বিশ্বাস কঠিন আবেগ।

in আমার বাংলা ব্লগ2 days ago


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17668181769545181518312917934272.png


সোর্স



বিশ্বাস আমাদের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং খুবই ব্যক্তিগত একটি জিনিস। আমরা কাকে বিশ্বাস করবো কাকে বিশ্বাস করবো না এটা সম্পূর্ণই আমাদের নিজেদের উপর নির্ভর করে। তবে আমরা প্রায় সময়ই অনেক ভুল করে বসি কিছু মানুষকে বিশ্বাস করার ক্ষেত্রে। আমাদের জীবনে বহু এমন মানুষ আসে যাদেরকে বিশ্বাস করে আমরা ঠকে যাই অর্থাৎ যারা আমাদের বিশ্বাস করার যোগ্য থাকে না তবু আমরা তাদেরকে অনেক বেশি বিশ্বাস করে ফেলি। আমাদের বোঝা উচিত যে বিশ্বাস আমাদের নিজেদের জিনিস তাই বলে আমরা সেটা যে কারোর উপর করতে পারিনা। কারণ বর্তমানে আমাদের চারিপাশে যে পরিবেশ পরিস্থিতি রয়েছে তার ওপর নির্ভর করে আমাদের বিশ্বাস করা খুবই কষ্টকর একটু বিষয়। আমাদেরকে খুবই সাবধানতার সাথে যে কোন বস্তুর বা ব্যক্তির ওপর বিশ্বাস করা উচিত। আমরা যদি ভুল মানুষকে বিশ্বাস করি তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসে বিশ্বাস করাটাই আমাদের জীবনের সবথেকে বড় ভুল হয়ে দাঁড়াবে এবং সেই ভুলের মাশুল সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে।


বিশ্বাস যেমন আমাদের একটা আবেগ তেমনি আমাদের মধ্যে আরও একটা আবেগ রয়েছে যেটা হলো সন্দেহ। আর এই সন্দেহ যে কোন কিছু বিশ্বাস করার আগে আমাদের করা উচিত। অতিরিক্ত মাত্রায় যেমন কোন জিনিস ভালো না তেমন অতিরিক্ত মাত্রায় বিশ্বাস কখনোই ভালো না। আমরা যাদেরকে বিশ্বাস করি তাদের ওপর আমাদের এইটুকু বিশ্বাস ও রাখা প্রয়োজন যে তারা আমাদের যেকোনো সময়ে ঢুকিয়ে দিতে পারে। অর্থাৎ বিশ্বাসের মধ্যেও একটু সন্দেহ আমাদের অবশ্যই বজায় রাখা প্রয়োজন। আমরা যদি অন্ধ বিশ্বাস না করি এবং যে কোন মানুষ সেটা হতে পারে আমাদের আশেপাশের বা আমাদের পরিবারের অথবা আমাদের খুবই প্রিয় জন তাদের প্রতি আমাদের বিশ্বাসের আড়ালে একটু সন্দেহ অবশ্যই রাখা প্রয়োজন। কারণ অতিরিক্ত বিশ্বাস করলে আমাদের খুব কাছের মানুষও আমাদের ঠকাতে দ্বিধাবোধ করে না। আমরা যখন কোন মানুষকে অনেক বেশি বিশ্বাস করি অর্থাৎ অন্ধবিশ্বাস করি তখন সে ব্যক্তিটিও মনে করে যে আমরা যেহেতু তাদের অন্ধবিশ্বাস করি তাই আমরা কখনো তাদের সন্দেহ করবো না এবং তারা যে আমাদের বিশ্বাসঘাতকতা করছে সেটাও আমরা বুঝতে পারব না।


আর এই ভাবনার জন্যই আমাদের কাছের মানুষ আমাদের বিশ্বাসের আড়ালে প্রতিনিয়ত আমাদের বিশ্বাস নষ্ট করতে থাকবে তাই সবসময় প্রত্যেক মানুষকে বিশ্বাস করার আগে একটু সন্দেহ করা উচিত যে সেই মানুষটি আমাদের বিশ্বাসের যোগ্য কিনা আর তার সাথে যখন তারা আমাদের বিশ্বাসের যোগ্য হবে এবং আমরা তাদেরকে বিশ্বাস করতে শুরু করবো তখনও আমাদের অবশ্যই বিশ্বাসের একটা সীমা বজায় রাখতে হবে কখনোই অন্ধ বিশ্বাস কারোর উপর করা যাবে না। কখনো যদি আমাদের প্রিয় মানুষটি আমাদের বিশ্বাস ভাঙ্গে তবে সব থেকে বেশি আমাদের মনে আঘাত লাগে আর সে আঘাত এতটাই তীব্র হয়ে যেতে পারে যে আমাদের মানসিক ভারসাম্য খারাপ হয়ে যেতে পারে এবং আমরা জীবনে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে পারি এবং আমাদের জীবনটা নষ্ট করে ফেলতে পারি। তাই আমাদের সব সময় উচিত আমাদের আবেগকে নিজের কন্ট্রোলে রাখা এবং নিজেদের এমন ভাবে মেইনটেইন করা যেন অন্য কেউ আমাদের কন্ট্রোল করতে না পারে। আমাদের মন মানসিকতা ভালোবাসা আবেগ সবকিছু আমাদের নিজের কন্ট্রোলে রাখা প্রয়োজন।


আমাদের অন্যান্য আবেগ যেমন আমাদের নিজের আয়ত্তে রাখা প্রয়োজন তেমন বিশ্বাসটাও আমাদের আয়ত্তে রাখতে হবে। বিশ্বাস এমন একটা জিনিস যা একবার ভেঙে গেলে আর জোড়া লাগতে চায় না ঠিক কাচের পাত্রের মত বা কাচের আয়নার মতো। তাই আমরা যেমন বিশ্বাস একটা সীমা পর্যন্ত করব তেমনি আমাদের উচিত আমরা এমন কাজ করবো যাতে আমাদের প্রিয় মানুষের বিশ্বাস কখনো না ভাঙ্গে আমাদের কোন খারাপ কর্মের দ্বারা। আমাদের কখনোই এমন কোন কাজ করা উচিত হবে না যার জন্য আমাদের প্রিয় মানুষের কষ্ট হয় এবং আমাদের প্রতি তারা বিশ্বাস হারায়। খুব সহজে কোন মানুষের ওপর বিশ্বাস করা কখনোই উচিত নয় সেটা আমাদের নিজের জন্যও যেমন উচিত নয় তেমনি আমাদের প্রিয় মানুষদের কেউ আমাদের সচেতন করতে হবে যে খুব সহজে যাচাই না করে কারোর ওপর যেন বিশ্বাস না করে। কারণ বিভিন্ন মানুষ বিভিন্নভাবে ঠকানোর জন্য আমাদের চারিদিকে হানা দিয়ে রয়েছে আর তার মধ্যে সবথেকে বর্তমানে যে বিশ্বাসঘাতকতা হয় সেটা হল আর্থিক দিক থেকে। তাই আর্থিক, মানসিক এবং শারীরিক যে কোন দিক থেকেই হোক না কেন সবদিক থেকেই আমরা বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে বিশ্বাসঘাতকতা পেতে পারি তাই সর্বদা আমাদেরই সচেতন থাকা প্রয়োজন।


আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।