"মায়ের হাতে রান্না করা আমার প্রিয়- কাচঁকি মাছ"
প্রিয়,
পাঠকগন,
আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটা অনেক ভালোভাবে কেটেছে।
আমার দিন তো আজকে মোটামুটি ভালই কেটেছে তবে সকাল থেকে আকাশ মেঘলা হয়ে আছে। সারাদিন একটুও রোদ্দুর ওঠেনি।
গত কয়েকদিন ঠান্ডা একটু কম থাকলেও আজকে আবার বেশ ঠান্ডা পড়েছে আর আবহাওয়ার অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আগামী কয়েক দিন আবার বেশ ঠান্ডা থাকবে।
যাই হোক অনেকদিন হয়ে গেল আমি আপনাদের সাথে কোন রান্নার রেসিপি শেয়ার করিনি।তাই ভাবলাম আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার প্রিয় একটা রান্নার রেসিপি শেয়ার করি।
যদিও রান্নাটি আজকে আমি করিনি, রান্নাটি আমার মায়ের করেছেন। আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা হয়তো, ছোট মাছ খেতে পছন্দ নাও করতে পারেন। কিন্তু আমার যে কোনো বড় মাছের তুলনায় ছোট মাছ খেতে বেশ ভালো লাগে এবং আমাদের শরীরের জন্য সেগুলো বেশ উপকারীও বটে।
আজকে আমি যে রেসিপিটি আপনাদের সাথে শেয়ার করব সেটি একটি মাছের রেসিপি। মাছটির নাম হচ্ছে কাচঁকি মাছ।
এই মাছটি খেতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। বিশেষ করে শীতকালে বেগুন আর ধনে পাতা দিয়ে রান্না করলে মাছটি আমার সবথেকে বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমার মা এই মাছ কাঁচা টমেটো দিয়েও রান্না করেন। সেই রান্নাটিও যথেষ্ট সুস্বাদু হয়।
(রান্না করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ)
চলুন আজকে আমার মা মাছ রান্না করতে কি কি উপকরণ ব্যবহার করেছে সেটা আপনাদের সাথে আগে শেয়ার করি:-
১.কাচঁকি মাছ- ৩০০গ্ৰাম
২.বেগুন- অর্ধেক (টুকরো করে কেটে নেওয়া)
৩.কাঁচা লঙ্কা- ৩-৪টি
৪.কাঁচা জিরে- ১½ চা চামচ
৫.ধনেপাতা কুচি- হাফ কাপ
৬.সর্ষের তেল- ৫-৬ চা চামচ
৬.হলুদ- ১ চা চামচ
৭.লবন- স্বাদ অনুসারে
(রান্না করার পদ্ধতি)
এবার চলুন আপনাদের সাথে রান্না করা পদ্ধতিটি
ভাগ করে নেই
প্রথম ধাপ:-
- প্রথমে মা কাজকে মাছগুলোকে ভালো করে ধুয়ে পরিমাণ মতো লবণ এবং অল্প হলুদ দিয়ে মেখে রাখলো অন্যদিকে বেগুনটিকে টুকরো করে কেটে নিল।
- কাঁচা জিরে ও কাঁচা লঙ্কা গুলো একসাথে বেটে নিয়ে তার মধ্যে পরিমাণ মতন হলুদ গুঁড়ো দিয়ে মসলা তৈরি করে নিলো।
দ্বিতীয় ধাপ:-
এরপর গ্যাস জ্বালিয়ে করাই বসিয়ে দিয়ে তাতে পরিমাণ মতন তেল দিয়ে, ভালো করে গরম করে নিল। তেল গরম হয়ে এলে নুন হলুদ দিয়ে মেখে রাখা মাছগুলো তেলের মধ্যে দিয়ে দিল।
মাছগুলো যেহেতু খুবই নরম হয়, তাই মাছগুলোকে খুব একটা নাড়াচাড়া করা যায় না। সেই কারণেই মাছ গুলোর উপর থেকেই টুকরো করে কেটে রাখা বেগুন দিয়ে,অল্পপরিমানে লবন ঝড়িয়ে দিয়ে মা ঢাকা দিয়ে দিল। যাতে বেগুন নরম হয়ে যায়।
- একটু বাদে ঢাকনা তুলে আগে থেকে করে রাখা মসলাটা উপর থেকে ঢেলে দিয়ে হালকা হাতে একটু নাড়াচাড়া করে,পরিমাণ মতো জল দিয়ে, গ্যাসটাকে কমিয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ হতে দিলো।
- এরপর নামানোর আগে মা কুচিয়ে রাখা ধনেপাতা গুলো উপর থেকে ছড়িয়ে দিল এবং জলটা শুকিয়ে এলে কড়াই থেকে নামিয়ে নিল।
