পথিকদের জন্য সামান্য আয়োজন

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও ভাল আছি।আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব গরমে পথিকদের জন্য ছোট্ট আয়োজন।

এতদিন বইয়ে শুধু পড়তাম গ্রিন হাউজ ইফেক্ট।বাস্তবে ফলাফল টা সবাই খুব বেশি টের পায় নি।কিন্তু প্রকৃতি মারাত্মক জিনিস,প্রকৃতি খুব সহজে প্রতিশোধ নেয়না।কিন্তু যখন নেয় তখন তা ঠেকানোর ক্ষমতা কারো থাকে না।আর সেই প্রতিশোধ হয় মারাত্মক।

গ্রিন হাউজ ইফেক্ট হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে গ্রিন হাউজ গ্যাসের প্রভাবে পৃথিবীর চারদিকে এমন একটি অদৃশ্য আস্তরণ তৈরি করে। এই আস্তরন পৃথিবী থেকে তাপ বের হতে বাধা দেয়।ফলে তাপ পৃথিবীতেই আটকে পড়ে।এবং ধীরে ধীরে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়াতে থাকে।

এই গ্রিন হাউজের ফল ভোগ করতেছি আমরা গত কয়েকবছর থেকে। যার ফলে প্রত্যেক ঋতু তার স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলছে। গ্রীষ্মকালে এখন অস্বাভিক গরম পড়ছে,সময়মত বর্ষাকাল শুরু হচ্ছে না,বর্ষাকালে বৃষ্টি হচ্ছে না,শীতকালে ঠান্ডা পড়ছেনা।এগুলো সব গ্রীন হাউজের ফলাফল।

যাই হোক এবার গ্রীষ্মের শুরু থেকেই প্রচন্ড গরম চলতে থাকে। গরমের এমন নজির আমি আগে কখনো দেখি নি। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও থেকে আসছে হিট স্ট্রোক এ মৃত্যুর সংবাদ। এর মাঝেও শ্রমজীবী মানুষদের কাজে বের হয়,করতে হয় অমানুষিক শারিরীক পরিশ্রম।

আমাদের একটি সংগঠন আছে এলাকায়, "গোবিন্দগঞ্জ স্টুডেন্ট কমিউনিটি ব্লাড ব্যাংক।"আমাদের মেইন কাজ হল যাদের রক্তের প্রয়োজন তাদের রক্ত সংগ্রহ করে দেওয়া।যদিও আমি খুব সক্রিয় সদস্য নই। প্রয়োজনে রক্ত দেওয়া আর চাদা দেওয়া ছাড়া খুব বেশি কাজে অংশগ্রহণ করতে পারি না।

কয়েকদিন আগে সংগঠনের এক ছোট ভাই ফোন দিয়ে বলল,ভাইয়া এই গরমে শ্রমজীবী মানুষদের জন্য কিছু করা প্রয়োজন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একদিন শ্রমজীবী মানুষদের মাঝে শরবত আর বিস্কুট বিতরণ করব। আপনি কি বলেন? আমি বললাম ভাল উদ্যোগ। তা কবে করবা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছ? তখন ছোট ভাই বলল, যেহেতু শ্রমজীবীদের জন্যই আবার সামনে মে দিবস তাই মে দিবসের দিন করলেই ভাল হয়।

সেই অনুযায়ী গতকাল দুপুর বেলা আমরা আমাদের কার্যক্রম শুরু করলাম। প্রথমে আমাদের প্ল্যান ছিল ঠান্ডা শরবত সে সাথে বিস্কুট দেওয়া। পরে দেখলাম এই গরমে হঠাৎ বেশি ঠান্ডা কিছু খেলে হিটস্ট্রোক এর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।তাই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সাধারণ তাপমাত্রার শরবত সরবরাহ করা হল। প্রথমে থানার সামনে সিএনজি স্ট্যান্ড এ আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করলাম,তারপর সেখানে থেকে গোবিন্দগঞ্জ চারমাথায় চলে আসলাম।

সব খানেই প্রচুর মানুষের সাড়া পেয়েছিলাম। কারন যে পরিমান গরম ছিল তাতে সবারই ছাতিফাটা অবস্থা, তাই সবাই পিপাসা মিটাচ্ছিল। সেই সাথে বিস্কিট ও ছিল নাস্তা হিসেবে। আমরা জানি আমাদের এই উদ্যোগ খুবই ছোট৷ খুব একটা ইমপ্যাক্ট হয়ত রাখবে না।তবে তাও ঘরে বসে থাকার থেকে, কিছু করা ভাল।অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছে। আর একটি কথা না বললেই নয়,আমরা যথেস্ট হাইজিন মেইনটেইন করেছি।পরিস্কার ড্রাম, ওয়ান টাইম গ্লাস,আর সবাই হাতে গ্লাভস ব্যবহার করেছে। এই ছোট কিন্তু ভাল কাজের অংশ হতে পেরে বেশ ভাল লেগেছিল।

