জেনারেল রাইটিং পোস্ট || শৈশবের বর্ষাকালের কিছু মধুর স্মৃতি
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে জেনারেল রাইটিং শেয়ার করবো। এই পোস্টের মাধ্যমে আমি আমার শৈশবের বর্ষাকালের কিছু মধুর স্মৃতি শেয়ার করার চেষ্টা করবো। যাইহোক ছোটবেলায় বর্ষাকালে আমরা ভীষণ মজা করতাম। এমনিতে ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার প্রতি আমার নেশা ছিলো প্রচুর। তবে যখন বৃষ্টি নামতো, তখন মাঠে গিয়ে ফুটবল খেলতাম সবাই মিলে। বৃষ্টির মধ্যে ফুটবল খেলতে যে কি ভালো লাগতো,সেটা বলে বুঝানো যাবে না। তবে ফুটবল খেলতে গিয়ে ২/৩ বার পায়ের আঙ্গুল মচকে গিয়েছিল এবং সেটা আমার স্পষ্ট মনে আছে। মচকানো আঙ্গুল কয়েকদিন পর ঠিক হয়ে গেলেই আবারও মাঠে চলে যেতাম। যাইহোক আমার এক ফ্রেন্ডের বাসা আমার বাসা থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত।
তো তাদের বাসা থেকে একটু দূরে বিশাল বড় বড় ক্ষেত রয়েছে। বর্ষাকালে সেখানে পানি থৈথৈ করে। আর সেখানে অনেকেই নৌকা দিয়ে ঘুরে বেড়ায়। আবার অনেকে শাপলা ফুল তোলে এবং পানিতে নেমে শালুক তোলে। আমি তো সাঁতার পারি না,তাই নৌকা দিয়ে ততোটা ঘুরাঘুরি করতাম না। তবে সেই ফ্রেন্ড মাঝেমধ্যে বলতো নৌকা দিয়ে ঘুরতে খুব ভালো লাগে এবং সাঁতার না পারলেও কোনো সমস্যা নেই। আর কোনো সমস্যা হলে সে তো আছেই। যাইহোক পরবর্তীতে একদিন সাহস করলাম নৌকা দিয়ে আমরা ঘুরবো ৩/৪ জন। তো আমরা বেলা ১১ টার দিকে গিয়েছিলাম নৌকা দিয়ে ক্ষেতের মধ্যে ঘুরতে। সেদিন আকাশ মেঘলা ছিলো এবং থেমে থেমে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিলো,তাই সেই ওয়েদারে নৌকা দিয়ে ঘুরতে ভীষণ ভালো লাগছিলো। আমাদের এক বন্ধু নৌকা চালাচ্ছিলো,আর আমরা মজা করছিলাম।
আমরা হাত দিয়ে পানিতে টাচ করছিলাম এবং শাপলা ফুল তুলছিলাম। সেই সময়টা সত্যিই বেশ আনন্দের ছিলো। এরমধ্যে এক ফ্রেন্ড পানিতে নেমে পড়লো শালুক তুলতে। সে অনেকক্ষণ পানির মধ্যে ডুব দিয়ে দিয়ে বেশ কয়েকটি শালুক তুলতে সক্ষম হয়েছিল। আমরা শালুক গুলো খাচ্ছিলাম এবং গল্প করছিলাম। আমরা মোটামুটি ১ টা পর্যন্ত নৌকা দিয়ে ঘুরাঘুরি করেছিলাম সেদিন। তবে ওয়েদার মেঘলা ছিলো বলে ঘুরাঘুরি করে ভীষণ ভালো লেগেছিল। যাইহোক আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম বাসায় চলে যাবো। কারণ তখন ইতিমধ্যেই দুপুর হয়ে গিয়েছিলো,তাছাড়া তখন মোটামুটি ভালোই বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। আমরা নৌকা থেকে নেমে সামনের দিকে আগাতে লাগলাম। কিন্তু সামনে একটি সাঁকো ছিলো। সাঁকো তে উঠতে আমার আগে থেকেই ভয় লাগতো। আমি হাতেগোনা কয়েকবার সাঁকো তে উঠেছি সারা জীবনে।
