|| জেনারেল রাইটিং : ছদ্মবেশী চোর ||

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

আজ আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি আবারও নতুন একটি পোস্ট নিয়ে।আজকে আমি একটি জেনারেল রাইটিং লিখব। সব সময় একই ধরনের পোস্ট করতে আসলে ভালো লাগে না, আবার একই ধরনের পোস্ট পড়তেও সবার ভালো লাগে না। সেই জন্য প্রতি সপ্তাহে একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করি। সেই ধারাবাহিকতা থেকেই আমার আজকের এই পোস্ট। এটি আসলে গতকালের ঘটা একটি বাস্তব ঘটনা। চলুন তাহলে আর বেশি কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।


1000043686.png

সোর্স


প্রতিদিন দুপুরের মতো গতকাল দুপুরেও যখন আমি বই নিয়ে বসেছিলাম, তখন হটাৎ একটা অদ্ভুত আওয়াজ শুনতে পেলাম তারপর আবার কালো কালো ছায়া। ভয়ে আর বাইরে তাকাবো কিনা বুঝতে পারছিলাম না। এইদিকে মা ও আবার ঘরে ছিল না, পিছনের বারান্দায় কিছু কাজ করছিল। তারপর সাহস করে একটু বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখলাম কিছু অদ্ভুত ভয়নক সাজের মানুষ। আমি তো দেখে ভীষণ ভয় পেলাম। তখন ভয়ে তাড়াতাড়ি মা এর কাছে এসে বললাম কারা যেন এসেছে একটু চলো, মা বললো, এখন হাতে কাজ তুই যা। আমি বললাম, কেমন অদ্ভুত সাজ আমার ভয় করছে তুমি চলো সাথে, এই বলতে বলতে আমি পিছনের বারান্দার জানলা থেকে তাকিয়ে দেখলাম লোকগুলো নেই। তখন হঠাৎ ভয় পেলাম, সামনের ঘর দিয়ে ঢুকবে না তো।আর এই ভাবার সাথে সাথে হঠাৎ মনে হলো ফোন টা খাটের উপর ফেলে রেখে এসেছি।

প্রায় তিন মাস আগেই আমার পুরোনো ফোন টা চুরি হয়েছে, তাই একটু ভয় কাজ করছিল। আবার লোক গুলোকে দেখেও ভয় লাগছিল, তাই সামনে যেতে পারছিলাম না। যেহেতু আমাদের পিছনের বারান্দায় দুটো জানলা আছে তার মধ্যে দিয়ে একটা থেকে সামনের ঘরটাও দেখা যায়, তাই আমি হঠাৎ কি মনে হল জানিনা, একটু উঁকি দিয়ে ওই জানালা দিয়েই সামনের ঘরটা দেখতে গেলাম। গিয়ে দেখি লোকটা দরজা খুলে ভেতরে ঢুকছে, তখনই আমি চিৎকার করে বললাম আপনি ভিতরে ঢুকছেন কেন, তখনই মাও চলে আসলো এসে চিৎকার করাতে তারা তাড়াতাড়ি সেখান থেকে চলে গেল। আসলে দুপুর সময়ে কোনো বাড়িতেই পুরুষ লোকেরা থাকে না, আর এই সুযোগটাকেই তারা কাজে লাগিয়েছে। যাইহোক প্রচন্ড ভয় পেয়েছিলাম। তারপর শুনলাম মাও নাকি তাদেরকে দেখে ভয় পেয়েছে।

তারপর দোতলায় গিয়ে শুনলাম লোকটা নাকি সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে যাচ্ছিল, তার ওই সাজ দেখে উপর থেকে বড়মা ভয়ে দরজা দিয়ে দিয়েছিল। তারা সংখ্যায় চারজন ছিল , একটা বিশাল চেহারার পুরুষ লোক , একটা আমার বয়সী মেয়ে আর একটা বউ কোলে একটা ছোট বাচ্চা নিয়ে। কিছুক্ষণ পর পাড়ার এক কাকিমা এসে বলল , তাদের বাড়িতে গিয়েও নাকি ঠিক একই ঘটনা ঘটিয়েছে। পরে শোনা গেল, দুদিন আগে নাকি আমাদের পাশের পাড়াতে ঠিক এরকমই চারজন, একটা বড় বাড়িতে গিয়ে ভোরবেলায় গেট খোলা পেয়ে ভিতরে ঢুকে গিয়েছিল। আর পাহারাই রেখে দিয়েছিল আমার বয়সী ওই মেয়েটিকে,আর তারা স্বামী-স্ত্রী ছোট বাচ্চাটিকে নিয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকে চারিদিকে ওলট পালট করেছিল। তবে সবকিছু যেহেতু তালা দেওয়া ছিল , তাই আর নিতে পারেনি। তবে একটা শোকেশের এর মধ্যে নাকি কিছু রুপোর জিনিস ছিল। সেগুলোই চুরি করে নিয়েছিল।

