জীবনের গল্প 💜

in #esteem6 years ago

ভারতে নির্বাসিত জীবনের কথা বলতে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতেই শেখ হাসিনা বলেন, “ভাবলাম দেশের কাছে যাই। কখনও শুনি, মা বেঁচে আছে। কখনও শুনি, রাসেল বেঁচে আছে। একেক সময় একেক খবর পেতাম। ওই আশা নিয়ে চলে আসলাম। কেউ বেঁচে থাকলে ঠিক পাব।
“২৪ অগাস্ট দিল্লি পৌঁছলাম। মিসেস গান্ধী (ইন্দিরা গান্ধী) আমাদের ডাকলেন। ওনার কাছ থেকে শুনলাম, কেউ বেঁচে নেই। হুমায়ুন রশীদ সাহেব আগে বলেছিলেন। কিন্তু, আমি রেহানাকে বলতে পারি নাই। কারণ, ওর মনে একটা আশা ছিল, কেউ না কেউ বেঁচে থাকবে।”
“দিল্লিতে মিসেস গান্ধী থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। ওয়াজেদ সাহেবকে (এম ওয়াজেদ মিয়া) এটমিক এনার্জিতে কাজের ব্যবস্থা করে দিলেন।”
কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে শেখ হাসিনা বলেন, “এটা কী কষ্টের .. যন্ত্রণার কাউকে বুঝিয়ে বলতে পারব না।”
অর্থের কারণে ১৯৭৭ সালে বোন শেখ রেহানার বিয়েতে লন্ডনে যেতে না পারার বেদনা তুলে ধরে তিনি বলেন, “দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে যাব, অত টাকা ছিল না। আর, কোথায় থাকব?”
১৯৮০ সালে লন্ডনে যাওয়ার ক্ষেত্রে ইন্দিরা গান্ধীর ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা স্মরণ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
“ওর (শেখ রেহানা) যখন বাচ্চা হবে, আমি মিসেস গান্ধীকে গিয়ে বললাম, আমি যেতে চাই রেহানার কাছে। উনি ব্যবস্থা করে দিলেন। টিকেটের ব্যবস্থা করে দিলেন। থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন।”
“৮০ এর শেষে দিল্লিতে ফিরে আসি। টাকাও ছিল না। আর, কার কাছে হাত পাতা.. ভালো লাগত না।”
১৯৮০ সালে বিদেশে থাকার সময়ই আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সভাপতি নির্বাচিত করা হয় রাজনীতির বাইরে থাকা শেখ হাসিনাকে।
তিনি বলেন, “এত বড় সংগঠন করার অভিজ্ঞতাও আমার ছিলে না। আমার চলার পথ অত সহজ ছিল না।”
দল এবং দলের বাইরে নানা প্রতিকূলতার কথা তুলে শেখ হাসিনা বলেন, “খুনিরা বহাল তবিয়তে বিভিন্ন দূতাবাসে কর্মরত। স্বাধীনতার বিরোধীরা তখন বহাল তবিয়তে। তারাই ক্ষমতার মালিক। যে পরিবারকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিলো, সে পরিবারের একজন এসে রাজনীতি করবে।
“সেটা এত সহজ ছিল না, প্রতি পদে পদে প্রতিবন্ধকতা ছিল।”
বক্তব্যের এই পর্যায়ে উপস্থিত নেতাদের আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব খুঁজতে বলেন শেখ হাসিনা; তবে সবাই সমস্বরে ‘না না’ বলে ওঠেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “নতুন নেতৃত্ব খোঁজা দরকার। জীবন-মৃত্যু আমি পরোয়া করি না। মৃত্যুকে আমি সামনে থেকে দেখেছি। আমি ভয় পাইনি।
“আমি বিশ্বাস করি, আমার আব্বা আমাকে ছায়ার মতো আমাকে দেখে রাখেন.. আর, উপরে আল্লাহর ছায়া আমি পাই।”
“মেয়ের হাত ধরে দুটা সুটকেস নিয়ে চলে আসি। আমি মনে করি, আমাকে যেতে হবে, কিছু করতে হবে,” ৩৬ বছর আগের এই দিনটিতে দেশে ফেরার কারণ ব্যাখ্যা করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

image

Sort:  

Warning! This user is on my black list, likely as a known plagiarist, spammer or ID thief. Please be cautious with this post!
To get off this list, please chat with us in the #steemitabuse-appeals channel in steem.chat.

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 70820.99
ETH 3797.36
USDT 1.00
SBD 3.46