যাইহোক সাহস করে সাঁকো তে উঠে হাঁটা শুরু করেছিলাম। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সাঁকো একেবারে পিচ্ছিল ছিলো, তাই হাঁটতে বেশ কষ্ট হয়ে যাচ্ছিলো। তবুও হাঁটতে হাঁটতে পুরো সাঁকো প্রায় পার হয়েই গিয়েছিলাম। কিন্তু শেষের দিকে পা স্লিপ করে সাঁকো থেকে একেবারে পানিতে পড়ে গিয়েছিলাম। পানির মধ্যে বড় বড় কচুরিপানা ছিলো। তাই সাপের ভয়ও লাগছিলো। তাছাড়া আমি তো সাঁতার জানি না। তাই আমার এক ফ্রেন্ড সাথে সাথে পানিতে নেমে যায় আমাকে উঠানোর জন্য। পানি ততোটা বেশি ছিলো না বলে, শেষ পর্যন্ত আমার সেই ফ্রেন্ড খুব তাড়াতাড়ি আমাকে উপরে উঠাতে সক্ষম হয়েছিল। সেই স্মৃতি গুলো মনে পড়লে এখনো হাসি পায়। সেই দিনগুলো সত্যিই খুব মিস করি। যাইহোক আমার শৈশবের বর্ষাকালের কিছু মধুর স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে।
পোস্টের বিবরণ
| ক্যাটাগরি | জেনারেল রাইটিং |
|---|---|
| পোস্ট তৈরি | @mohinahmed |
| ডিভাইস | Samsung Galaxy S9 Plus |
| তারিখ | ১৪.৮.২০২৪ |
| লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹







Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
X-promotion
ভাই আপনার শৈশবের মধুর স্মৃতি পড়ে বেশ ভালই লাগলো। আমার কাছেও মনে হয় বর্ষাকালের শৈশবের স্মৃতি সবারই অনেক সুন্দর হয়। আপনি সাঁতার জানতেন না তার পরেও আপনি বন্ধুর ভরসায় নৌকাতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সত্যি এটা দারুন ব্যাপার। যারা কখনো সাঁকো পার হয়নি তাদের জন্য এটা বেশ ভয়ানক হয়। যাইহোক শেষ পর্যন্ত আপনার বন্ধু রক্ষা করেছিল জেনে ভালো লাগলো। অনেক সুন্দর পোস্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
হ্যাঁ ভাই সাঁকো পার হওয়াটা বেশ ঝামেলার কাজ। যাইহোক পোস্টটি পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
হাহাহা,যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়। সবাই মিলে বেশ ভালো সময় তো পানিতে ঘুরাঘুরি করেছেন নৌকা দিয়ে। কিন্তু শেষমেশ সাঁকো পার হতে গিয়েই পড়ে গেলেন। আমি নিজেও সাঁকো পার হতে খুব ভয় পেতাম। আর বর্ষাকালে তো ভুলেও কোনো সাঁকো পার হওয়ার জন্য যেতাম না। ভাগ্যিস আপনার বন্ধু সাথে সাথে গিয়ে আপনাকে তুলে ফেলেছে। অবশ্য পানি কম থাকায় হয়তো কোন সমস্যা হতো না। তবুও যে সাঁতার জানে না তার কাছে সবকিছুই ভয় লাগে।
সাঁকো থেকে যে কিভাবে পড়ে গিয়েছিলাম,সেটা ভাবলে এখনও আমার হাসি পায়। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপনার শৈশব জীবনের দ গল্প পড়ে বেশ ভালো লাগলো ভাই।আসলে সাঁকোতে উঠতে আমারও ভীষণ ভয় লাগে।আমিও জীবনে গোনা এক থেকে দুইবার সাঁকোতে উঠছি।যাই হোক আপনি সাঁকো প্রায় পার হয়ে গেছিলেন। কিন্তু শেষের পথে পড়ে গিয়েছিলেন আমি তো এটা শুনে ভয় পেয়ে গেলাম।আপনি তো সাঁতারো জানেন না,যাইহোক পানি কম থাকায় আপনি বেঁচে গেছেন।ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর ভাবে পোস্ট টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