এই ঘটনা শুনে আমি তো খুব ভয় পেয়েছিলাম। ভয়ে একদিন একা ঘরে শুতেও পারিনি । যাইহোক,আমরা আশেপাশের সকলেই সাবধানতা অবলম্বন করছি। দিনের বেলাতেও গেটে তালা দিয়ে রাখছি। কারণ দিনের বেলায় বেশিরভাগ পুরুষ লোকেরা বাড়িতে থাকে না । ওরকম ভয়ংকর সাজ নিয়ে আসলে মহিলারা সবাই দেখে ভয় পাবে। আর ভয়ে কিছু করতেও পারবে না। গরমের দিনে আসলে ফ্যান চালালে এক বাড়ির কথা আর এক বাড়িতে ঠিক করে শোনাও যায় না । তাই আপনারাও সবসময় চেষ্টা করবেন সাবধানতা অবলম্বন করার।

পোস্ট বিবরণজেনারেল রাইটিং

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।





🪔আমার পরিচয়🪔

InShot_20240217_224020693.jpg

আমি পূজা ঘোষ(রাজশ্রী)। বনগাঁতে বসবাস করি। আমি বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয় থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, বিজ্ঞান বিভাগে ।পাশাপাশি কম্পিউটার এবং স্পোকেন ইংলিশের কোর্স করেছি। বর্তমানে আমি ফার্মাসিতে অধ্যায়নরত । ভবিষ্যতে এইগুলো নিয়ে ভালো কিছু করার আশায় এগোচ্ছি। কবিতা আবৃত্তি করতে আমি খুবই ভালোবাসি। ছোটো বয়েস থেকেই কবিতা আবৃত্তি শিখছি। এছাড়া ছবি আঁকতে,ঘুরতে যেতে,নতুন নতুন খাবার খেতে,গান শুনতে,ফোটোগ্রাফি করতে আর মানুষের সাথে মিশতে ভালোবাসি।

🎯 সমাপ্ত🎯

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 2 years ago 

সত্যি অদ্ভুত চোর।এই চোরের দলকে তো ডাকাতও হার মানবে।এই চোরের দল অভিনব কায়দায় দলবল নিয়ে চুরি করে। দেখলে সটকে পড়ে না দেখলে চুরি করে।ভাগ্যিস আপনি দেখে ফেলেছেন নইলে পাড়ার ওই কাকিমার বাড়ির মতোই অবস্থা হতো আপনাদের বাড়ির।আপনারা সবাই সাবধনতা অবলম্বন করেছেন এবং দিনের বেলায়ও তালা ঝুলিয়ে রাখছেন জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন আপু, একেবারে অভিনব কায়দায় চুরি করছে এরা। হ্যাঁ আপু এরকম একটা পরিস্থিতিতে সাবধানতা অবলম্বন করাই ভালো।

 2 years ago 

শুনেইতো ভয় লাগছে আমার। কি অদ্ভুত একেবারে ফ্যামিলি সহ সবাই নেমে পরেছে কাজে। এরকম বিভিন্ন বাড়িতে ঢুকে হয়তো সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। আপনি আগে থেকে খেয়াল না করলে হয়তো আপনাদের বাড়িতেও ঢুকে যেত। দিনের বেলায় পুরুষ মানুষেরা বাসায় থাকে না ওই সুযোগটাই তারা নেয়ার চেষ্টা করছে। ভালো করেছেন আপু দিনের বেলায়ও গেট লাগিয়ে রেখে। সাবধানে থাকবেন।

 2 years ago 

ঢুকেই পড়েছিল আপু,দরজা দিয়ে তখন আমি চিৎকার করাতে দরজা থেকে আবার বেরিয়ে এসেছিল। যেহেতু দিনের বেলায় আমি ঘরে ছিলাম তাই আর গেট দিয়ে বসিনি।

