হঠাৎ কৃষকের ফসলের ক্ষেতে কেন এতো পোকামাকড়ের উপদ্রব?
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
শনিবার, ০৮ ই নভেম্বর ২০২৫ ইং
গ্রামের মাঠজুড়ে এখন কৃষকের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। ফসলের ক্ষেত যেন একেবারে পোকামাকড়ের দখলে চলে গেছে। ইদানিং কয়েক বছর ধরে ফসলের ক্ষেত গুলোর মধ্যে অতিরিক্ত পোকামাকড়ের উপদ্রব হয়েছে। হঠাৎ করে এমন উপদ্রবের কারণ খুঁজে দেখা গেলে বোঝা যায়, এর পেছনে লুকিয়ে আছে প্রকৃতির অস্বাভাবিক পরিবর্তন, অনিয়মিত আবহাওয়া, এবং কৃষির প্রথাগত পদ্ধতির কিছু পরিবর্তন।এক সময় কৃষকেরা কোন ধরনের পোকামাকড়ের উপদ্রব ছাড়াই সহজে চাষাবাদ করেছিলেন। কিন্তু সেই সুযোগ আর নেই।এখন নতুন নতুন পোকামাকড়ের আবির্ভাব ঘটেছে।
গত কয়েক বছর ধরে ঋতুর সময় ঠিক থাকছে না, সঠিক সময়ে বৃষ্টি হচ্ছে না, অসময়ে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনো বৃষ্টি হচ্ছে অযথা বেশি, আবার কখনো একেবারে খরা, খরার কারণে ও জমিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ ঘটে। এই অনিয়মিত আবহাওয়ার কারণে ফসল দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে পোকামাকড়ের আক্রমণ সহজ হয়ে যায়। একসময় যে পোকাগুলো নিয়ন্ত্রণে ছিল, এখন তারা আরও শক্তিশালী ও প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। অনেক কৃষক এখনও পুরনো কীটনাশক ব্যবহার করেন, যা এখন আর কার্যকর হচ্ছে না। কিছু কিছু কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে এখন পরিবেশের ও ক্ষতি হচ্ছে।
আরেকটি বড় কারণ হলো জমির উর্বরতা হ্রাস। একই জমিতে বারবার একই ফসল চাষ করার ফলে মাটির প্রাকৃতিক গুণ নষ্ট হয়ে যায়, ফলে গাছ দুর্বল হয় এবং সহজে রোগ পোকার শিকার হয়, এই পদ্ধতি আমাদের কে অতি দ্রুত পরিবর্তন করতে হবে। তাছাড়া অনেক কৃষক প্রয়োজনে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার করেন, যা মাটির ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলে, ফলে জমিতে ফসলের পরিমাণ কমে যায়। এই ভারসাম্য নষ্ট হলে জমিতে প্রাকৃতিক শত্রুপোকাগুলোর সংখ্যা কমে যায়, ফলে ক্ষতিকর পোকামাকড়ের বিস্তার বেড়ে যায়। এই বছর ধান ক্ষেত গুলোর মধ্যে কারেন্ট পোকার আক্রমণ অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে
পাশাপাশি আধুনিক কৃষি ব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে না চলাও এই সমস্যার একটি কারণ। অনেক এলাকায় এখনো কৃষকরা পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ বা পরামর্শ পান না। নতুন ধরনের কীটনাশক, জৈব প্রতিকার বা ফসল ঘূর্ণনের মতো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি সম্পর্কে তাদের ধারণা সীমিত। ফলে পোকামাকড় একবার আক্রমণ শুরু করলে তা ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। অনেক এলাকায় কিছু দুর্বল কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে, ফলে জমিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে । জমিতে কীটনাশক ব্যবহার করার জন্য আমাদের কীটনাশক ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে।
সবশেষে বলা যায়, এই হঠাৎ পোকামাকড়ের উপদ্রব শুধু কৃষকের সমস্যা নয়, এটি প্রকৃতি ও মানুষের সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্টের ফল। যদি সময়মতো টেকসই কৃষি পদ্ধতি গ্রহণ না করা হয়, তবে ভবিষ্যতে এই সমস্যা আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে। এখনই প্রয়োজন সচেতনতা, বিজ্ঞানভিত্তিক কৃষি পরামর্শ এবং পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থার প্রসার। তাহলেই হয়তো কৃষকের ফসল আবারও সবুজের হাসি ফিরিয়ে আনবে মাঠে।
| Device | iPhone 11 |
|---|---|
| Camera | 11+11 MP |
| County | Bangladesh |
| Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness





🎉 Congratulations!
Your post has been upvoted by the SteemX Team! 🚀
SteemX is a modern, user-friendly and powerful platform built for the Steem community.
🔗 Visit us: www.steemx.org
✅ Support our work — Vote for our witness: bountyking5
আপনি ঠিক বলেছেন। কৃষকের অনেক পরিশ্রমের কাজ। পোকামাকড়ের উপদ্রব বেশি বেড়ে গিয়েছে। যাইহোক এগুলোর জন্য অনেকটা আমরাই দায়ী। বেশ ভালো লিখেছেন।