পানি বেশি থাকলেও হয়তোবা সমস্যা হতো না,কারণ আমার বন্ধুরা সাথে ছিলো। আর ওরা আমাকে ঠিকই বাঁচাতো। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
ফুটবল খেলতে গিয়ে সবারই কম-বেশি পায়ের আঙ্গুল মচকেছে ভাই। হা হা হা.. যাইহোক, আপনার পোস্ট পড়ছিলাম আর আমার নিজের ছোটবেলার কথা মনে পড়ছিল। কারণ আমিও ছোটবেলায় কত যে বন্ধুদের সাথে নৌকায় করে ঘুরতে বেরিয়েছি তার কোন হিসাব নেই। তবে আপনার সাহস আছে বলতে হয় ভাই, কারণ আপনি সাঁতার না জানা সত্ত্বেও নৌকায় ওঠার সৎ সাহস দেখিয়েছিলেন। আর কচুরিপানার ভিতর পড়ে গেলে কিন্তু অনেক সময় উপরে ওঠা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রেও কিন্তু আপনার ভাগ্যটা ভালো ছিল বলে আমি মনে করি।
ঠিক বলেছেন ভাই, ফুটবল খেলতে গিয়ে পায়ের আঙ্গুল কমবেশি সবারই মচকায়। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এভাবে সাপোর্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার সাঁকো পাড় হওয়ার স্মৃতি টা জেনে ভালো লাগলো। সাঁকো পাড় হওয়া সত্যিই ঝামেলার কাজ। অনেক ছোটবেলায় একবার সাঁকো পাড় হতে হয়েছে। অনেক ভয়ে ভয়ে পার হয়েছিলাম। আমিও সাঁতার জানি না। বর্ষাকালে আপনার বিভিন্ন ধরনের স্মৃতি সম্পর্কে জেনে খুবই ভালো লাগলো। এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি তো দেখছি আমার মতোই সাঁতার জানেন না। যাইহোক পোস্টটি পড়ে সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
পড়লাম আর হাসলাম। সাঁকো পাড় হতে গিয়ে একেবারে পুকুরে পড়ে যাওয়া। তবে ছেলেবেলার স্মৃতিগুলো মনে হলে আমরা সত্যিই বেশ আনন্দ উপভোগ করি। ছেলেবেলাটা ছিল দুষ্টুমীতে ভরা। ছেলেবেলার এমন একটি মজার স্মৃতি শেয়ার করে কিছুটা আনন্দ দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আমি তো সাঁকো তে উঠতে এমনিতেই ভয় পেতাম। তাছাড়া বৃষ্টি হচ্ছিলো বলে,সাঁকো একেবারে পিচ্ছিল হয়েছিল। এরপর তো যা হবার তা ই হলো😂। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আরে ভাই হেসেই পেট ব্যাথা।
ছোটবেলায় আমাদের অনেক স্মৃতি রয়েছে৷ আসলে সেই ছোটবেলার স্মৃতি গুলো মনে পড়লে একেবারেই অন্য রকম ভালোলাগা কাজ করতে থাকে৷ আর আপনার এই পোস্টটি পড়ে শুধু হাসতেই থাকলাম৷ এত মজার একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি৷ আপনি সাঁকো পার হতে গিয়ে পুকুরে পড়ে গিয়েছেন শুনে খুব হাসি পেল৷ আর আমরা তো এমনিতেও মাটির রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে অনেকবার পড়ে গিয়েছি৷ ধন্যবাদ এই সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷
সাঁকো থেকে পিছলা খেয়ে পড়ে গিয়েছিলাম যে,সেটা মনে পড়লে আমারও হাসি পায়। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমিও যখন মাটির রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে অনেকবার পড়েছিলাম, সে কথা এখন মনে পড়লেও অনেক হাসি পায়।