ডিসেম্বরের উপহার
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে প্রায় বহুদিন পর আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি একটা পোষ্ট। বিগত কিছুদিন বিভিন্ন কারণে যেমন কিছু পারিবারিক, কিছু একেবারেই ব্যক্তিগত ব্যস্ততায় কিছুতেই লেখার মতন মন করে উঠতে পারিনি ।
এই প্লাটফর্মে আমি যতবার যেটুকু পোস্ট করেছি, মন থেকে করেছি। মন না চাইলে লেখাও আসে না। এই ধরুন কবে থেকে কবিতা লিখতে পারছি না। সেইমতো ফাঁকা সময় নিজের মাথাকেও দিয়ে উঠতে পারছি না, যে ভেবে কিছু একটা লিখব। বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন আজেবাজে চিন্তাভাবনা অতিরিক্ত চাপ মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকলে কবিতা সত্যিই কোথায় যেন হারিয়ে যায়। আবার কখনো অতিরিক্ত দুঃখ কষ্টে কবিতা হয়। কিন্তু এ বিষয়টা একেবারেই ব্যক্তিগত। কোনোভাবেই লিখে অথবা কাউকে শেয়ার করে এটা বলা সম্ভব নয়। লেখালেখিটাও আমার কাছে অনেকটা সেরকম।
সব সময় চেয়েছি কিছু কিছু মুহূর্ত, যেগুলো একেবারেই আমি সারা জীবন একটা জায়গায় সেফলি বাঁচিয়ে রাখতে চাই, সেগুলোই এখানে শেয়ার করব। সেই জন্যই এখানে বারে বারে লিখতে আসা। লেখাগুলো যখন লিখি সেই ছবিগুলো গ্যালারি থেকে মুছে দি ।কোন এক সময় করে পুরনো লেখাও মাঝেমধ্যে পড়ে দেখি। সেই দিনগুলোতে সেই মুহূর্তগুলোতে কি কি করেছিলাম, কেমন আনন্দ হয়েছিল, বা কি কষ্ট হয়েছিল সবটাই আবার পুনরায় চোখে ভাসে যখন লেখাগুলো পড়ি । তাই এখানে লিখতে আসাটা পুরোপুরি মন থেকে।
আজকে অনেকদিন পর আবারো আসলাম ।দুদিন ধরেই ভাবছি এবার একটা পোস্ট শেয়ার করব। কত পোস্ট জমা হয়ে আছে। কত কত সময় কাটিয়ে ফেললাম, আপনাদের জানানোই হলো না। অথবা সেগুলো কে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তাদের জায়গা তৈরি করা হলো না।

২০২২ এ আমার ইনডোর প্ল্যান্টগুলো
আজকের লেখাটা একেবারেই অন্যরকম ।তাই লেখার বক্তব্যটা একটু অন্যভাবেই শুরু করলাম। আমি ২০২২ সাল নাগাদ ছোট ছোট ইনডোর প্ল্যান্ট বাড়িতে আনতে শুরু করি। তার আগে বাড়িতে কোন ইনডোর প্যান্ট ছিল না। যখন প্রথম গাছগুলো কিনেছিলাম ।কত কত গাছ কিনেছিলাম ।সেগুলোও হয়তো পোস্ট এ শেয়ার করেছি ওই সময়। আজ থেকে চার বছর হবে। ছবিগুলো খুঁজে খুঁজে বার করতে পেরেছি।
তার মধ্যে একটা গাছ ছিল নাম অর্কিড। ফুলের গাছ। এই অর্কিড ফুল আমার ভীষণই পছন্দের একটা ফুল। বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকায় এই গাছ বেশি হয়।
সেই গাছ এনেছিলাম। তখন প্রায় মোটামুটি ৫০০ থেকে ৭০০ মধ্যে দাম নিয়েছিল ।তাও পুরোপুরি কত দাম নিয়েছিল তা আমার মনে নেই এখন। তবে দামটা বেশ ভালই ছিল। গাছটা নারকেলের ছোবড়া দিয়ে টবে একেবারেই বসানো অর্থাৎ প্ল্যান্টিং ছিল ।শুধুমাত্র বাড়িতে নিয়ে এসে রেখে দিয়েছিলাম। যেবার গাছটা কিনে আনি,সেবার তো ফুল দিয়েছে। তবে তারপরেই ওর কি হল ভগবান জানে। একটা বছর দুটো বছর তিনটে বছর গড়িয়ে যায় সে আর ফুল দেয় না ।মনটা বড্ডই খারাপ হয়েছিল। শীত আসলেই আশায় থাকতাম।
তবে কোনদিনও গাছ নষ্ট হয়নি। আমরা ঠিকভাবে ওকে একটা গাছের ছায়ায় রেখে দিয়েছিলাম। কখনো কখনো ঘরের মধ্যে রাখতাম ।কখনো কখনো আবার জবা ফুল গাছের তলায়। দেখতে দেখতে এতগুলো বছর কেটে গেল। হঠাৎ করে সেদিন সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে দেখি গাছটায় ফুলের কুঁড়ি এসছে। দেখে আমি তো আনন্দে পাগল।

আমার বাড়িতে যেবার ওকে প্রথম এনেছিলাম, সেইবারের ফুল
গাছটাকে নিয়ে তখন কোথায় রাখব, বুঝতে পারছিলাম না ।এত বছর পর আবার যে ওর মনে হয়েছে যে আমাকে এই ভরা ডিসেম্বর মাসে একটা উপহার দেবে, এটা ভেবেই অবাক লাগলো। ডিসেম্বর আমার জন্মদিনের মাস। তাই সত্যি বলতে প্রকৃতির কাছ থেকে এরকম একটা উপহার পেয়ে গেলাম এটাই মনে হলো।
ধীরে ধীরে যেমন ডিম ফুটে ছোট ছোট পাখির বাচ্চা বের হয়। ঠিক সেই ভাবে আস্তে আস্তে ও কুঁড়ি থেকে ফেটে বেরিয়ে আসলো। ফুলটাকে দেখে যে কি শান্তি পেয়েছি! তা আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না।। বেশ অনেকটা অপেক্ষা করতে হয়েছে ওকে আবার দেখার জন্য।
ওর ফিরে আসাটা ক্যামেরাবন্দি করে রেখেছিলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করব বলে। যার যখন আসার সময় হয়, সে ঠিক চলে আসে ,না চাইতেও আসে। আশা করছি আমার পোস্ট আপনাদের সকলের ভাল লাগল। আজ এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকুন।


Thank you for sharing on steem! I'm witness fuli, and I've given you a free upvote. If you'd like to support me, please consider voting at https://steemitwallet.com/~witnesses 🌟