আজকের পর্ব এপর্যন্তই।আপনাদের জায়গা থেকে আপনার এই গরমে শ্রমজীবী,পেশাজীবী সহ অসহায় দের পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করুন।ভুল ত্রুটি মার্জনীয়।ধন্যবাদ সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ার জন্য।

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

banner-NEW.png
break2.jpg
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
break2.jpg

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

আপনাদের সুন্দর এই কার্যক্রমের প্রশংসা করি। অনেক ভালো লাগলো আপনাদের এই কাজ দেখে। আসলে আমরা যদি মানবতা বজায় রেখে মানুষের পাশে এভাবে দাঁড়ায় তাহলে পথচারীদের জন্য অনেক কল্যাণ হয়। প্রচন্ড এই রোড গরমে খেটে খাওয়া মানুষের পথচারী মানুষের জন্য বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে কিছুটা যদি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া যায় এভাবে তাহলে সৃষ্টিকর্তা অনেক খুশি হন। আর এদিকে ভালো লাগলো ব্লাড সংরক্ষণ করা আর চাদা সংরক্ষণ করে মানুষের সহায়তা করার বিষয়টা।

 2 years ago 

আপনার পোস্ট দেখে অনেক ভালো লাগলো ভাই মহৎ কাজের সাথে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। আসলে নিজেদের একটা সংগঠন থাকলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে মানুষকে সেবা করা যায় তার আঙ্গিকে মাঠে নেমেছেন শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

আমরা যদি আমাদের যে কোন ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় মানুষের কল্যাণে তাহলে সত্যিই আমাদের সমাজটা খুব সুন্দর ভাবে গড়ে ওঠে। এমন জনকল্যাণমূলক কাজগুলো দেখলে আমি খুব খুশি হই। আমি ছোট থেকে লক্ষ্য করে আসছি আমার আব্বু কৃষকদের জন্য সহায়তা প্রদান করেন। আজকে আপনারা পথচারীদের জন্য সহায়তা করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো।

 2 years ago 

গ্রীন হাউজের ইফেক্ট এই কয়েক বছর ভালোই টের পাওয়া যাচ্ছে। আপনাদের এলাকায় আপনাদের একটা সংগঠন রয়েছে জেনে ভালো লাগলো। সেই সংগঠন থেকে খুব সুন্দর একটি উদ্যোগ নিয়েছেন আপনারা সবাই। দেশের এরকম পরিস্থিতি গুলোতে সবাই একটু একটু করে এভাবে এগিয়ে আসলে খুবই ভালো হয়। আর এই ধরনের কাজগুলো করতে পারলেও নিজের কাছে শান্তি লাগে। আপনার পোস্টটা দেখে ভীষণ ভালো লাগলো।

 2 years ago (edited)

সভ্যতা যতো এগিয়েছে প্রকৃতির বিপদ ততোই বেড়েছে।প্রকৃতির প্রতিশোধ বলে একটা ব্যাপার আছে, প্রকৃতি সেই প্রতিশোধটা নিচ্ছে।গোবিন্দগঞ্জ স্টুডেন্ট কমিউনিটি ব্লাড ব্যাংক এর বিভিন্ন সেবামূলক কাজ প্রায়শই ফেসবুকে দেখতে পাই যা খুবই ভালো লাগার মতোই বিষয়।তোমাদের প্রচেষ্টা ক্ষুদ্র হলেও এর উপকারীতা অনেক বেশি যা হয়তো ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।এভাবেই এগিয়ে যাও উন্নত হোক তোমাদের মানসিকতা সেই প্রার্থনাই করি।🙏🙏🫡

 2 years ago 

ঈশ্বর আপনার প্রার্থনা মঞ্জুর করুক।ধন্যবাদ কাকিমা।

 2 years ago 

খুব সুন্দর একটি কাজ করেছেন ভাইয়া। কাজটা সামন্য হলেও তার বিনিময় পাবেন অনেক বড়। আর আপনারা সব কিছু খুব সুন্দর ভাবেই মেইনটিন করেছেন। সবাই এক গ্লাস করে শরবত পান করে তৃপ্তির ঢেকুর দিয়েছে। সবাই যদি এভাবে এগিয়ে আসতো তাহলে পৃথিবীটা কতইনা সুন্দর হতো। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

ধন্যবাদ মামি সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

খুবই সুন্দর একটি কাজ করেছেন আপনি৷ আসলে এরকম কাজ অনেকেই করছেন যা ফেসবুক এবং ইউটিউব এর মাধ্যমে দেখে আসছি৷ আজকে আপনার কাছ থেকে এরকম সুন্দর একটি মুহূর্ত থেকে খুবই ভালো লাগলো এবং খুব সুন্দরভাবে আপনি পথিকদের জন্য এই আয়োজনটি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