জেনারেল রাইটিং || ছারপোকার অত্যাচারে জীবন অতিষ্ঠ(৩য় পর্ব)
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। গত পর্বে আপনারা পড়েছিলেন ছারপোকার স্প্রে মেরে রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম। কারণ পরের দিন সকালে অফিসে যেতে হবে। রাত ১টার পর ঘুমিয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু একটু পর ছারপোকার কামড়ে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। লাইট অন করে দেখলাম বিছানায় বেশ কয়েকটি ছাড়পোকা এবং অনেকগুলো ছারপোকা বিছানার দিকে আসছে। ছারপোকাদের দেখে মনে হচ্ছিল ওরা দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে এবং কার আগে কে বিছানায় পৌঁছাবে। যাইহোক রাত প্রায় তিনটা পর্যন্ত কয়েকটি ছারপোকা মারার চেষ্টা করলাম এবং লাইট জ্বালিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। সকালে উঠে অফিসে গেলাম এবং অফিসের কোরিয়ান বসকে বললাম যেহেতু পরের দিন শনিবার, তাই সকালে ছারপোকা মারার জন্য কিনে আনা চারটি বোম ধরিয়ে দিয়ে, রুমের দরজা জানালা ভালো করে বন্ধ করে রাখবো সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত। অফিসের বসও আমার কথায় সম্মতি জানালো।
সেদিন অফিস শেষ করে রুমে এসে খাওয়া দাওয়া করে বাহিরে বের হলাম কিছু কেনাকাটা করতে এবং রাতের বেলা রুমে এসে, সেদিনের রাতটা কোনো মতো কাটিয়ে দিলাম। রাতে লাইট জ্বালিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম, তাই ঘুম তেমন ভালো হয়নি। একটু পরপরই ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছিল। যাইহোক পরের দিন সকালে উঠে কোরিয়ান বসের কথা অনুযায়ী চারটি স্টিলের বাটির মধ্যে চারটি বোম রাখলাম। তারপর লাইটার দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে বোম চারটি ধরিয়ে দিলাম। স্টিলের বাটির উপরে বোম রাখার উদ্দেশ্য হচ্ছে, যাতে করে ফ্লোরের ম্যাট পুড়ে নষ্ট না হয়ে যায়। দেখলাম বেশ ভালোই ধোঁয়া বের হচ্ছিল বোম গুলো থেকে। এই ধোঁয়া নাকি ছারপোকা সহ্য করতে পারে না। তাই ছারপোকা গুলো মারা যাবে। যাইহোক আমরা বাহিরে অপেক্ষা করতে লাগলাম।
মূলত আমরা তিনজন বাংলাদেশী কাজ করতাম সেই অফিসে। আমাদের দুই রুমের ফ্ল্যাট ছিলো। আমি এবং আমার বন্ধু রাসেল এক রুমে থাকতাম এবং আরেকজন অন্য রুমে থাকতো। যে রুমে একজন থাকতো সেই রুমে আমরা খাওয়া দাওয়া করতাম তিনজন একসাথে। মজার ব্যাপার হচ্ছে ছারপোকা শুধু আমাদের রুমে ছিলো, সেই অন্য রুমে একটি ছারপোকাও ছিলো না। তাই কিছু জামা কাপড় ভালোভাবে চেক করে অন্য রুমে রেখে দিয়েছিলাম। আমরা তিনজন জামা কাপড় চেঞ্জ করে আশপাশে গিয়ে একটু হাঁটাহাঁটি করলাম। যেহেতু আমাদের রুমে ঢোকা সম্ভব নয় বিকেলের আগে। হাঁটাহাঁটি করে এসে অন্য রুমে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। এমন সময় দুই জন লোক আসলো আমাদের ফ্ল্যাটে। কারণ আমাদের রুমের ভিতর থেকে দরজার ফাঁক দিয়ে একটু একটু ধোঁয়া বের হচ্ছিল।
মূলত কোরিয়ান কোম্পানি গুলো সিকিউরিটির জন্য এডিটি এবং সেকোম ব্যবহার করে থাকে। কোরিয়াতে এডিটি এবং সেকোম খুব বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান। তারা সবসময় মনিটরিং করে প্রতিটি কোম্পানি। যাতে করে কোনো চুরি বা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। এমনকি আগুন লাগলেও তারা সেখান থেকে মনিটরিং করতে পারে। আমাদের কোম্পানি এডিটি দ্বারা সিকিউরড ছিলো। আমাদের রুম থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিল বিধায়, তারা ভেবেছিল হয়তো আগুন লেগেছে। তাই তারা গাড়ি নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের ফ্ল্যাটে এসেছিল। তারপর আমি যখন তাদেরকে বুঝিয়ে বললাম, তখন সবকিছু বুঝতে পেরেছিল। তারপর আমি আবার আমার মোবাইল দিয়ে অফিসের বসকে ফোন দিয়ে, এডিটি এর স্টাফের সাথে কথা বলিয়ে দিয়েছিলাম। তারপর বিষয়টি বুঝতে পেরে তারা চলে যায়। ছারপোকার জন্য একের পর এক ঝামেলায় পড়তে হচ্ছিল। যাইহোক এরপর কি কি হলো সেটা জানতে হলে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। (চলবে)
পোস্টের বিবরণ
| ক্যাটাগরি | জেনারেল রাইটিং |
|---|---|
| ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
| ডিভাইস | Samsung Galaxy S9 Plus |
| তারিখ | ১২.৯.২০২৩ |
| লোকেশন | আনসান,গিয়ংগিদো, দক্ষিণ কোরিয়া |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹







Twitter Link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে ছারপোকা এমন একটি পোকা যা একবার ঘরে আসলে আর সহজে ছাড়ানো যায় না। ছারপোকার অত্যাচারে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। যাইহোক আপনার বসের কথা অনুযায়ী বাটির মধ্যে চারটি বোম রাখলেন যা পুরো ম্যাট কে পুড়িয়ে ফেলতে পারে। যাইহোক পরবর্তীতে কি হলো তা জানার অপেক্ষায় রইলাম।
না আপু ফ্লোরের ম্যাট যেন না পুড়ে, সেজন্য স্টিলের বাটির উপরে বোম রাখা হয়েছে। মূলত বোম থেকে ধোঁয়া বের হবে অনেক এবং সেই ধোঁয়ার কারণে ছারপোকা মারা যাবে। যাইহোক পোস্ট পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ছারপোকা খুবই মারাত্নক। এটার কামড় শরীর এর অনেক ক্ষতি করে থাকে। আমাদের বাসায় ও আগে ছারপোকা ছিলো। অনেক কষ্টে এর প্রতিকার পেয়েছি। আমি তো ভাবতাম বাংলাদেশেই শুধু এই সমস্যা । এখন তো দেখি কোরিয়াতেও এই সমস্যা আছে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।
ঠিক বলেছেন ভাই, ছারপোকার কামড় শরীরের ক্ষতি করে। ভাই ছারপোকা বাংলাদেশ থেকে কোরিয়াতে নিয়ে গিয়েছিল আমার বন্ধু রাসেল। যাইহোক পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ছারপোকা খুবই খারাপ একটি পোকা এটা একবার পেছনে লাগলে আর পেছন ছাড়তে চায় না।যাইহোক আপনার বসের পরামর্শ অনুযায়ী চারটি ব্যোম রুমের ভেতর রাখলেন এবং পরবর্তীতে কি হয়েছিল সেটা জানার অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
বোম থেকে ধোঁয়া বের হয়ে ছারপোকা মরেছিল নাকি, সেটা জানতে হলে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আপু। যাইহোক যথাযথ মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।