এই মাছটি শুকনো শুকনো রান্না করলে খেতে ভালো লাগে। শুধু এই মাছ বললে ভুল হবে যে কোন ছোট মাছ, এইভাবে শুকনো করে রান্না করলে, খেতে বেশি ভালো লাগে।
গরম ভাতের সাথে এই রান্নাটি খেতে অসাধারণ লাগে। যদিও আমার ছেলে এই মাছটি খেতে পছন্দ করে না।
তবে ছোট মাছ আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী।চলুন কিছু উপকারিতা আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নেই-
আমাদের শরীরের জন্য ছোটো মাছের উপকারিতা:-
ছোট মাছের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে, যা আমাদের দৃষ্টি শক্তির জন্য ভীষণ উপকারী। এটি আমাদের রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ছোটো মাছের থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যাউচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য।তাছাড়া ক্যালসিয়াম আমাদের হার ও দাঁত কে অনেক মজবুত করে।তাই প্রতিদিন ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ ছোট মাছ যদি খাওয়া যায়, তাহলে আমাদের হাড় এবং দাঁত অনেক শক্তিশালী থাকে।
এছাড়া এই মাছেরয়েছে প্রোটিন। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই দরকারি।
যে সকল ব্যক্তির ডায়াবেটিস রয়েছে, তারা যদি খনিজ লবণযুক্ত এই ছোট মাছ খায়, সেটি তাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
এছাড়াও স্ট্রোকের রোগী বা গর্ভবতী যে সকল মহিলারা রয়েছেন বা যে সকল মহিলার বাচ্চারা মায়ের দুধ খায়, তাদের জন্যেও এই মাছ খুবই উপকারী।
আপনাদের মধ্যে কারা কারা আমার মত ছোট মাছ খেতে পছন্দ করেন নিশ্চয়ই জানাবেন। সকলের ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।
এমন রান্না হলে তো ভরপুর খাওয়া যায় আপু। দেখতে তো অনেক সুন্দর লাগছে। আশা করা যায় স্বাদেও অসাধারণ ছিলো। সেই সাথে দিয়েছেন সবজি। একদম স্বাদে ভরপুর।
আপনি ঠিক বলেছেন। মাছে অনেক পুষ্টি থাকে, এই মাছ টি রোগের জন্যও উপকারী। সুন্দর ভাবে আপনি আপনার রেসিপিটা শেয়ার করেছেন। ভালো লাগলো, সুস্থ থাকবেন। বায়
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর করে আমার লেখা পড়ার জন্য। আপনিও ভালো থাকবেন।
Congratulations! Your post has been upvoted by @steemladies (about all women's activities) Community. Let's grow together with us. Join and subscribe here👇.
Steem For Ladies
Thank you @steemladies for supporting my post.
আসলে আপু মায়ের হাতের রান্নার তুলনা হয় না। মায়ের হাতের রান্না খেলে মনটা ভরে যায়।আর আপনি ছোট মাছের কথা বলেছেন ছোট মাছ আমার ও খুব প্রিয় । আমি বড় মাছ হতে ছোট মাছ আমার খুব প্রিয়। আর আপনি ঠিকই বলেছেন ছোট মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে যা খেলে আমাদের শরীরের পুষ্টির অভাব দূর হবে। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত বেশি বেশি করে খনিজ লবণযুক্ত ছোট মাছ খাওয়া। আর আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে এত সুন্দর পোস্ট উপহার দেওয়ার জন্য।