সুস্থতা মানুষের জীবনে এক অনন্য নেয়ামত, যার মূল্য কেবল তখনই গভীরভাবে অনুভূত হয় যখন আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি বা স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। আসলে সুস্থতা এমন এক আশীর্বাদ, যা আমাদের প্রতিটি মুহূর্তে সৃষ্টিকর্তার দয়া ও ভালোবাসার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তাই যে মানুষ সুস্থ, তার উচিত এই অমূল্য নেয়ামতের জন্য প্রতিনিয়ত কৃতজ্ঞ থাকা এবং সৃষ্টিকর্তার প্রশংসা করা। কারণ সুস্থতা শুধু শারীরিক সক্ষমতার বিষয় নয়; এটি মানসিক প্রশান্তি, আত্মিক শান্তি এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সম্পূর্ণতার অনুভূতি এনে দেয়।সুস্থ দেহ ও মন আমাদের জীবনের প্রতিটি কাজে ইতিবাচক শক্তি যোগায়। আমরা যখন সকালে ঘুম থেকে উঠে নিঃশ্বাস নিতে পারি, চোখ খুলে আলোর দেখা পাই, চলাফেরা করতে পারি, হাসতে পারি, কথা বলতে পারি,এসবই সৃষ্টিকর্তার দান। কিন্তু এই দৈনন্দিন সহজ মনে হওয়া কাজগুলোই অসুস্থ অবস্থায় কত কঠিন হয়ে যায়, তা কেবল যারা ভুগেছেন তারাই গভীরভাবে জানেন। সুতরাং সুস্থ দেহে প্রতিটি দিনই কৃতজ্ঞতার উপলক্ষ, সৃষ্টিকর্তার প্রশংসা করার একটি সুযোগ।

প্রশংসা বলতে শুধু মুখে আল্লাহর নাম নেওয়া নয়; বরং অন্তর দিয়ে তাঁর দয়া স্বীকার করা, জীবনে সঠিক পথে চলার চেষ্টা করা, ভালো কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখা,এসবই প্রকৃত প্রশংসা। সুস্থতা আমাদেরকে সেই সুযোগ দেয়। কারণ সুস্থ মন-মানসিকতা আমাদের ভালো কাজের শক্তি জোগায়, অন্যদের উপকারে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে এবং আমাদের জীবনকে অর্থবহ করে তোলে।সুস্থ থাকা অবস্থায় সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা আমাদের জীবনের মানসিক ভারসাম্যও বজায় রাখে। কৃতজ্ঞতা একজন মানুষের হৃদয়কে কোমল করে, অহংকার দূর করে, জীবনের ছোট ছোট সুখগুলোকে বড় করে তোলে। আর এই কৃতজ্ঞতা থেকেই জন্ম হয় ধৈর্য, সহনশীলতা ও ইতিবাচক ভাবনা। যখন আমরা স্বীকার করি যে সবকিছুই সৃষ্টিকর্তার দান, তখন আমরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নম্রতা ও সন্তুষ্টির মনোভাব গড়ে তুলতে পারি।

তাই প্রতিটি দিন, প্রতিটি সকাল, প্রতিটি সুস্থ মুহূর্তেই আমাদের মনে রাখা উচিত,আমরা সৃষ্টিকর্তার অসীম দয়ার মধ্যে আছি। আমাদের উচিত সুস্থ অবস্থায় তাঁকে স্মরণ করা, তাঁর প্রশংসা করা, তাঁর দেয়া নেয়ামতগুলোর সঠিক ব্যবহার করা। কারণ যখন আমরা সুস্থ থাকি, তখনই আমাদের উপাসনা, কাজ, দ্বায়িত্ব পালন,সবকিছুই পূর্ণতা পায়।সুস্থতা শুধু একটি শারীরিক অবস্থা নয়, এটি সৃষ্টিকর্তার প্রতি আমাদের আন্তরিক উপলব্ধি, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা প্রকাশের সর্বোত্তম সময়। তাই এই নেয়ামতের জন্য প্রতিটি নিঃশ্বাসে, প্রতিটি মুহূর্তে আমরা যেন সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করি, তাঁর প্রশংসা করি এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকি।