি বাস্তব দৃশ্যের গল্প।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে " মেধা বৃত্তি পরীক্ষার দিনের ,একটি বাস্তব দৃশ্যের অনুভূতি " শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

আজকের সকালটা ছিল একেবারে সাধারণ, কিন্তু কিছুক্ষণ পরই সেই সাধারণ সকালটা পরিণত হলো এক ব্যস্ত, উচ্ছ্বসিত আর আবেগঘন দৃশ্যে। আমি আসলে অন্য একটি কাজের উদ্দেশ্যে সেই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। দূর থেকে দেখি স্কুলের সামনে অস্বাভাবিক ভিড়।মানুষের গুঞ্জন, রঙিন পোশাক, আর গেটে দাঁড়ানো শিশুদের ভিড় দেখে কৌতূহল জাগলো। একটু কাছে গিয়ে চোখে পড়ল একটি ব্যানার“মেধা বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫”। ব্যানারের নিচে লেখা স্কুল ও মাদরাসার নাম দেখে বুঝলাম, আজ এই এলাকায় বড় একটি শিক্ষা-উৎসবের দিন।গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শত শত অভিভাবকের মুখে এক অদ্ভুত মিশ্র অনুভূতি।আশা, উৎকণ্ঠা, আনন্দ আর গর্ব। কেউ সন্তানের মাথায় হাত রেখে দোয়া করছে, কেউ বই-খাতা গুছিয়ে দিচ্ছে, কেউ আবার নীরবে তাকিয়ে আছে সন্তানের চোখে। কিছু বাবা-মা দূরদূরান্ত থেকে হেঁটে বা রিকশায় করে এসেছেন, শুধু এই দিনের জন্য। তাদের চোখে একটাই লক্ষ্য।সন্তান যেন ভালোভাবে পরীক্ষা দেয়, যেন সফল হয়, যেন পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করে।

স্কুলের গেট দিয়ে যখন ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা প্রবেশ করছিল, মনে হচ্ছিল যেন তারা এক নতুন অভিযানে পা রাখছে। তাদের চোখে ছিল খানিকটা ভয়, কিছুটা আত্মবিশ্বাস, আর অনেকটা আশা। ছোট্ট ব্যাগ, হাতে কলম-পেন্সিল, আর কাঁধে স্বপ্নের ভার।এই দৃশ্যটা সত্যিই মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। গেটের পাশে কেউ কেউ হাত নেড়ে বলছিল, “যা মা, ভালো করে দে”, কেউ আবার নীরবে চোখ মুছছিল আবেগে।চারপাশের পরিবেশে যেন এক প্রকার উৎসবের আমেজ। গ্রামের মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শিক্ষাবান্ধব। একসময় যেখানে পড়াশোনাকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হতো না, এখন সেখানে মেধা বৃত্তি পরীক্ষার মতো আয়োজন মানুষের মধ্যে নতুন আশা জাগায়। এই পরীক্ষাকে ঘিরে ছোট শহর বা গ্রামীণ এলাকায় যে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়, তা সত্যিই আনন্দের। এটি শুধু একটি পরীক্ষা নয়, বরং এক সামাজিক পরিবর্তনের প্রতিচ্ছবি।

আমি কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে চারদিকের দৃশ্যগুলো মন দিয়ে দেখছিলাম। হঠাৎ মনে হলো, এ এক অন্য রকম আনন্দ। কত বাবা-মা সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য এতো কষ্ট সহ্য করছেন, অথচ মুখে কোনো অভিযোগ নেই। তারা জানেন, শিক্ষা হচ্ছে সেই আলোর দিশা যা একদিন তাদের পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন করবে। মেধা বৃত্তি পরীক্ষার মতো উদ্যোগগুলো সেই আলোর পথেই এক একটি পদক্ষেপ।হাতে থাকা ফোনটা বের করে আমি কয়েকটি এলোমেলো ছবি তুললাম। কারণ এই দৃশ্যটা কেবল আজকের নয়।এটা ভবিষ্যতের স্বপ্নের গল্প। একটি গ্রামের সকালের ছবি, যেখানে শত শত পরিবারের আশা, আকাঙ্ক্ষা আর শিক্ষার প্রতি বিশ্বাস মিশে আছে।

ব্যানারের নিচে বড় অক্ষরে লেখা “আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন” কথাগুলো যেন প্রতিটি মা-বাবার মনের কথা। তারা সবাই চায় তাদের সন্তান যেন সফল হয়, সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। এই দৃশ্যগুলো দেখে মনে হলো, শিক্ষা শুধু বই বা কলম নয়।এটি আসলে জীবনের স্বপ্ন, পরিশ্রম আর আত্মবিশ্বাসের নাম।শেষে যখন আমি পথের দিকে হাঁটতে শুরু করলাম, তখনো পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলাম।গেটের সামনে এখনো বাবা-মায়েরা দাঁড়িয়ে, অপেক্ষায় আছে তাদের সোনামণিদের জন্য। সেই দৃশ্যটা মনে গেঁথে রইলো। মনে হলো, যতদিন এমন ভালোবাসা, আশা আর শিক্ষা-প্রীতি আমাদের সমাজে থাকবে, ততদিন এই দেশ এগিয়ে যাবে আলোর পথে।

এই ছবিগুলো তাই শুধুমাত্র একটি দিনের নয়, বরং আমাদের সমাজের শিক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা, স্বপ্ন আর অগ্রগতির জীবন্ত দলিল।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।