 2 years ago 

আসলে এরকম কিছু মুখোশধারী মানুষ রয়েছে, যারা কিনা রূপ বদল করে চুরি করতে আসে। আর তাদেরকে ধরাও অনেক বেশি মুশকিল, কারণ তারা তো ছদ্মবেশী চোর। তারা কখন কার কোন জিনিস নিয়ে যাবে, এটা কেউ বুঝতে পারবে না। তাই সবারই উচিত সাবধানতা অবলম্বন করে থাকা। আর সবকিছু ভালোভাবে দেখে শুনে রাখা। তবে আপনাদের ঘর থেকে ওই লোকগুলো কোন কিছু নিতে পারেনি শুনে ভালো লেগেছে। এবার থেকে আরো বেশি সাবধানতা অবলম্বন করে থাকবেন।

 2 years ago 

হ্যাঁ আপু, যখন ঘরে ঢুকছিল তখনই আমি চিৎকার করাতে লোকটি বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিল।তাই আর কিছু নিতে পারিনি। হ্যাঁ আপু আগের থেকে আরও বেশি সাবধানতা অবলম্বন করছি।

 2 years ago 

এজন্যই তো আমি আমাদের বাড়িতে অচেনা কোন মানুষকে ঢুকতেই দিই না। এখন তো ফকির আসলেও আমি তাদেরকে দূরে থাকার জন্য বলি। আবার অনেক জনকে তো আসার জন্যই বারণ করে দিই। কারণ তাদের অনেকেরই আসল উদ্দেশ্য থাকে সবকিছু ভালোভাবে দেখেশুনে গিয়ে আরেকদিন এসে চুরি করার। আর এরকম সময়ে ঘরের দরজা জানালা সব সময় বন্ধই রাখবেন। ভাগ্যিস আপনি চলে এসেছিলেন, না হলে তো কিছু না কিছু চুরি করে নিয়ে যেত। আরো সাবধানে থাকার চেষ্টা করবেন এখন থেকে।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই, ঠিকই বলেছেন এরকমই ছদ্মবেশ নিয়ে আজকাল মানুষেরা চুরি করছে। তাই আমাদের সবারই সবসময় সাবধানতা অবলম্বন করা ভালো।

 2 years ago 

ওরে বাপরে... এ তো দেখছি বেশ ভয়ংকর ঘটনা! আসলে এই দুপুর সময়টাতে কোন বাড়িতেই পুরুষ মানুষ থাকে না, সবাই কাজে চলে যায়। আর এই সুযোগটাই এই মানুষগুলো নেয়। যাই হোক, তোমাদের তেমন কোন বিশেষ ক্ষতি হয়নি তার আগেই তোমরা সতর্ক হয়ে গেছো, এটা অনেক ভালো কথা। এখন ঘরে তালা দিয়ে রেখে দাও। আশা করি, আর কোন সমস্যা হবে না। তোমার আজকের এই পোষ্ট পড়ে আমি নিজেও খানিকটা সতর্ক হয়ে গেলাম দিদি।

 2 years ago 

আপনিও যে এই পোস্টটা পড়ে অনেকটা সতর্ক হয়েছেন জেনে ভালো লাগলো ভাই। আমরাও আসলে অনেকটাই সতর্কতা অবলম্বন করছি।

 2 years ago 

হ্যাঁ দিদি, সতর্কতা অবলম্বন করেই থাকুন তাহলে।

 2 years ago 

আসলে এরকম মুখোশধারী মানুষ অনেক বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়৷ তারা যেভাবে প্রতিনিয়ত মানুষের বাসা থেকে চুরি করার কৌশল ব্যবহার করছে৷ এর ফলে সকলকে সাবধান হওয়া উচিত৷ যদি সাবধান না হয় তাহলে অনেক বেশি পরিমাণে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে৷ তবে আপনাদের বাসা থেকে তারা কোন কিছু নিয়ে যেতে পারেনি৷ তবে আপনাদের আরো বেশি পরিমাণে সতর্ক থাকা উচিত৷

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই,আসলে তারা আমাদের বাড়ি থেকে কিছুই নিয়ে যেতে পারেনি। কারণ দরজা দিয়ে ঢোকার সাথে সাথেই আমি দেখতে পেয়েছিলাম।